যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ব্লগ

সাইলো

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি
লিখেছেন যাযাবর ব্যাকপ্যাকার (তারিখ: মঙ্গল, ১৬/০৯/২০১৪ - ১:৪১পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:



ছন্নছাড়া খেলনারা

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি
লিখেছেন যাযাবর ব্যাকপ্যাকার (তারিখ: বুধ, ২৭/০৮/২০১৪ - ৯:০৫অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

খুব ছোটবেলায় বাংলাদেশ প্রবাসী এক নরওয়েজিয়ান পরিবারের আমার বয়সী এক পিচ্চি মেয়ের ডল-হাউজ দেখে খুব শখ হয়েছিলো আমারও একটা ওরকম থাকা দরকার। পুতুলের জন্যে ঠিক তার নিজের বিছানার মতো কাঁথা-বালিশ-বেডকভার সহ রট-আয়রনের ডিজাইন করা খাটও ছিলো। দুই বালিকার ভাষা এক ছিলো না, কিন্তু খেলতে সমস্যা হয়নি। শুধু রাতে নিজের বিছানায় ঘুমাবার সময়ে বাবা-মাকে ঐরকমের পুতুলের ঘর দেয়া যাবে কিনা, খাট সহ, জানতে চেয়েছিলাম। খুব বেশি ক্লান্ত থাকায় সেরাতে বা পরবর্তীতে ব্যাপারটা নিয়ে আর ঘ্যান ঘ্যান করার সুযোগ হয়নি। আর একটু বড় হলে খেয়াল করতে পারতাম, যে আমার বাবা-মা নিজেদের মাঝে দৃষ্টি বিনিময় করছেন, ওরকম দামী খেলনা দেয়ার সাধ্য তাদের নাই ভেবে।


আনাড়ির সসেজপেঁয়াজা

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি
লিখেছেন যাযাবর ব্যাকপ্যাকার (তারিখ: মঙ্গল, ১৩/০৫/২০১৪ - ১:২৪পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

পেমের কোবতে অনুবাদ করে বেলাইনে চলে গিয়েছিলাম, লাইনে আসার জন্যে খুন-জখম গল্প অনুবাদ করছিলাম অ্যাজ প্রমিজড। কিন্তু ক্ষুধা লাগলে আমার আর মাথা কাজ করে না, ফ্রিজ খুলে দেখি ভাত আছে, কিন্তু সাথে আর কিছু নাই, কিছু পুরানো সসেজ ছাড়া। তাই আনাড়ি এখন সসেজ রান্না করে ঠাইসসা ভাত খায়। খুন-জখম পড়বার আগে পেট ভরে সবাই ভাত খান। আর সেই জন্যে আনাড়ি রাঁধুনিদের উপযোগী সসেজপেঁয়াজা রন্ধন প্রণালী পোস্ট দেই। আনাড়িদের জন্যে আশ্বাসের কথা হলো, এইখানে খুবই কম উপকরণ ব্যবহৃত হয়েছে। এবং পুরো প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে আধা ঘণ্টাও লাগে নাই।


শূন্যের অস্তিত্ব

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি
লিখেছেন যাযাবর ব্যাকপ্যাকার (তারিখ: মঙ্গল, ০৬/০৫/২০১৪ - ৮:৩১অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

সেদিন আনন্দ দিদির পোস্টে মন্তব্য করতে গিয়ে মনে হলো, ঠিক আছে, সচলায়তনে পোস্ট দিয়েই রাখি, কেউ পড়লে পড়বে, না পড়লেও ক্ষতি নাই।
আপাতত আমি ধুমায়ে মার্ডার-মিস্ট্রি-খুন-জখম পড়ছি। নেরুদার মতো বিখ্যাত কারও, প্রেমের মতো জটিল বিষয়ের কবিতা আনাড়ি হাতে অনুবাদ করার ফলে সচলেরা আমাকে প্যাদানি দেয়ার আগেই আশাকরি কয়েকদিনের মাঝেই ফর্মে চলে আসবো একটা খুন-জখম অনুবাদ নিয়ে! দেঁতো হাসি


সাইকেল! সাইকেল!!

