মণিবন্ধে বেঁধে দিলেম রাতের রাখী খানি
আবার তুমি সায়াহ্নেতে এসো
অন্ধকারের স্তনের ভেতর মুখ লুকিয়ে জানি
যাবার বেলায় তন্দ্রাহত তোমার বীণাপাণি
মৌন থেকো; একটু তবু হেসো।
রুগ্ন দিনের হলুদ আলোর মন কাঁদানো গানে
চন্দ্রাহত দূর গোধুলীর বাঁশী
আমার মাঝে তোমার ছায়া সন্ধ্যা ডেকে আনে
জাগিয়ে রাখে দৈন্যতারই হুতাশ ভরা বানে
স্তব্ধ রাতের বিষাদ রাশি রাশি।
শীর্ণ নদী খেই হারালো সাঁঝের তারার ডাক ...
প্রথম পর্বঃ ঘরোয়া কথন
আমরা মিলেছিলাম এক ঘরোয়া আড্ডায়। বহু আগে থেকেই মনের টান আমাদের তাগাদা দিচ্ছিল, কিন্তু ব্যস্ততা ক্রুর জাল আমাদের করে রেখেছিল পরস্পর হতে বিচ্ছিন্ন। নিত্যদিনের জীবনযাপনের আটপৌরে চাহিদাগুলো আমাদের জীবনের অনেকটুকু মূল্যবান সময় নিপুন চুরি করে নিয়েছে। আমরা ব্যস্ত থেকেছি, অথচ কি করুণভাবে হয়ে পড়েছি জীবন থেকে বিচ্ছিন্ন। সহস্র মানুষের ভীড়ে হেঁটেও হয়ে পড়েছি ভী ...
আমিও ছিলাম সেখানে সেদিন
নিশ্চিত, অনেকেই ছিলো;
সশরীরে কিম্বা মনের গহনে
সেই তেজ সযতনে পুষেছিল আত্মার দহনে
আমরা আমজনতা রয়ে গেছি; ক্ষতি নেই -
আমাদের সব দেহ, সব আশা, সবটুকু প্রেম
নিমেষেই একটি বক্ষে অমর হয়েছে,
অমর হয়েছে সারা বাংলাদেশ বুকে ধরে
আমাদের নূর হোসেন।
জমে থাকা ছোপ ছোপ রক্তের
কালচে দাগ মুছে
বুনিয়া জেগে উঠছে
নিকশ কালো আঁধারের বুক চিরে
দলে দলে বেরিয়ে আসছে মানুষ
কালো মানুষের দল
শরনার্থী শিবিরের তাবু ছিঁড়ে ফুঁড়ে
আশার খড়কুটো জড়ো করে ভুঁই খুঁড়ে
ঢাকের দ্রিমিকি দ্রিমিকি তালে
বেরিয়ে আসছে মানুষ
যুথচারী কালো মানুষের দল
আজ মৃন্ময় স্বপ্নের বীজ বুনা হবে
কঙ্গো অববাহিকায়
আজ অনলস জুম চাষ
সবুজ পাহাড়ের গায়
এখানে বনষ্পতির নিবিড় প্রহর ...
ভাবনাগুলো বেজায় হুলো
রাখ ভরে রাখ সিন্দুকে
চিত্তকে তোর বৃত্তে সেঁটে
আটকা বিষাদ-সিন্ধুকে
স্মৃতির কুলো উড়ায় ধুলো
ভীতির দিনেও যুদ্ধসাজ
কার্ফু মেরে মুন্ডু ফেঁড়ে
মগজ ধোলাই দিচ্ছি আজ
কেন রে তোর মনটা পুড়ে
ঘূর্ণিঝড় আর আইলাতে
বাউলা কোকিল চ্যাঁচাস কেন
লাভটি কোন নেই তাতে
আউলা কবি তোর কি সাজে
উথলে উঠা দেশপ্রেম
একটি চালেই কিস্তি গেলে
বুঝবি কি ঘোর দাবার গেম
ফের বাবাজী ফেরেব্বাজী
...
