কাদেরীয়া বাহিনীর ভয়ে টাঙ্গাইল এলাকায় পাকিস্তানী খুনীরা তটস্থ থাকত। মুক্তিযুদ্ধের শেষ পর্যায়ে ভারত আমাদের যুদ্ধে যোগ দিলেও, তাদের ছত্রীবাহিণী টাঙ্গাইলে অবতরণ করে কাদেরীয়া বাহিনীর পাহারায়। ষোল ডিসেম্বরের পাকিস্তানী জান্তার আত্মসমর্পণের সময় কসাই নিয়াজীকে কাদের সিদ্দিকীর হাত থেকে বাঁচাতে ভারতীয় বাহিনীকে বিশেষ উদ্যোগ নিতে হয়। তারপর চল্লিশ বছরের অনিবার্য পঁচনের ফলশ্রুতিতে কাদের সিদ্দিকী এক দিন বিক্রী হয়ে যান জামায়াতে ইসলামীর কাছে।
১
বেদচর্চিত যুগে, ব্রাহ্মণ শাসিত সমাজে বসে চার্বাক বলেছিলেন, "ভন্ড, ধূর্ত আর নিশাচরেরাই বেদের কর্তা"। সৃষ্টিকর্তা ঈশ্বরকে উড়িয়ে দিয়ে বলেছিলেন "বিশ্বজগৎ নিজের নিয়মেই ভাঙে, গড়ে, তার জন্য সৃষ্টিকর্তা ঈশ্বরের দরকার নেই"। নৈতিকতার পাশব মানদণ্ড লোভ আর ভয়ের অসারতা তুলে ধরে বলেছিলেন, "স্বর্গ, নরক, পুনর্জন্ম বলে কিছু নেই, আত্মা অবিনশ্বর নয়"। প্রাচীন ভারতের বস্তুবাদী এই দর্শন গ্রন্থিত হয়েছিল। যুক্তিতর্ক দিয়ে ঈশ্বরকে নাই করে দেয়া দর্শনের কপালে যা জোটা স্বাভাবিক, চার্বাক দর্শনের বইগুলো পুড়িয়ে দেয়া হলো।
ইউরোপের যেকোন দেশের যেকোন রাস্তায় দাঁড়িয়ে নাৎসীদের গণতান্ত্রিক অধিকার নিয়ে মানবাধিকারে চুপচুপে দুইটা কথা বলে দেখুন। গণতন্ত্রের ধ্বজ্জা উড়ানো ইউরোপিয়ানরা গণতন্ত্রের ফ্ল্যাগস্ট্যান্ড খুলে সেটা আপনার পিছনে ঢুকিয়ে দিবে। মানবাধিকার বেঁচে খাওয়া আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর কাছে গিয়ে কান্নাকাটি করুন নাজীদের রাজনীতি করার অধিকার দিচ্ছেনা অমুক সরকার, তমুক সরকার বলে, হলোকাস্টের বান্ডিল বান্ডিল ইতিহাস গিলিয়ে খাইয়ে তারপর আপনার নামে তারা একটা ভীষণ নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়ে দিবে।
খবরে প্রকাশ, জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। দেশ এগিয়ে যাচ্ছে সমৃদ্ধির পথে।
১।
সুখের কথা, এই দেশ থেকে হিন্দু কমে যাচ্ছে। সেই ৪৭ পূর্ব ৪০ শতাংশ থেকে কমতে কমতে এখন সাড়ে আট শতাংশ। তা, এই হিন্দুরা যায় কোথায়?
