পল স্টাইনহার্ট আর নিল টুরোক এর বিশ্বতত্ত্বের ধারনা হলো মহাবিশ্বের জন্ম ও মৃত্যু আবার নবজন্ম-এইরকম সাইক্লিক কসমোলজি।
এডুইন হাবলের গ্যালাক্সিদের দূরে চলে যাবার পর্যবেক্ষণ থেকে মহাবিশ্বের প্রসারণশীলতার ধারনা এসেছিলো। এ এমন এক মহাবিশ্ব যার স্থানকাল কেবল প্রসারিত হয়, ছড়িয়ে যায়। গ্যালাক্সিরা একে অপরের থেকে দূরে চলে যায় যা গ্যালাক্সিদের বর্ণা...
দেখতে দেখতে শরতের সোনাঝরা প্রহরেরা আসে আর চলে যায় একের পর এক। মহালয়া এলো আর চলে গেল, ইউটিউব থেকে নামিয়ে দেরিতে শুনলাম চন্ডীপাঠ।
পরদিন খেলার দিন ছিলো, প্রচুর তাঁবু পড়লো এদিক ওদিক। উৎসবদিনের রঙীন সাজে নাচতে নাচতে চলেছে কচি আর বড়রা। ধূসর গোধূলির কথা ভেবে যা থাকে কপালে বলে হাসিখুশী ছেলেমেয়েদের ছবি তুলে ফেলি।
এদিকে দিন গড়িয়ে যায়। মহাসপ্তমী পার হয়ে দেশে অষ্টমী পড়ে গেছে, গুজরাতিদ...
১।
হাল্কা নীল ভোর, খুব মৃদু একটা আভা শুধু দেখা দিয়েছে। এখনও সূর্য উঠতে অনেক দেরি, পুবের আকাশে এখনো লাল রঙই লাগে নি। হাওয়ায় হাল্কা শীত-শীত ভাব। একটা ভোরজাগা পাখি সুরেলা গলায় ডেকে উঠলো, গানের প্রথম আখরটির মতন বাধো-বাধো ডাক।
সুজাতা জেগে গেছিল আগেই, অনেককাল ধরেই শেষরাতে ঘুম ভেঙে যায় তার। সেই স্কুলে থাকার সময় সে রাত জাগতে পারতো না বলে শেষরাতে মা ডেকে দিতো, সে উঠে পড়তে বসতো, সেই অভ্য...
বছরের পর বছর নিরবচ্ছিন্নভাবে দেখাশোনার আর কথা কওয়ার পরে যখন একদিন হঠাৎ করে সব থামিয়ে দিতে হল তানকে, পুরানো সবকিছু মুছে ফেললো বন্ধু, তখন তান চুপ করে গেল একদম। ওর মনে হলো ওর নিজের ত্রুটি, ও মানুষ চিনতে পারেনি। সে কাউকে দোষ দেয় নি, শুধু চুপ করে গেল সাগরতীরের পাথরখন্ডটির মতন। চারপাশে ফেনার ফুল ছড়িয়ে ঢেউয়েরা এসেছে গেছে, সে চুপ। সেই পাথরটায় এসেই তারা বসতো ...
বিতান স্টেশনে এসে বসে রোজ বিকেলবেলা। একটা লোহার বেঞ্চি আছে স্টেশনের মহুয়াগাছের নিচে, সে সেইখানে এসে বসে প্রত্যেক দিন। সারাবছরই ঐখানে। খুব বৃষ্টি হলে শুধু দৌড়ে আসে শেডের নিচে, বৃষ্টি থামলেই আবার বেঞ্চিটায় । মহুয়াগাছটাকে নিয়ে নাকি কে এক কবি কবিতা লিখেছেন, কে এক গায়ক গান গেয়েছেন। বিতান মাঝে মাঝে চেয়ে চেয়ে দেখে গাছটাকে, কি আছে গাছটার মধ্যে? আলাদা কিছু, অন্যরকম কিছু?
