দুশো সতের তলা বাণিজ্যিক ভবন থেকে পড়তে পড়তে ইঁটটি ভাবছিল, আজ কেউ মারা না যাক।
কিন্তু একশো আটানব্বই তলায় প্রিয়তম স্বামীটি তখন প্রাইভেট সেক্রেটারির অন্তর্বাসের ফিতের জট খুলছিল।
আর একশো বিয়াল্লিশ তলায় প্রবল আশাবাদি তরুণটি সিলিংফ্যানে বাঁধছিল গলার দড়ির অপর প্রান্ত।
ওদিকে বিরাশি তলায় কমিটির নির্বাচনী মিটিংয়ে মারামারি। ভাঙা কাঁচের গ্লাস। তোবড়ানো এজেন্ডা। থুতনিতে কালশিটে।
রাজাকারের ভাগিনা--
তার আর কী দোষ, সে তো মামার পুরান পাপের ভাগি না!
তার ওপরে চা-বিস্কুট খাওয়ায় মিনিমাগিনা,
এই কারণেই তার ওপরে রাগতে গিয়াও রাগি না!
রাজাকারের ভাগিনা--
রক্ত খারাপ, তাই বলে তো আসামী সে দাগি না!
তার ওপরে ফ্রি টিকিটে দেখায় মুভি 'নাগিনা'!
এই কারণেই তার পিছনে লাগতে গিয়াও লাগি না!
রাজাকারের ভাগিনা--
হঠাৎ সেদিন বইলা বসে, বুঝলা নাকি ভাইডি?
একাত্তরে বালক ছিল আমার মামা সাঈডী!
আর ইউ ওকে টু টক?
সামনে বসা পুলিশ অফিসারের প্রশ্ন। গলায় অঢেল কোমলতা। ধবধবে সাদা চামড়া। নীল চোখ। রিয়েল অ্যামেরিকান পুলিশ।
বাড়াকাত মোটেই ওকে না। ওকে থাকার কথাও না। পশ্চাৎদেশের ব্যথা কঠিন ব্যথা। কী যাতনা বিষে, বুঝিবে সে কিসে, কভু আশীবিষে দংশে নি যারে!
বাড়াকাতের মনে হচ্ছিল অন্য কথা। এই ব্যথার চেয়ে আশীবিষের কামড় ভালো ছিল। হায় রে সাপ! তুই কামড় দিলি না, কামড় দিল অভিশাপ!
সাতসকালে ডাক্তার নূঢ়া চৌধুরী যত্ন করে গোঁফটা ছাঁটছিলেন। গোঁফ ছাঁটা কঠিন কাজ। দুইদিকেই খেয়াল রাখতে হয়। একদিকে ছোট করলেন তো আরেকদিকে বড় হয়ে গেল! খুব যত্ন নিয়ে দুইদিকেই সমান রাখতে হয়।
নূঢ়া সেটা ভালোই পারেন। দুইদিক সমান রাখার ক্ষেত্রে তার জুড়ি নাই।
গোঁফটা ছেঁটে নিজের চেহারাটা ঘুরিয়ে ফিরিয়ে ছোট্ট আয়নার মধ্যে দেখছিলেন।
বাবা যখন খোকার সাথে রাস্তা হবেন পার,
হঠাৎ করেই পথের কোনায় নজর গেল তার।
"নাউজুবিল্লা" বলেই তিনি বসেন কেটে জিব,
দিনের আলোয় করছে এ কী নাপাক দুটি জীব?
সাধেই কি লোক কুত্তা বলে? করছেটা কী! শিট!
একটা পেতে, আরেকটা তার পেছন থেকে ফিট!
দেখলে খোকা ভাববেটা কী, ভাবতে বাবার কান
টুকটুকে লাল হতেই মারেন খোকার হাতে টান!