সলোমন আইল্যান্ডের স্টলের সামনে এক বিশাল দেহী রাজার ছবি রাখা, তার সামনে দাঁড়িয়ে এক সলোমন আইল্যান্ডার সেই রাজার গুণগান করে যাচ্ছে। তার বর্ণনার শেষ দিকে উচ্ছাস কমে এসে দূরবর্তী বিষাদের ছোঁয়া, সারমর্ম করলে দাঁড়ায়, "আগে কি সুন্দর দিন কাটাইতাম"। তারপর? "দেন দ্যা ইউরোপিয়ান কেইম, এন্ড মেসড এভরিথিং"। আমার সাথে অ্যামেরিকান রেড ইন্ডিয়ান কারো সাথে দেখা হয়নি কখনো, তবে আন্দাজ করতে পারি, এই বিষয়ে তাদের কী বলার থাকতে পারে।
খুলির ভেতর থেকে মগজ চুরি গেছে কখন জানি। তাই কয়েক মাসের মরিয়া চেষ্টার পরেও জমে থাকা কিছু কাজের কোন গতি হচ্ছিল না। এই অবস্থায় সিদ্ধান্ত নিলাম কোন এক উইক এন্ডে দূরপাল্লার বাস ধরে দূরে কোথাও চলে যাব। ঝোঁকের মাথায় একটা ক্যামেরাও কিনে ফেলেছি, তার একটা রোডটেস্টও করা দরকার। এদিকে পাশের শহর থেকে বাদলদার ফোন, সে গাড়ী চালিয়ে ফ্লোরিডা যাবে, সেজন্য একজন হেল্পার দরকার। চ্যাপেল হিল থেকে বেরিয়ে নিকারাগুয়া কি সাহারা যেখানেই হোক না কেন, আমার যেতে কোন আপত্তি নেই। যাত্রাটাই আসল, গন্তব্য কোন ব্যাপার না,তাই চট করে রাজী হয়ে গেলাম।
“Anything that can go wrong, will go wrong” – মারফির সূত্র
১। দিনের স্বাভাবিক শুরু
ঘুম থেকে ওঠার পনেরো মিনিটের মাঝে পরের বাসটা পাওয়া মানে হচ্ছে একটি সুন্দর দিনের সূচনা, যা শুরু হতে পারে সকাল দশটা কি দুপুর বারোটায়। শনিবার জুড়ে চলে বাস নীরবতা, তাই ঘুম থেকে ওঠার দেড় ঘন্টার মাঝে কোন বাস নেই। ফেসবুকে রাজা-উজির মেরে সময় কাটাই। সপ্তাহখানেক ধরে ক্ষেপে থাকা সূর্যের নীচে সাইকেল ঠেলে বাসস্টপে পৌঁছালাম, তারপর সাইকেল বাসে ঝুলিয়ে ডিপার্টমেন্ট। দুই মাসে তিন বার বাসে সাইকেল ফেলে আসার পর সাইকেল না ভুলে যাওয়াই সাফল্যের নতুন মাপকাঠি, টানা এক সপ্তাহ জুড়ে সেই সাফল্য ধরে রাখি।
এটা হচ্ছে ডেসপারেট ব্লগ। মাথার ভিতর অজস্র আইডিয়া গিজগিজ করছে, শুধু লিখতে গেলেই মগজে লোড শেডিং শুরু হয়, পাশাপাশি দুইটা নিউরনের মাঝেও কোন বৈদ্যুতিক সিগনাল আদান প্রদান হয় না। ধান গাছের সাথে মানুষ প্রজাতির হৃদয়স্পর্শী প্রতারণা, শেষ নিয়ান্ডারথাল মানুষের মনের অবস্থা, সাইফাইএর সাথে মোগল ইতিহাসের ঘুটা দিয়ে রম্য, নতুন টেলিস্কোপ কিনে তার সাহায্যে মহাকাশের ধারাভাষ্য ইত্যাদি ইত্যাদি। ডিম্বাশয় পর্যন্ত পৌছাতে না পারা অজস্র শুক্রাণুর মতই আমার আইডিয়াগুলোর অকালমৃত্যু ঘটে চলেছে। তো কথা হচ্ছে, কোন রকমে ওয়ার্ডের দুইটা পৃষ্ঠা ভরাতে হবে। শুরু করা যাক।
১।
মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়লে মানুষ অনেক কিছু করে। আমি ঠান্ডা মাথায় ব্রাউজার খুলে মোশন প্ল্যানিং এর টিচার রনকে ইমেইল করে বললাম, “তোমার কোর্সের ফাইনাল প্রজেক্ট আগামী চার দিনে আমি কমপ্লিট করতে পারব না, ইনকমপ্লিট দিয়ে দাও”। সেটা গত ফল সেমিস্টারের কোথা। সেই ইনকমপ্লিট প্রজেক্টকে কমপ্লিট করার নিমিত্তে রনের সাথে প্রায় পনেরো-ষোলটা ইমেইল চালাচালি করে গতকাল দ্বিতীয়বারের মত দেখা করা গেলো।