মনের ভিতর শারদীয়া আকাশ বলে একটা আলাদা আকাশ ছিলো আমার শৈশবে কৈশোরে। বর্ষার কালো মেঘ কেটে গিয়ে নীলার মতন নীল একটা আকাশ, যত্ন করে জলে ধুয়ে সোনালী আলোর আবীর মাখিয়ে কে যেন সাজিয়েছে, জড়িয়ে দিয়েছে ফিনফিনে সাদা তুলোমেঘের ওড়না। এমন সব দিনে শিউলিরা টুপটাপ ঝরে পড়তো, মাঠভরা তুলোতুলো কাশ শিরশিরে হাওয়ার সঙ্গে হাসতে হাসতে নুয়ে পড়তো। সবুজ ধানেরা ভোরের শিশিরে ভিজে থাকতো। সোনাপিঠ ভোমরারা কেমন ...
লোহিতজন্ম ও নীলমৃত্যু পার হয়ে
উড়ে যায় বিন্দু বিন্দু মেঘভ্রূণ
দূরে আরো দূরে, উপরে আরো উপরে--
তৃষ্ণার্ত সবুজঘর আকন্ঠ ভিজিয়ে দিয়ে
ফোঁটা ফোঁটা বৃষ্টি, একের পর এক,
তারপরে অনেক অনেক।
ঐ বৃষ্টি দেখতে দেখতে
একটা ভুলে যাওয়া কথা যেন
মনে পড়ে,পড়ে, তবু পড়ে না।
গতজন্মের চিলকোঠা, তার পাশে সূর্যঘর,
পুবের ঘরের দরজার উপরে লাল টিপ,
মেঝেতে অপরাজিতা-আল্পনা।
কবে, কোথা...
মিলা একা একা হেঁটে যাচ্ছে বনের মধ্য দিয়ে, সে উড়নযান নেয় নি, ইমপ্ল্যান্টেড চিপ অফ করে রেখেছে, সে এখন সমস্ত যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন।
উড়নযানে করে সে এসেছে হ্রদপর্যন্ত, তারপরেই সেখানে সেটা থামিয়ে হাঁটতে শুরু করেছে বনের মধ্য দিয়ে। এখন তো আর পথগুলো দরকার হয় না কারুর, সবাই এখান থেকে ওখানে উড়নযানে করে যায়, পথগুলো সব আস্তে আস্তে সবুজে ঢাকা পড়ে গেছে, কিছু ফসল ক্ষেতের অংশ হয়ে গেছে, কিছু বনে ঢাকা...
মরুকিশোর, তুই সেই নীলমেঘ হবি?
এইসব কড়কড়ে বালিমাঠ পার হতে হতে
ডানা ঝেড়ে ঝরোঝরো জল দিতে দিতে -
একেবারে উড়ে যাবি যাদুপাহাড়ে?
রাতের ধারালো নখ ঢুকে যাবে
নরম রোমের ভিতর-
আকাশের নীল পালকে মুখ ঘষতে ঘষতে
সে ভিজে যাবে আশিরপদনখ।
তারপরে একটা চমৎকার জ্যোৎস্না উঠবে-
ঘরছাড়া বিবাগী একটা জ্যোৎস্না,
উদাসী ভালোবাসার মতন আলতো করে ছুঁয়ে যাবে
এই চোখের পাতায় লুকি...
রিমঝিম রিমঝিম নূপুর বাজছে সামনের টিনের চালে, আজকে একেবারে ঘনবর্ষা। গতরাত থেকে নেমেছে। ঝরঝর ঝরঝর করে জল পড়ছে পাশের বাড়ীর রেনওয়াটার পাইপ থেকে। নারিকেল গাছগুলো পাতা নাড়িয়ে নাড়িয়ে মহানন্দে স্নান করছে। হাওয়া এত ঠান্ডা, একেবারে বর্ষণবাতাস। ধানক্ষেতে জল জমে গেছে, বৃষ্টির জলে আধোডোবা চকচকে সবুজ ঘাসের মধ্য থেকে গলা বাড়িয়ে সোনাব্যাঙ গলা ফুলিয়ে ডাকছে। ...