ততক্ষণে জেগে ওঠে পাখি
অসমাপ্ত গান থেমে যায়
দুই চোখে রেশমের ঘুম
প্রতিচ্ছবি পেলব আয়নায়!
যখনি সে বখাটের মত
চায় খুব স্পষ্ট- ডাকে, দেখে,
তাহাদের আমাদের ঘুম
নির্ঘুম দূরত্ব দেখে শেখে!
উল্কার মত সেই আলো
দুইহাতে মেঘ ঠেলে চলে
তার হাতে সমস্ত সকাল
বিকেলের পাখি তার কোলে!
এই শীত রাতভর জাগে
দিগন্তে পূবালির আলো
তোমায় জানিনা এতটুকু
তোমার তো জানাশোনা ভালো!
ছুঁয়ে দেখ,- জল নই আমি
রাতের শব্দগুচ্ছে চাঁদ উঁকি দিয়ে যায়- অন্ধকার দ্বিখন্ডিত
তোমার রাত্রির তীরে আছড়ায় প্রসন্ন বিকেল
স্টেশান স্পর্শ করে নিয়ত চলে গেছে দূরগামী মানুষ,
পাথর, মালবাহী যান
সমস্ত সংসার ঘিরে মোহিত এটুকু সময়
এইটুকু অপেক্ষার ঢেউ!
অবকাশ নিলো খুলে জন্মের নীল চোখ, দ্রাবিড় রক্তের ধাঁধাঁ
বড় ব্যথা শূন্যতা।
নগরে অগন্তুক; এখনো আঁকড়ে আছি পিতৃপুরুষের ঋণ সশব্দ গ্রাম্যতা!
বাইরে বাঁশির ডাক- ভেতরের উষ্ণ জানালা
ধূসর গ্রামের গায়ে রেখে আসা
মাছের ঘামের ঘ্রাণ স্মৃতির অস্পষ্টতা
এখানে রাতের বুক চিরে
তীক্ষ্ণ ট্রাকের হর্ন সমূলে বিদ্ধ করে
কৈশরের সবুজ নোঙর
ঘুমিয়েছো? জেগে আছো?
ঋতুর বৈরী ঝড় নৈর্ঋতে
প্রশ্নবিদ্ধ জীবিকার হাড়
রুক্ষ গাছের গায়ে
রঙহীন লেপ্টে থাকা পাখি
ডানার আওয়াজে তার নাম নেই
নাম নেই পাখনার ওড়াউড়িকাল
এসব কখনো কেউ লিখে রাখে না
এ সমস্ত ক্রমশই
অবসন্ন জেলেদের ফেলে দেয়া জাল
প্রথম যেবার তারা ফ্ল্যাট কিনল- চারতলার দুটো ঘর; নতুন বিয়ে, নতুন চাকরী, নতুন ফ্ল্যাট। জানালা গলিয়ে একটি চড়ুই পাখি একদিন সত্যি সত্যি এসে তার মাথার ওপর বসেছিল। সাহসী সে চড়ুইকে সে তারপর অনেক আদর করে জানালার বাইরে উড়িয়ে দিয়েছে।তখনো বিকেলের ছাঁদ ভালো লাগে, মধ্যরাত ভালো লাগে, নিয়ন্ত্রণ হীন শরীর ভালো লাগে।তখনও কাগজের বিশ্বস্ততাকে ভয়ানক মূল্যবান মনে হয়। তখনও-‘ওকে না হলে আমার আর আমাকে না হলে ওর জী
তটভূমির কাছে মাথা নত করে বলতে চাইছি
সূর্যদেবের জ্বলন্ত চোখের দিকে এখনো তাকাতে পারিনি আমি
এমনকি স্বচ্ছ স্রোতের কাছেও রেখে যেতে পারি্নি স্পষ্ট কোনো রাত-আয়না
ভৌগলিক সীমারেখার অবলুপ্তি প্রার্থনা করি আজ
আমাকে আমার ইচ্ছের উষ্ণতায় বিনা-বাঁধায় যেতে দেয়া হোক
আর অস্থির অগ্নিপিন্ডের সাথে দৃষ্টি-বিনিময়ে আগ্রহী নই
স্মৃতিপ্রণালীর নিরাপদ রেখায় নিরপরাধ ঢেউ যেন
নিয়ে না আসে যজ্ঞের কাঠ, বাঁচবার যাদুমন্ত্র
হাইকু ভালোবাসি। তিন লাইনের ছোট্ট কবিতাগুলো আমাকে গভীরভাবে ভাবায়। একটা সময়ে জাপানে ছিলাম; হাইকু আডডা হতো;-মূলতঃ আমার বর্ষীয়ান ছাত্র-ছাত্রীদের সঙ্গে!
