নীলু আপা প্রায়ই বলতো দুপুর বেলা, মা যখন দুপুরের খাবার একটু খেয়ে নিয়ে, খবরের কাগজটা চোখের সামনে ধরতে না ধরতেই একটু চোখ বোজার আগে, আমাকে ডাকতো- আয়, ঘুমোবি- আর আমি দুপুরে ঘুম আসেনা বলে আমাদের ছোট্ট বারান্দায় গিয়ে দাঁড়াতাম, তখন দেখতাম নীলু আপাকে, সামনের বিল্ডিঙটার দালানে দাঁড়িয়ে। আমায় দেখতো কিছুক্ষণ, একসময় বলতো, "ছাদে আসবি?" আমি মুখ ভার করে বলতাম, "চাইলেই বুঝি আসা যাবে? মা বকবে না?" নীলু আপা...
এক:
২০০৩ সালে এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে বাড়ি ফিরে, বিকেলে বাইরে হাঁটাহাঁটি করতে গিয়ে মেজাজটাই খারাপ হলো। কারণ, এলাকার ফাহিম ভাই (কিংকং না!)। আমাদের এলাকায় একটা বিশাল সাইজের মাঠ ছিল, যেখানে এখানে ওখানে বিভিন্ন খেলাধূলা হতো। সেই মাঠের এক কোণায় বিকেল বেলায় ফাহিম ভাই গীটার নিয়ে বসে পড়তেন, আর এলাকার মেয়েরা- কলেজ পড়ুয়া নীলা আপা থেকে শুরু করে ক্লাস সিক্সের ময়না- সবাই ওনাকে ঘিরে বসতো। ফাহিম ভা...এক:
এই একই রুটের বাসে ভীড়ে পকেট সামলাতে সামলাতে, আমি
বহুবার ভেবেছি-
একদিন, ঠিক হেঁটে যাবো দক্ষিণ বাংলার কোন অচেনা গাঁয়ের পথ ধরে।
কোন গেরস্ত বাড়ির উঠোন কলমি শাকের ঘ্রাণে টইটুম্বুর,
বাঁধানো পুকুর ঘাটে লজ্জায় নত নববধূ বলবে,
"আমাদের বাড়িতে ইট্টু ঘুইরা যাইয়েন ভাইজান-
মাগুর মাছের ঝোল দিয়া দুইডা গরম ভাত!"
আমার পায়ে থাকবে না এক জোড়া বাটা জুতো-
আমি হেঁটে যাবো আরো দক্ষিণে, মিশে যাবো ইশকুলগাম...
এখানে ওখানে শকুন ওড়াউড়ি করে। গ্যালো বছর এখানে টেলিফোনের লাইন এসেছিলো, আর এসেছিলো ডিশের ক্যাবল। শকুনেরা উড়ে এসে বসে, টেলিফোনের তারে, ডিশের ক্যাবলে, আর বাড়ির ছাদে, ছাদের ওপর পানির টাংকীতে, মুদির দোকানের চালে।
আজ এখানে তো কেউ মরেনি, কী জানি বাপু, শকুনেরা কেন এলো! বুড়োরা বলেন, নিশ্চয়ই কোন লাশ পড়েছে, অলিতে গলিতে খুঁজলে হয়তো লাশ খুঁজে পাওয়া যাবে, লাশ না দেখলে কী শকুনেরা এ মুখো হয়? ওদের বড...
(ইহা মূলত আমরা যারা অবিবাহিত পুলাপাইন আছি তাদের জন্য আয়োজন করা হয়েছে। বিবাহিতরা নিজ দায়িত্বে অংশগ্রহণ করুন। এই কুইজে দেয়া উত্তর যদি আপনাদের দাম্পত্য জীবনে অশান্তি নিয়ে আসে- তার জন্য কুইজ কমিটি দায়ী থাকবে না।
আর সবচে বড় কথা এটাকে সিরিয়াসলি যাতে কোন অবস্থাতেই কেউ না নেন। )
নিয়মাবলী:
উত্তর হতে হবে সর্বজনীন। মানে আপনি উত্তরে যার নাম বলবেন- সে মোটামুটি সবার কাছে পরিচিত থাকতে হবে...
মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রশীদ কাকা, আপনার দৈনিক কিংবা মাসিক বেতন কত?
গ্যালোবার বিজয় দিবসে আপনার ইশকুল পড়ুয়া মেয়েটার হাতে বিজয় পতাকা এঁকে দিতে পেরেছিলেন সময়ের অভাবে? বিজয় দিবসের উৎসবে এই শহরে মানুষের স্রোত বড্ড বিজয়স্তম্ভ মুখী বলে আপনার টিকেট কাউন্টারে উপচে ভরা ভীড় ছিল কী সেদিন?
মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রশীদ কাকা, আবদুল্লাহপুর বাস কাউন্টারে টিকেট বিক্রী করে আপনার দিনকাল কেমন চলে?
ষো...
এই সেমিস্টারের সবচে দীর্ঘতম মিশন হলো টেলিকম ল্যাব করা। শেষই হতে চায় না। মনোযোগ দেয়ার কোন মানে নাই। জানি- পাঁচ দশ মিনিট পরেই তাল হারিয়ে ফেলব।
কী মনে করে আজ ল্যাবে- খাতায় বাংলা লেখা শুরু করলাম। এবং স্বাভাবিক ভাবেই লক্ষ্য করলাম, লিখতে খুব কষ্ট হচ্ছে। অ এর মাথাটা দিয়ে ঘুরিয়ে আনতে বেশ সময় লাগলো।
কত দিন পর, কলমে কাগজে বাংলা লিখতে বসা। কী বোর্ডে নোটপ্যাডের যুগে অবশ্য এ কাজটা এখন না করলে...
আইইউটিতে আমার নোংরা বিছানার পাশে একটা নোংরা দেয়াল আছে। সেই নোংরা দেয়ালে পার্মানেন্ট মার্কার দিয়ে কয়েকটা লাইন লেখা। "আমি কীরকম ভাবে বেঁচে আছি, তুই এসে দেখে যা নিখিলেশ!"
অথচ নিখিলেশ নামের আমার কোন বন্ধু নেই। এমনকি খানিকটা চেনা জানা যেসব মুখ আমার- তাদের কারো পরিচয় নিখিলেশ নামে না! তবুও যখন বুঝি- অনন্ত পতন। তখন নোংরা বিছানার পাশে নোংরা দেয়ালে মলিন হয়ে আসা লাইনগুলোর দিকে তাকাই। মনে ম...
এক:
"... আর মাঝখানে থাকব আমি। ছবির ঠিক উপরে ইংরেজীতে লেখা থাকবে, "looking for girls"। ছবির নীচে সবার মোবাইল নম্বর। বিপ্লবদা, বিজ্ঞাপনটা প্রথম পাতায় দিতে হলে খরচ কেমন পড়বে?" বিপ্লবদাকে আশেপাশে দেখা গেলো না। ধূগো মুখে একটা বিড়ি গুঁজে দিয়ে পুনরায় সামনে মেলে রাখা কাগজে মনোযোগ দেন "বিপ্লবদা আবার কই গেলো? আচ্ছা শোন, ছবিতে সবাই মুখ দু:খী দু:খী করে রাখবি। শুধু আমার মু...
"চোখে পানি আসলে কী দিয়ে মুছেন?"
এ প্রশ্ন শুনলে প্রশ্নকর্তার দিকে তাকাতে হয়। প্রায় বৃদ্ধ একজন মানুষ। পরনে আধ ছেঁড়া পাঞ্জাবী, ঢোলা পায়জামা। শীত নেই তবুও কানে মাফলারের মতন করে একটা গামছা জড়ানো। গায়ে এলোমেলো ভাবে নেতিয়ে যাওয়া একটা চাদর বিছানো রয়েছে। কাঁধে বাজারের থলির মতন একটা ব্যাগ। বৃদ্ধ রয়ে যাওয়া কয়েকটা দাঁত সম্বল করে আমার দিকে তাকিয়ে হাসেন। যাবো যাবো বিকেলের আলোয়, হালদা নদীর ...