তরল জলের মতো অচেনা দু:খ, ছলছল করে কেবলই বয়ে চলে যাচ্ছে। ধরতে গেলেই মুঠো থেকে পিছলে যায়। আবার একমুঠো পারদের মতো চকচকে দু:খও দেখা যায়, সেও আরো বেশী পিছলে যায়। এগুলো হাল্কা দু:খ।
কিন্তু জল সরাতে সরাতে, পারদচকচকে ঢেউগুলো সরাতে সরাতে, সোনালী রূপালী দু:খ পার হয়ে, দেখা দেয় নীল দু:খ। অরণ্যজ্যোৎস্নার মতো স্তব্ধ, গভীর, অপরিমেয়।
সব আগুনের হল্কা মুছে যায়। নিশ্চেতন ভেসে যেতে যেতে, অমাবস্যার কু ...
অনেক দূরে, অনেক দূরে, সবচেয়ে দূরের পাহাড় পার হয়ে চলে গেছে মেঘ। ঐ যেখানে সমুদ্রে নেমে গেছে পর্বতমালা, এক এক করে জলের নিচে হারিয়ে গেছে চূড়াগুলো, নিভে গেছে আগুনপাহাড়ের আগুন, ঘুমিয়ে পড়া সেই আগুনের পাশ দিয়ে উড়তে উড়তে মিলিয়ে গেছে সেই সুবর্ণহৃদয়া মেঘ।
সে বলেছিলো সত্যিকারের ভালোবাসা কেবল ভালোবেসেই আনন্দ পাওয়া, বিনিময়ে ভালোবাসা চাওয়া নয়, কিছু চাওয়া নয়, শুধু দেওয়া। বিনিময়ে যদি তাই চাও ...
ডানহাতের পিঠের কালচে বাদামী দাগটার উপরে হাত রেখে তুই জিজ্ঞেস করলি, "এটা কীসের দাগ রে তুরাইন?"
আমি হাত টেনে নিতে গিয়ে টের পেলাম তোর মুঠি ঘিরে ধরেছে হাত, ছাড়াতে পারি না। কিন্তু কী বলবো তোকে?
আমরা আগুন নিয়ে যখন প্রথম খেলতে শিখলাম, সেই সময়ের পোড়া দাগ এটা? তোর তো কিছু মনে নেই চিরল। তুই সব ভুলে গেছিস। ভালোই তো, ভালোই হয়েছে।
সচলায়তনে কত মানুষের নিত্যদিন আসা যাওয়া। কেউ সচল, কেউ বা অতিথি কেউ বা দুইয়ের মাঝে। অনেকেরই জানাশোনার পরিধি অনেক। সকলের কাছে আমার একটি বিশেষ অনুরোধ।
একটি কবিতা খুঁজছি, প্রেমেন্দ্র মিত্রের "সাগর থেকে ফেরা"। হাতের কাছে থাকলে কেউ যদি কমেন্টের ঘরে কবিতাটি তুলে দেন তাহলে খুবই ভালো হয়।
আরেকটি কবিতা, তার আবার নাম জানি না, সম্ভবত শঙ্খ ঘোষের লেখা। কবিতার কয়েকটা লাইন হলো "ও যদি ঘুমোয় ঘুম ...
"শরীর, শরীর, তোমার মন নাই কুসুম?"
আছে তো! মনও তো শরীরের মধ্যেই! শরীরের যেখানে মনটা, সেটা হলো করোটির ভিতরে যত্নে থাকা মগজ। সেইটা নিয়েই এই বই।
কিছুকাল আগে বুকস্টোরে ঘুরতে ঘুরতে প্রথম দেখি বইটা। কীজানি মনে করে হাতে নিয়েছিলাম, সাদা প্রচ্ছদে রেশমী ফিতার ফুল, বইটার নাম The Female Brain, লেখিকার নাম, Louann Brizendine। পেশায় ভদ্রমহিলা নিউরোসাইকিয়াট্রিস্ট। সানফ্রান্সিস্কোর ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া ...