ইদানিং কী যেন হয়েছে! ঘর থেকে বাইরে এলে মনে হয় ঘরে ফিরে যাই; বাইরে থেকে ঘরে এলে মনে হয় বাইরে চলে যাই আবার। অবশ্য মানুষের জন্যে স্বল্প কথায় ঘর আর বাহির-বাহির আর ঘর ছাড়া তো লুকোবার তেমন কোনো জায়গা নেই! সম্ভবতঃ ঘর এবং বাহির কোনোটাই আমার ভালোলাগছেনা। এই সমস্যা নিয়ে অনেক ভেবেছি।সমস্যা নিয়ে ভাবার আগে যেটা করতে হয়, নিজেকে নিজে বিচার বিবেচনা করে নিতে হয়-সমস্যার একমাত্র বা প্রধান কারণ আমি নিজে নই তো?
নিবিড় জলের তলে নিবিড় চাঁদের ছায়া; নেমে যাই, হয়তো গিয়েছিও-বহুকাল আগে
জলে কি নেমেছিলাম, কতটুকু নেমেছিলাম?
ঢেউ কি এসে আমার পায়ের পাতা ছুঁয়েছিল-কতটা তাকে বুঝেছিলাম আমি-
আর এখন কি আমি সেই জলের মধ্যেকার নৌকাটির কথা মনে করে বিষন্ন হয়ে বসে থাকি--
কতটা বিষন্ন হই-
জীবন থেকে সেই অস্থির নৌকা কতটা তরল মুছে নেয়?
আমি তো এসব প্রশ্নের উত্তর নিয়ে আসার জন্যে কারো অপেক্ষা আর করিনা আজকাল!
তোকে আমি ধরে রাখতে পারিনা
অনিচ্ছাতে নিজের দোষে হারাই
ছুঁয়ে দেখব তোর চিবুকের মায়া
জলের মধ্যে কেবল জলের ছায়া
বদ্ধ পাগল দুরন্ত দিন কাটে
ছায়ার শোকে রোদের দুঃখ বাড়াই।
অগোছালো পথিক পথেই থাকি
হয়তো কোথাও শিশির রাখে পাতা
আধেক জীবন বিষন্ন বল্কল
শীতের চাপে জমতে থাকে জল
সবুজ নামের আনন্দ থামে না
চেনা নদী সকল খরস্রোতা।
তোকে যখন পেয়েছিলাম ভোরে
কোলাহলের মাঝেও অথই একা
কষ্টগুলো একাই নিলি তুলে
শাদা রঙ শোকের শহর একটানা মৃত চোখে
লিখে রাখে এক একটা দিন
কাটানোর বিবেকী বিস্ময়!
স্খলিত আঙুলে তুলে পতিত স্বপ্নের পরাজয়
এ শহরে অমায়িক হিমাংকের নিয়মিত
পাতাল প্রদেশে পূজা হয়
সেই একই দেব সেই এক দেবদাসী,
শঙ্খের দুপুর ভাবে কীর্তনে কান্নায়
এখন গাছের সাথে বরফের যে সমস্ত
প্রাকৃতিক সঙ্গম নির্মিতি; হায়
ঋতুর অন্ধকারে ধ্যানের প্রকার
নিতান্তই অমূলক প্রয়োজনহীন
হিমাংকের নীচে শুয়ে ঘাস ভাবে