আপনি একটি আশ্রয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন
জেনেশুনেই যে, আমি একজন উদ্বাস্তু
তখনও আমরা রাত্রির নির্জনতা লংঘন করে মাঝরাতে
একটি চাঁদ ভাগাভাগি করে খাই
কি কারণে আপনি সমর্থন তুলে নিলেন
সেকথা কিন্তু আজও বলেননি!
আমারও বলা হলো না
নিতান্তই জঙ্গল থেকে ছুটে আসা হরিণী দৃশ্যের লোভে
আমরা রাজনৈতিক গাঁটছড়া বেঁধেছিলাম
উপযুক্ত প্রতিশব্দের খোঁজে ভোর হতে হতে
হঠাৎ আবিস্কার করলাম
আসলে কোন হর ...
প্রবল ভ্রমের মধ্যে জেগে ওঠ নিঃশব্দ প্রহরে। জানালার পোকা জানে এসব ভ্রমের মাপকাঠিতে কতটা সোনা; মিশে আছে খাদ কতটা। অভিমান ঘষেঘষে যেটুকু সরল আলো জ্বালা যায়; যেটুকু তাড়না আসে সবকিছু ভেঙেচুরে ভেসে যেতে যমুনার জলে; তার সবই শুষে নেয় বুকের বৃক্ষের নীতিকথা। অন্ধকার গৃহীত হয় ঘুমের লাগাম খোলা চোখে, কবিতায়; এমনকি সঙ্গমে ও প্রেমে। নিঃশব্দের শঙ্খে চড়ে পাড়ি দেবে দূর্লংঘ্য সমুদ্র; সেই দেশে বাস ...
প্রজাপতি সময়কে নকশি সূতোয় তুলে
অব্যয় রূপ দেব ভেবেছি কতটা কাল
তোমার ওই হাত ধরে... রুক্ষ-কঠিন হাত
তোমার ওই প্রলম্বিত হাত, শীতের বাগানে এসে
বৃদ্ধ কবিতা সব সরাতে সরাতে জ্বেলে দেবে
একাধিক সামুদ্রিক ঢেউয়ের প্রদীপ!
তোমার ওই হাতে, ভেবেছি কতটা কাল
তোমার ওই লবণাক্ত ঝাউবন-কাঁটাবনে
ফোটাবো কোমল ডেফোডিল...
তখন কি জানতাম
তোমার ওই হাত শুধু ভ্রমণ পিয়াসী;
বৈশালী অন্ধকার তীরে এসে ভিড়বার আগে
দেন ...
অসীমা আমায় একটু আগেই বলেছিল এই খালে এখন আর স্রোত নেই। নয় মাইল দূরে নদীর তান্ডব বন্ধ করতে বাঁধ দেয়া হয়েছে বছরখানেক আগে। আমি তবু বসে থাকি, অসীমা পাশে বসে থাকে অপ্রকাশিত অনীহা নিয়ে। বাতাসে কচুরীপানার ডগাগুলো নড়ে, ছোট দুই-একটা মাছ লাফিয়ে লাফিয়ে চলে। পশ্চিমের ঘাটে ঘোমটাশুদ্ধ একটি বউ স্নান করে চলে যায়। বউটিকে চেনার চেষ্টা করি। চিনতে পারিনা। কতোগুলো বছর চলে গেছে, এই বউটিকে হয়তো বালিক...
১
আমাকে নাওনি সাথে
পুঁতে রেখে গেছ এই ঝুলন্ত বারান্দা রঙমোহে
মনে হলো পথে নামি
মাঝরাতে ঘাসে শুয়ে আকন্ঠ কবিতা শোনাই
শুষে নেই মানুষের সভ্যতার পুরা ইতিহাস-
শুরু শেষ বৈকল্য অন্ধকার
অর্ধেক রাত জুড়ে কপালের অর্ধেক রেখা
পড়বো পড়াবো
অযাত্রা মিলিত হবে অগস্ত্য ভ্রমণে।
২
এতদিন পরে এলে বুঝে নিতে নতুন ভাষার বিবমিষা
অক্ষর পুরানো হয়ে দীর্ঘস্বর মুছে মুছে যায়
শূন্য ছাড়া অন্য অর্থে ...
