মিসেস ডেকার আজকেই ফিরলেন হাইতি থেকে।
একাই গিয়েছিলেন মিসেস ডেকার। না গিয়ে উপায় কি! মি. এবং মিসেস ডেকারের বনিবনা হচ্ছে না দীর্ঘদিন ধরে। আর ইদানীং অশান্তি তো চরমে উঠেছে। তাদের পক্ষে আর একসাথে থাকা সম্ভব হচ্ছেনা। দুজন একে অপরকে রীতিমত ঘৃণা করতে শুরু করেছেন এখন!
এই নতুন চিড়িয়াখানায় বদলি হয়ে আসার পর থেকে বদরুল হুসেনের মন খুব খারাপ। “ এ কোথায় এসে পড়লাম রে বাবা!” বদরুল মনে মনে প্রায়ই এই কথা ভাবে। এই একমাস আগেও বদরুল দেশের সবচেয়ে বড় চিড়িয়াখানার জু-কিপার ছিল। বদরুল নিজে হাতে চিড়িয়াখানাটা গড়ে তুলেছিল তিলে তিলে। কত ত্যাগ তিতিক্ষা কত পরিশ্রম সে দিয়েছিল ওইখানে। কত নতুন নতুন সব প্রাণী সে সংগ্রহ করেছিল গত পনের বছর ধরে!
কি এক সময় ছিল!
কেমন যেন উদ্ভ্রান্ত, পাগল করা সময়।
সেই সময় খালি মনে হত কেউ আমাকে পাত্তা দেয় না। কেউ আমার কথা শোনে না। রাস্তায় বের হলে মনে হত আমার দিকেই যেন সবাই বিদ্রূপ সহকারে তাকিয়ে আছে।
একলা দুপুরে গলার কাছে কান্না এসে আটকে থাকত গুটলি পাকিয়ে। কি যেন করতে ইচ্ছে হত! কোথায় যেন ছুটে যেতে ইচ্ছে হত। চিৎকার করে সব্বাইকে বলতে ইচ্ছে হত “আমি কিন্তু ভালো নেই, আমি পালিয়ে যাব কিন্তু!”
১।
ঝোড়ো বাতাস হচ্ছে সেই সকাল থেকে। দেখে মনে হচ্ছে সবকিছু উড়িয়ে নেবে বলে পণ করেছে দক্ষিণের এই নাছোড়বান্দা বাতাস।
ডাকপিয়ন কোনমতে আমাদের বাড়ির দরজায় এসে দাঁড়ালেন। তাঁর হাতে থাকা কাগজপত্র গুলো উড়ে যেতে চাইছে বাতাসের দমকে।
আমার মা কোনক্রমে দরজা খুলে বাইরে এসে দাঁড়ালেন।
“আপনার একটা চিঠি আছে” ডাকপিয়ন হেসে বললেন।