[justify]প্রথমে কিছুক্ষণ ব্লা ব্লা করা যাক। বাসাবাড়ি বাড়িঘর ঘরবাড়ি কোনোটার মানেই এক না। পূর্ববঙ্গের লোকেরা বাসা বলে। পশ্চিমবঙ্গে বাড়ি। শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় ব্যোমকেশ মারফত এই তথ্য বলেন (আমি উচ্চশিক্ষিত)। এছাড়া, বাসাবাড়িতে মানুষ থাকে। কিন্তু বাড়িঘরে স্বয়ংচল বিমান থেকে বোম মারা যায় (পত্রিকা পড়ি)। বাড়িঘরে আগুন লাগে (ঐ)। বাড়িঘর বন্যায় ডুবে যায় (ঐ)। বাড়িঘরে প্রচুর দুর্যোগ। কিন্তু ঘরবাড়ি ছেড়ে দূরে থাকা যায়, বাসাবাড়ি হলে যায় না। আবোলতাবোল ভাবতে ভাবতে সময় কাটাই। ব্লা ব্লা ব্লা। তবে অন্যমনস্ক হওয়ার নিয়ম নাই।
গোগলের ওভারকোট পড়ার পরই আমার আলি মনসুরের কথা মনে হল। সেই গল্পের প্রসিদ্ধ কেরানি, যে মরে গিয়ে উন্মাদ ভুত হয়ে যায়, অন্যায়ের প্রতিশোধ নেয়, তার সাথে মনসুরের মিল আছে যৎকিঞ্চিৎ। প্রথমে যদিও গোগলের ওভারকোটটাই উল্টা করে লিখে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম, কিন্তু পরে মনে পড়ল আলি মনসুরের গল্পটাও অনেকদিন লেখা হচ্ছে না।
[justify][১]
সপ্তসপ্ততিতমে বর্ষে সপ্তমে মাসে সপ্তমী/ রাত্রিভীমরথী নাম নরাণাংদুরতিক্রমা ... সপ্তসপ্ততিতম বৎসরের সপ্তম মাসের সপ্তম দিবসের রাত্রি ভীষণ, কারণ, ইহা দুরতিক্রম, অর্থাৎ সাধারণে এরূপ দীর্ঘজীবী হয় না। ভীমরথী থেকে ভীমরতি।
বৃদ্ধ পুরুষের চিত্তবৈকল্যের একটা কারণ এই বাংলা বাগধারায় আছে - তিনি সাতাত্তর বছর সাত মাস সাত দিনের তক্তা ডিঙিয়েছেন। বাগধারা যদি ঢালাওভাবে নির্দিষ্ট বয়সের লোকের প্রতি নিষ্ঠুর হয়ে থাকে সে দায় বর্তমান লেখকের না। কিন্তু আনন্দেই হোক, বা বার্ধক্যের দানে, এরূপ লোক আচরণ ও ভাষার উপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন। লোকমানসে এই নিয়ন্ত্রণহীনতা পরিহাস্যকর যৌন ব্যর্থতা দ্বারা সংজ্ঞায়িত।
আমাদের জাতীয় সাহিত্যের লোকপ্রিয় লেখক হুমায়ূন আহমেদ ভীমরতিপ্রাপ্ত হয়েছেন।
ডিয়ার স্যার,
আমাদের মহান হেড স্যারের লেখা একটা কবিতা আমরা মাঝে মাঝে আওড়াই - চিত্ত যেথা ভয়শূন্য উচ্চ যেথা শির - বুদ্ধির ঊনতাহেতু আমরা সেইটা পুরাপুরি বুঝতে পারি না। সেইখানে তিনি আরো লিখেছিলেন - যেথা গৃহের প্রাচীর/ আপন প্রাঙ্গণতলে দিবসশর্বরী/ বসুধারে রাখে নাই খণ্ড ক্ষুদ্র করি। ইংরেজিতে Where the world has not been broken up/ into fragments by narrow domestic walls। আমরা ছোট চিন্তার লোকেরা, খালি প্রাচীর তুলতে চাই। আপনারা বড় বড় মানুষ। প্রাচীর-টাচির তেমন একটা মানেন না। তাই আমাদের অল্পবিদ্যার জাতীয়তাবাদী দেয়ালগুলা আপনাদের মনে করুণার উদ্রেক করে।