দুপুরের নদী ছুঁয়ে একপাল হাঁস সাঁতরায়
একঝাঁক গাংচিল উড়ে উড়ে খেলে কানামাছি
বিষখালি নদী এসে কেঁপে যায়
পাহাড়ের ঘিরে থাকা শাড়ির আঁচলে।
আঁচলের গল্পে যে কে বাঁধা,
জল কি তা জানো?
চোখের কোণার অশ্রু শৈশবের কোন মেলা খোঁজে--
পিতামহী-শাদা শাড়ি বিষখালি উজানে হারায়,
বৃক্ষের আশ্রয় ছেড়ে শিমূল তুলারা চলে
বেহালার বালিশের খোঁজে-
একমাঠ সবুজের অস্তিনে ঘুম
নিভে যাওয়া কবেকার স্বপ্নক্লান্ত চোখে!
...
মেঘের পালক অব্দি বিস্তৃত দেয়ালে বসে চেয়ে গেছি বটের পাতার মত বাঁচা; বিরল ঋদ্ধতা নিয়ে ঝরে যাবো বিকেলের চমক আলোয়; শুকাবেনা মন্বন্তরে, অনাহারেও আর্দ্রতায় উদ্ভাসিত হবে উপশিরা। এসব কি হয় নাকি! আটটা-পাঁচটা ঘরবার, ওৎপেতে বসে থাকা ঠুলো মোড়ে মোড়ে। অন্ধকার গাঢতর হলে অপ্রেম দখল নেয় মানবিক সূক্ষ্ম চেতনা! মুখের আড়ালে মুখ, প্রেমের আড়ালে কৌশল , রঙের আড়ালে খুব্ধ ভীতিপ্রদ জীবনযাপনের কংকাল-বসে থা...
আজ তোমাদের মৎস্য শিকারের দিন
ঠিক ঠিক বড়শি নিয়েছিলে, তেমন টোপ?
সোনালী চুবড়ি ভরুক রূপালী তারায়
হারিয়ে দিও, পার যদি- প্রতীক্ষিত ক্লান্ত বকপাখি
গন্তব্য স্থির কর-দিগন্তের বর্ণভেদী নীল নভস্তল
চেনাশোনা জানাশোনা দেখাশোনা-নিঃশ্বাস ঘোরতর
ঘনতর হোক, ঋদ্ধ হোক ভ্রমণের শ্রুতি পদাবলী;
তোমাদের বড়শী, টোপ বেঁচে থাক বাণিজ্য বিতানে!
তুলে এনো বেভুল বুনো চাঁদ, ছুৎমার্গহীন জড়াজড়ি
আদিম কথন, জলের গভ...
আশেপাশের সবকিছু শব্দহীন হয়ে যাচ্ছে।একটু আগেও পাশের ঘরে কেউ একজন ভ্যাকুয়াম ক্লিনার চালাচ্ছিল, তারও আগে আকাশ ভাঙা বৃষ্টি; বৃষ্টির আগে পরিচিত শব্দে পলতা লোকাল চলে গেল। ট্রেন লাইনের পাশের আকাশছোঁয়া বাড়িগুলোয় কাল সাতারাত ধরে গনেশপূজার আরতি চলেছে। ধুনোর গন্ধ ছাদ অবধি চলে এসেছিল, যদিও ট্রেন লাইন আর কাঁটাতারের বেড়া এড়িয়ে এতদূর আসার কথা নয়। জানালের পর্দা সরিয়ে টের পেয়েছিলাম ধূপের গ...
উদাসী ভ্রমণে কেনো ব্রত নষ্ট করো?
আমার ডানার রথে মহারথী অর্জুনের বাস
তাকে আমি ক্রুশবিদ্ধ করতে পারিনা কোনোকালে
অন্দরে আঘাত লাগে—শ্বেতপদ্ম লাল হয়ে যায়-
রক্তস্রাব ভালো লাগে না!
মাটি ছেড়ে কংক্রীটের এই যে বিশুদ্ধ নিপাতন
তার নিচে শুয়ে থাকে
ধানের বীড়ার সুখ, গ্রীষ্মের অন্ধ ধূলা
গ্রামের উঠানে হাঁটা তরুণীর ব্রা বিহীন উর্ধগামী বুক;
উদাসী আদোরে তার ব্রতচ্যুতি হয়!
তার চাই মাড়াইয়ের উচ্চ...