শাহবাগে জ্বলছে আগুন আকাশ ছোঁয়া
লক্ষ মানুষ লক্ষ প্রাণে মত্ত হাওয়া
রাজাকারের ফাঁসীর দাবি, মানতে হবে
ঝড় উঠেছে লক্ষ কণ্ঠে কলোরবে
গনগণে এই লাভার স্রোতে দেশটা ভাসে
আগুন দ্যাখো বসন্তের এই লাল পলাশে
আগুন দ্যাখো চতুর্দিকে বিশ্ব জোড়া
আসছে ধেয়ে মেঘের মতো বজ্র-ঘোড়া
মানতে হবে-রাজাকারের ফাঁসীর দাবি
আল-বদর আর আল-শামসরা কই পালাবি?
শুনতে কি পাস্ এই আগুনের পদধ্বনি?
রক্ত রাঙা মাটি তোদের পাপের খনি
জাকার্তায় স্বপ্নে বিভোর এক ভ্রমণ শেষ হলো। ১৮ অক্টোবর সকালে এসেছি। ১০ দিনের ভ্রমণ। খুব একটা কম সময়ও নয়। এর মধ্যে বালি আর লম্বকও যাবো। জাকার্তা শহরের আবহাওয়া অনেকটা ঢাকার মতোই। তাপমাত্রা ৩২ ডিগ্রী। স্থানীয় সময় সকাল আটটা চল্লিশে আমাদের বহনকারী সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের বিশাল বিমানটি জাকার্তার সুকর্ণ-হাত্তা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করলো। বন্ধু মামুনুর রশীদকে সাথে নিয়ে প্লেন থেকে নেমে এলাম। ঝলমলে রোদ
এই রক্ত ক্ষরণের দিনে
বলার শক্তিও রুদ্ধ হয়ে আসে
চোখের দৃষ্টি সবার মতো আমারও ঝাপসা এখন
যখন ষ্পষ্ট ছিলো তখনও
তোমাকে দেখতে শুয়োরের চেয়ে বেশি সুন্দর লাগেনি
তুমি দারুণ বাক ভঙ্গিমায় যখন
বেশ্যাকে মায়ের কাতারে তোলো
কী দারুণ শব্দমালা!
এবং মাকে যখন বেশ্যার কাতারে নামাও?
তোমার দক্ষতা সর্বত্র সমান!
তুমি আমাদের পথের দিশারী
শব্দের আতসবাজিতে জনসভা পুড়িয়ে করো খাক
আমাদের চোখে ঠুলি পরাও
‘আমরা ভাতের কাঙাল
মোড়লের ভাগ্য নিয়ে আসিনি
লাঙল কাঁধে নিয়ে সবুজের রাখালগিরি করি
খরা-মঙ্গার দুনিয়ায় আমরাও মাজরা পোকার মতো
কুরে কুরে খাই মাটি...’
আমি তাকে টেনে বসালাম, বললাম -
শ্রাবনের মুষল-বৃষ্টি ধরিত্রী ভাসমান, মাটির কসম,
কসম এই বিদ্যুৎ চমকের
আমাদের এই কলমের ফলা, যা চষে শব্দ-বীজ
আর ফলায় শিল্পের খোড়াক, এ সবই আপনার দেয়া...
এই মাটি থেকে পাওয়া...
প্রতিদান কিছু দেইনি আমরা - চিরঋণী
তারা-মুখ তার
বহু রাত পর
একটা রাতের তারাকে দেখছি
অনেক অনেক রাত
স্মৃতিতে খোদাই জ্বল জ্বল
এমন একটা রাত
যখন রাতের অতিথি তারারা
মশগুল পান-পাত্রে
গীটারের তারে ফুলকি ফুলকি জোনাকের ঝাঁক
সাগরের পাড়ে এমন একটা রাতের আকাশ
অন্ধকার করে দিয়ে
একটা তারার মুখ বারবার
মনে পড়ে - সেদিনের তারা-মুখ তার আর নাই।
সীমানা
আমাকে যারা হাসায় কিংবা কাঁদায়
অথবা আমি একইভাবে যাদের কাছে দায়ী
শরীরের সমস্ত নোঙর একসাথে গেঁথে যায় মাটির ভেতর
আমি চোখ রাখি দিগন্ত-ধূসরে
মহাসাগরের নীল থেকে মহাকাল মুছে যায়
আমি বাতিঘর খুঁজে মরি দিগন্তে, আকাশে, আতুঁড় ঘরের বারান্দায়
যারা আমাকে নাবিক বলে ডাকেন তারা জানেন না
ক্ষুধার্ত গাঙচিলের ডানা যখন হাওয়ায় পালক মেলে
তখন নন্দনতত্ত্ব দেখতে অনেকটা ফ্লাইং ফিশের মতো
পৃথিবীর তলদেশ নিকটবর্তী হয়
শেফালির সন্ধ্যা-স্মৃতি বারবার চোখে ফিরে আসে
অপেক্ষায় আছি, বসন্তে
আমি অপেক্ষায় থাকি
বাতাসের দরজায় কড়া নাড়ে মেঘ
আমি নিস্পলক থাকি
একটা নক্ষত্র জন্ম নেবে শীঘ্রই
ঘুমে ঢুলু-ঢুলু একটা পাহাড় হঠাত চমকে ওঠে
আর আমি মগ্নতায় চেয়ে দেখি
পলাশের রক্তে লাল একটা ভোরের পাখি চৈত্র পাড়ি দ্যায়
অস্থির আমার ভেতরটা তরপায়
একটা ভোরের অপেক্ষায় থাকে কোটি কোটি চোখ
একটা গুবরে পোকা সারারাত পাহাড় বেয়ে ওঠে
একটা ঝিঁঝিঁ পোকা নৈ:শব্দের বনে ডাকে
এই বৈশাখে
রায়হানপুর গ্রামখানি কাত হয়ে শুয়ে আছে
ভারানি খালের পাড়ে
বিশখালি নদী-গর্ভ প্রসব করেছে এই জনপদ
এখানে ভয়াল সময় উত্তাল নৌকার পালে ভাসে
সূর্যের থাবার নীচে টাগরা শুকায়ে যায়
গ্যালো বছর আউশ-ধান উড়ে গেছে সিডরের তোড়ে
এই বছর আমন ধানের মাঠ খেয়ে গ্যাছে রিপু-রাজ
নদীতে রাখাল, খালে শিশুদের বৈকালিক খেলা যত
মুখে লালা নাই, বুকে দুধ নাই, দেহ মরা-মাছ
পেটে মাঠ জ্বলে, কাঁধে জোয়ালের ক্ষত
বহু দিন আমি শব্দের বড়শি ফেলে
কাঁঠাল গাছটারে
স্মৃতির অতল-দেশ থেকে তুলে আনতে চেয়েছি
যে-গাছটার ডালে বসে
আমি তার সাথে পাখিদের মতো বচসা করতাম
আর খুনসুটির মঞ্জুরী ফুটে উঠতো পাতায় পাতায়
আর শিখতাম বার-মাস-বছর আর বডি পার্টস-এর নাম
সে-একটা গাছ ছিলো আমাদের
স্কুলের পাশেই, খালের কিনারে
একটা সবুজ অতিকায় পাহাড়ের মতো
একটা নিরীহ শামুকের মতো
সবুজ গাছটা এ-প্লাস-ডাবলু, এম-প্লাস-এস,
এক।
আলুবাজ
কবি বড় বাজে
বড় বাজে কবি
শব্দের পর্দাটা সরালেই আ-কথা কু-কথা