যখন ছোটো ছিলাম, তখন আগন্তুক বড়দের গৎবাঁধা প্রশ্নের মুখে পড়তাম, বড় হয়ে কী হবে? বড় হয়ে যাওয়ার পর কেউ জিজ্ঞেস করে না, বুড়ো হয়ে কী হবে?
বাংলাদেশের সর্বাধিক পঠিত উপন্যাসগুলির লেখক হুমায়ূন আহমেদ দুরারোগ্য ক্যান্সারে আক্রান্ত। চিকিৎসার জন্যে তিনি নিউইয়র্কে আছেন, সেখান থেকে তিনি কয়েক দিন পর পর দৈনিক প্রথম আলোতে ছোটো জার্নাল লিখে পাঠান। হুমায়ূন আহমেদ বহু দিন ধরেই নিজের ব্যক্তিগত জীবনকে পাঠকের সামনে বার বার তুলে ধরেছেন, এই জার্নালগুলোও তার ব্যতিক্রম নয়। একজন লেখক হিসেবে তিনি বোধহয় সেটা করতেও পারেন।
মুহম্মদ বিন তুঘলক নির্বোধ ছিলেন না। ভারতবর্ষে নির্বোধ সুলতানের পক্ষে ছাব্বিশ বছর দিল্লির সুলতানাত শাসন করা সম্ভব কোনো কালেই ছিলো না। তর্কশাস্ত্রে সুপণ্ডিত বহুভাষী এই শিল্পী সুলতান যুদ্ধের ময়দানেও কুশলী ছিলেন। সাম্রাজ্য চালাতে আর বাড়াতে গেলে যে নৃশংসতার প্রয়োজন হয়, তা-ও তাঁর ছিলো। কিন্তু মুহম্মদ বিন তুঘলকের গুণের কথা বাঙালির মুখে মুখে ফেরে না, ফেরে তাঁর প্রশাসনিক খামখেয়ালের গল্পই, বাগধারায় যাকে আমরা বলি তুঘলকি কাণ্ড।
সম্প্রতি শওকত আলী খান হীরণ নামে এক আদম বিয়ের আসরেই যৌতুক আদায়ের জন্য চাপাচাপি করতে গিয়ে ফিরতি স্ট্রোকে সদ্য পরিণীতা স্ত্রীর কাছ থেকে তালাক খেয়ে বাড়ি ফিরে গেছে। শুনলাম, এই ব্যাটা প্রথম আলোর বন্ধুসভার কেষ্টুবিষ্টু, ডিজিটাল পটুয়াখালির প্রণেতা (মানে সাথে ল্যাপটপ আছে আর কি), স্থানীয় প্রাইমারি স্কুলের প্রধান শিক্ষক। শিক্ষকতার পাশাপাশি সমাজের অ্যানালগ ও ডিজিটাল দুই ধরনের উন্নয়নের সাথে জড়িত ব্যক্তিটি বিয়ের মঞ্চ থেকে পেছন তুলতে না তুলতেই একটা মোটর সাইকেল, একটা ফ্রিজ আর একটা টেলিভিশনের জন্য এত বেয়াকুল হলেন কেন, কে জানে! কিন্তু তার কপালে বিশদ আলেখ্যি লিখিত, সেটা মোটামুটি স্পষ্ট। শিক্ষা-সংশ্লিষ্ট দু'টি মন্ত্রকের মন্ত্রীদের কাছ থেকেই এ ব্যাপারে বিভাগীয় ইসকুরু টাইটের আভাস এসেছে।
কাজের ছেলে বা কাজের মেয়েকে পশুর মত পিটানো নিয়ে প্রত্যেক মাসে একটা করে প্রতিবেদন আসে পত্রিকাগুলোতে। এসব ঘটনা নিঃসন্দেহে হিমশৈলের চূড়ামাত্র। পত্রিকার সাংবাদিকের নজরে না আসা এরকম আরো হাজারটা নির্যাতনের ঘটনা নিশ্চয়ই আমাদের অগোচরে থেকে যায়।
