হ'তে পারে ভ্রম
ভ্রমের ভ্রমর।
ফুলেতে মধুর রেণু, রেণুর মধুতে বিষ-
শঙ্খচূড় মাতাল হয়েছে-
হ'তে পারে উষ্ণতার হিমে
আটকে পড়েছে মরা মাছি
এভাবেই উত্তাপ আকাঙ্খায় তুমি বাঁচো
আমিও কিছুটা বেঁচে আছি।
শঙ্কার ভেতরে ঢুকে দেখি
মৃত্যুভয় বিছিয়ে রেখেছে
মরণ রে তুহুঁ মম--
মরণ দুচোখে আয়
মরণ মরণে আয়
জীবনের ছায়ায় ছায়ায়-
প্রকারান্তরে হয়েছি বৈদেশিক
এখন আর হাত বাড়ালেই হাতে এসে
টুপটাপ বসে না পুষ্পপাপ
আমার কোনো অতীত নেই, কোনো
রথযাত্রায় নেই ফেলে আসা কোনো
শোলার টুপি, লাল শরবতী ফুল।
তোমাকে দেখেছি কতোকাল আগে
অন্ধকারের ছায়া দুই হাতে মেখে
হেঁটে আসছ ঘুম থেকে নির্ঘুম
বৃত্তের থেকে বেরিয়ে আসছ
মুমূর্ষু অন্ধকারের পাশে
জীবনের মতো, আলোর মতো
নিঃশ্বাসের মতো
আকাশের দিকে হেঁটে যাওয়া রূপকথার আশ্চর্য রোপওয়ে
যতবার চোখ বন্ধ করছি চৌদ্দ বছরের বাচ্চাটির ব্যথায় নীল হয়ে যাওয়া মুখটি দেখতে পাচ্ছি। ফেইসবুকে আপলোডেড ভিডিওটি দেখার সাহস করতে পারিনি। আমি কিছুতেই চোখ ঝাপসা হয়ে যাওয়া বন্ধ করতে পারছি না। এই শিশুটির মুখে নিজের সন্তানের মুখ বসে যাচ্ছে বার বার। বাংলাদেশে খুন করা আর কোনো নতুন বিষয় নয়। মানুষ খুন করা হচ্ছে প্রকাশ্যে, জড়ো হয়ে অন্য মানুষ তা দেখছে, ছবি তুলছে, এমনকি ভিডিও বানাচ্ছে। এই প্রক্রিয়ার সাথ
অক্ষরের শরীর বেয়ে চুইয়ে পড়ে চিন্তার রক্ত
আর আমরা গাধা এবং ঘোড়া নিয়ে গল্প করি
এক একটা বজ্র ছুটে যায় শহরের প্রান্ত থেকে প্রান্তে
প্রাণপনে ঘুমাতে চাই সাইরেন অস্বীকার করে
মৃত্যু ঘিরে থাকে চার দেয়ালের মত
মৃত্যু ঘিরে থাকে অশ্রুর নিষ্ফলতার মত
মৃত্যু ঘিরে থাকে- মশারীর মতন স্বচ্ছ, নির্বিকার
সমস্ত নিসর্গ জুড়ে প্রাণপণে নিমজ্জিত জল ছুঁইছুঁই ভিক্ষাপাত্র থেকে
পাহাড়ে বেড়াতে এসে যে মেয়েটি নিঃসংকোচে
নাচে খুব- হাততালি দেয়
কঠিন হবেই তাকে উপেক্ষা দেখানো-
সুতরাং- ও পথে যেও না।
তোমার উদারনীতি অভিজ্ঞ প্রজ্ঞা
হৃৎপিন্ডে উৎকণ্ঠায় বাজাও-
কাপড় শুকাতে সে ছাদে এসে ভুলে যাবে
এর পরে নাওয়া-খাওয়া আছে
ঘুমে তার ছায়া হয়ে মারোয়ার ধুন
গভীর ঘুমের পথে খরনদী- তুমি হে কান্ডারি
যে সাপ ঘুমালো সবে তাকে আর জাগিওনা
তুমি হে কান্ডারি- দুঃসাধ্য ধাঁধার মতন,
কাশফুল বনে আটকে গেছি
অভিমন্যুর অভিশাপ-
তারা সবাই খোলা মাঠে বসে
তারা খসে যাওয়া দেখে
মৃত্যু নিয়ে
নির্ভার গল্প লিখে যায়-
বেঁচে আছি বলে খানিক বর্ষাকাল
ভিজিয়ে চলে নিষ্ক্রমণের সম্ভাব্য সব পথ।
অন্ধকারে-
চাঁদ জেগে থাকে
অন্ধকারে
চাঁদ ডুবে যায়!
প্রাণের কাছে জলাভূমি আজ নত হয়েছে ছায়ায়
অথবা নত জলের কাছে প্রাণ
শব্দই গাঁথে জীবনের অস্ফুট
এসো তবে আজ ঈশারায় সব গল্প বলার শুরু
যদিও কিছুই বলার নেই আমার!
যদিও মেঘের ওপারে আর কিছুই দেখিনি আমি
ভোর হয়েছে দিগন্তে যখন আমি ফিরে গেছি পশ্চিম থেকে আরও পশ্চিমে- আরও
নিজের ছায়ায় নিজেকে দেখে চিনতে পারিনি তবু
সত্য যা তা সত্যের মাঝে শিল্পের মত বাঁচে
আমার য কিছু না বলা ছিল
অস্ফুট রয়ে গেছে!
সকালে কফির কাপে
ঝিমায় মেঘের ফণা- অসুখী প্রহর
রাতের শ্রান্তি থেকে ধার নিয়ে নৈর্ব্যক্তিক আলো
দিন যেন থেমে থাকে শেষ সিঁড়িটির ধাপে-
বাসস্টপে ভেজা রাস্তায়
১।
চুপচাপ উঠে আসো
থইথই বসে থাকো মেঝের ওপর
তুমি কি বন্যার জল,
কবে ফিরে যাচ্ছ সাগরে?
২।
শিকড় রক্তেই থাকে
তার থেকে তুমি বাড়ো
অথবা সে তোমার থেকে বাড়ে
ফিরে যেতে হয় তার কাছে
অথবা সে তোমার কাছে ফেরে!
যখন মৃত্যুর কথা ভাবি
তখন তোমার কথাও ভাবি
মৃত্যুর সাথে তোমার এমন যোগযোগে
কিছুটা বিস্মিত, কিছু আস্বস্ত হয়ে যাই
এই যে অমোঘ রাতের নিঃশব্দতা
ঝিঁ ঝিঁ পোকা, শিশুর সরল মুখ
নিজের স্বস্তির প্রতিবিম্ব
সবকিছু ছাপিয়ে কোনো এক মুখ--
যখন পালাবো ভাবি, পিছুটান
সহজ জলের নদী সহজ সাঁতার
যখন সহজ পথ নির্জন প্রান্তরে এসে থামে
তখন মৃত্যুর কথা
তখন তোমার কথা ভাবি!