[ জঙ্গীবাদের মতো এত অচেনা এবং ভয়াবহ সমস্যা সমাধানের জন্য অনেক স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে আলোচনা প্রয়োজন। একের পর জঙ্গী আক্রমণের পর সেই উপলব্ধি থেকেই এই সিরিজের অবতারণা। নিজের মতামত দিয়েই শুরু হোক, পাঠক মন্তব্যে আলোচনা চালানো যাবে। ]
কয়েক দিন আগে সুপ্রিম কোর্টের চূড়ান্ত রায়ের ফলে সমগ্র আমেরিকায় সমকামী বিয়ে বৈধ হয়েছে। ফেসবুক ও অন্যান্য সোশাল মিডিয়ার কারণে এই সংবাদ বহুদূর ছড়িয়েছে, এবং এই রায়ের কারণে বিভিন্ন দেশ ও সমাজে সমকামিতা নিয়ে উচ্চকিত বিতর্ক এখনও চলছে। বিভিন্ন জনের মন্তব্য-প্রতিমন্তব্য অনুসরণ করে দুঃখের সাথে পর্যবেক্ষণ করলাম যে আলোচনাগুলো তথ্যের অভাবে প্রায়ই অকথ্য গালিগালাজ এবং আন্দাজে ঢিল ছুঁড়ায় পর্যবসিত হচ্ছে। লাইন ছাড়া ছুটে বেড়ানো সেই রেলগাড়িকে পথে আনার প্রচেষ্টা হিসাবেই এই লেখা। যেই সমাজ এবং যেই সময়ে এই রায় এসেছে, সেটার স্বরূপ না জেনে আমরা রায়ের মর্ম বুঝতে পারবো না।
ছোটোবেলা থেকে শুনে বড় হয়েছি, যে দেশে গুণীর কদর নেই সেই দেশে নাকি গুণী জন্মায় না। কথাটা বিশ্বাস করতে ইচ্ছে হয়, কিন্তু বাংলাদেশের শিক্ষিত মানুষজনের কার্যকলাপে বিশ্বাসটুকু ধরে রাখা দুষ্কর। মুক্তিযুদ্ধের নয় মাসে ৩০ লক্ষ প্রাণ বিসর্জনে আমাদের যত না ক্ষতি হয়েছে, তার চেয়ে হয়তো বেশি ক্ষতি হয়েছে ১৯৭১-এর ১৪ই ডিসেম্বর বুদ্ধিজীবি হত্যা দিবসে। নয়তো শিক্ষিত, সুশীল, বুদ্ধিজীবি, ইত্যাদি নামধারী কিছু ফাঁকিবাজ ও মেরুদণ্ডহীন মানুষের দৌরাত্ম্য থেকে বেঁচে যেতাম আমরা। এই বিরক্তি এবং বিবমীষার প্রেক্ষাপট হলো বাংলাদেশে বসবাসরত বিদেশি সাংবাদিক ডেভিড বার্গম্যানের সমর্থনে প্রায় ৫০ জন বুদ্ধিজীবির যৌথ বিবৃতি।
বঞ্চনা বড় কঠিন শাস্তি, কিন্তু হতাশা তার চেয়েও বড়। কোনো একদিন মুক্ত আকাশ দেখার আশায় অর্ধেক জীবন অন্ধকার কুঠুরিতে কাটিয়ে দেওয়া যায়; কিন্তু বন্দিত্ব অবসানের কোনো আশা বা সম্ভাবনা না থাকলে কয়েক মাসেও মন ভেঙে যায়, বেঁচে থাকা নিরর্থক হয়ে যায়। আশা নিয়েই তাই জীবন। অন্ধকারে থাকলেও আশা চাই, বেদনায় থাকলেও আশা চাই, গহীন অরণ্যে হারিয়ে গেলেও আশা চাই, উত্তাল সমুদ্রে ভেসে গেলেও আশা চাই, একলা বিকেলে বিক্ষিপ্ত মনেও আশা চাই, বায়ুশূন্য অন্তরীক্ষে নিক্ষিপ্ত হলেও আশা থাকা চাই, জগতের বিশালতায় কুঁকড়ে গেলেও আশা থাকা চাই।
সেই আশাবাজি থেকেই জেগে জেগে ভাবি, এই তো আর কিছুদিন পরেই বাংলাদেশও খেলবে ফুটবলের সর্বোচ্চ আসরে, এই তো কিছুদিন বাদেই বিশ্বকাপে বাংলাদেশ হবে সবার প্রিয় আন্ডার-ডগ দল, এই তো কিছুদিন পরই দুনিয়ার বিভিন্ন দেশ লাল-সবুজ জার্সি পরবে বিশ্বকাপ এলে।