ছ্যাঁক দিছিল নাদিয়া,
মনের দুঃখে পাড়ার দোকান
বিস্কুট খাই চা দিয়া।
বিল দেই না, ঐটা আমার
চান্দা, মানে হাদিয়া!
জোয়ান পোলা, আর কয়দিন
বেড়াই ডিমে তা দিয়া?
মাইয়াগুলা ঘুইরা বেড়ায়
ওড়না বুকে না দিয়া,
আমগো মতো মমিন
মুসলমানের বুকে ঘা দিয়া...
শিক্ষা অগো দেওন লাগে--
এমন যুক্তি ফাঁদিয়া,
দল বাইন্ধা সুযুগমতো
টিএসসিতে পা দিয়া,
পয়লা বোশেখ প্রচণ্ড ভিড়
কী যে গাদাগাদি--আঃ!
ভিড়ের ভিতর মাইয়াগুলার
মন ঠিক মজল না তোমাদের মা দিবসে...
একা একা যাকে নিয়ে ভাবি-হাসি-কাঁদি বসে,
কান্না ও হাসিটুকু আমারই সে থাক না!
সব নিয়ে চেঁচামেচি? আমি ভাই কাক না!
অসহায় দিনশেষে যে গায়ের ঘ্রাণ পেয়ে
মনে হয়, ফের বেঁচে উঠলাম প্রাণ পেয়ে!
যার কথা ভাবলেই সারা বুক প্রান্তর--
মেঘ ডাকা দিনে যেন পাহাড়ি তেপান্তর!
যাকে নিয়ে কল্পনা গল্প না--সত্যি!
যার পেটে একদিন আমি এক রত্তি
ছিলাম, অ্যাত্তোটুকু থেকে আজ মস্ত!
কইলটা কী নরেন মোদি?
হের প্রতিবাদ আমরা যদি
না করি, তো করবে কিডা?
--সবাই মিলা হিন্দু পিডা!
সাঈদী মামা চান্দে গেছে,
শুইন্যা সবে হাইস্যা দিছে
...টাটকা ঘায়ে নুনের ছিডা!
--সবাই মিলা হিন্দু পিডা!
ইসলামি দেশ, এইখানে বাল
হিন্দু এত হুদাই কেন?
মাইর বুঝে না? রেপ বুঝে না?
হিন্দুগুলা ভুদাই কেন?
রাইত্তে পালা ইন্ডিয়াতে
বেইচ্যা তগো বসত ভিডা!
--সবাই মিলা হিন্দু পিডা!
সাপলুডু খেলায় একটা মইয়ের অপশন আছে। গুটি সেখানে পড়ামাত্র ধাঁ ধাঁ করে ওপরে উঠে যায়। আমার বয়স যখন আঠারো, তখন আমার জীবনের গুটি সেরকম একটা মইয়ের ঘরে গিয়ে পড়ল। আমার বয়স ধাঁ ধাঁ করে আঠারো থেকে আটত্রিশ হয়ে গেল!
চার ভাইবোনের মধ্যে আমি ছিলাম সবচে ছোট, হয়ে গেলাম সবার চেয়ে বড়!
জামাত শিবির মারছে মানুষ--
বললে তোমার জ্বলে কেন?
"দুর্বৃত্ত" বসাও তুমি "জামাত"
কথার স্থলে কেন?
বিএনপি যে সঙ্গে আছে--
বলতে তোমার ক্লান্তি লাগে?
মারছে পুলিশ নিরীহ লোক--
বললে তবে শান্তি লাগে?
পিটলে হেফাজতকে ওয়েব
দাও ফাটিয়ে প্রতিক্রিয়ায়...
মনির যেদিন পুড়ল সে রাত
ব্যস্ত ছিলে রতিক্রিয়ায়!
সারা বছর ঘুমিয়ে থেকে
উঠলে হঠাৎ জ্বলে কেন?
বোবা ছিলে, তোবা বলে
জোরসে জবান চলে কেন?