[justify]
।।১।।
এই গল্পের সাথে দুটো ছবি আছে। প্রথমটি প্রায় কিশোরী একজন মেয়ের, ১৮/১৯ বছর বয়েসি। পঞ্চাশের দশকের। সেই সময়ে সম্ভবত এই বয়েসি মেয়েদের স্টুডিওতে গিয়ে ছবি তুলতে হতো। কারণটা অনুমান করা খুব কঠিন কিছু না। স্টুডিওর লোকজনকে হয়ত কিছুই বলতে হতো না। ওরা হয়ত এই বয়েসি মেয়েদেরকে দেখলেই জানতো কিভাবে ছবি তুলতে হবে। এই একই ভঙ্গিমাতে ক্যামেরার সামনে দাঁড়ানো অনেকের ছবি আমি দেখেছি - এটা প্রায় সবারই সংগ্রহে থাকা বিয়ের আগে তোলা একমাত্র ছবি।
[justify]
বাংলা সিনেমার ইংরেজি নাম নিয়ে অনেক দিক ধরেই আলোচনা হয়। সেই আমাদের আমল থেকে শুরু করে এই জলিলীয় প্রজন্ম পর্যন্ত এই রীতি ধারণ করে আসছে। সম্ভবত এটা আমাদের সংস্কৃতির একটা অংশ হয়ে গেছে। সত্যি কথা বলতে আমি এইটার বিরুদ্ধে না। ইংরেজি নাম বাংলা নামের অনুবাদ হতে হবে - এই নিয়মে আমি বিশ্বাসী নই। আমাদের বাংলা এবং ইংরেজি উভয় বিষয়ের পণ্ডিত শিক্ষক জোবেদ আলী স্যার আমাদের ভাষার নয় বরং ভাবের অনুবাদ করতে বলেছিলেন। মূল ব্যাপারটা হচ্ছে ভাবটা বুঝতে হবে।
।।১।।
আমি জ্ঞান-গর্ভ কোন কিছু লিখতে পারি না। প্রথম এবং প্রধানতম কারণ হচ্ছে জ্ঞানের অভাব। তবে এই অভাব থাকলেই যে জ্ঞান সমৃদ্ধ কিছু লেখা যাবে না – সেটা মনে হয় সত্য নয়। পত্র-পত্রিকা বা ব্লগে যেই সব লেখা মাঝে মাঝে পড়ি তাতে মনে হয় জ্ঞান-গর্ভ লেখার পূর্ব শর্ত হিসাবে গর্ভে জ্ঞান থাকতে হবে এই রকম কোন সাংবিধানিক বাধ্যবাধ্যকতা নেই।
।।১।।
স্কুলে ঢোকার মুখেই তপনের দেখা পায় সজল। স্কুলের গেটের কাছের ঝাঁকড়া বটগাছটার নিচে আমড়াওয়ালার দোকানের সামনে। আমড়াটাকে ফুলের মতো কেটে ওতে ঝাল লবণ মাখিয়ে দিয়েছে আমড়াওয়ালা।
সজলকে দেখেই তপন দ্রুত বড় একটা কামড় বসিয়ে দেয় আমড়াতে। গোটা দুয়েক আমড়ার পাপড়ি চালান হয়ে যায় পেটে। সজল কিছু বলার আগেই তপন বলে ওঠে...
“তোকে নিজামী স্যার গতকাল খুঁজেছিল ক্লাসে...”
