বহু বছর হলো মহালয়া ভোর দেখা হয় না। না, ভুল বললাম, দিনটা আসে ঠিকই। সেই দিনের ভোরও দেখা হয়, কিন্তু সেই শিউলি-উঠান, রাশি রাশি ফুল ঝরতো যেখানে, সেই শীত শীত আলো-আঁধারিতে ভোর চারটেয় বেজে ওঠা আশ্চর্য আকাশবাণীর কল, সেই গান, "বাজলো তোমার আলোর বেণু", আর সেই সব সুর আর কথার ঝর্ণার মধ্য দিয়ে আলো হয়ে ওঠা সেই শরতের স্বর্ণঝরা ভোর, সেই আশ্চর্য কন্ঠটি বলে যে কিনা বলে উঠতো "আশ্বিনের শারদপ্রাতে বেজে উঠেছে আ ...
এটা বেশ তাৎক্ষণিক তাড়ায় লেখা। একেবারেই গুছানো গাছানো না। কিন্তু ভিতর থেকে কেমন যেন একটা তাড়া, না লিখে আর পারা গেল না। আসলে যত দিন যাচ্ছে, আমি মুহম্মদ জাফর ইকবালের লেখার ভয়ানক ভক্ত হয়ে উঠছি। গত কয়েক মাসে তাঁর অনেক লেখা পড়তে পারলাম অনলাইনে।
আজকে পড়ছি সদ্য অনলাইনে ওঠা "স্কুলের নাম পথচারী"। গতকাল পড়েছি "রাজু ও আগুনালির ভুত"। পড়তে পড়তে একটা অদ্ভুত আনন্দ হয়। কচি নতুন পাতায় রোদ্দুর পড়ে ...
ঝাঁক ঝাঁক জোনাকি গাছের মাথায় মাথায় পাতায় পাতায় জ্বলছে আর নিভছে জ্বলছে আর নিভছে। আমরা কয়জন ছাদের উপরে মাদুরে, তখন নভেম্বর মাস, বেশ শীত পড়ে গেছে। কম্বল টম্বল ভালো করে গায়ে জড়িয়ে বসেছি আমরা গুছিয়ে, চায়ের ব্যবস্থাও আছে। আমরা অপেক্ষা করে আছি উল্কাবৃষ্টির। লিওনিড মিটিয়র শাওয়ার। সিংহরাশির উল্কাবৃষ্টি।
কতকাল হয়ে গেলো? বহু বহু কাল? যেন মনে হয় গতজন্ম! অথচ মাত্র বারোবার পৃথিবী সূর্যপ্র ...
আমলকীবনে টিয়া রঙের রোদ্দুর, পাতারা সব কাঁপছে আর কাঁপছে অচেনা হাওয়ায়। এই হাওয়াটাই এই সময়ে আসে প্রত্যেকবার, তবু কখনো একে চেনা হয় না,এ যেন কাকজ্যোৎস্না মাঘরাত্তিরের অচিন পাগলের বাঁশির সুরের মতন। কিছুতেই বুঝে ওঠা যায় না অথচ কখন যেন সব খালি করে নিয়ে চলে যায়।
পথ হারিয়ে গেছে কতবার, তবু শেষ অবধি হারায় নি। সেই ঘরে ফিরে আসার তমাল গাছ, সেই কুটোকাটা ইঁটকাঠপাথরের ঘরগেরস্থি, সেই সব খুনসুটি ঝগ ...
বহুদিন পরে কলম দিয়ে লিখতে গিয়ে চমকে উঠি, কলমটা নীল। আমার সেই কলমটাও নীল রঙের ছিলো। ঐ যে যেটা এক অপার্থিব হলুদ আলোয় ধুয়ে যাওয়া বিকালে অনেক চাঁদিয়াল ঘুড়ি ওড়া আকাশের নিচে আমাকে দিয়েছিলো শরণ্য। এইখানেই তো! এই পাথরেই তো বসেছিলাম আমরা।
কলমটা দিয়ে লিখতাম হাবিজাবি যা খুশি তাই। কাঁচামিঠে গল্প, আনকথা বানকথা গোঁজামিলের কবিতা --- সবকিছু তার শোনা চাই। একটা দিন বাদ যেতে পারতো না, বাদ গেলে তা ...
