মুস্তাফিজ এর ব্লগ

ভারত বনধ, মার্চ-১ পোষ্টার

মুস্তাফিজ এর ছবি
লিখেছেন মুস্তাফিজ (তারিখ: বুধ, ২৯/০২/২০১২ - ১২:১৭অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

poster


১০১টা ছবির গল্প-সাত, আলহামরা প্রাসাদ

মুস্তাফিজ এর ছবি
লিখেছেন মুস্তাফিজ (তারিখ: মঙ্গল, ২৮/০২/২০১২ - ১২:৩৬পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

লাল ইটের একটা বাড়ির দিকে আঙুল তুলে হান্নান ভাই বলেন, “বুঝলেন্নি মুস্তাফিজ ভাই, ঐগুলান সব মুসলমানরা বানাইছে।” সেদিকে তাকিয়ে জিনিসটা কী ঠিকমতন ঠাহর করার আগেই তা পাহাড়ের আড়ালে চলে গেলো। আমি বললাম, বুঝলাম না, মানে দেখতে পেলাম না। উনি হি হি করে হাসতে হাসতে এক্সিলেটরে আরো জোরে চাপ দেন। দুপাশের পাহাড়, তার মাঝে মাঝে জলপাইয়ের বাগান, একটা দুইটা বাড়ি আরো দ্রুত আমাদের ছেড়ে যেতে থাকে। হান্নান ভাইয়ের ছোট্ট কনভার্টেবল তার সর্বোচ্চ গতিতে ছুটে চলে গ্রানাডার দিকে। বাতাসের শোঁ শোঁ শব্দের সাথে ভেসে আসে হান্নান ভাইয়ের গলা “আপনি শুধু রাস্তায় স্পিড ক্যামেরা খেয়াল কইরেন।”


রঙের দুনিয়া

মুস্তাফিজ এর ছবি
লিখেছেন মুস্তাফিজ (তারিখ: বুধ, ২১/১২/২০১১ - ১:২৬অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

ভ্যাঙ্কুভারে আসার পর কয়েকদিন রঙ দেখতে দেখতে মাথা খারাপ অবস্থা।
আমার আর মাতিসের কোন কাজ নাই। ওর স্কুল ছুটি হলে বিকেলে আমরা দুজন ঘুরি, রাস্তায়, পার্কে, ট্রেইলে।
ঘুরতে ঘুরতে রঙ দেখি, এইসব রঙ ...


অসুন্দরের সুন্দরবন-২

মুস্তাফিজ এর ছবি
লিখেছেন মুস্তাফিজ (তারিখ: সোম, ১৯/১২/২০১১ - ৪:০১পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

আগের পর্ব, অসুন্দরের সুন্দরবন

৪.
আমি রাজু ডাকাতের সাথে হাত মেলালাম। লম্বা, শক্ত, কড় পড়া হাত, ধরে থাকলাম কিছুক্ষণ। পুরো ঘরটায় কবরের অদ্ভুত নীরবতা কিছু সময়ের জন্য। নিরবতা ভেঙে ডানা ঝাপটিয়ে একটা পেঁচা উড়ে গেলো উপর দিয়ে, ঘরের পেছনে কাঠের মাচায় টহল দেয়া ডাকাতদের কারো হেঁটে যাবার মচমচ শব্দ শোনা গেলো, একই সময় কোনো কারণে ভয় পাওয়া একপাল হরিণের ছুটে চলার শব্দ বাম দিক থেকে এসে ডানে মিলিয়ে যেতেই রাজু ডাকাতের সহকারী কথা বলে উঠে “আপনার কেমন লাগছে?” তার দিকে তাকালাম, রাজস্থানি পাগড়িতে দারুণ দেখাচ্ছে, তাকে দেখে ছোটবেলায় দেখা নওয়াব সলিমুল্লার ছবির কথা মনে পড়ে গেলো, ডাকাত দলের ভেতরেও তাহলে রাজা প্রজার ভেদাভেদ থাকে, মানসিক শক্তির অভাব থাকলে পোশাকের মাধ্যমে নিজের তফাৎটা অন্যদের বুঝিয়ে দেয়। হাসি পেলো আমার, ওর কথার সরাসরি জবাব না দিয়ে পরিস্থিতি আমার অনুকূলে রাখার জন্য উলটা প্রশ্ন ছুড়ে দিলাম “হঠাৎ করে বাইরের জগতের কারো সাথে পরিচিত হয়ে আপনাদের কেমন লাগছে?”


