বেঁচে থাকার মানে কম তো কিছু নয়,
জীবিকার ঘ্রাণ, সকালের ঘুম, মায়াবতীর চোখে
চোখ রাখা, ভান, বেঁচে থাকার সুখ
কিংবা আলস্য, সময়ের অপচয়।
বেঁচে থাকার মানে কম তো কিছু নয়,
মিলন, গল্প, প্রজাপতির ডানায় ডানায় আলোর সঙ্গম
নিয়ত আবর্তনশীল পৃথিবী, তার ঘাসে মুখ রাখা ফড়িংয়ের দল
কিংবা কীরকমভাবে বেঁচে থাকে এক একটা শালিক
বুকে নিয়ে হাজার সংশয়।
বেঁচে থাকার মানে কম তো কিছু নয়,
তবু কারো কারো চোখে ঘুম মৃতঘ...
এখনও কি জোয়ার আসে অক্টোবরে,
হরিণের চোখে কাজলেরা গাঢ় হয়, রাতের ছায়ার মত নৈঃশব্দ
তোমাকে গ্রাস করে, নারী।
লুটেরা জোৎস্নায় বিধ্বস্থ আমার ঘর, লন্ঠনের আলো,
বাইরের হাজারটা নিয়ন।
আমি জানি না এখন কী কাটালের কাল, কোন বছর, কী ঋতু
পৃথিবী কতবার প্রদক্ষিণ করল সূর্যকে
কতটা গলেছে উত্তর মেরু।
রাতের ছায়ায় তন্দ্রাবতী শালুকের দল কেন জলের দিকে
কিংবা সহস্র তারামন্ডিত আকাশ কেন মাটির দিকে
ধাবিত হয়
...
এইগুলান আজাইরা কথা, ফালতু কাব্য। যাহাদের টাইম নাই, পইড়েন না, আর যাহারা পড়িবেন, যুক্তি সহকারে গাইলাইবেন। এদের কোনো অর্থ খুঁজিতে যাইবেন না, ইহারা আদতে ব্যর্থ কাব্য।
৫.
মানুষের জীবনটা এমন
পাশে বউ শুইয়ে কল্পনা করে অন্য কোনো নারী
ভাবতে বসে সুখ, সাহস, কাম, ভালবাসা
যাহা কিছু পাইবার ছিল, যা কিছু হলো না পাওয়া।
৬.
সাজানো খোঁপায় সেজুতির দল
সৌম স্নিগ্ধ গ্রীবা, সৌখিন সাজ
স্বপ্নের মত তুমি, সহ...
১.
তারপর
কতটা তুমি সামলে নিচ্ছ ঘর
চুড়িরদানি, খোঁপার মালা, বর
কতটা তোমার কন্ঠচাপা
কতটা নিজস্বর।
২.
কতটা শুদ্ধ হলো এই চেয়ে থাকা-
হে নিজস্ব কিংবা দূরবর্তী নারী
তোমার ঘ্রাণ, তোমার উদাসীনতা,
তোমার শিউলি বুক, ঝুঁকে পড়া স্তনযুগল
তোমার পল্লবিত শরীর যেন নিঃসঙ্গ দ্বীপ।
৩.
দেখা যাচ্ছে, মানুষ ক্রমশ আদিম হয়ে গেছে।
জীবন ও জীবিকার কয়লা পুড়ে বাষ্প হচ্ছে জল
ফেল করছে ফিরতি ট্রেন, অঙ্গীকার, শৈ...
আজকে বাবা ফোন করেছিল।
দেশের বাইরে আছি চার বছর। এই চার বছরে আমার বাপজান আমাকে নিজে থেকে ফোন করেছেন ঠিক চারবার। প্রথমবার আমার বউকে আমার কাছে পাঠানোর সময় ওকে প্লেনে তুলে দিয়ে, দ্বিতীয়বার দাদা মারা গেলে, তৃতীয়বার এই বছরের শুরুতে যখন আগেরদিন তাকে বলেছিলাম, পিএইচডি শেষ হলে একটা ভালো পোষ্টডকের সম্ভাবনা আছে, যদি হয় তাহলে তার মতামত কি। আর করলেন আজকে, ইফতারের পর পর।
বাংলাদেশ থেকে ফোন আস...