বাংলাদেশে গণতন্ত্র এক কালে ছিলো হ্যালির ধূমকেতুর মতো। বহু বছর পর একবার দেখা যেতো। সামরিক জান্তা যেমন খুশি তেমন ভাবে একে গড়তেন, ভাঙতেন, কোলে রেখে খেলতেন। গত দুই দশকে সেই পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। গণতন্ত্র এখন ধূমকেতু থেকে লোকাল বাস হয়েছে। বিপুল আওয়াজে চলে, বিবিধ জটে আটকা থাকে, এবং কিছুদূর পরপর বিরতি নেয়।
আজ প্রায় দশ বছর হতে চলছে আমার প্রবাস জীবনের। এই দীর্ঘ সময়ে জীবিকার দায়ে অনেক কিছু করেছি। স্বপ্নের দেশ আমেরিকায় অনেকের জীবন আয়েসে শুরু হয়, আমার হয়েছে একদম ঘুঁটেকুড়ানি অবস্থায়। আক্ষরিক অর্থেই তাই।
গত দুই দিন ধরে বাজার গরম দুই নেত্রীর ফোনালাপ নিয়ে। এক সময় পাশে বসে ছবি তুলেছেন, রাজপথে এক সাথে আন্দোলন করেছেন, কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে মিলিটারির ধমক কিংবা বিদেশি শক্তির দাওয়াত ছাড়া কোথাও তাঁদের আলাপ হয়নি। যেটুকু মিথষ্ক্রিয়া হয়েছে, সেটাও হয়েছে মেঠো ভাষণ কিংবা সাংবাদিক সম্মেলনে পূর্বলিখিত বক্তৃতার মাধ্যমে। এই প্রেক্ষাপট বিচারে দীর্ঘ ৩৭ মিনিট ধরে তাঁদের সরাসরি আলাপ তাক লাগানোর মতো ব্যাপার।
তার চাইতেও তাক লাগানোর মতো ব্যাপার হলো দেশবাসীর সেই বক্তব্য শুনতে পাওয়ার সৌভাগ্য হওয়া। যারা এই সুযোগ (?) থেকে বঞ্চিত আছেন, তাদের জন্য রইলো রেকর্ডিং-এর লিংক। জীবন থেকে ৩৭ মিনিট অহেতুক ঝড়ে গেলে আমি দায়ী নই।
আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের দেওয়া রায়ে সরকারের কোনো হাত নেই, তবুও কেন আওয়ামী লীগের এত সমালোচনা করা হয় -- এই প্রশ্ন লীগ-ঘেঁষা যেকোনো মানুষের। তারা আরও বলে থাকেন, জামায়াতের হাতে নিহত-আহত হয়েছেন শুধুই ছাত্রলীগের কর্মীরা, তাই কোনো আঁতাতের অভিযোগ তাদের কাছে বিস্ময়কর। সবশেষে তারা জানতে চান আওয়ামী লীগকে কেন বিচার শুরু করার জন্য বাহবা দেওয়া হয় না।
আমেরিকার গণতন্ত্রের একটা দারুণ দিক হলো মধ্যবর্তী নির্বাচন ("মিডটার্ম ইলেকশন")।
এই পোস্টের বিষয়বস্তু "হায়েনা"।
বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত খবরের শিরোনাম এবং চুম্বক অংশে বলা হচ্ছে, "ফেসবুক স্ট্যাটাসে প্রধানমন্ত্রীকে ‘হায়েনা’ ডাকায় বুয়েটের প্রভাষককে সাত বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।"
এটুকু পড়ে আওয়ামী-/হাসিনা-বিদ্বেষীদের ক্ষিপ্ত হওয়ার কারণ আছে, বুয়েটের ছাত্র-শিক্ষকদেরও ক্ষিপ্ত হওয়ার কারণ আছে। এই ক্রোধের সাথে সহমর্মিতা রেখেই মুদ্রার অপর পিঠের দিকে তাকানোর অনুরোধ করছি। প্রথমে এ-পিঠ দেখি।