অসুন্দরের সুন্দরবন

মুস্তাফিজ এর ছবি
লিখেছেন মুস্তাফিজ (তারিখ: রবি, ১১/১২/২০১১ - ৩:৩৫অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

১.
দুই তিনটা বৈঠা মেরেই থেমে গেলো ওরা, বাকি পথটুকু চলে এসেছি স্রোতের টানে, আমি যে ট্রলারে ছিলাম সেখান থেকে ঘাটে বাঁধা ট্রলারগুলো হাত পঞ্চাশেক দূরে। অতটুকু পেরুতে সময় লাগেনা। বসেছিলাম নৌকার পেছনে, ঘাটে ট্রলারের গায়ে নৌকা লাগতেই চালকদের একজন বললো- “সাবধানে উঠে আসেন, আপনাকে সামনের ফরেস্টের ট্রলারের উপর দিয়ে যেয়ে ঐ ট্রলারে নামতে হবে, সেখান থেকে ঘাটে উঠবেন। মাথা ঝাঁকিয়ে পেছন থেকে উঠে ফরেস্টের ট্রলারের ছাদ পেরিয়ে এপাশে চলে এলাম, নীচে যখন নামছি কেবিনের দরজা খুলে ওদের অফিসার মুখ বের করে ফিস্‌ফিসিয়ে বললেন যান, ভয় পাবেন না, আপনি যতক্ষণ থাকবেন আমার ট্রলার এখানেই এদের ট্রলারের সাথে লাগানো থাকবে।“ আমি কোন কথা না বলে বনবিভাগের ভাড়া করা ট্রলার থেকে নীচের ট্রলারে পা রাখলাম।
নিকষ কালো আলকাতরা মাখা ছাদবিহীন সেই ট্রলার লম্বায় চল্লিশ ফুটের মতন, মাঝের অর্ধেক ত্রিপল দিয়ে ঢাকা, এর নীচে শুয়ে থাকা মানুষের অস্তিত্ব টের পাওয়া যায়, ত্রিপলের ঢাকনার বাইরে দু’পাশেই বস্তা ফেলে বাংকারের মতন বানানো, ট্রলারের মাথায় সোলার প্যানেল আর একটা ছোট এন্টেনা। আমি নীচে নামতেই বাংকার থেকে কালো গেঞ্জি আর হাফপ্যান্ট পড়া বন্দুক হাতে একজন উঠে সালাম দিয়ে আমার হাত ধরে বললো “ডাকাতের নৌকায় স্বাগতম”।


ইফতার কান্ড

মুস্তাফিজ এর ছবি
লিখেছেন মুস্তাফিজ (তারিখ: শুক্র, ১২/০৮/২০১১ - ২:৪০অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

বেলা এগারোটায় অপুকে ফোন দিলাম। বলে আমরা আপনার বাসার আশেপাশেই আছি, আসছি। আমরা বলাতে বুঝলাম সিলেট থেকে আরো কেও এসেছে। কে হতে পারে ভাবতেই প্রথমেই উজানগাঁর নাম মনে এলো। আমি বিছানা ছেড়ে নামতে নামতেই নীচ থেকে দারোয়ানের ফোন, সিলেট থেকে দুজন লোক এসেছে, আমাদের বাসায় আসতে চায়, কথাবার্তা সন্দেহজনক বলে আমার কাছে জানতে চাইছে উপরে পাঠাবে কীনা।


টাইগারনেস্ট

মুস্তাফিজ এর ছবি
লিখেছেন মুস্তাফিজ (তারিখ: সোম, ২৫/০৭/২০১১ - ১২:৪৪পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

20110624-_Q8X0068 ভোর পাঁচটায় ঘুম ভেঙে গেলে কাঠের সিঁড়ি বেয়ে নিচে নেমে এলাম, বাইরে টিপ টিপ বৃষ্টি। শুনেছি জুনের এসময়টাতে ভূটানে বৃষ্টি হয় প্রচুর। ঠাণ্ডাও থাকে। ভূটান এমনিতেই ঠাণ্ডা, পারো আর থিম্পুতে যে হোটেলে ছিলাম কোনোটাতেই এসি তো দূরের কথা ফ্যানও ছিলো না। গরম ঠিক না লাগলেও ভেতরে কেমন যেন একটা গুমোট মতো ভাব। টিপ টিপ বৃষ্টি আর ঠাণ্ডা ঠাণ্ডা বাতাস মন্দ লাগছিলো না আমার।


চড়কের মেলায় একদিন

মুস্তাফিজ এর ছবি
লিখেছেন মুস্তাফিজ (তারিখ: রবি, ২৪/০৪/২০১১ - ২:১৯অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

