হঠাৎই আজ ই-মেইল পেলাম যে সচলায়তন কর্তৃপক্ষ আমার একাউন্টটা সচল করার জন্য নিমন্ত্রণ পাঠিয়েছেন। হিসেব করে দেখলাম প্রায় ছয় মাস ধরে লিখছি এখানে, সময় কি দ্রুত চলে যায়!! মাত্র ছয়মাস আগেই যাঁদের একদম চিনতামই না, তাঁদেরকে কতই না চেনাজানা মনে হয় আজকাল। সচল হওয়ার পর পর সবাই দেখি একটা “অস্কার এক্সেপটেন্স স্পিচের” মত এক ছোট লেখা দেয়, আমার এই লেখাটাও তাই...গলা খাঁকরি দিয়ে শুরু করছি...
প্রথমেই ধন...
আমি দেশ ছাড়ি ১৯৯৬ সালের অগাস্ট মাসে। দিনটাও মনে আছে, অগাস্ট মাসের পাঁচ তারিখ। গুমোট একটা গরম ছিল সেই সকালে। আকাশটাও অনেক মেঘলা ছিল, সেই রঙের সাথে মিল রেখে আমার মনটাও ছিল বেশ ভারি। বর্ষা আমার প্রিয় ঋতু, কিন্তু সেই সকালের প্রবল বর্ষণটা আর দেখা হয়নি, ম্যাকডোনাল্ড ডগলাসের বিমানটা বৃষ্টির আগেই আমাকে একটানে নিয়ে গেছে অনেক দূরে। ছিল দুটো স্যুটকেস, তাতে বোঝাই বঙ্গবাজারের বেঢপ কাপড়-চোপড় ...
বইয়ের দোকানকে কেন লাইব্রেরি বলে এই প্রশ্নের জবাব আজও পাইনি। এরকম না পাওয়া অনেক প্রশ্নের “এক্স-ফাইল” তৈরি আছে মনে ভেতর। উত্তর পাব এই আশাও রাখি না। আজকের গল্প ফার্মগেটের একটি “লাইব্রেরিকে” নিয়ে। আমাদের তেজগাঁর বাসা থেকে দশ মিনিটের হাঁটা দূরত্বে ফার্মগেট। বড় ব্যস্ত এই জায়গা। বাসগুলো রাস্তা আটকে লোক উঠাচ্ছে আর নামাচ্ছে। পাশের ফুটপাথে বিক্রেতারা হাজারো পণ্যের পসরা সাজিয়ে হাঁক...
বোতলের জন্য ভালবাসাঃ
“শোন, তোমার মেয়ের এক বছর হয়ে গেছে, এখন এই দুধের বোতল ওর ছাড়া উচিত”। প্রায় অমোঘ নিয়তির মতই শোনাল ডাক্তারের ঘোষণা। শিশুপালন আগে কখনো করিনি, উনি যা বলেন তাই করতে চেষ্টা করি। উনার কথা প্রায় অন্তর্যামীর মামাতো ভাইয়ের মতই সত্য হয় দেখেছি।
“কি হবে না ছাড়লে?” ভয়ে ভয়ে আমাদের জিজ্ঞাসা।
“একটা ইমোশনাল এটাচমেন্ট হয়ে যেতে পারে। শরীরের একটা অংশের মতই বোতলের জন্য ভালবা...
“আব্বু উইঠা পড়, সাড়ে ছয়টা বেজে গেছে ।”
“হুমমম...”
“আব্বু ক্লাস মিস কইরা ফেলবা।”
“হুমমম...”
“উঠে পড়... ”।
গাঁইগুঁই করতে করতে আমি বাথরুমে যাই। বেসিনের পাশেই রাখা গরম পানির কেতলি। সকালে ঠান্ডা পানি লাগলে আমার আবার হাঁচি হয়। বাথরুম টাথরুম সেরে খাওয়ার টেবিলে গেলেই নাস্তা রেডি। ভাবছেন আমি স্কুলে যাচ্ছি? উহুঁ হলো না, আমি রীতিমত দামড়া ছেলে, বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ি। সকালে যুদ্ধ করে আমাকে উঠাচ...
