গাদাগাদি ভিড়ে আমি দাঁড়িয়ে থাকি। আমার ঠিক পাশেই দাঁড়ান জননী
এক। পিঞ্জরায় বন্দি পাখি তার চোখ ভরা জলে তাকায় শীর্ন জননীর মুখে।
বড়ই আকুলি তার যদি ছুঁয়া যেত জননীর হাত, যদি সেই হাত একবার
আদরে আদরে তারে মায়ায় ভরিয়ে দিত...
মানুষের মুখ গুলো বড় অসহায় আর আমিও যেহেতু মানুষ তাই শুনি
তেলের লিটার আশি টাকা... চাল কেনাও বড় কষ্ট... তুই কেমন আছিস
বাপ... আব্বা রোজ রাতে কারা যেন ঘরের চালে ঢিল ছুঁড়ে...
এক দাগী আসামীর সাথে দুর্বল শরিরে ধাক্কাধাক্
সর্বত্রই নাকি ইদানিং বহে শান্তির সুবাতাস, ইদানিং নাকি
হররোজ পূর্নিমা ভর করে আমাদের আকাশে আর আমরা নাকি প্রতিদিন
করি কুর্নিশ মহামান্যকে, বলি বড় ভাল কাটে আমাদের দিবারাত তোমারই রাহে হে মহান।
আমরা কেউ কেউ স্বপ্নবাজ হয়েছি, জেগে জেগেই দেখি দুধভাতে ভরে গেছে আমাদের থালা আর আমরা চিমটিও কাটিনা নিজের শরিরে সত্য যাচাই করতে হয়না।
বেহেস্তি পোষাকের রঙ নাকি সবুজ আর দোজখের কালো!
কবে কোন মোল্লা শিখিয়েছে এমন বচন!
মোল্লারাও আর এখন তমদ্দুনের গান গায়
সেইযে বালিকা ছিল এক, দুই বিনুনি ছিল চুলে তার। আমি কতকতবার তারে মন থেকে মুছে ফেলি আর সে বারংবার থেকে যায় আমার মনে। আমার শুধু চোখে ভাসে মনে ভাসে রমনীর সিঁথির মত মাঠের বুকে জেগে ওঠা হাটাপথে দুজনে আমারা দুজনকে আলতো পায়ে পেছনে রেখে হাটতে শুরু করলে হঠাৎ হঠাতই সে পেছন ফিরে প্রশ্ন করেছিল, কোথায় যাবে এখন...
মনে অমন তোফানতোলে এমন প্রশ্ন আমায় কেউ আর কোনদিন করেনি তবে কেন আমি সেই দুই বিনুনির কথা ভুলে যাব তবে কেন আমি সেই রমনীয় সিথির সবুজ মাঠকে ভুলে
সে বড় মায়াবতী ছিল।
সে ছিল ছায়াময় বৃক্ষের মত।
আমার যত অপরাধ কতদিন
আগলে রেখেছে বন্ধু আমার।
আমার কত নাঁকি কান্না মুছে
দিয়েছে মমতায়।
আমি আর কত কাঁদতাম
যতটা কাঁদিয়েছি তারে!
