আদর্শ আর নীতি নিয়ে ওদের অনেক বড়াই ছিলো
ওদের কাছে মুক্তিযুদ্ধ ‘দুই কুকুরের লড়াই’ ছিলো!
চিরকালই এই দাদারা ইহার উহার লেজুড় ছিলো
এই দাদাদের পোটলায় লাল খোর্মা এবং খেজুড় ছিলো!
আমি তখন সিনেমার পোকা। সত্তরের দশক। গুলিস্তান বিল্ডিং-এর ছোট্ট মুভি থিয়েটার ‘নাজ’এ মুক্তি পেলো শাদাকালো সিনেমা ‘এপার ওপার’।
পত্রিকা মারফৎ আগেই জেনেছিলাম নতুন একজন নায়িকার আগমন ঘটতে যাচ্ছে এপার ওপারের মাধ্যমে। ছবির নায়ক নায়িকা নির্বাচনের ক্ষেত্রেও ছবির নামটি ছিলো যথার্থ। নায়ক সোহেল রানা ঢাকা অর্থাৎ এপারের আর নায়িকা সোমা মুখার্জি ওপারের, অর্থাৎ কলকাতার। ছবির পরিচালক মাসুদ পারভেজ আর সোহেল রানা যে একই ব্যক্তি সেটাও আমার জানাই ছিলো। সোহেল রানা থাকেন ঠাটারি বাজার লাগোয়া বিসিসি রোডে। আর আমি ওয়ারি হেয়ার স্ট্রিটে। হাঁটাপথের দূরত্ব। নিজের মহল্লার নায়ক বলে ছবিটার ব্যাপারে আলাদা একটা আকর্ষণও কাজ করছিলো আমার ভেতরে। কাজী আনোয়ার হোসেনের বিখ্যাত চরিত্র ‘মাসুদ রানা’র মাধ্যমে নায়ক সোহেল রানার অভিষেক ঘটলেও আমার মুগ্ধতা কেড়ে নেন তিনি এপার ওপারের মাধ্যমে।
নাজ ছিলো ঢাকার সবচে খুদে সিনেমা হল। সিট সংখ্যা বড়জোর শ খানেক। নবাবপুর স্কুলের ছাত্র ছিলাম বলে গুলিস্তান আর নাজের টিকিট সংগ্রহ করা আমার জন্যে সহজ ছিলো। অধিকাংশ টিকিট ব্ল্যাকার তখন আমার চেনাজানা, চেহারার সুবাদে। নিয়মিত দর্শক পরিচয়ের বাইরে নবাবপুর স্কুলের ছাত্র বলে ওরা আমাকে খানিকটা খাতিরও করতো। সুতরাং সিনেমা সুপারডুপার হিট হলেও সামান্য কিছু বাড়তি টাকা দিয়ে টিকিট জোগাড় করে ফেলতাম যে কোনো শো-এর।
সকালে ব্রেকফাস্ট টেবিলে চায়ে চুমুক দিতে দিতে ল্যাপটপ ওপেন করতেই নিউজ ফিডে আওরঙ্গের ছবিটা ভেসে উঠলো। হেমায়েত উল্লাহ আওরঙ্গ। সন্ত্রাসী ছাত্রনেতা হিশেবে ব্যাপকভাবে পরিচিতি অর্জনকারী একজন বঙ্গবন্ধু প্রেমিক। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মহসিন হলে আড্ডা পেটাতে গিয়ে আওরঙ্গ সম্পর্কে কতো কাহিনি যে শুনেছি!
স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতাসংগঠক বেলাল মোহাম্মদ চলে গেলেন! একাত্তরে আমাদের মহান স্বাধীনতাযুদ্ধের নয়টি মাস এই বেতার কেন্দ্রটি বাঙালির স্বপ্নের বাতিঘর হিশেবে উদ্দীপনার দীপ্ত মশালটি প্রজ্জ্বলিত রেখেছিলো। আক্রান্ত ও অবরুদ্ধ বাঙালি কী বিপুল আগ্রহ নিয়ে এই বেতার কেন্দ্রের অনুষ্ঠান শুনেছে!
ক’দিন ধরেই পাখিকে মনে পড়ছে খুব। পাখি। মিষ্টি একটা মেয়ে। আমাদের ওয়ারির বাড়িতে ভাড়াটে ছিলো। ওর মা আমাদের চলচ্চিত্রের একজন অভিনেত্রী ছিলেন। খুব রূপসী মহিলা। ধবধবে ফর্সা। হাস্যোজ্জ্বল চেহারা। কথা বলেন বরিশাইল্যা একসেন্টে। আমাকে খুবই পছন্দ করতেন তিনি। আদর করে আমাকে সম্বোধন করতেন—‘জামাই’।
২০১০ সালের সূচনাতে, চট্টগ্রাম গেলাম সায়ীদ স্যারের সঙ্গে। বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের একটি অনুষ্ঠানে অংশ নিতে। ভ্রমণের আরেক সঙ্গী অভিনেতা খায়রুল আলম সবুজ(আমাদের পাড়াতো বোনকে বিয়ে করার সুবাদে আমি যার শ্যালক হই!)।
আমার সকালটা শুরু হলো সজল খালেদের মৃত্যু সংবাদের মাধ্যমে। পৃথিবীর সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্ট চূড়াকে পদানত করে ফিরে আসার পথে মৃত্যু তাকে কেড়ে নিয়েছে।
আমার মধ্যে ছড়াচেতনা এবং ছন্দ-দ্যোতনা সৃষ্টিতে বিশিষ্ট এক মাতালের ভূমিকাকে আমি স্মরণ না করে পারি না। আমি তখন খুব ছোট। প্রাইমারী স্কুলে আসা যাওয়া শুরু করেছি সবে। থাকি হেয়ার স্ট্রিট,ওয়ারিতে। আমাদের বাড়িটা এমন এক জায়গায় যার ডানে এবং বাঁয়ে মুচিদের (রবিদাস সম্প্রদায়)টানা বস্তি। মাঝখানে আমাদের বাড়িটাই শুধু ইটের দালান। সেই বস্তিতে থাকা মুচিদের প্রধান জীবিকা ছিলো জুতো সেলাই। রবিদাস সম্প্রদায়ের ল
বছর তিনেক আগে বইয়ের জগৎ নামের পত্রিকাটার সম্পাদক আহমাদ মাযহার খুব বেকায়দায় পড়ে গেলো। ডাকযোগে একটা লেখা এসেছে। শামসুজ্জামান খানের ফোকলোর বিষয়ক একটা বইয়ের রিভিউ। রিভিউটা চমৎকার। কিন্তু লেখক পরিচিতিতে জানা যাচ্ছে লেখক ক্লাশ এইটের ছাত্র। মাযহারের মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ার উপক্রম। এইটুকুন একটা ছেলে ফোকলোরের কী বোঝে!
হাসনাত আবদুল হাই-এর ল্যাঞ্জা
লুৎফর রহমান রিটন