বিপরীতধর্মী স্রোতে শহরের নদী চলে
জানালার ঠিক নিচে
ছেঁড়া ফ্রক, মাকে মনে পড়ে
কিশোরী যুবতী শিশু
জলে ডুব মাঘের সন্ধ্যায়
চুম্বক করেনি কিছু ক্ষতি
বাস্তবিক লোহা নই যে
পুড়বে পেটাবে আর অলংকার বানাবে
অযথা এ রঙ মাখা নিয়ন আলোর রাতে
জবুথবু রান্নাঘর
শেয়াল হত্যার ভোরে
মাটি ভেজে বনের কান্নায়
সঙ্গম করেনি কিছু ক্ষতি
বাস্তবিক ফুল নই যে
হাতের তালুতে ফেলে মৃত্যু দেখাবে
বহুদিন নিস্তব্ধতায় কেটেছে তার নিয়নের রাতগুলি, মেঘের সকাল সমূহ। নিটোল পুকুরের কালো কৈ মাছের ডাঙ্গায় ভ্রমণের ছটফটানিতে তার সারা গোধূলী অস্থির হয়েছে অসংখ্যবার। এই সব অস্থিরতার আড়ালে বেঁচে থাকার আকুলতা কখনো কখনো ফিরে এসেছে, কখনো জীবন্মৃত্যুর জটিলতার ড্রয়ারে তালাবদ্ধ রাখতে হয়েছে সূর্যালোকের প্রেমপ্রার্থী অবান্তর ইচ্ছেগুলোকে। অন্ধকারে একটি উজ্জ্বল ঘরের জন্ম হয়েছে গোপনে গোপনে। কিছু কৌতুহলী ফুল ও তাদের সব
পলায়নে দক্ষ চাঁদ
তোমার সঙ্গে আমি হাঁটি
স্বস্ত্যয়নে যেই দেশে চাদর পেতেছ
আমি যাই অশরীরি একই বৈদেশে
আমিও তোমার সঙ্গে হাঁটি;
আমিও তোমার সঙ্গে
পুরানো বিচিত্র কিছু চিত্রণ রেখেছি
নিজের নূপুরে আমি সরিসৃপ ডাকি মাঝে মঝে।
তুমি যে পতঙ্গ জেনে আমিও পতঙ্গ হই
তুমি যে ধুলার বাস্প
জেনে আমি মাঝে মাঝে
আয়নায় নাম লিখে মুছি
তোমার শব্দাবলী ভুলেও কখনও আমি ব্যক্ত করিনা
১।
আমি তো পথের মাঝে রথের শেকড় দেখি
বড় বেশি আগে থেকে ভেঙে আছে চাকা
বড় বেশি আগে থেকে স্রোত মুখস্থ বলে
জোয়ার ভাটাতে খুব অমিল দেখিনা
আসে যায় একই জল এক বিষখালি
কার বাড়ি কার খড়
কে রেখেছে নিরুদ্দেশ গ্রামটির নাম
বয়স তো তাতে কিছু যোগ করে না!
২।
খুলিনা পুরান পৃষ্ঠা
পুরান কথার ভাঁজে আটকে গেছে
সামাজিক তত্ত্বহীন পতংগ হৃদয়।
৩।
আগুন নিভেছে বলেই স্ফুলিংগ ভুলে যাওয়া যায়?
৪।
একটি নামের পাশে আর একটি নাম লিখবার
কোনো তাড়া নেই
আচ্ছন্ন রাতের পাশে মুখর দিনের অসঙ্গতি
লিখে রাখবার কোনো তাড়া নেই
লেকশোরে সন্ধ্যায় বাদামী গাছের গায়ে ডুবে গেছে
জীবনপিয়াসী যেই চাঁদ
তার জন্যে দীর্ঘশ্বাস না রাখাই ভালো
নাম লিখবার হলে লিখে ফেল দোয়াতে কলমে,
কালো কিংবা লাল, কি আসে, কি যাবে-
নাম লেখ তালপাতা শ্লেটে পেন্সিলে।
মুখোশ লুকাতে কেন চাও
মুখোশ তো স্বস্তিকর আসল মুখের চেয়ে
'আশি'র পরে তিতির চোখে আর জ্যোতি ছিলো না।
অথচ, আমরা সেখান থেকেই আলো নিয়ে,
আলো নিয়ে বানিয়েছি সোনার বালিয়াড়ি।
সেখান থেকেই স্বপ্ন নিয়েছি-কেমন দ্যুতিময় ছিল শৈশব!