[justify]দয়া* ও কাঠামো
দয়া-ক্লান্তি। কমপ্যাশন ফ্যাটিগ ইংরেজদের দেয়া নাম। আমরা এদিকটায় জানি, দয়া ধর্ম। প্রচারমাধ্যমে অতি-প্রচারিত দৃশ্যগুলো আমাদের কারো কারো মনে এখন আর দয়ার জন্ম দেয় না। কান্না, চিৎকার, লাশ হয়ে যাওয়া এইসব কোনো কিছুই। কান্নার প্রতি, চিৎকারের প্রতি, লাশের প্রতি (প্রায়) পর্নোগ্রাফিক আকর্ষণের স্তরটিও আমরা কিছুকাল হল পার হয়ে এসেছি। একদা অতিপ্রচারকে ঐ দয়া-ক্লান্তির উৎস বলে মনে হত। এখন মনে হয় কেবল অতিপ্রচারই নয়, খবরের পুনরাবৃত্ত কাঠামোগুলোরও রয়েছে দয়া কেড়ে নেয়ার বিশেষ ক্ষমতা। কাঠামো আমাদের দয়া-ক্লান্তি দেয়। ক্রসফায়ারের গল্পগুলো মনে করবেন এইখানে।
যেসময় চলে গেছে, যেভাবে গেছে তার নাম ভ্রমণ, কাহিনী তাতে সবসময় থাকে না। দৃশ্য থাকে। আধুনিক কবিগন দৃশ্যপিড়ীত ছিলেন খুব, জীবনানন্দ দেখেছেন কেবলই দৃশ্যের জন্ম, আর এলিয়টের মানুষ — তাদের ছেলেময়েরা, বলতে পারে না কিছু, এমনকী আন্দাজেও না — তারা দেখেছে কেবলই ভগ্নদৃশ্যের স্তূপ, হিপ অফ ব্রোকেন ইমেজেস। জীবনানন্দ, এলিয়ট ইত্যাদি নাম আরো কিছু দৃশ্যের মতোই, আজ এর বেশি কিছু নয় আমার অনেক অনেক সামান্য ভ্রমণের মতন। তারই একটা চৈত্রের দশদিন হাতে রেখে যাওয়া, দূর্গাপুর, জেলা নেত্রকোনা - বিরিশিরি নামে অধিক বিজ্ঞাপিত।
[justify]
একটা না-লেখা ভ্রমণকথা
জালিয়ানওয়ালা বাগ থেকে হরমন্দির সাহিব ১০ মিনিটের পথও না। গিয়েছিলাম ২০১০ এর এপ্রিলে। এপ্রিল নিষ্ঠুর মাস, মৃত জমিনে সে লাইলাক ফোঁটায়, স্মৃতি আর আকাঙ্ক্ষার মিশেলে … এলিয়টকে মনে পড়ে, গরমে। জালিয়ানওয়ালা বাগে ডায়ারবাহিনীর বুলেট গেঁথে আছে দেয়ালে। বাঁধিয়ে রাখা সেই দেয়াল। অসংখ্য মানুষ যায় আসে। আমি ঘাস দেখি, বেল গাছ দেখি আর ঐ কুয়াটার কাছে যাই।
[justify]
(১)
লেখার বাংলা ভাষা ও বাংলা লেখার ভাষা দুইটা এক বিষয় না। লেখার যেই বাংলা ভাষা সেইটা একটা সিস্টেম, ভাষা, ফরাসিতে লাংগ্। বাংলারে লেখার ভাষা আদৌ ভাষা কিনা, এই নিয়া সন্দেহ থাকে, এবং সেই সন্দেহ মোতাবেক বাংলা লেখার ভাষা কোনো ভাষা না, একটা তরিকা।
উত্তরের এই শহর যখন ছাড়ি তখন অনেককিছু বাকি। সুলতানি আমলের সুবিখ্যাত মসজিদ। এখানকার কুখ্যাত সীমান্ত। সুমিষ্ট ফলের বাগান। ছয়মাসে দেখা হয় নাই অনেক কিছুই। হবেও না আর। খালি ভোরবেলা ছাদে উঠে দেখলাম একটা বিরাট পুকুর এই বাড়িটার ঠিক পিছনেই। কখনো জানি নাই। কয়েকটা হাঁস ভাসে সেইখানে। শেষদিন ভোরবেলায়।
[justify]
There is no outside-the-text.
টেক্সটের ল্যাটিন গোড়ায় টেক্সট্র, মানে বয়ন। জিনিস বোনা । দেরিদা বলছে টেক্সটের বাইরে কিছু নাই। আসলে বলে নাই।