আব্বা তুমি নাকি হাতির খেলা দেখাও?
শিশু নাসিরুদ্দিনের কথায় একটু হাসে আজিম, হ দেখাই। এখন খা।
আলুভাজি রুটির দিকে তাকালোই না নাসিরুদ্দিন। মুগ্ধ চোখে পিতার মুখের দিকে তাকিয়ে বলল, আমারে নিয়া যাইবা আব্বা হাতির খেলায়? আমি তোমার মত হইতে চাই। আমারে খেল শিখাইবা?
পাশে বসা নাসিরুদ্দিনের মা একটু শিউরে উঠে ছেলেকে একহাতে জড়িয়ে বলে না না, হাতির খেল তোরে শিখতে হইব না। তুই লেখাপড়া কইরা কাছারিতে যাবি, দেখবি তোর কত সম্মান হইব।
কাছারিতে কি হাতি আছে আম্মা?
উইলিয়াম ম্যাকালক সম্পাদিত ১৯১২ সালে প্রকাশিত Bengali Household Tales অবলম্বনে আজকের গপ্পো ছাগল, বাঘ আর হনুমানের কিচ্ছা।
…........................................................................
একপাল ছাগল নিয়ে কিছু লোক শহরে যাচ্ছিল বেচতে। পথে এক মাদী আর মদ্দা ছাগলের হল প্রেমপিরীতি। প্রেমিক ছাগল বলল, “হে ভালোবাসা। এই দুষ্টলোকেরা আমাদের নিয়ে বেচে দিবে বাজারে, তারপরে যারা কিনবে তারা বাসায় নিয়ে আমাদের কেটেকুটে ভুনা করে খাবে। গ্রামগঞ্জে পলায়াও লাভ নাই আবার এরা ধরে বেচে দিবে বা কেটেকুটে ভুনা কষাবে। হায় নিষ্ঠুর জীবন, বাঁচার উপায় কি?”
ড্যানসবর্গ দূর্গ, থারাঙ্গাম্বাড়ি, দক্ষিণ ভারত। জুলাই ১৬৪৪।
কুঠিসর্দার উইলেম অবিশ্বাসের স্বরে বললেন, পুরা নাঙ্গা?
পাশের লোকটি মাথা ঝাঁকিয়ে বলল, অবশ্যই পুরা নাঙ্গা। গায়ে সুতাটাও নাই, একবারে নাঙ্গাপুতু। আর হাতে খোলা তলোয়ার।
তারপর?
১৫২৭ বা ১৫২৮ সালের কোন এক ঝড়ের রাত। বঙ্গোপসাগর।
উথাল পাথাল অবস্থা, মট করে জাহাজের মাস্তুল উড়ে গেল এক ঝটকায়। এত বড় জাহাজ নড়ছে যেন কাগজের নৌকা। কাপ্তেন আলফন্সো আর তার সাঙ্গপাঙ্গরা যে যেরকম পারে শক্ত কিছু ধরে আছে আর বিড়বিড় করে হা ঈশ্বর হা ঈশ্বর করছে। ক্লান্ত হুয়ান হঠাৎ হাত ফসকে ছিটকে উড়ে পড়ে গেলো সাগরে, চোখের নিমিষে কালো পানি যেন গিলে নিল তাকে। জাহাজের সকলে ভয়ার্ত স্বরে সকলে আউড়ে চলেছে এম নম দো পায় দো ফিলিও দো এস্পিরিতো সান্তো...
