দুই হাত দশ আঙুল
অতিশয় পতনে উৎসুক
দুদিকে প্রলাপ চলে
স্মৃতির-বর্তমানের
ভবিষ্যৎ-অন্ধকার-আলোর
এই বুঝি দিন চলে গেল
এই বুঝি আসি আসি
প্রস্তর সময় পুনর্বার।
সৃষ্টির আদিতে চলো
জন্তুর উচ্চাঙ্গ স্বরে
প্রাথমিক ভাষ্যের উদ্ভবে-
উড়ালে-পতনে!
বিনির্মাণে ডুবি,চলো
সম্পূর্ণ আদিম
ভাষা শিখি, ভাষা গড়ি
ভাষারে উৎকৃষ্ট করি—
আমাদের দুই হাতে-আমাদের দশ আঙুলে
আমাদের স্মৃতি ভবিষ্যতে!
সেই থেকে আজ অবধি এক বৈশ্বকালিক চক্রব্যূহ সুকৌশলে টানে
চলৎশক্তিহীন ব্যক্তিগত পার্থিব জীবন।
স্থূলকায়া বটের মতন, শেকড়ে প্রোথিত। পৃথিবী বদলায়-
স্বাস্থ্যদায়ী হাওয়া খেতে বিপাশার উদ্যানে যেতে ঈপ্সিত হই কতবার-
সবিস্ময়ে যদিও জানি সীমানা গিয়েছে থেমে সমতটের কিঞ্চিৎদূরে
আমারও আর , হাত সরে না -পা সরে না, অলস লাগে!
হয়তো হীরকখন্ডের মতন দ্যুতিময় স্রোতও উদ্বাহু কামার্ত,
মোহকে লুকাতে চায় ...
তুমি এই জানালার নির্বিকল্প ছায়া
উঠানে যে বিকেল নামায়,
জড়িমা উড়ালে তুমি একমাত্র স্বপ্নের গৈরিক
আমার সন্ন্যাসে যার গৃহীর আবাদ।
অনাবাদী জমিনের ফাটল ভরানো প্রীত জল
নৌকারে তুলে আনো উজানের অমানিশা হ'তে।
তোমার আঘাতে সুখ, মধু জমে নীল বিষ পাপে,
নীল্ ব্যাধ তূণ ছাড়ে জলে নামা মানবী ছায়ায়...।
তুমি সেই উল্কা যার আগুনের ফলা ভালোলাগে
শবরী প্রতীক্ষা শেষে বান শুনি শরীরের কোনায় কোনায়
কুয়াশা র...
শিরস্ত্রান ছিলনা আমার, আজও নেই
বুঝিনি কখনো লাগে ঢাল, লাগে মুখ ঢাকা প্রবল মুখোশ
লাগে রাজনীতি শেখা- দুইয়ে দুইয়ে পাঁচ বানাবার।
এখনো বন্ধ চোখে অপার্থিব আলোকসজ্জ্বা
নিঃশ্বাসে ঘন হয় বাণিজ্যিক পুস্পের নির্যাস
তন্দ্রায় বুঝে নেই স্বর্গোদ্যানে নিয়েছো আমায়
এমন মৃত্যুর কথা ভাবি
এমন মৃত্যু কি হয়!
তোমাকে দেখবো বলে সুন্দরের পাশে শুয়ে
জীবনের ভাঁজ খুলে দেখেছি মরণ
শান্ত মরণ, কিছুতেই অভাব...
আজ এতদিন পরে তার সাথে প্রথম দেখা
আজ এতদিন পরে তার সাথে শেষ পরিচয়-
প্রথম বুকের পাশে জোছনার নিষ্ঠুর নখের আঁচড়
জোছনা বিরান, শোনো, বিরান অরণ্যে নিয়ে যায়-
আজ এতদিন পরে চাঁদের শ্বেতীর বিস্তার
রোমাঞ্চের শস্যক্ষেতে রাত্রের শাদা ক্ষত, জ্যোৎস্নার পুঁজ গলা নদী
ভয়ের বিশাল গর্তে শোনো সব অজগর তারারা মিলে
মৃত্যু নয়, বেদনাও নয়-
হাহাকার নয়-
'নিরবতা মহান'শেখায়!
তোমাকে পাবার আগে মহান নিরব
তোমাকে...
