বউকে আপিসে দিতে যাইতেছিলাম। হঠাৎ জানলা দিয়া চাইয়া দেখি, আমাগো অরূপদার টাক দেখা যায়! সাথে সাথে আর কি, মোবিল বাইর করিয়া দিলাম কিলিক!
আব্বার সাথে রাশেদের আজ আশ্চর্য শত্রুতা। আজ সারাদিন, দিনমান। ছোট্ট চায়ের টেবলের দু'পাশে ওরা দু'জন ঠিক দুই যুযুধানের মতন দাবার গুটি নিয়ে বসে আছে সকাল থেকে। কখনও গালে হাত, কখনও বাঁকানো ভ্রু, কখনও চুপচাপ।
সূচীপত্রের সিঁড়ি বেয়ে আমি টপাটপ নামতে থাকি, আটাশে গিয়ে থামবার কথা, কিন্তু তেইশ পর্যন্ত গিয়েই থেমে যেতে হলো! মাওলা ব্রাদার্স থেকে বের হওয়া গাট্টাগোট্টা আকৃতির বই, আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের রচনাসমগ্র প্রথম খন্ড। বইয়ের শেষের ফ্ল্যাপে প্রকাশক বলে দিয়েছেন ইলিয়াসের আটাশটা গল্প নিয়ে এই সমগ্র, এমনকি ভুমিকায় লেখকের ছোট ভাই খালিকুজ্জামান ইলিয়াসের বক্তব্যও তাই, গল্প আছে এখানে আটাশটি। ক...
মাঝখানের কিছু বছর আমাদের বন্ধুদের এমন একটা সময় গিয়েছিলো, যখন আমাদের সবার ২য় ঠিকানা ছিলো শান্তর বাসা।
শান্তর বাসার খোঁজ কখন কেমন করে যে পাই, এতদিন পরে আমার আর সেসব কিছু মনে নেই। কিন্তু পাবার পর থেকে এমন হতো যে, প্রায়শই আমরা, বন্ধুরা, নিজেদের সবাইকে আবিষ্কার করতাম শান্তর বাসায়। কারন সহ বা কারণ ছাড়াই। খিদে পেলে বা না পেলে। আড্ডা দিতে চাইলে বা না চাইলেও। বাবা-মা র সাথে অভিমান করে দিনে...
যাযাবরের সেই বিখ্যাত লাইন স্মরণীয়- বিজ্ঞান দিয়েছে বেগ, কেড়ে নিয়েছে আবেগ।
আবেগের দিকে এখন আর না যাই, বেগ নিয়ে যদি বলি, তো বলতেই হবে, কথা সত্য। প্রাত্যহিক সব কাজ-কর্ম নিঃসন্দেহে গতি-প্রাপ্ত হয়ে গেছে বিজ্ঞানের কল্যাণে। আর আমার মত কিছু সুযোগ সন্ধানী মানুষজন নিজের আলসে স্বভাবটাকে এই সুযোগে পাখির ডিমের মত তা দিয়ে দিয়ে বাড়তে দিয়েছে।
লিখবার জন্যে কাগজ কলমের ব্যবহার অনেক আগেই কমিয়ে দিয়...
ইলিয়াস আমাদের কাছে খুব বেশি মালমশলা রেখে যান নাই, মাত্র ২৮ টা গল্প, অল্প কিছু প্রবন্ধ আর ২ টি উপন্যাস, সাকুল্যে এই আমাদের সম্পদ। কিন্তু অল্প সংখ্যক লেখা দিয়াই তিনি নিজের স্টাইল দাঁড় করে ফেলেছেন। যে কারণে ইলিয়াসের লেখা পড়েই আমাদের বুঝতে অসুবিধা হয় না এটা কার লেখা।
তো কি সেই স্টাইল?
আমি জেনারালাইজড করতে পারছি না। তবে নিজের পাঠানুভুতি বলতে পারি।
ইলিয়াসের সবচেয়ে সমৃদ্ধ লাগে বর্ণনা...
যদি সত্যিই তুমি আমার কথা শুনতে পাও,
ওদের বাগান তুমি ফুল শূন্য করে দাও দয়া করে,
ওরা ফুল টিপে মেরে ফেলে।
আর কোন বাবা যেন ওদের সংসারে না আসে।
আর কেউ যেন মা, ভাই কিংবা বোন না হয় কারও।
ওদের ঘরে তুমি আর কোন শিশুর জন্ম দিও না, প্লিজ।
তুমি কি দেখতে পাচ্ছো না যে,
ওরা শিশুদের গুলি করে মেরে ফেলে!
---------------------------
আমার দুই হাত ভর্তি একগাদা জিনিস, মাত্রই বাংলাদেশী একটা দোকান থেকে বের হয়ে ফিরতি পথ ধরেছি, গাড়ির দরজা খুলতে গিয়ে ঝামেলায় পড়লাম। কী করবো ভেবে না পেয়ে শেষমেষ দাঁত দিয়ে একটা পলিথিনের ব্যাগ কামড়ে ধরে কোনমতে দরজা খুলে ভেতরে ঢুকে গেলাম। খানিকক্ষণ বড় বড় নিশ্বাস ফেলে একটু স্বাভাবিক হয়ে গাড়ি স্টার্ট দিয়েছি কি দেইনি, হুট করে মাথায় পাগড়ী আর মুখ ভর্তি দাঁড়ি এক শিখ ভদ্রলোক প্রায় লাফিয়ে আমার ...
রোজ সকালে আড়মোড়া ভেঙে ওই একটা সবুজ তোয়ালেতেই মুখ মুছি প্রতিদিন।
রোজ একই জুতা জামা গায়ে, সেই একই রাস্তা ধরে-
একই গন্তব্যে পৌঁছে যাই বারবার।
দুয়েকটা রঙীন ফানুস এসে মাঝে মাঝে,
খানিকটা রঙধনু ধার দিয়ে যায় হয়তো-
আমাদের দুজনের চোখের জল আজ,
মিলেমিশে মুখ লুকিয়ে হাসে।
এরকম অভ্যস্ততায় কতগুলো দিন কেটে গেলো!
একটাই জানলা দিয়ে রোজ, দুয়েকটা চড়ুই এসে পড়ে-
কী আশ্চর্য, আমরা দুজন একটি ঘরে থাকি!
অথ...
আমি সোফার এক কোনায় পায়ের উপর পা তুলে আরেকটু আরাম করে বসে গলা উঁচিয়ে বললাম, চাচামিয়া, শেখ মুজিবরে নিয়াও কিছু বলেন, ওনারে আপনের কেমুন মনে হয়?
চাচা একটা গলা খাঁকারি দিলেন, তারপর প্রায় অদৃশ্য কোন একটা জায়গা থেকে একদম জুয়েল আইচের স্টাইলে একটা পান বের করলেন। তারপর শূন্যে সপাং সপাং খানিক্ষণ ঝেড়ে মুছে, পুরাই রজনীকান্ত স্টাইলে সেটা মুখে চালান করে দিলেন। পুরো পরিবেশটাই এমন সিনেমাময় যে, খা...