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি
লিখেছেন যাযাবর ব্যাকপ্যাকার (তারিখ: বিষ্যুদ, ২৭/০৩/২০১৪ - ২:২৬পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:


“এই যে! এই যে! বললাম না? প্রতিদিনই যায়!”
মাথার উপরে আওয়াজ পেয়ে মুখ তুলে দেখি তিনতলা বাসার দোতলার দুই ফ্ল্যাটের দুই ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে এক, দুই, তিন – তিনজন বছর ৩-৮এর খুকী। ডানের ব্যলকনিতে দাঁড়ানো পিচ্চি সাথীদেরকে নিজের পূর্বোক্ত কোন কথার হাতেনাতে প্রমাণ দিতে পেরে মহা ভাব নিয়ে কোমরে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে। আর বামের বারান্দায় দাঁড়ানো অপর দুই পিচ্চি চোখ গোল গোল করে আমাকে দেখছে।


ছন্নছাড়া ০৫

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি
লিখেছেন যাযাবর ব্যাকপ্যাকার (তারিখ: রবি, ১৬/০২/২০১৪ - ৮:৩২অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

ছন্নছাড়া আবহাওয়া

আবহাওয়াটা এমন, যে কাজে মন দেয়া যাচ্ছে না। অথচ এখন আমারই কাজ বাকি, আমি দেরি করলেই কাজ পেছাবে। কিন্তু এমন বিকাল-সন্ধ্যায় একটা বই হাতে বের হয়ে যেতে হয় ঘর থেকে, একটু দূরে কোন ক্যাফেতে বসে বৃষ্টি ধোয়া গোধূলী মিলিয়ে যেতে যেতে সন্ধ্যার ইলেট্রিক বাতিতে সজ্জিত হয়ে উঠতে দেখা যায় আলোকিত শহরকে।

আমাদের ছোট শহরে সেরকম নিরিবিলি জায়গা কম। শহরের কেন্দ্রে সবথেকে ব্যস্ত বাজারে একটা চারতলা বিল্ডিং-এর তিনতলায় একটা ক্যাফে আছে, সেখানে চারিদিকে গ্লাস দিয়ে ঘেরা জায়গায় টেবিল আছে। ইচ্ছা করছে ঐখানে চলে যাই। বইটা থাকবে খোলা, কিন্তু পড়া হবে না, ধোঁয়া ওঠা মগের উপর দিয়ে শুধু আনফোকাসড দৃষ্টিতে দেখা হবে দুই-তিন তলা মার্কেটের উপর দিয়ে পুরানো শহরের মাথার উপর দিয়ে নদীর দিকের বৃষ্টিধোয়া দূরের আকাশ।

কিন্তু যাওয়া হবে না।


রাজশাহীনামা - ০৭

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি
লিখেছেন যাযাবর ব্যাকপ্যাকার (তারিখ: মঙ্গল, ১৫/১০/২০১৩ - ৩:৪৮পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

ছোটবেলায় প্রথম পূজো দেখার স্মৃতি আব্বার হাত ধরে, রাজশাহী শহর থেকে আধা ঘণ্টার দূরত্বে, পুঠিয়ায়। দুর্গাপূজোর ছুটিতে বাসে চড়ে পুঠিয়ার রাজবাড়ি দেখতে গিয়ে পুজামণ্ডপও ঘুরে দেখা হয়েছিলো, সেটা মনে হয় ক্লাস থ্রি বা ফোরে। তার আগে ঢাকায় থাকতে এ সুযোগ হয়নি। এরপরে শহরের অলিতে গলিতে ঢাক-বাদ্য আর মণ্ডপের আলোকচ্ছটা দেখেছি বহুবার।

প্রায় এক দশকের বেশি সময় ঘুরে ঘুরে পূজো দেখা হয়নি। ২০১১-তে ঠিক করে রেখেছিলাম প্রতিমা তৈরি দেখতে হবে। ঘুরতে ঘুরতে হাজির হয়ে গেলাম গণকপাড়ার বৈষ্ণব সভার দোরে, ভেতরে কারিগরেরা তখন মহাব্যস্ত।


আর কত শেখাবে গ্রামীণফোন?!

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি
লিখেছেন যাযাবর ব্যাকপ্যাকার (তারিখ: মঙ্গল, ২৪/০৯/২০১৩ - ৫:১১অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

সাম্প্রতিক টিভি কমার্শিয়ালগুলো দেখেছেন নিশ্চয়ই সবাই? টিভি ছাড়লেই তো হরেক রকমের মোবাইল ফোনের রকমারী অফারের বিজ্ঞাপনে মূল অনুষ্ঠান দেখাই দায় হয়ে দাঁড়ায়, এক টক-শো বাদে! তা বাঙালী কথা বলে বটে! কিন্তু এই কথা বলার হাজারো তরিকার মাঝে চিপাচুপা দিয়ে যে মেসেজগুলো পাচ্ছি, তা দিয়ে শিখছি অনেককিছুই, হিন্দি সিরিয়ালের মতো করে নাচনাগানা, যেখানে খুশি সেখানেই ইন্টারনেট ব্যবহার, ইত্যাদি কত্তকিছু!