"মা, তোমার কাছে সেফটিপিন হবে একটা? " তানিয়ার গলার স্বরে বর্তমানে ফিরে আসে দীপান্বিতা, একটু অপ্রস্তুত হয় মেয়ের অবাক আর প্রশ্নময় চোখ দেখে। তানিয়া এত অবাক কেন? মাকে কি সে খুব অন্যরকম দেখছে?
তানিয়া স্কুলের জন্য তৈরী হচ্ছে, সেফটিপিন চাইছে কাঁধে ওড়না আটকাবার জন্য। হাতের চুড়ি থেকে সেপটিপিন খুলে ওর দিকে এগিয়ে দেয় দীপান্বিতা।
"মা, কী হয়েছে তোমার? খুব অন্যমনস্ক দেখাচ্ছে তোমায়।" তানিয় ...
সারাদিন এখান থেকে ওখান, অল্প অল্প বিরতি দেওয়া ঘোরাঘুরি, অনিশ্চয়তার সঙ্গে ইচ্ছেখেলা। তারপরে ক্লান্তিসন্ধ্যা। সরাইয়ে ঘর নিয়ে নেয়ে খেয়ে বিশ্রাম। চিরল ঘুমিয়ে পড়েছে।
ঘুমের সাধনায় বেশ কিছুক্ষণ কাটিয়ে ব্যর্থ হই। বেশী ক্লান্তিতে স্নায়ু টানটান, ঘুম আসে না। উঠে গিয়ে জানালার কাছে দাঁড়াই, পর্দা সরিয়ে তাকাই বাইরে। জ্যোৎস্নাশিহরিত মধ্যরাত।
বালিময় শুখা দেশ, দূরে দেখা যায় পাহাড়ের আবছ ...
আজকেও ব্লগরব্লগর। ক'দিন ধরে চলছে চলিষ্ণুতা, একজায়গা থেকে আরেক জায়গা, এটা ওটা সেটা। নানারকম অবাক করে দেওয়া কান্ডটান্ড যা কিনা আগে থেকে এঁচে রাখা হয় নি। সে যাই হোক, এর মধ্যেও কেন জানি প্রবল ইচ্ছা হয় সচল খোলার, কয়েক লাইন লেখার। সচলের পাতার বন্ধুদের ছোঁয়া পেতে ইচ্ছে হয় এই ট্রানজিশানের কঠিন সময়ে। আমি সুরহীন, কিন্তু সচলে অনেকে খুব সুরময়, তাদের গান শুনতে ইচ্ছা হয়, বাজনা শুনতে ইচ্ছা হয়। তা ...
পাতা উল্টিয়ে যাই একের পর এক। এখানে ওখানে খানিকটা খানিকটা করে পড়ি, আবার সেপাতা উল্টিয়ে অন্য পাতায় চলে যাই। পড়তে পারি না মন লাগিয়ে, কিছু লিখতেও ইচ্ছা করে না। বন্ধ্যা সময় দমবন্ধ করে আনে।
পুরানো খাতার হলদে হয়ে যাওয়া পাতাগুলোতে কত অপরিস্ফুট ভ্রূণের মতন অসমাপ্ত লেখা, গল্প হবার কথা ছিলো বুঝি ওদের? কবিতা হবার? হয় নি কিছুই, সব কেমন হিজিবিজি হয়ে গেছে। হয়তো ভালোই হয়েছে, হয়তো ভালো হয় নি। কে ব ...
সময় চলে দ্রুতগতি পাহাড়ী নদীর মতন। বুঝে ওঠা যায় না ছবি। এত দ্রুত গেলে সব ছবিই চলছবি হয়ে যায়, কখনো হুঁশ করে ধোঁয়া হয়ে যায়। মগজে ধরা পড়ার আগেই যা:, চলে গেল!
গতি নেশার মতন, ভুলিয়ে রাখে, ভুলিয়ে দেয়। যা ভোলার ছিলো না, যাকে অনেক অনেক সকাল দুপুর বিকেল রাত্রি ধরে ফিরে ফিরে দেখার কথা ছিলো, তাকেও ভুলিয়ে দেয়। বিস্মৃতির ঢাকনায় ঢাকা পড়ে থাকে সব মণিহার, ফুলসাজি, জলবিন্দু, আলোঘর। সত্য হয়ে থাকে মিছামি ...