প্রতিদিন বাইরের তাপমাত্রা আমাকে ঘরমুখি করে কেন সে প্রশ্ন থাক- তার চেয়ে ভাবতে বসি আমার অধুনা জীবন, পৃথিবীর প্রতিটা লোমকূপে কচ্ছপের মত এক একটা দীর্ঘশ্বাস লুকায়ে যে আজ ঘুমিয়ে পড়েছে পবিত্র শহরে, একদা যেখানে ছিল অরণ্যের ছায়া, শালবনের চাঁদ। অতএব, মায়ের গর্ভে লাথি দিতে দিতে বাড়ছে অনাগত দিন- তবু তোমাকে অভিবাদন।
ভাবছি, এই শহরে কোথায়ো আছি আমি। কোনো এক খাঁজে কম্প্রেসরের শো শো আওয়াজ শুষে ন...
যখন মানুষের তৃষ্ণায় বাসা বাধে অশুভ ছত্রাক, ধমনীতে বাড়ে অধৈর্যের কালো রক্ত, কিংবা উদরে জন্ম নেয় সেই চতুর চড়ুই, রাজকন্যার সোনালি চুল চুরি করে যে তুলে দেয় ডাইনীর হাতে, তখন মানুষ কি জানে তার পাপ ছুঁয়েছে রাক্ষসের ডানা? কিছু কিছু মানুষও কি চড়ুইয়ের ঠোঁট আর দানবের চোখ নিয়ে বেঁচে থাকে না এক একটা রূপকথার গল্পে! অথচ, আমরা কেবল ভুলে যাই সেই পালকের কথা।
রাক্ষসপুরীতে বন্দী দুঃখী রাজকন্যার চোখ ...
১. সকাল
দিনগুলো কেটে যাচ্ছে হাসপাতালবাসের মত, সকাল-দুপুর-সন্ধ্যা কোনো নিজস্ব ব্যক্তিত্ব নিয়ে হাজির হয় না, কোনোকিছুতেই কোনো অনুভূতি নেই, রুটিনে নেই কোনো সাম্যাবস্থ্যা, পুরোটা সকাল আর দুপুর পড়ে পড়ে ঘুমাই, নিশাচর চোখেরা পলক ফেলতে চায় না রাত্রির গভীরে, নাস্তা হয়ে যায় শেষবিকেলের লাঞ্চ, ডিনারের সময় অহেতুক ডেকে উঠে দুঃস্বপ্ন দেখে জেগে উঠা কয়েকটা বালিহাস। সবাই যখন ঘুম থেকে উঠে জগতের ক...
রিকশার টুংটাং শব্দ গলিয়ে দিয়ে যায় শহরের কঠিন হৃদয়। ঘর্মাক্ত ওভারব্রীজে হঠাৎ বাতাসে বিদ্রোহী হয় একটা হলুদ ব্যানার, ফুটপাতে নেমে নাচতে থাকে দেয়ালের কালো কালো অক্ষরগুলো। মাথার উপরে সূর্য দ্রুত লজ্জা ঢাকে মেঘের আঁচলে। দিনে দুপুরে আলোর অন্ধকারে খসে পড়ে একটা ছুটন্ত তারা, পৃথিবী রোদচশমা চোখে দেখে লাল গ্রহ, শনির বলয় তার রং বদলায়। বকুল ফুলের মত মুহূর্তে ঝরে পড়ে বাঁচার আকুল চেষ্ঠা, জীব...
আমার জানালায় ঝুলে আছে একটি রাত
একটা সিড়ি, টিউবলাইট, একটা এক্সিট ডোর
সিড়িটা চাইছে দোরটা খুলুক, লাইটটা অন্ধকার খুঁজছে,
দরজাটা ঘর।
সভ্যতার আলোয় মরচে ধরা আকাশ, আকাশটা কালো নয়
সাগরটা যুদ্ধবাজ হতে চাইছে, কাঁচের দেয়ালে
পেটফোলা মাকড়সারা সারি সারি বুনছে পাপের ফল
বাতাসটা আগুন চাইছে, আকাশটা জল।
ওপাশেও জানালা খুলে হাত নাড়ার বদলে
মতিভ্রম, শুকাতে দেয়া নিকোটিনের চাঁদ ধরে টানাটানি
লাই...