তাসনীম এর ব্লগ

নতুন বছর

তাসনীম এর ছবি
লিখেছেন তাসনীম (তারিখ: বিষ্যুদ, ০৫/০১/২০১২ - ৪:৪৪পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

[justify]

আমার একবন্ধু রক্ত এবং চক্ষুদান কর্মসূচিতে গেলে সর্বদাই চক্ষুদান করে আসত, কখনোই রক্তদান করার নাম মুখেও আনতো না। কারণটা বেশ সহজ, রক্তদান করলে সেটা সাথে সাথেই দিতে হবে যে, চোখ দানের ব্যাপারগুলো আসবে মৃত্যুর পরে। হাতে অনেকটা সময় পাওয়া যাবে আর আচমকা সুঁইয়ের খোঁচাও খেতে হবে না।


হারিয়ে যাওয়া জিনিসগুলো

তাসনীম এর ছবি
লিখেছেন তাসনীম (তারিখ: শনি, ১৯/১১/২০১১ - ১২:৩৮পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

[justify]
আমার খুব বেশি খেলনা ছিল না। একটা কমলাটে রঙের ফুটবল ছিল। যেটাতে জোরে কিক করলে পা-টনটন করতো। পাম্প করার পরে বড়জোর একদিন সেটা শক্তপোক্ত থাকতো। কিন্তু সেই বলটা আমার দারুণ প্রিয় ছিল। বাসার উঠানে সেটা নিয়ে দৌড়ালে নিজেকে মাঝে মাঝে পেলের মতো মনে হতো। মনে হতো আমি যেন অলৌকিক স্টেডিয়ামে নামজাদা এক খেলোয়াড়। শৈশবের আর অন্যসব জিনিসের মতো সেই বলটাও হারিয়ে গেছে কোথায় যেন।


শিশুপালন-১২

তাসনীম এর ছবি
লিখেছেন তাসনীম (তারিখ: বিষ্যুদ, ২০/১০/২০১১ - ৪:০৪পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

[justify]

শিশুপালন অধ্যাদেশ ২০১১

জীবনের সাথে মেগাসিরিয়ালের অনেক মিল আছে। প্রথম মিলটা হচ্ছে দৈর্ঘ্যে। দুটোই বিরক্তিকরভাবে লম্বা, প্রায় সারাজীবন ধরেই চলে। দ্বিতীয় মিলটা হচ্ছে দুটোই মোটামুটিভাবে বোরিং। এভাবে খুঁজলে আরও অনেক মিল পাওয়া যায় কিন্তু সবচেয়ে বড় অমিলটা হচ্ছে সিরিয়ালগুলোর কাহিনিতে গিঁট লেগে যাওয়ার পরে হাতে নিদেনপক্ষে সাতদিন সময় পাওয়া যায়। অর্থাৎ নায়িকার অন্য ছেলের সাথে বিয়ে হয়ে যাবে, ঢং ঢং শব্দের সাথে নায়কের মুখের ক্লোজ-আপ দেখিয়ে ওই পর্বটা ওখানেই শেষ করা যায়। জীবনে সেই সব সুযোগ নেই – যেটা করার সেটা প্রায় তড়িঘড়ি করেই করতে হয়।


দুঃসময়ের মুখোমুখি

তাসনীম এর ছবি
লিখেছেন তাসনীম (তারিখ: শুক্র, ১৪/১০/২০১১ - ২:৫৮পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

[justify]
১.