নতুন টুইটার শিখেছি। বেশ ইন্টারেস্টিং জিনিস, জামাতির পেছন দিয়ে বংশদন্ড প্রবেশের জন্য উত্তম হাতিয়ার। ভেবে দেখলাম জামাতির গুষ্টি বাঁশেরকেল্লা গড়বে তাতে আশ্চর্যের কিছু নাই, যে হারে লোকে এগুলিরে বাঁশ দেয় দুইচারটা কেল্লা বানানো তেমন কঠিন নয়।
আলিনগর আর কালীনগর পাশাপাশি। আলিনগরে দশজনে আটজনই হোসেন। সবাই হোসেন এইটা বলা অবশ্য ঠিক হল না, কেউ হোসেন কেউ হুসাইন কেউ হুসেন। নানান তরিকার বানান। যে যার পদবী মেনে চলে, পদবী খুব ভারি জিনিস আলিনগরে। হোসেন ছাড়া সেখানে আছে কিছু আহমেদ, আর গুটিকয় খান কিংবা রহমান। ও না থাকার মতই। আলিনগরে হোসেনই জাতীয় পদবী।
মাঠের চিপায় লম্বা দুইটা ঘাস ভুরু কুঁচকে তাকিয়ে আছে কিছুক্ষণ ধরে। লক্ষণ সুবিধার না। দুইটা ঘাসের মধ্যে একটা একটু বেশী লম্বা আরেকটা লম্বায় কম। তবে আশপাশের আমঘাসের তুলনায় তাদের উচ্চতা চোখে লাগে ঠিকই।
একটু বেশী লম্বা ঘাসের বয়স বেশী। সে ঘাড় ঘুরায় একটু কম লম্বা ঘাসকে বলল, ঘটনা ঘটতে পারে আজকে।
ঢাকার নবাব শায়েস্তা খাঁর সাথে যখন আরাকানের রাজার সঙ্গে যুদ্ধ চলছিল তখন আমি১ ঢাকা যাই। শায়েস্তা খাঁ ছিলেন অতি চতুর ব্যক্তি, আরাকান রাজার অফিসারদের কোথায় কাকে কত টাকা ঘুষ দিতে হবে তা ছিল তার নখদর্পনে। এছাড়া আরাকানরাজের অধীনে কাজ করা পর্তুগীজদেরও তিনি ভাগিয়ে আনেন।
১৪ জানুয়ারি আমি নবাবকে সেলাম জানাতে তার প্রাসাদে যাই। তার জন্য ভেট নিয়েছিলাম সোনালি জরির কাজ করা রেশমি কাপড় আর বহুমূল্য একটি পান্না। সন্ধ্যায় আমি ওলন্দাজদের কুঠিতে ফেরত যাই, তাদের সাথেই আমি থাকছিলাম ঢাকায়। সেখানে নবাব পাঠালেন বেদানা, দুইটি পারস্যের তরমুজ আর তিন রকম আপেল।
দুপুর দুটো বেজে এক মিনিট। বিজ্ঞাপন তরঙ্গে সময় হল বিবি লজেন্স সঙ্গীতমালার।
১৮১১ এর ২৭ মার্চ লন্ডনে টাইমস কাগজে বিজ্ঞাপন বেরোয় যে অবসরপ্রাপ্ত ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর অফিসারদের আর ভয় নাই, এইবার তারা ঝাঁ চকচকে নূতন হিন্দুস্তানি কফি হাউসে “নিখুঁতভাবে তৈরী ভারতীয় খাবার” চেখে দেখতে পারবেন। চার্লস স্ট্রীট আর জর্জ স্ট্রীটের কোণায় এই কফি হাউস, পোর্টম্যান স্কয়ারের কাছের এই জায়গা ততদিনে অ্যাংলো ইন্ডিয়ানদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। রেস্টুরেন্টের ভেতর ভারতীয় নানাবিধ দৃশ্যাবলীর ছবি টানানো দেয়ালের পাশে বাঁশ বেতের চেয়ারে হেলান দিয়ে বসে তারা ফেলে আসা ভারত উপমহাদেশের কথা ফেলে দীর্ঘশ্বাস ফেলত আর অর্ডার করত কারি। আলাদা ধূমপান কক্ষে তারা টান দিত হুক্কায়। চার্লস স্টুয়ার্ট বলে এক লোক ছিল, দুষ্টলোকে কইত তার নাকি ষোলখানা ভারতীয় বউ আর সে নাকি রোজ ভোরবেলা গঙ্গায় ঢিপ ঢিপ ডুব দিয়ে গোসল করত, সেই স্টুয়ার্ট সায়েব এই জায়গার নাম দিয়েছিলেন “হুক্কা ক্লাব”।
রেস্তোরাঁর ভারতীয় মালিক শেখ দীন মুহম্মদ তার কাস্টমারদের নিশ্চিত করতেন যে ব্যবহৃত সকল মশলা, তেল, লতাপাতা...তা সে কারির জন্যই হোক বা হুক্কার, সকলই সরাসরি ভারত হতে আমদানিকৃত এক নম্বুরি খাঁটি মাল।