প্রথম পর্ব
বেড়ার কাণ বা ছিদ্র দিয়ে উঁকি মারাটা তার অভ্যাস থেকে এখন রুটিন হয়ে দাঁড়িয়েছে, বন্ধুরা তাই তার নাম দিয়েছে কাণসিং। লোকজন এখন নিজের বাড়ীতে নিজের বউকে আদর করতে লজ্জা পায়, পূর্ণিমাপক্ষের রাত্রিগুলোতে একটু রোমান্টিক হবার সুযোগ নেই; কার দিকে চোখ রাখবে তারা, বউয়ের, না জানালার ফাঁকে, নাকি বেড়ার ছিদ্রে? বেড়াটেড়ার ছিদ্র নিয়ম করে কয়দিন আর বন্ধ করে রাখা যায়, মানুষটা বিন্দুর মতো ছিদ্র দিয়েও যখন গোটা দুনিয়া দেখতে পায়, আর না দেখার জিনিষগুলো তো দেখে আরো বেশি।
তুলসীতলায় প্রতিদিন কুকুরটি এসে মুতে (শব্দটি অ-কুকুর সমাজে সেন্সরড হতে পারে) চলে যায়..
সকালে কিংবা বিকালে, কোন কোনদিন রাতের বেলা, সুযোগ বুঝে যখন কেউ দেখে না...
কুকুরটি পালিত নাকি বেওয়ারিশ, কেউ জানেনা...
এ সময়টিতে সাধারনত ধর্মকর্মের ধুম পড়ে... এখানে ওখানে মন্দির তৈরীর উৎসব চলে আর চতুর্দিকে লেগে থাকে পূজার্চ্চনা... এ সময়টিতে ঘরে ঘরে ধর্মের পতাকা উড়ে পতপত...
রবিবারের সকাল। নরেন্দ্র চোখের চশমা মুছতে মুছতে বেডরুম থেকে বের হয়ে ড্রয়িংরুমে, টিভির সামনে ঠিকঠাক হয়ে বসলো। স্ত্রী সুরবালা কিচেন থেকে জিজ্ঞেস করল, 'এই, শুরু হয়েছে?'
'না।'
সুরবালা ব্রেকফাস্ট রেডি করতে ব্যস্ত। হাতে বেশি সময় নেই তাই এত তাড়া। একটু পরে আবার জিজ্ঞেস করে, 'শুরু হলো?'
'না। শুরু হলে তো ডাকবই। মিউজিক তো ওখান থেকেই শুনতে পাবে।'
এমন সময় একটা স্কুটার তাদের বাসার গেটে এসে দাঁড়া ...
বাংলাদেশের অন্যান্য ক্ষুদ্র জাতিসত্তা বিশেষ করে পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়িদের থেকে মণিপুরিদের জাতিগত সংকট ও বিপর্যয়ের চেহারাটা কিছুটা ভিন্ন। মণিপুরিরা বাস করে সমতলে- বৃহত্তর সিলেট, মৌলবীবাজার, হবিগঞ্জ ও সুনামগঞ্জের নানান অঞ্চলে ছড়িয়ে ছিটিয়ে। তারা এসেছে মণিপুর নামের একটি প্রাগৈতিহাসিক ভূখন্ড থেকে, যে ভূখন্ডটি ১৮৯১ সালে এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে বৃটিশরা দখল করে নেয় ...বাংলাদেশের অন্যান্য ক্ষু
দরিদ্রতা এবং সভ্য সমাজের বিরূপতার শিকার হয়ে চরম বিপন্নতার মুখে পড়েছে শব্দকর জনগোষ্ঠি। হতদরিদ্র এই প্রান্তিক জনগোষ্ঠির বাস বাংলাদেশের সিলেট ও মৌলবীবাজার জেলায়। সমকালীন ইতিহাসে দারিদ্রের যে সীমারেখা চিন্হিত করা হয় শব্দকরেরা তার চেয়ে অনেক নীচু অবস্থানে জীবন অতিবাহিত করে। স্থানীয়ভাবে তারা 'ডুকলা' নামে পরিচিত। ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ সম্পাদিত "বাংলাদেশের আঞ্চলিক ভাষার অভিধান" ...