কাঁপত ভবিষ্যত, তিতির চোখের মত তিরতির-
আর আমরা অবেলায় সানাইয়ে চমকিত
আমপাতার শিরায় লুকিয়ে ফেলতাম গোপন অভিজ্ঞতার সমস্ত আয়না!
মাঝে মধ্যে দুটি একটি অবুঝ মুখ দেখা দিয়ে মেলাত সাবধানে
আমরা ফিরে গিয়ে চৈত্রের ধূলার মাঝে
১।
মৌনতার মধ্যে কয়েকফোঁটা অনিশ্চয়তা মিশে আছে।
মাঝে মাঝে সেই গন্ধে বেঁচে উঠি
মাঝে মাঝে সেই গন্ধে মরে যাই!
২।
হৃদয় ওখানে নয়
হৃদয়ের বেশ দূরে আছো
ওখানে সমস্ত মেঘ
অতি তুচ্ছ বৃষ্টি যায় আসে।
অভিজ্ঞ তড়িৎ গতি
মাঝে মাঝে সামলে নেয়া ভালো
আমি তো জ্যোৎস্না চাই
তুমি শুধু অন্ধকার ঢালো!
৩।
নিজের মৃত্যু সম্পর্কিত একটা দৃশ্যে একটা পাখিকে একা একা গান গাইতে দেখি।
৪।
আজ তোমাকে নির্লিপ্ত চাঁদ হাতে রাত্রি আনতে বলিনি
কালো তিলখানি আয়না হোক বিবিধ নকশার
দৃশ্যপাট পালটে গেছে-আবার বলছি
শিউলি তুষার ফেলে চলে গেছে সকালের ট্রেন,
ঝাউবনে দোলনা ছিলনা বলে অভিমান স্থির থেকেছে
এইবার আর চোখ থেকে তন্দ্রা মুছিনি
শীতের বাতাসে বরং লিখেছি
জলোচ্ছ্বাস
দৃশ্যপাট উলটে গেলে, দেখ
বনবেড়ালের ঠোঁটে
রক্তের বদলে লেগে থাকে সবুজ শান্তি!
পৃথিবী তোমার প্রশ্নের কোনো উত্তর দিতে পারেনি
সমুদ্রের কান্নাও তাই শোননি ভেতরঘরে
ঈশ্বরের অভিশাপ অমাবশ্যায় হারিয়ে যেতে গিয়ে
আটকেছিলো শিশিরের বিন্দুতে
তাকে তুমি সেইখানে দেখে আশ্চর্য-চিনেছিলে
দৃশ্যের অন্তরালে সে তোমাকে নিয়েছে পর্বান্তরে
যখনই খুঁজেছো বাতিঘর, ;যখন
হাতের তালুতে নেচেছে অহংকার
এক মুহূর্ত থেমেই
স্মৃতির পরীক্ষায় তুমি হেরে যেতে থাকো, হেরে যাবে।
কোনকিছু নয়, কোনকিছু নেই
আকাশের কাছে শুধু যেতেই চেয়েছি, হে মুগ্ধতা
তুমি বিন্যাস করেছ নীল ছায়া
একচক্ষু চাঁদের আসরে শাদা মাধুরী ধরেছ
ভেঙেছি নদীর মত, এখনো তো ভাঙি
এখনো যে যেতে চাই
অর্থহীন নীলিমার,
অবোধ্য ঘোরের খুব কাছে।
ঠিকমত হাঁটতে শিখিনি, তবু
যেতেই চেয়েছি আমি
মোহ মুগ্ধতার কাছে-
ঠিকমত গাইতে জানিনা
কন্ঠনালী ছিঁড়ে তবু
জমাট রক্ত ওঠে, শব্দ যন্ত্রণায়!
অথচ, ব্যথা-, এত সহজে কি হয়!