"৫ পণ কলা আনছিলাম, এখন এই কয়টা রইছে।"
বুড়া মিয়ার বয়স কমপক্ষে ৬০। বুড়া একমনে কলা গুনতেছে।
পণ এর অর্থ বুঝি না। বুড়া বুঝাইয়া দেয়। " ২০ হালিত এক পণ।" মনে মনে হিসাব কষি-৪০০ কলা।
বুড়ার দিকে তাকাই, ফুটপাতে বসে পড়ায় বুড়াকে দেখতে সুবিধা হয়।
নাহ, এখন যথেষ্ট শক্তসামর্থ্য, নাইলে ৪০০ কলা কেমনে আনে। বুড়া পাশ দিয়ে যাওয়া ভদ্রমহিলাদের উদ্দেশ্য করে বলে," আপা, দেশি কলা, আসেন। নিয়া যান।"
১
ঈশ্বরের সাথে শেষবার দেখা নারায়ণগঞ্জের এক অন্ধকার ঘরে। অবশ্য বেশিক্ষণ অন্ধকার থাকে না তা। ঈশ্বর এসে চুলের মুঠি ধরে নামিয়ে নেয় মাটিতে। তারপর লাথি দিয়ে একেবারে সিঁড়ির শেষ ধাপে। আমাদের সবাইকে এক রুমে বন্দী করে ফেলে। এরপর দাউদাউ করে আগুন জ্বলে ওঠে। আমি না চোখের সামনে আর ঈশ্বরকে দেখি না।
দেখি আমাকে, আমার মাকে, আমার নানীকে।
২
মা গ্রামে যাবে।
প্রায় বছর চারেক বাদে। বাবা মারা যাওয়ার পর আমার বা মা’র কারোই ওদিকে যাওয়া হয়নি।
সকাল ৬টার বাস।
ইদানীং আমার কি হয়েছে কে জানে, রাতে ১০টা-১১টা বাজলেই ঘুমে চোখ ডুবে যায়, কোনকিছু দিয়েই চোখের পাতা খোলা রাখতে পারি না। আর ঘুম ভেঙ্গে যায় ৩টা-৪টার দিকে।
ঘুম ভেঙ্গে গেলে মাকে ডেকে তুললাম।
সব গুছিয়ে নিয়ে বের হতে হতে পাঁচটা বেজে গেল।
ব্যাপারটা প্রথমে খেয়াল করিনি। করতামও না।
ইংলিশ মিডিয়াম আর বাংলা মিডিয়াম কথাটা চলে আশায় খেয়াল হল।
আরেহ, এক ছোট ভাই না গেছে? কল দিলাম ওরে।
"কই তুই?"
"কেন ভাইয়া কইছিলাম না আজকে ভলেন্টিয়ার গিরি করবো।"
স্ক্রিনে থাকা জিনিসটা আর একবার ভালো করে পড়লাম। মিলে না তো। ও তো বাংলা মিডিয়ামের তাইলে? এইডা খালি ইংলিশ মিডিয়াম কয় কেন? (পরে জানসি সব এক ঘাটে না থাকলেও এক নদীতেই আছে)
গেট দিয়ে ঢুকতেই দারোয়ানের সাথে দেখা। আটকালো না। না আটকানোরই কথা।
সপ্তাহখানেক আগেও বাড়িটার প্রতি অন্যরকম এক টান অনুভব করতাম। আর এখন?
বাড়িওয়ালা থাকেন দো’তলায়, অবসরপ্রাপ্ত সরকারী অফিসার।
নক করতেই কাজের লোক দরজা খোলে জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে। বললাম বাড়িওয়ালা বাসায় কিনা।
হ্যাঁসূচক মাথা নাড়ে সে। গেটে দাড় করিয়ে রেখে ভিতরে চলে যায়।
অনেকদিন পর সাইকেল নিয়ে বের হলাম। সাইকেলের অবস্থা যদিও খারাপ। মাসখানেকের উপরে চালানো হয় না। হাওয়া বের হয়ে গেছে।
গরমে জীবন হাঁপিয়ে উঠেছে, আমিও জীবনের বাইরের কেউ নই। এর মধ্যে সাইকেল চালানো নির্বুদ্ধিতার পরিচয় দেওয়ার নামান্তর মাত্র। কিন্তু ক্যাড়া উঠলে কে আর বসে থাকে বলুন। আমিও বসে থাকলাম না।
১৯৯৮
প্রথম দেখা, অবাক চোখে তাকিয়ে থাকা। চেয়ারে পা দুলিয়ে দুলিয়ে একমনে পড়ে যাওয়া, দুই ঝুঁটি আর কানে ছোট দুল,সাথে লাজুক লাজুক কথা -এই ছিল সে।
আমার দিনশেষে একবুক সুখ নিয়ে বাড়ি ফেরা। না, তখনও অক্সফোর্ডের দেওয়া সুখের সংজ্ঞা মনকে স্পর্শ করেনি। তবু বুঝতে পেরেছিলাম, এরই নাম সুখ।
২০০১
এরপর যেন বহুকালের নির্লিপ্ততা।
গ্যাসের বর্তমান পরিস্থিতি
পেট্রোবাংলা বলছে দেশে দৈনিক মোট উৎপাদন ২১৮৯ মিলিয়ন ঘনফুট(এখানে আছে)। জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী বলেছেন দেশে জ্বালানির ঘাটতি ৫০০ মিলিয়ন ঘনফুট(MCF)। তিনি বলেছেন,দেশে বর্তমানে উত্তোলনযোগ্য গ্যাসের মজুদ প্রায় ১০ দশমিক ৮ ট্রিলিয়ন ঘনফুট।
নেশায় বুঁদ হয়ে থাকা বাপটাকে দেখে একবার।
বাড়ির সামনে বসে ধূপের ধোঁয়ায় হেরোইনের গন্ধ ঢাকবার ব্যর্থ প্রচেষ্টায় রত।
বাড়ির ভিতরে ঢুকতেই দেখে গৃহশিক্ষক বসা।
এই লোকটাকে তার খুব একটা পছন্দ না। তবুও রেখেছে। কথা বেশি বললেও যন্ত্রণা দেয় না। কোন অনর্থক নালিশ করে না।
দেখেও না দেখার ভান করে চলে যায় দোতলায়।
গেরিলা দেখে এলাম।
১লা বৈশাখের দিনে এমনিতেই আমার কাজের অভাব, তার উপর সাড়া রাস্তায় ভিড়।
সকালটা টিএসসিতে চলে গেল। আসলে সকাল বলাটা ভুল, ১১ টায় আর সকাল কই?পরের কয়েক ঘন্টা মধু, হাকিম আর শ্যাডোতে চক্করে।