শাকের ভাইকে দেখে মনে হয়, ভাটার টানে তাঁর শরীর থেকে সব মেদমাংস নেমে চলে গেছে গভীর সাগরে, আর ভেতর থেকে জেগে উঠে আকাশ দেখছে তাঁর হাড়গোড়। তেমন স্বাস্থ্যবান তিনি কখনোই ছিলেন না, কিন্তু যতটুকু থাকলে একটা মানুষকে তার চেহারা ধরে চেনা যায়, তার নাম উঠে আসে মুখে, তার সবই যেন ভেসে গেছে ব্যাধির দুরন্ত টানে। অবশিষ্ট সে অস্থিবিব্রত শরীরটুকু নিয়ে তিনি বিছানায় শুয়ে আছেন।
তোমার দোরে ফিরছে দূরের গাড়ির ঘোড়া
তোমার বাবা ঘোড়ার পায়ে পরাচ্ছে নাল
একটু দূরে জ্বলছে আগুন, কয়লা কালো
দেখছে তোমায়, পুড়ছে, জ্বলে হচ্ছে সে লাল
তোমার কুটির খুঁজছে দূরের অন্ধ নদী
চাইছে বুঝি বাঁকের হদিশ তোমার কাছে
একটু দূরে চুপটি ঝোলে একলা বাদুড়
তোমার পোষা অন্ধকারে হিজল গাছে
আমার পাকি রুমমেটের সাথে পাকিস্তানের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলাপ হচ্ছিলো। ইমরান খান সম্প্রতি পাকিস্তানের ভোটের রাজনীতিতে নিজেকে একটা জোরালো চলক হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছেন, লাহোরে তার ডাকা সমাবেশে নাকি প্রায় চার লক্ষ লোক সমবেত হয়েছিলো, ইতিমধ্যে পাঞ্জাবের তৃতীয় প্রধান রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে তিনি মাথা তুলেছেন, উত্তরপশ্চিম সীমান্তপ্রদেশেও তিনি বেশ জনপ্রিয়, ইত্যাদি শুনছিলাম। সৈয়দ আবার ইমরান খানের বেজায় ভক্ত। তাকে সেনাবাহিনী আর আমলাতন্ত্র নিয়ে কিছু কথা জিজ্ঞেস করতেই বেচারা ব্যাজার হয়ে গেলো। তবে আরো যেটা জানলাম, ইমরানের এই উত্থানকে স্বাগত জানাচ্ছে পাকিস্তানের মিডিয়া।
প্রধানমন্ত্রীর অফিসে আজ বাংলাদেশের বিজ্ঞান, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান আর রুশ আণবিক শক্তি কর্পোরশন রোসাটমের মহাপরিচালক সের্গেই কিরিয়েঙ্কো চুক্তি স্বাক্ষর করলেন [১]। চুক্তি মোতাবেক, পাবনার রূপপুরে দু'টি নিউক্লিয়ার শক্তিকেন্দ্র স্থাপনে কারিগরি সহায়তা করবে রোসাটম। শক্তিকেন্দ্র দু'টির ইনস্টল্ড ক্যাপাসিটি হবে প্রতিটি এক গিগাওয়াট। প্রকল্পটির আকার বোঝানোর জন্যে বলছি
১.
আমাদের জীবনটাই হিমশৈলের চূড়ায় কাটে। সব ঘটনা, দুর্ঘটনা, সিদ্ধান্ত, তর্কবিতর্ক সেই হিমশৈলের চূড়াতেই নিষ্পন্ন হয়। বাকিটা জলের কত গভীরে নেমে গেছে, তা নিয়ে আমাদের অনেকেরই মাথাব্যথা নেই।
কারণ আমাদের অনেকের মাথাই নেই। যাদের আছে, তাদের অনেকে সেটা খামোকা ব্যথা করাতে চায় না।