[justify]
।।১।।
প্রবাসী হওয়ার অনেক হ্যাপা। সবচেয়ে বড় ঝামেলা হচ্ছে হাতে কোন সময় থাকে না। সর্বদাই ব্যস্ত থাকতে হয়। এইদেশে রাস্তার পাশে চায়ের দোকানে বসে দুদন্ড গল্প করার জো নেই – সব সময়েই তাড়াহুড়া। মার্কিন দেশ এক বিশাল বাজার বিশেষ, এইখানে আমরা সব সময়েই অদৃশ্য বাজারের থলি হাতে ঘোরাঘুরি করি।
।।১।।
শৈশব নিয়ে অনেক লিখেছি। আমার সব লেখাতেই সে উঁকি মারতে আসে, দেখে মনে হয় সব ব্যাপারেই তার কিছু অভিমত আছে; এমনই নাছোড়বান্দা সে। আজকে অনেকদিন পরে কলম (নাকি অভ্র?) ধরলাম – আর ধরা মাত্রই সেই ব্যাটা এসে হাজির। মেহদীকে জিজ্ঞেস করতে হবে, অভ্রের সাইড এফেক্ট হিসাবে এটার কথা উল্লেখ আছে নাকি কোথাও।
[justify]
শহরের যে প্রাণ আছে এই আবিষ্কারটা কেউ করেনি। প্রাণ কিন্তু সত্যি সত্যি আছে। হঠাৎ করেই কোন একদিন মানুষ সেটা উপলব্ধি করে। কেউ কেউ হয়ত কোনদিনই করে না। কিন্তু তাই বলে শহরের প্রাণটা কিন্তু মিথ্যা নয়। শহরগুলো প্রায় মানুষেরই মতো – তাকে ভালোবাসা যায়, ঘৃণা করা যায়, ভুলে থাকা যায়, তার জন্য চোখের জলও ফেলা যায়, আবার চাইলে তাকে হত্যাও করা যায়। শহরের গল্পগুলো তাই মানুষের গল্পের মতোই – অফুরন্ত।
[justify]
।।১।।
সকাল বেলাটা দিনের সবচেয়ে মনোরম সময়। এটা বুঝতে অনেকটা সময় লেগেছে। এতোটা সময় লাগার কারণ হচ্ছে আমি আগে কখনো সকালে উঠতাম না। সকালের আলোতে একধরনের মায়া থাকে। চারিদিক যেন ভিজে থাকে তরল এক প্রসন্নতায়। তাতে মনকে ভেজানো যায়, ভুলে থাকা যায় যে এই পৃথিবীর কোথাও না কোথাও যুদ্ধ, ক্ষুধা, মৃত্যু, দুঃখ, শোক ডানা মেলে আছে। সকাল বেলার রোদ্দুরে এই পৃথিবীকে প্রতিদিন একবার করে ক্ষমা করে দেই আমি।
[justify]
।।১।।
তিনি একটু বিরক্তভরে ভদ্রলোকের দিকে তাকালেন।
সাতসকালেই ভদ্রলোক এসে উপস্থিত। বসবার ঘরে সোফায় বসে আছেন, চোখে গোল্ড রিমের চশমা। হাত দুটো কোলের উপর রাখা। মনে হচ্ছে ওই দুই বেচারাকে নিয়ে একটু বিব্রত আছেন ভদ্রলোক। মাথার উপর বনবন ঘুরছে ফ্যান। এই সকালেও চড়চড়ে গরম পড়েছে। এক ফোঁটা বাতাস নেই কোথাও। দুটো মাছি ইতঃস্তত উড়ছে ঘরের ভেতর।
[justify]
।।১।।
এক সময়ে ডায়েরি লিখতাম। সে অনেক অনেক দিন আগের কথা। ঢাকা শহরে তখন আকাশ ছোঁয়া বাড়িঘর ছিল না। মানুষজন দোতালার ছাদে উঠেই আকাশ স্পর্শ করতে পারতো। ডিজুস ছিল না, হিন্দি মেগাসিরিয়াল ছিল না, শপিং মল ছিল না, টি-২০ ছিল না, ইন্টারনেট ছিল না – বলা যায় আমরা তখন সর্বহারা ছিলাম। সেই সময়ে রাতে ঘরে ফিরে একটা সিগারেট ধরিয়ে মুখের উপর গল্পের বই নিয়ে শুয়ে থাকা ছাড়া আর তেমন কোনো বিনোদন আমরা আবিষ্কার করতে পারিনি।