বিখাউজ বলে একটা রোগ আছে। ঢাকা কলেজের সামনে বিখাউজ রোগের ওষুধ বেচতে দেখেছি। যে কোনো জনবহুল স্থানে ওষুধ বিক্রেতারা এই রোগের ওষুধ বেচেন। সেই থেকে অনুমান করতে পারি যে এই অসুখটা মানুষজনের বেশ হয়। আমিও মাঝে মাঝে বিখাউজ রোগে আক্রান্ত হই, সে সময়ে যাই দেখি সেটাই বিখাউজ লাগে। বতর্মানে সেই বিখাউজ রোগ চলছে। সকালে এক পশলা বিখাউজ বৃষ্টি দেখে, একটা বিখাউজ জ্যাম পেরিয়ে, আমাদের অফিসের বিখাউজ লাল রঙের (যেটার আগে অন্য রঙ ছিল, বিভিন্ন জায়গায় জং-টং ধরে লালচে হয়ে গেছে) ভবনে ঢুকে, দৈনন্দিন বিখাউজ কাজ সেরে বিখাউজ এই লেখাটা শুরু করলাম।


মার্কিন মুল্লুকে-৭: ভাষা

তাসনীম এর ছবি
লিখেছেন তাসনীম (তারিখ: মঙ্গল, ২৭/০৯/২০১১ - ১:২৭পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

[justify]
আমাদের ছোটবেলাতে হিন্দি ভাষার অত্যাচার এতো প্রবল ছিল না। ডিশ বলতে মানুষজন থালাবাটিই বুঝতো, ওটা দিয়ে খাবার আসতো - খবর নয়। টিভির অনুষ্ঠান ধরা পড়ত ছাদের এন্টেনাতে, কেবল দিয়ে কেবল বিদুৎতের চলাফেরা ছিল। আমাদের একমাত্র চ্যানেল বিটিভি যেই অনুষ্ঠান গেলাতো আমরা বিনাবাক্যব্যয়ে সেটাই গিলতাম এবং সেটা নিয়েই আলোচনা করতাম। এই কারনেই স্কুলের বন্ধু-বান্ধবরা সব্বাই একই ওয়েভলেংথেই কথাবার্তা বলতো। হিন্দি ছবি দেখার একমাত্র উপায় ছিল ভিসিআর – সেই মহার্ঘ্য বস্তু আমাদের চেনাশোনা খুব বেশি লোকের ছিল না।


গল্প আর ছবিঃ আজ আমাদের পঞ্চাশ বছর

তাসনীম এর ছবি
লিখেছেন তাসনীম (তারিখ: শুক্র, ০২/০৯/২০১১ - ৮:২৬অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

[justify]

১.

ঢাকার টিচার্স ট্রেনিং কলেজের ভেতরে সরু একটা রাস্তা আছে। সেই রাস্তার দুই দিকে বড় বড় সব গাছ এবং পাশেই একটা খেলার মাঠ। রাস্তার পাশে চটপটিওয়ালা, ফলবিক্রেতা আর আইসক্রিমওয়ালার হাঁকডাক আছে। মাথার উপর একটা নীল রঙের বড় আকাশও আছে। সকালে আর বিকেলে সেই রাস্তা আর মাঠ সরগরম থাকে। চোখ বুজলেই এই রকম একটা ছবি আমি আজও দেখতে পাই।


গল্প আর ছবিঃ মেঘের দেশে - ফুলের দেশে

তাসনীম এর ছবি
লিখেছেন তাসনীম (তারিখ: শুক্র, ২৬/০৮/২০১১ - ১১:২১অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

আমি ভালোবাসি মেঘ. . .চলিষ্ণু মেঘ...ওই উঁচুতে...ওই উঁচুতে
আমি ভালোবাসি আশ্চর্য মেঘদল !
(অচেনা মানুষ/শার্ল বোদলেয়ার/অনুবাদ বুদ্ধদেব বসু)

[justify]
১.


শিশুপালন-১১

তাসনীম এর ছবি
লিখেছেন তাসনীম (তারিখ: বুধ, ২৪/০৮/২০১১ - ১১:২৯অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

[justify]