তবে সবথেকে ভালো লাগে যখন মাঝেমাঝেই গ্রামীণফোন অগ্রদূত হয়ে এসে শিখিয়ে যায় কেমন করে জাতীয় সঙ্গীত গাইতে হবে সেই তরিকা থেকে শুরু করে পড়ালেখা না করেই শিক্ষকের পিছে পিছে ঘুরে, তার কন্যার (ক্ষেত্রবিশেষে পুত্রও হতেই পারে!) পতন রক্ষা করে কীভাবে পরীক্ষার নম্বর বাড়িয়ে নিতে হবে সেই তরিকা!


রাজশাহীনামাঃ প্রজন্ম রাজশাহী

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি
লিখেছেন যাযাবর ব্যাকপ্যাকার (তারিখ: শনি, ০৯/০২/২০১৩ - ৪:৫৫পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

শাহবাগে সর্বস্তরের সাধারণ মানুষ অবস্থান নিতে শুরু করার পর থেকেই অস্থির হয়ে উঠছিলাম। একেতো হরতাল, ঘর থেকে বের হওয়া হয়নি, ফেসবুক বা বন্ধুবান্ধব পরিচিতজনদিয়ে রাজশাহীতে সাধারণ মানুষের প্রতিবাদ সমাবেশের কোন আওয়াজই যেন ছিলো না অন্তত প্রথম দিনটা।

এটা ঠিক রাজশাহীতে সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোর নড়াচড়াও যেন ঢাকার হাইকমান্ড না পাওয়া পর্যন্ত ঠিক শুরু হয়ে ওঠে না তা আজ বছর তিরিশেক ধরেই। বাবা-মাদের তরুণ যুগের রাজশাহী আর এখনকার শহরে অনেক ফারাক। তা সেই ফারাকটা মনে হয় জেনেরেশন গ্যাপ-ই হবে, শুধু আমার শহর না, পুরো দেশ জুড়েই। সবখানেই যেন আমরা আমাদের প্রজন্ম 'ধরি মাছ, না ছুঁই পানি' করে পাশ কাটিয়ে যেতে চাই সব ইস্যুকেই।

যখন বেশ ভালো রকমের বিরক্তি নিয়ে নিজেদের দম ফেলার ছোট্ট পরিসর ‘আমাদের রাজশাহী’ গ্রুপে জিজ্ঞেস করছি, “ঘটনা কী, জাগো বাহে, কুন্ঠে সবাই? “ হুট করেই চোখে পড়লো রাজশাহীর সাধারণ শিক্ষার্থীদের তৈরি করা দু’টো ছোট্ট ইভেন্ট। আলুপট্টির মোড়ে কসাই কাদের মোল্লাসহ সকল রাজাকারের ফাঁসির দাবিতে সমবেত হতে ৭ তারিখ দুপুর আর ৮ তারিখ বিকেলে আহ্বান জানানো হচ্ছে রাজশাহীবাসীকে।


বাড়িওয়ালি

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি
লিখেছেন যাযাবর ব্যাকপ্যাকার (তারিখ: শনি, ০২/০২/২০১৩ - ১১:৩৪অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

ঢাকা থেকে ছাড়া সকাল দশটার একতা এক্সপ্রেস পথে পাক্কা আড়াই ঘণ্টা দেরি করায় পার্বতীপুর স্টেশনে পৌঁছাতে আকাশের রাত প্রায় ন’টা বাজলো। স্টেশনের উল্টোদিকের বাড়িগুলোর উপরে তখন রাতের তারাভরা স্বচ্ছ আকাশে চাঁদটা কেবল উঁকি মারছে। কুয়াশা না থাকলেও হিম হাওয়া বরফের ব্লেডের মতোন গাল চিরে যাচ্ছিলো।

“আচ্ছা, কাছেপিঠে কোন সুলভ হোটেল হবে কিনা জানেন নাকি ভাই?”, কুলিকে জিজ্ঞেস করে আকাশ।

“নিদ্রাকুসুম ইন-এ দেখতে পারেন।” রাস্তার মাথার দিকে ইঙিত করে লোকটা, “এই এক কিলোমিটার সামনে গিয়ে ডাইনে।“

ধন্যবাদ দিয়ে নিজের ট্রাভেল ব্যাগটা নিয়ে হাঁটা দেয় আকাশ। আগে এদিকে আসেনি কখনো, এখানে কাওকে চেনেও না। হেড অফিসের মজিবর সাহেব বলেছিলেন শহরটা দারুণ। “নিজের থাকার ব্যবস্থা নিজে করে নিবা বুঝলা? তারপর সোজা গিয়ে ব্রাঞ্চ ম্যানেজারের সাথে দেখা করবা।“