১
১৮৫৭, বৃটিশ ভারত। দাবানলের মত সিপাহী বিদ্রোহ ছড়িয়ে পড়েছে মীরাট থেকে দিল্লী পর্যন্ত। অনেক দিনের জমা হওয়া বঞ্চনা আর ক্ষোভের আগুন সিপাহীদের ব্যারাকের বাইরে এসে বিদ্রোহ করতে উদ্ধুদ্ধ করে। তবে পরিকল্পনাহীন বিদ্রোহ মুখ থুবড়ে পড়ে স্বল্প সময়ে। নানা সাহিব সহ কয়েকজনের হঠকারিতায় জিম্মি কয়েকশ ইয়োরোপীয় নারী ও শিশুদের হত্যা করে নিক্ষেপ করা হয় কূপে। প্রতিশোধে উন্মত্ত ব্রিটিশরা এর প্রতিশোধ নেয় দশ বছর ধরে কয়েক লাখ সামরিক-অসামরিক ভারতীয়কে নির্মমভাবে হত্যা করে। [১]
১।
একটা সময় ছিল, দুনিয়ার সব কিছু নিউটনের কথা মেনে চলতো, গাছের আপেল থেকে শুরু করে দূরের গ্যালাক্সি পর্যন্ত। তারপর মানুষের চোখ শকুনের চেয়েও প্রখর হয়ে এলো, তার অশ্লীল নজর সবার একেবারে ভিতরে আনাগোনা করতে থাকলো। আর তখন দেখা গেলো, কিছু খুদে শয়তান আর নিউটনের কথা মানছে না, তারা ম্যাক্স প্ল্যাংক নামে নতুন এক পীরের মুরিদ হয়ে খেয়াল খুশী মত ঘুরে বেড়াচ্ছে। ঘটনাক্রমে এই পীরের বয়ানের সাথে আমার পরিচয় হয় গত সেমিস্টারে।
এসএসসি পাস করার আগে থেকেই আমি জানি আমাকে ঢাকায় পড়তে যেতে হবে। এমন না যে, আমি ঢাকা সম্পর্কে অনেক জানি, বা একবার বেড়াতে গিয়ে ঢাকার প্রেমে পড়ে গেছি। মূল ব্যাপার হল আমার ভাইয়েরা, কাজিনেরা ঢাকায় পড়াশোনা করে, এখন আমি যদি না যাই, সেটা প্রেস্টিজ ইস্যু। আমার নিজের সম্পর্কে যতই উচু ধারণা থাকুক, আমার বাড়িতে সবাই ভয় পাচ্ছিল, যদি নটরডেম বা ঢাকা কলেজে চান্স না পাই, তাহলে তো স্থানীয় কলেজের ফর্ম কিনে রাখা দরকার। তো মান-সম্মান রক্ষার তাগিদেই হোক আর যে কারণেই হোক চান্স পেয়ে গেলাম নটরডেমে। তারপর নয়ন আর মৃদুল সায়েস্তাগঞ্জ স্টেশনে গিয়ে আমাকে বিদায় দিয়ে আসল।
অ্যাডামের স্বর্গীয় প্রতিশোধ
--------------------------
অনেক অনেক আগের কথা। বিগব্যাং এর ধাক্কা ঈশ্বর তখনো সামলে উঠতে পারেননি। একেতো পাশের নরকের মত গরম হয়ে আছে চারপাশ, তার উপর স্বর্গে নেই কারেন্ট। থাকবেই বা কী করে, তখনো বিগব্যাং এর দুষ্ট কণাগুলো ইলেকট্রনে পরিণত হতে পারেনি। আর ইলেকট্রন ছাড়া ইলেকট্রিসিটি তৈরী করার ক্ষমতা ঈশ্বরের থাকলেও, তার মাথায় আসেনি। তাই ঈশ্বরের মেজাজ চড়ে আছে।
প্রথম কয়েক ম ...
ক্লাস থ্রিতে উঠেই হাইস্কুলে ঢুকে গেলাম, কারণ আমার নতুন স্কুলে থ্রি থেকে টেন পর্যন্ত পড়ানো হয়। হাইস্কুল মানেই বড় হয়ে যাওয়ার একটা ব্যাপার থাকে। আর তা টের ও পেলাম স্কুলের দ্বিতীয় দিনেই, যখন বেশ লম্বা-চওড়া চেহারার তমাল এসে জিজ্ঞেস করলো, “তুমি ক্যাপ্টেন ইলেকশন এ দাঁড়াচ্ছ?”। জানলাম থ্রিতে নতুন ক্যাপ্টেন নির্বাচন হবে এবং তমাল তাতে দাঁড়াচ্ছে। আমার সাহস ছিলনা, নাকি আগ্রহ ছিলনা ঠিক মনে ...
না, ভালবাসা মানে কী, সেই বিষয়ে আমার খুব একটা ধারণা নেই। বিশুদ্ধ অ্যাকাডেমিক আগ্রহ থেকেই এর মানে জানতে চাওয়া। আর ছোটবেলা থেকেই জ্ঞান পিয়াসু হিসেবে নানা ঘটনার মধ্য দিয়ে সবকিছু শেখার চেষ্টা করে গিয়েছি, এই লেখা তারই খতিয়ান।
শুরুটা অনেক আগে থেকে। ক্লাস টু’তে স্কুলে ভর্তি হলাম। প্রথমদিন বাবার হাত ধরে হাফ-প্যান্ট পড়ে ক্লাসে গিয়ে দেখি বামপাশের কলামে মেয়েরা বসে, আর ডানপাশে ছেলেরা। আম ...
আমার জন্ম, আর বেড়ে ওঠার কিছুটা সুদূর ভাটি অঞ্চলে। আমাদের গ্রামের গঠনটি বেশ মজার। বছরে ছয়টা মাস পানিবেষ্টিত থাকতে হয়, তাই পানির উপস্থিতিকে জীবনের আর কয়টা স্বাভাবিক অনুষঙ্গের মতই মেনে নিয়েছে গ্রামবাসী। দুইপাশে পানির দৌরাত্ম্যকে প্রশ্রয় দিতে গিয়ে প্রস্থে যতটা সম্ভব সরু হয়ে, লম্বায় যতটা পেরেছে বিস্তৃত হয়ে পুষিয়ে দিয়েছে। শুকনো মৌসুমে গ্রামটিকে দেখলে বেশ উদ্ভট মনে হবে, নীচের মাঠ ...
আয়েশ আর দুঃখ করে একটা সপ্তাহ কাটিয়ে দিলাম। তারপর কিভাবে জানি মনে পড়ে গেল চারদিন পর পনের নভেম্বর। না, বিশেষ কোন দিন না, ওইদিন একটা কোর্সের ফাইনাল প্রজেক্টের মিডওয়ে প্রগ্রেস দেখাতে হবে। সমস্যা সামান্য, প্রজেক্টটা এখনো শুরু করা হয়নি। এখন আর টেনশন করতে ভালো লাগেনা, এর চেয়ে একটা ব্লগ লিখা যাক।
আসার পর প্রায় তিনমাস হয়ে গেল। এখানের জুসটা দেশের জুসের মত মিষ্টি না, এখানের খাবারে মশলা নে ...