পূর্বলেখঃ ১৯৮৩ সাল। তখন আমি দশম শ্রেণীর ছাত্র। ক্যাডেট কলেজের আন্তঃ হাউস বাংলা কবিতা আবৃত্তি প্রতিযোগিতায় সেবারের নির্বাচিত কবিতা শামসুর রাহমান রচিত ‘বিপর্যস্ত গোলাপ বাগান’। ধুম প্রাক্টিস চলছে আমাদের হাউস টিউটর ও বাংলা শিক্ষক জনাব সাইফুল ইসলামের তত্ত্বাবধানে। আবৃত্তিতে বিগত তিন বছরের শিরোপা আমাদের। দু’তিনদিনের প্রাকটিসেই কবিতাটি মোটামুটি আয়ত্ত্বে এসে যায়। এর পর চলে ন ...
মাঝরাতে জেগে উঠি
চোখ থেকে বিভোর ঘুমের ঘোর কাটতে না কাটতেই
স্বচ্ছ স্বপ্নের দল আমাকে ভাসালো আনন্দে
আধো ঘোরে আমি তাঁর স্নিগ্ধ হাতটি খুঁজি
ভালোবাসার হাতটি তাঁর
আহা কি মধুর কোমল ভরসার
পাশে নেই শুয়ে,
জানালায় দেহ মেলে দিয়ে ঠায় আছে দাঁড়িয়ে
ঝাপসা আঁধারির অনির্বচনীয় মূর্তিমায়
অন্ধকার তখন নিপুন শিল্পীর মতো
জোনাকি রঙে আঁকে প্রতিমার
আবছা অবয়ব
নগ্ন মাতৃত্বের ভার যেন তাঁর ছুঁয়ে ...
১. পূর্বরাগ
চাতক পাখি এবার উড়াল দেবে
ঢাকছে তাকে আপন গৃহকোণ
কন্যাটি তার বাবার আদর নেবে
বউটি নেবে মনের সিংহাসন।
এখন শুধু প্রতীক্ষারই পালা
বাজছে প্রাণে মধুর শিহরণ
মনের আকাশ মুক্তো-মানিক ভরা
আসবে কখন সেই সে শুভক্ষণ!
কন্যা যখন ড্রইং খাতা মেলে
আপন মনে বাবার ছবি আঁকে
গিন্নী তখন সকল কিছু ফেলে
নানারকম পসন্দের পদ রাঁধে।
এসব ভেবে কি হয় মনে জানো?
ওদের কাছে সকল ফেলে ছুটি
থাকনা পড়ে কাজ ...
সূর্যের তাপে ঘামে ভিজে দেহ ক্লান্তিতে পড়ে নুয়ে
মধ্য দুপুরে ঠেলা ঠেলে নিয়ে চলেছি এ পথ দিয়ে
সামনে আমি হাতা ধরে টানি পেছনে কিশোর ছেলে
গাড়ী সাইকেল রিক্সা পেরয় আমাদের পাছে ফেলে
রাজপথে জ্বলে লাল রঙ বাতি দু’দন্ড থামতে হয়
যন্ত্রের মতো ব্রেক চেপে থামা আমার কি শোভা পায়?
তবু ঘাম মুছে গতির লাগাম দুই পায়ে চেপে রাখি
ট্রাফিক পুলিশ রক্তচক্ষু আমি ভয়ে ভয়ে কাঁপি
কত বাসা-বাড়ী বদলী হলো, কত মন হলো ...
সংবিধিবদ্ধ সতর্কীকরণঃ এটি একটি নির্দোষ মৌনপ্রিয় পদ্য। পাঠকেরা কল্পনার ডানায় ভাসিতে চাহিলে নিজ দায়িত্বে ভাসিবেন। পপাত ধরণীতলের জন্য পদ্যকার দায়ী থাকিবেন না।
অচল আনি সচল হবে পিষছে কলম জোরসে জোর
গদ্যজাত পদ্য লিখেই আনতে হবে নোতুন ভোর
দোলনা দোলা শিশুর মতোন থাকবে কদিন দুধভাতে?
শব্দস্রোতের উর্মিমালা খেই হারালো মাঝপথে
ভাবের খাতায় গাবের আঠায় আটকে রাখো লালিত্য
কুলীন হলে ছাড়তে হ ...