ভুল স্রোতে নিম্নবর্তী জলকে বলেছি কাল রাতে
অভিমানী তিল ছুঁতে আসবে না নৈঋত হাওয়া
তারা, তারও বসন্তের রঙ খেলা শেষ;
তুমি যাকে পতঙ্গের পাখা সঁপে নিশ্চিন্তে দাওয়ায় বসে ঘুম
সুখের ঐরাবত তাকে দেখ
পার করে দিয়ে এলো-অসুখের, মুখোশের নদী!
এতো কোনো আধফোটা কিশলয় নয়,
গরবী গোলাপ ওই শুয়ে শুয়ে চোখ মোছে ঘন কুয়াশায়-
এমনই নিয়মে ওই শুঁয়োপোকা প্রজাপতি হয়
এমনই জেনেছে কেউ অযাচিত বিদায়ের কালে-
যেতে দাও-
...
শূন্যের গভীর নীলে দৃষ্টির সাঁতার, যেন ফেলে এসেছো
লোকালয় থেকে বহুদূরে
আত্মার উজ্জ্বল স্থিতি জীবনের অব্যক্ত ভার
সুখ নয়, জ্বালা নয়, গোঙ্গানীর কারুকার্য নয়,
তোমারে সুন্দর করে নির্মোহ বিষাদ!
উদাস-উদাসী থাকো
বিষন্ন মেঘলা দিনে একদা হঠাৎ
পেয়ে যাবে , আমি জানি
আত্ম-উন্মীলনে পোড়া জীবাশ্মের স্বাদ!
সেইখানে বইবেনা আগামীর ব্যস্ততম নদী, নৃত্যপারঙ্গমা কোনো মাছের চলন
দেবদারু পাখা ঢাকা কংক...
মেলায় যাবার পথে আগেভাগে শুনে নেয়া ভালো
ভীড়ের গহীন চড়ে একা হাঁটা পথে কী কী হয়---
বাবার আঙুল ছেড়ে গেলে, হারাবেই; জেনে রাখো মেয়ে!
অগুনতি সৌম্য যাদুকর-ছেলেধরা আছে, সাপের ঝাঁপির মত
তাদের চোখেও দোলে বড়সড় ঝাঁপি! বেতের বুননে বোনা আবিরের সুক্ষ্ম কারুকাজে
ছেলে ভুলানোর ছড়া, বাজনা-বাদ্য, ঘুমপাড়ানী গান তারা জানে!
মেলায় হাঁটার পথে বাবার আঙুল ছেড়োনাকো
বাবার পাঁজরে লেপে সাবধানে থেকো।
বাবা তোক...
তোকে ছুঁতে গিয়ে আমি
আগুন ছুঁয়েছি!
বাগানে আগাছা গাছ
তারও ফুল বারোমাস
উদাস গন্ধরাজ-
তাকেও ছুঁয়েছি!
তোকে ছুঁতে গিয়ে আমি
শিশির ছুঁয়েছি--
বন্যগন্ধ কচুপাতা
টলোমলো অস্থিরতা
নতুন ব্যাঙ্গাচি সব
তাকেও ছুঁয়েছি।
তোকে ছুঁতে গিয়ে আমি
কষ্ট ছুঁয়েছি--
গোধূলি হারিয়ে যাওয়া
রাত্রির ভোর হওয়া-
কাতর শুক্লতারা
তাকেও ছুঁয়েছি।
তোকে ছুঁতে গিয়ে আমি
মানুষ ছুঁয়েছি--
মৃত্যুর জটিলতা
জীবনের অর্থকথ...
সেইদিন প্রথম শামুকের ভেজা মুখে কার প্রতিচ্ছবি দেখেছিলে? যেসব বালিকারা মাঝ রাত্তিরে দোতলার কুঠুরিতে শুয়ে শিশিরের শব্দ শুনেছিল টিনের চালায়, টুপটাপ! তাদের কি আসলে কোন অবয়ব, কোন নিজস্ব প্রতিচ্ছায়া ছিল?তাদের বর্ধিষ্ণু শরীর অজান্তেই ভ্রান্ত এবং পরাশ্রয়ী জীবনের দিকে ক্রমশঃ ধাবিত নয়?তারা কি তবে অসূর্য্যম্পশ্যা ছিল, নাকি তাদেরও গোপন প্রেমিক গোপনেই দিয়েছিল দুঃস্বপ্নের ভস্ম...