সতর্কতা: কিছু ছবি আর লেখা বাচ্চা কিংবা দুর্বল চিত্তের লোকদের দেখা কিংবা পড়া ঠিক হবে না।

-----------------------------------------------------------------------------------------

দেখতে দেখতে ঘড়ির কাঁটা রাত বারোটা পেরুলো। বিষ্ণুপুর গ্রাম। সেই গ্রামে চৌধুরী বংশের জমিদারদের এক বিশাল প্রাচীন পুকুর, কেউ বলে দুইশ কেউবা জানায় দেড়শ বছরের পুরাতন। জমিদারদের কিছুই এখন অবশিষ্ট না থাকলেও এই পুকুরটা আছে। আর আছে তাদের পৃষ্ঠপোষকতায় চালু কিছু ধর্মীয় আচার। সেরকম এক আচার পালনে সন্ন্যাসী নিরঞ্জন দেবনাথসহ আরো তিন সন্ন্যাসী পুকুরপাড়ে চার জায়গায় নিজেদের শিষ্য-সামন্ত নিয়ে জ্বলন্ত আগুন ঘিরে গোল হয়ে বসে আছে। বিড়বিড় করে মন্ত্র আওড়ায় নিরঞ্জন। আজ নিয়ে নয় দিন উপবাসে কাটলো তার। শুকনো হাড় বের হওয়া শরীরে কাপড় বলতে একটামাত্র ধুতি। আগুনের আভায় নিরঞ্জনের পিঠে চিকচিক করা বড়শি গাঁথার অগুনতি দাগ আশেপাশের ভক্তদের তাঁর প্রতি আরো শ্রদ্ধা বাড়িয়ে তোলে। ওরা পুরোদমে শিঙ্গায় ফুঁ দেয়, ঢাক, ঢোল,‌ খোল, করতাল আর কাঁসার ঘণ্টার ছন্দবদ্ধ সুর তোলে। দমকে দমকে কাঁপতে কাঁপতে “বোল মহাদেব” বলে লাফিয়ে উঠে নাচতে থাকে সে। তাঁকে অনুসরণ করে তাঁর ভক্তরা, সবার গা খালি, কোমরে লাল রঙয়ের নেংটি। উন্মাদের মতন নাচতে নাচতে দলবলসহ আগুনের উপর চলে আসে নিরঞ্জন। ওরা লাফাতে থাকে সেই জ্বলন্ত আগুনের উপর, আর চিৎকার করে বলতে থাকে “বোল, বোল মহাদেব”। অতগুলা মানুষের পায়ের চাপে আগুন হার মানে, কমতে কমতে একসময় নিভে যায়। ওরা সমস্বরে একসাথে চিৎকার করে উঠে “শিবা বোল, বোল মহাদেব”।


১০১টা ছবির গল্প-ছয়, সারি নদী

মুস্তাফিজ এর ছবি
লিখেছেন মুস্তাফিজ (তারিখ: সোম, ১১/০৪/২০১১ - ২:৩৩অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

সেই কতকাল আগের কথা। সেই সময় হিমালয়ের পাদদেশে ছিলো সবুজ সুন্দর এক রাজ্য। নাম জৈন্তা। সেই রাজ্যে রাজা ছিলো, রানি ছিলো, আর ছিলো প্রজা। তবে অন্য দেশের চাইতে এর পার্থক্য ছিলো যে এই রাজ্যের অধিকর্তারা ছিলেন মেয়ে। বংশানুক্রমে মেয়েশাসিত সেই রাজ্যে এবার আসীন হলেন প্রমিলা।


শিবসা নদীতে এক রাত

মুস্তাফিজ এর ছবি
লিখেছেন মুস্তাফিজ (তারিখ: বুধ, ১৬/০৩/২০১১ - ৪:২৭অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

১৮ই ফেব্রুয়ারি রাত। কুটকুট করে মশা কামড়ায়, মশা ঠিক না, এক ধরনের পোকা, আমাদের দেশে বলে ঊনি পোকা। আমার দুরাবস্থা দেখে একজন মশা তাড়ানোর পেস্ট এনে দিলো। সেটা লাগিয়ে আরাম পাচ্ছি। এই মশার পেস্ট নিয়ে একটা মজার কাহিনি আছে, এই সুন্দরবনেই কয়েকবছর আগে। তখন সবেমাত্র সুন্দরবনের সাথে প্রেম জমে উঠেছে। একদিন ভোরে ঘুম থেকে উঠে পেস্ট ভেবে এই ঔষধ ব্রাশে লাগিয়ে দাঁত মাজতে লেগেছিলাম।