আমি অনেক চিন্তা করে দেখেছি ঈশ্বর আসলেই সমাজতন্ত্রী। মনে হয় একটা লেখাতেও বলেছি সেটা। এই লেখাটা সেই ভাবনা থেকেই। এই মার্কেটপ্লেইসের কেনা বা বেচার মধ্যে ঈশ্বর একদমই নেই। মানুষের ভেতরের যে মানবিক মূল্যবোধগুলো উনি ঠেসে দিয়েছেন সেগুলোও কোন বেচাকেনার ধার ধারে না। সন্তানকে লালন পালন করে বড় করে আমরা কোন বিল পাঠাই না, যদিও বিরাট একটা বিল আসা উচিত যেখানে আইটেমাইজড করা থাকবে কয়টা জ্যাম...
ছোটবেলায় তেজগাঁ স্টেশনে হাঁটতে যাওয়া ছিল একটা নিয়মিত ঘটনা। মানুষ দেখতে আমার বরাবরই ভালো লাগে, স্টেশন মানেই বারো ভূতের জায়গা, নানান কিসিমের বদলোকও আছে সেখানে আবার গ্রাম থেকে সদ্য আসা নিরীহ ভালো মানুষও কম নয়। স্টেশনে অনেক রকম লোকজন থাকায় নানান মনোরঞ্জনের ব্যাপার থাকত, আমার সবচেয়ে পছন্দের ছিল বানরের খেলা। বানরকে তার মনিব বলত মুক্তিরা (মুক্তিবাহিনী) কিভাবে ভাঙ্গা ব্রীজ পার হয় তা...
শিশুপালন কোচিং সেন্টার:
এই দেশে সব শিক্ষারই একটা প্রাতিষ্ঠানিক রূপ আছে। আপনি জুতা সেলাই থেকে চন্ডিপাঠ সবকিছুই এই দেশে কোন না কোন বিদ্যালয়ে বসে শিখতে পারবেন। যেহেতু পরিবার এবং সমাজের বন্ধনটা একটু কম এই দেশে, সেহেতু সামাজিক জ্ঞানের বদলে প্রাতিষ্ঠানিক জ্ঞানের দিকে এদের নজরটা একটু বেশি। শিশুপালনের ক্লাসের অভাব নেই, আমার আবার শর্টকোর্স খুব পছন্দের। কেউ যদি দুই তিন পাতার মধ্যে ...
আমাদের ইশকুলে যাবেন? আচ্ছা আচ্ছা বলে দিচ্ছি কিভাবে যেতে হবে। ফার্মগেট থেকে ঢাকা কলেজে যাওয়ার টেম্পো ধরবেন, এটাকে আমরা হেলিকপ্টার বলি। উঠলেই বুঝবেন নামকরণ কতখানি সার্থক। ভট ভট শব্দে কানের পোকা আর ঝাঁকানিতে বাতের ব্যথার অনেকখানি উপশম হতে পারে। যাওয়ার পথটা কিন্তু দারুন, একদম "সিনিক"। হেলিকপ্টার আপনাকে গ্রীন রোড ধরে সোজা কাঁঠাল বাগান পার করে উড়িয়ে নিয়ে যাবে গ্রীন কর্নারের সামনে ...
স্মৃতির শহর কিন্তু থাকার জন্য দারুন। ওখানে না-গরম, না-ঠান্ডা, লোকজনের ব্যবহার মধুর, রিকশা ভাড়াও বেশ কম। কলে পানি পাওয়া যায় ঠিকমতই, ধূলাবালির প্রকোপ তেমন নেই, মশার উপদ্রব সহনীয়, অসুখ বিসুখের বালাই নেই, কাজকর্ম করলেও চলে, না করলেও অসুবিধা নেই। লোডশেডিং শুধু পূর্ণিমা রাতেই হয়, সাথে একটু উতল হাওয়াও থাকে। বিনা টিকেট, বিনা পাসপোর্টে সেখানে ঢোকা যায়, যতদিন খুশি থাকুন সেখানে কেউ কিছু বলবে ...