ভাষাঃ

আমি একটা ভাষাই মোটামুটি জানি। সেটা যে কোন ভাষা - আর বিশদে না বললেও চলে। বহু বছর ধরে চেষ্টা করেও ইংরেজি ভালো মতো আর শিখে ওঠা হয় নি। এর অন্যতম প্রধান একটা কারণ মনে হয় আমাদের শ্রদ্ধেয় শিক্ষকরা। স্কুলে খন্দকার স্যার পিলে চমকানো সব বাগধারা ইংরেজিতে অনুবাদ করতে দিতেন। যেমন - চোরের মন পুলিশ পুলিশ। ভেবেচিন্তে বন্ধু জুনায়েদ লিখলো - থিফ'স মাইন্ড পোলিস পোলিস। অবধারিতভাবে গাঁট্টা নেমে এলো মাথার উপর। মাত্র চার ফুট দশ ইঞ্চি হাইটের খন্দকার স্যার মাথার ছয় ইঞ্চি উপর থেকে এমন দুর্দমনীয় গাঁট্টা কীভাবে মারতেন সেটা আজও ভেবে বার করতে পারিনি। অনেক মারপিটের পরে শিখলাম – দ্য পেশেন্ট হ্যাড ডাইড বিফোর দ্য ডক্টর কেইম। এই বিদ্যা প্রয়োগ করার মতো পরিস্থিতি আজও তৈরি হয় নি। আমার চেনা-জানা সব্বাই হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়েই ফিরে এসেছেন, আশা রাখি ভবিষ্যতেও আসবেন।


শিশুপালন-১০

তাসনীম এর ছবি
লিখেছেন তাসনীম (তারিখ: বিষ্যুদ, ১১/০৮/২০১১ - ১২:২০পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

[justify]

আর উই দেয়ার ইয়েট?

মার্কিনদেশে শিশুপালন করতে গেলে এই অভিজ্ঞতার মধ্যে দিয়ে সবাইকেই যেতে হয়। এটা এক বিশাল দেশ। এই মাথা থেকে ওই মাথা পর্যন্ত সারা দেশে মুড়িয়ে রেখেছে এরা চমৎকার সব রাস্তা দিয়ে। বিমানযাত্রার খরচ বাঁচাতে এই রাস্তাগুলো দিয়ে হাজার হাজার মাইল পাড়ি দেন বহু বহু পরিবার। সমস্যা হচ্ছে বাচ্চাগুলোকে নিয়ে। হাজার মাইলটা যে আসলে কি জিনিস সেটা বোঝানো বড় দায়। ধরা যাক হিউস্টনে যাচ্ছি, শহর থেকে রওনা দিলাম শুক্রবার বিকাল সাড়ে পাঁচটায়, হাইওয়েতে ওঠে ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখলাম পাঁচটা চল্লিশ...


মার্কিন মুল্লুকে-৬: ঘাতক ট্রাক

তাসনীম এর ছবি
লিখেছেন তাসনীম (তারিখ: শুক্র, ২৯/০৭/২০১১ - ৪:৩৪পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

আমাদের ছোটবেলাতে ঢাকার রাস্তাঘাটে ছিল ট্রাকের দাপট। সময়ে অসময়ে রাস্তায় প্রবল বেগে চলত রাগী রাগী চেহারার সব ট্রাক। ওদের ডিজেল ট্যাংকে লেখা থাকতো জন্ম থেকে জ্বলছি আর পেছনে থাকতো মায়ের দোয়া। ট্র্যাফিক আইন থেকে পদার্থবিদ্যার আইন সবাইকেই অমান্য করত ওরা। চলার পথে রিকশা, গাড়িসহ আর যা যা ছোটখাটো যানবাহন ছিল তাদের সবাইকেই তুচ্ছজ্ঞান করত মহামান্য ট্রাক। শোনা যায় আশির দশকের কোনো এক মাঝরাতে নাকি স্বৈরাচারের পশ্চাৎদেশে (মানে ওই ব্যাটার গাড়ির আর কি) আঘাত হানতে বসেছিল এই মহাশক্তিধর প্রাণীটা। নিউজ মিডিয়াতে ট্রাককে বলা হতো ঘাতক ট্রাক। আমরা নাদান জনগন রাস্তায় নামলেই চোখ-কান খোলা রাখতাম, কখন কোত্থেকে উড়ে এসে প্রাণপাখির ডানা খামচে দেবে সে।