আমার একটা খুব চেনা সবুজ রেলগাড়ি ছিলো, শালুকফুল ফুটে আলো হয়ে থাকা জলাভূমির পাশ দিয়ে চলে যেতো কুঊঊ ঝিকঝিকঝিক করতে করতে। একজোড়া ফড়িং উড়তে উড়তে জটিল পাক খেয়ে ফিরে আসতো পাড়ের কাছের সতেজ ফুলটির কাছে। তারপরে গাড়ী চলতে চলতে হঠাৎ কাশফুল ভরা মাঠ, দূরে দূরে কতদূরে ছড়িয়ে গেছে, ছোটোবেলার মজার ছড়ার লাইনটা মনে পড়ে- "উলুখেতের ফুলু যেন তুলু থুরুথুরু"---শরতের হাওয়ায় কাশফুল সাদা চুল ভরা মাথা দোলায়, ঢ ...
আমি মানুষটা রান্নাবান্নার ব্যাপারে বেজায় আইলসা মানে যারে কয় গিয়া রক্ষণশীল। ডালতরকারি নিত্যতা সূত্রও সম্ভবত আমারই খানিকটা পরিবর্তিত পুনরাবিষ্কার (মহাভারতে সেই সূর্যের দেওয়া অক্ষয় তাম্রস্থলী এই ব্যাপারে পাইওনিয়ার)।
নিত্যতা সূত্র লইয়া ভাবতাছেন তো? ব্যাপারটা হইলো সোজা। একদিন বেশ সময় টময় আছে দেইখা জম্পেশ কইরা একটা তরকারি রান্না করা হইলো, তাতে গরম তেলে ফোড়ন টোড়ন নিয়ম মত দি ...
যখন আকাশবাড়ীর উপকথারা ময়ূরবনের রূপকথারা কাজলনদীর চুপকথারা সবাই চুরি যায় তখন কেমন এক দমবন্ধ সময়। চারিপাশে অর্থহীন শব্দেরা কোলাহল করে, তারপরে তাও থেমে যায়, তারা তখন শব্দের শব। দেয়ালের ছবিগুলো সব ঘেঁটে ঘন্ট পাকিয়ে যায়, যেন রাগী শিল্পী জোলোজোলো আঁধার রঙে সব লেপে দিয়েছে। একান্ত নিজস্ব সেই আকাশটা, যেটার কথা কেউ জানে না, যেখানে সারাবছর টকটকে লাল কৃষ্ণচূড়া জেগে থাকে নীলদরিয়ার পাশে, স ...
১
ভাসমান গোল টেবিল ঘিরে ছ'খানা চেয়ার শূন্যে ভাসছে, একে একে এসে বসলো তারা ছ'জন। এনখ, লমখ, এণা, গেয়া, তালিসা আর তামারিল। তাদের মুখে ভাবলেশহীনতার মুখোশ, ঠোঁট শক্ত করে চেপে বন্ধ, চোখ অর্ধনিমীলিত। একে একে সকলে ডান হাত এগিয়ে দেয় টেবিলের কেন্দ্রে, একে একে ছয়টি হাত একে অপরের সঙ্গে মিলিত হয়।
এবারে ছ'জনেই উজ্জ্বল ছ'জোড়া চোখ সম্পূর্ণ মেলে ধরে কেন্দ্রে যেখানে তাদের হাতগুলো মিলেছে সেদিকে ...
কতকাল পরে এমন জ্যোৎস্না। কতকাল ধরে শহরে শহরে থাকি, জোরালো বিদ্যুৎবাতি জ্যোৎস্না দেখতে দেয় না, নক্ষত্র দেখতে দেয় না। শহরের লোকেদের এসবের কোনো দরকারও নেই, তারা বিষয়কর্মে ব্যস্তসমস্ত। নক্ষত্র দেখে বা জ্যোৎস্না দেখে কীই বা লাভ হবে তাদের ?
শহর ছাড়িয়ে এসেছি বেশ কিছুক্ষণ, শ্রীনি মানে শ্রীনিবাস ড্রাইভ করছে। ও আর অনন্তকৃষ্ণন আনতে গেছিলো আমায় এয়ারপোর্ট থেকে। এখন কাছিয়ে এসেছে গন্তব ...