প্রিয় খাবারের কথা এলে বাঙালীরা সবার আগে যেমন ইলিশের কথা বলে,তেমনি মণিপুরীদের প্রিয় খাবারের তালিকায় যে নামটি সর্বাগ্রে আসবে তা হলো য়ংচাক বা লনচাক। পার্থক্যটি হলো ইলিশ থাকে নদীতে আর য়ংচাক ধরে গাছে! মণিপুরী মুসলিমদের কথা বাদ দিলে মণিপুরীদের অধিকাংশই ভেজিটেরিয়ান এবং সেমি ভেজিটেরিয়ান (মাছ খায়, কিন্তু মাংস খায়না)। অষ্টাদশ শতকে মণিপুরীরা গৌড়ীয় বৈষ্ণবধর্মের বলয়ে আসার পর খাবার দাবা...
ভুমিকায় কবি বলছেন - এ কবিতাগুলো আমার বড়ো আদরের, ভালবাসার। খুবই নাজুক কবিতা, একটু বকাঝকা করলে কেঁদে ফেলবে, চড় মারলে তো বিপদ। চিৎকার চেঁচামেচি জুলুম আর ঝঞ্জাপীড়িত দুনিয়ায় এই নীরব আলুলায়িত কবিতার শরীর ভেতরে যে একটি প্রান্তিক বেদনার আত্মাকে ধারন করে আছে, সেইখানে নিমন্ত্রন।
সাধারন দুস্তবকের অক্ষরবৃত্তের হিসাব থেকে ইচ্ছে করেই দ্বিতীয় স্তবকে একটি লাইন কমালাম। চলনে একটি বিঘ্ন থাক...
ধনঞ্জয় রাজকুমার
আ মা র ক বি তা
এক.
নিজেদের নিষ্ঠুর যন্ত্রনার অস্তিত্ব আমরা অস্বীকার করতে পারিনা। এবার তো আমাদের হৃৎপিন্ড ফালি করা ফোটা ফোটা রক্ত দিয়ে কবিতা লেখবো। গভীর রাতে ঘুমের ভেতরে আমরা চিৎকার করে উঠি। কবিতা তুমি বিশুদ্ধ, তুমি পবিত্র, তুমি আমার ঘৃণা - মৃত্যু - পাপ - ঈশ্বর। ঈশ্বরের সাথে তুলনা করতে যেয়ে দেখি আমি কতখানি নিম্নজ, কতখানি অসহায়। আমাকে অংহকারী কর। আমি কবিতা লিখি, আমা...
সন্ধ্যে হলে দলংদের বাঁশঝাড়ের ফাঁক দিয়ে মিটমিট আলো জ্বেলে উড়ে যায় আশ্চর্য জোনাকির দল। কয়েকটাকে ধরে বোতলে ভরতে যাবে এমন সময় মা বলে উঠে, এটা পাপ বাবা। জোনাকি ধরলে রাতে খারাপ স্বপ্ন দেখবি। মার কথা গ্রাহ্য করেনা দলং। বোতলের জোনাকি ধানের গোলার আড়ালে লুকিয়ে রেখে ভাবতে বসে, জোনাকি কোথা থেকে কিভাবে ঐ আলো পায়। ছেড়ে দিতে হতে পারে এই ভয়ে মাকেও জিজ্ঞেস করা হয়না। আবার মায়ের বলা স্বপ্নের আশ...
আমাদের সামনের রাস্তায় প্রথম যেদিন বাস চলল সেদিন আমরা ভাবলাম পৃথিবীটা আক্ষরিক অর্থেই ছোট হয়ে আসছে, খুশী হলাম, এবং মাত্র আধমাইল দুরবর্তী আদমপুর বাজারে যাবার বাসের জন্য অপেক্ষা করতে করতে বুঝলাম প্রখর রৌদ্রে বসে থাকার মধ্যেও আনন্দ আছে। তাছাড়া বাসগুলোতে নতুন নতুন হিন্দী গান বাজছিল বলে আরেক ধরনের রোমাঞ্চ অনুভব করলাম মনে, প্রকৃতপক্ষে বাসের চারটি চাকা মানুষকে যার যার গন্তব্যে নেয়া ছাড়াও আর কি কি করতে সক্ষ