ওস্তাদজী-কে চা দেয়া হয়েছে। সাথে কয়েকটা বিস্কিট। তিনি শিক্ষার্থীর সুর সাধনা শোনার ফাঁকে ফাঁকে চায়ে চুমুক দিলেন বটে, কিন্তু বিস্কিট গুলো ছুঁয়েও দেখলেন না। যাবার সময় ছাত্রীকে বললেন; শুভ একটা কাগজ দাও। ওস্তাদজী কাগজ হাতে পেয়ে তার ভেতর বিস্কিট গুলো মুড়িয়ে নিলেন, রুমালে পয়সা বাঁধার মতো খুব যত্নে। মুখে একটা সহজ ভাব এনে বললেন; আমার মেয়েটার জন্য নিয়ে যাই, ও খুব খুশী হবে।
সোনিয়া আমাদের লাগারে আসে রাজহংসীর মতো। মুখে একটা মিষ্টি হাসি। ভারতীয় পাকিস্তানীরা বেশ সমীহই করে তাকে। সেভাবেই এসেছিল সে দিন। একটা পাকিস্তানী এসে বায়না ধরল, “তোমার সহেলির সাথে পরিচয় করিয়ে দাও”। আমি জানি সোনিয়া জানতে চাইবে “কী বলেছে লোকটা”?
একটা মেয়ে কোন ছেলেকে পছন্দ করলে বা কোন ছেলে একটা মেয়েকে পছন্দ করলে দ্বিতীয় ব্যক্তিকে বলার আগেই আশে-পাশের মানুষ সেটা টের পায়। আমরা যে ভাবে একজনের উপড়ে আরেক জন রাতে শুই, সে অবস্থায় অন্যের অগোচররে স্বপ্ন দেখাও অসম্ভব। আমার বিরহ গোপন থাকা সম্ভব নয়। কোন কাজে আসুক আর না আসুক, আমাদের যে কোন ব্যাপারে মাহবুব ভাই খোঁজ-খবর নিয়ে পরামর্শটাও দিয়ে যান। জ্বর-জাড়ি হলে রাতে কোন ঔষধের দোকান খোলা থাকে সেটা যেনে নিয়ে
সুখের স্বপ্নের মতো জাগরণে সোনিয়ার স্মৃতিরা প্রজাপতি হয়ে উড়ে বেড়ায় আমার চারপাশে। পাঁচ লিটারের রেড ওয়াইনের বোতল সময়ের সাথে খালি হতে থাকে। আমার চারপাশটা অন্ধকারে চেনা পথের মতো। কোন কিছু না দেখেও বেশ স্বচ্ছন্দেই হেঁটে যাই। আমার ভুবনে কেউ ঢুকতে পারে না। একটা নতুন পৃথিবী তৈরী করে নিয়েছি বেশ কিছু দিন হল। মাঝে মাঝে জসিম ক্ষেপে গিয়ে বকাঝকা করে। আমি তার কথা শুনতে না পেলেও ছায়ার মতো দেখি তার খিস্তিখেউড় আমার
ঈর্ষণীয় ভরাট গলায় গমগম করছে ঘর। মানুষের উপর প্রকৃতির প্রভাব বড় প্রখর!
“রাজনীতিবিদদের জন্য জটিল করে যাব রাজনীতি” বলে ছিলেন মেজর জিয়া। কিন্তু তা পূর্ন বাস্তবে পরিণত করে দেখিয়েছে এরশাদ। “মুক্তিযোদ্ধারা সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ সন্তান”। নীচে লেখা ছিল হোসাইন মোহাম্মদ এরশাদ। এই ধরণের ব্যানারে সাজানো ছিল রাজধানী ঢাকার পথ-ঘাট। ঠিক একই সময়ে অনেক সময় এরশাদের ব্যানারের নীচেই ঝুলত; মেজর ফারুক- রশিদের ফ্রিডম পার্টির বক্তব্য; “ শেখ মুজিবকে হত্যা করে দেশ স্বাধীন করেছি ১৫ই আগস্ট ১৯৭৫।
[এই গল্পের যদি কোন ভাল দিক থেকে থাকে, তবে তা ষষ্ট পাণ্ডবের। তিনি একটা প্রবন্ধ লিখেছিলেন মুক্তিযুদ্ধ কী। আমি একে গল্প বানাতে চেষ্টা করেছি মাত্র। হয়নি বা কতটুকু হয়েছে বা হবে নির্ভর করছে আপনাদের মূল্যবান মতামতের উপর। আপনাদের যে কোন পরামর্শ, মতামত কাহিনীর গল্পে উত্তরণ সহায়ক হবে। আমাদের জাতীয় কোন বিষয় নিয়ে কিশোর কিশোরীদের উপযোগী কোন গল্প কবি
৭১ এ আমি কোন ভুল করি নাই। কারণ আমরা পাকিস্তানের পক্ষে আসিলাম এবং এখন আছি। ভবিষতেও থাকব ইনশাল্লাহ। আস্তে ধীরে বাংলাদেশকে আমরা আবার পবিত্র পূর্বপাকিস্তানে পরিণত করার সংগ্রাম তখনও করসি, এখনও করতাসি। এই চেষ্টা জাড়ি থাকবে মরতে দমতক।
শিশু পালন একটা চব্বিশ ঘণ্টার কাজ। তার সাথে অন্য কোন কাজ করতে হলে চব্বিশ ঘণ্টায় আর কুলিয়ে উঠতে পারি না। মনে হয় দিনটি ৮৪ ঘণ্টার হলে ভাল হতো। বড়টাকে ঘুম পাড়িয়ে ভাত নিয়ে বসেছি। ছোটটা মায়ের দুধ খাচ্ছে। ফোন বাজছে। তাড়াতাড়ি ধরতে হবে, না হলে মেয়েটার ঘুম ভেঙ্গে যাবে। বাঁহাতের মুঠোয় ধরা কাঁচা লংকা টেবিলে রেখে ফোন ধরে বললাম; কায়সার বলছি...