আমাদের শৈশবে কত বেলীফুল আর গোলাপের পাপড়ি ছড়ানো ছিল উঠোনে উঠোনে। আমরা হেটেছি ছায়ায় ঢাকা কত কত পথ। আমরা মায়ায় বেধেছি আমাদের কত কত শৈশব।
এখনও আমাদের পথগুলো আগেরই মত আছে, আমরা তবু হাটি অন্য পথে অন্য আগুনে পুড়ি আর দুর থেকে বলি ভাল থাকিস।
বেলাদির মাথায় একরাশ ঘনকালো চুল ছিল। রাজের বিস্ময় মাখানো একজোড়া চোখ ছিল তার। তখন অবশ্য অতটা বুঝতামনা। শুধু চোখ গুলো দেখতে আমার ভিষন ভালো লাগত।
আমাদের বাড়ির উত্তর সীমানায় ছিল একসারি কদম গাছ। তার পরই শুরু বেলাদিদের বাড়ি। সীমানা থেকে ঘর অবধি যেতে বেশ লম্বা একটা ফাঁকা যায়গা ছিল। মখমলের মত বিছানো সবুজ সবুজ সেই ঘাসের মাঝখানে ছিল বেশ বড় একটা পাথর। অনেকটা বেদীর মত। সাদা রঙের সেই পাথরে বসে রোজ বিকেলে বেলাদি রবীন্দ্রনাথের বই পড়ত। মাঝে মাঝে সুনীল।
মহান কবিতা ছাড়া আর কিছুই মনে পড়েনা। পড়েছি অনেকবার, আবারও পড়লাম আজ। বার বার পড়া যায় বলেই আমার বিশ্বাস। সমমনাদের জন্য
শামসুর রাহমান এর কবিতা
স্বাধীনতা তুমি
স্বাধীনতা তুমি
রবিঠাকুরের অজর কবিতা, অবিনাশী গান।
স্বাধীনতা তুমি
কাজী নজরুল, ঝাঁকড়া চুলের বাবরি দোলানো
মহান পুরুষ, সৃষ্টিসুখের উল-াসে কাঁপা-
স্বাধীনতা তুমি
শহীদ মিনারে অমর একুশে ফেব্রুয়ারির উজ্জ্বল সভা
স্বাধীনতা তুমি
পতাকা-শোভিত শে-াগান-ম
সময় বড় সংক্ষিপ্ত এখন
বামুন-বনসাই জামানা।
উদ্যানে বিপনী বিতান
পেটের ভেতর মিনি চিড়িয়াখানা।
প্রকৃতির উৎসবে মুঠোফোন
বাণিজ্য। শর্ট ম্যাসেজ;
ঘন্টা বাজে: চিঠির মৃত্যু।
এখন আধুনিক রিমিক্স হাছন,
কান ঝালাপালা করে ডিজিটাল ফিউশন।
আমার তখন না ঢাকা না সিলেট অবস্থা! আরিফ ভাই, নিজের ভাই, রনি ভাই এমনতর ভাই এবং সঙ্গিয় গৌরী, চেরী, রাজুরা প্রায় প্রতিদিন টানছেন মহানগরের দিকে। সেখানে নাকী আছে আমার জন্য অবারিত প্রান্তর। আমার সকল প্রতিভা(!) বিকষণে সেই নগরীই হবে প্রকৃষ্ট স্থান!
এদিকে প্রাণের শহরে আছেন জননী আমার, আছেন শিশুমনের পিতা। আছে আমার প্রান্তিক। আছে সবুজ ঘনবন, জাফলং টাঙ্গুয়া...। আছে অর্ণা নামের এক মানবী!!! সাথে সাথে আমারই মত বিষয় বুদ্ধিহীন একদঙ্গল বালক বালিকা!!!
ঘ
আছে তাতে বানিজ্যভাবনা প্রবলতর। বানিজ্যেই যেহেতু লক্ষীর বসবাস সর্বদাই...
তবুও শরিরে কেমন শিরশিরে অনুভূতি হয়...
লোমগুলো সজারুর কাটার মত সোজা হয়ে যায়...
-------------------------------------
বলছিলাম বাংলালিংক'র লাস্ট বিজ্ঞাপনটার কথা। যুদ্ধের রাতে ভাই হারানোর কী মর্মস্পর্শি কথামালা... হায় স্বাধীনতা
স্যালুট ফারুকী, স্যালুট বাংলালিংক, দুই শিশু আর অতি অবশ্যই সাবিরি আলম।
আমার অনুভূতি অতটা পুতুপুতু নয়। যতটা হলে পথের কান্নায় বুক ভাসানো যায়। বেশ শক্ত ঘোচের মানুষ আমি থেতলে যাওয়া মানুষের সামনে বসে তারই স্বজনকে প্রশ্ন করতে পারি, মাথায় যখন গুলি লাগে তখন উনার হাতে একটা পিস্তল ছিল, সেটার মালিক কে জানেন? ক্রসফায়ারে মরা মোশারফের মাকে বলি, আছে আপনার ছেলে হাসপাতালে... আচ্ছা ওর কোন ছবি আছে আপনার কাছে। ত্রস্ত হাতে মোশারফের বোন পাসপোর্ট সাইজের ছবিটা বের করে দিলে আমি খুব দ্রুত চলে আসতে পারি। যদিও আসার আগে বলে আসি, তাড়াতড়ি হাস