রেনু আর রতনের ব্রেকাপ শেষ পর্যন্ত হয়েই গেল। হবে না তো কি?! কট্টর মুসলিম খান্দানের মেয়ে আর রক্ষণশীল হিন্দু পরিবারের ছেলের মধ্যে যে এ প্রেম পাক্কা পাঁচ বছর ধরে মরে মরে হাঁচড়ে-পাচড়ে বেঁচে ছিল, এ-ই অনেক!
আমাদের কম বেশি সবারই সহজ-সরল-কঠিন-জটিল-কুটিল-মারদাঙ্গা ভিডিও গেইম খেলার অভিজ্ঞতা আছে বোধয়। যারা খেলে তারা জানে, কতটা নিখাঁদ উত্তেজনা, মজা, ফূর্তী, বিনোদন জড়িয়ে ছড়িয়ে আছে একেকটি গেইমের পরতে পরতে। চ্যালেন্জকে পাল্টা চ্যালেন্জ করা, যুথবদ্ধতা, দলীয় আনুগত্য, লীডারশিপ, 'এক জীবনে কোনোদিনও পারব না’ এমন সব ভয়ানক সিদ্ধান্ত নিয়ে জয়ের দিকে জোরকদম এগিয়ে যাওয়া…এ এক অন্য জগত। অদম্য নেশা।
সঙ্গত কারণেই আমার মনে হয়, জগত সংসারের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর দ্বিপদ প্রানীটির নাম “শাশুড়ী”! শব্দটির ভেতরেই বাই-ডিফল্ট গেঁথে আছে জন্ম জন্মান্তরের কলিজাকাঁপান ত্রাস! হাঁটুকাঁপান আতঙ্ক! দাঁতকপাটিলাগা বিভিষীকা! একটি নারী যখন শাশুড়ী হবার প্রমোশন পান - নিচুতা, শঠতা, স্বার্থপরতা, কুটিলতা, জটিলতা, ধূর্তামি, টাউটামি ইত্যাদি যাবতীয় কর্পোরেট বৈশিষ্ট্য তখন তার আগাপাশতলা দিয়ে তেড়েফুঁড়ে বেরিয়ে আসে!
শ্বশুরবাড়ীর সর্বকনিষ্ঠ সদস্যটির অত্যাচারে সেই প্রথম দিন থেকেই আমার জীবন ছ্যাড়াব্যাড়া হয়ে গেল। সবকিছু সে মহানন্দে তছনছ করে, সারাক্ষন পায়ের কাছে পড়ে থাকে, গায়ের সাথে লেপ্টে থাকে, পিঠ বেয়ে কাঁধে চড়ে, কাঁধ থেকে মাথায় উঠে বসে। মাথায় বসে এখনও যে পেশাব করে দেয়নি, এতেই আমি ‘শুকুর আলহামদুলিল্লাহ’। ও আমার বড় ননদের ছেলে ‘নোটন’; নিজেকে সে তোতোন বলেই পরিচয় দিতে সাচ্ছন্দ্যবোধ করে। মাত্র দুই বছর বয়সি এই শিশুটি আ
"বেয়াদব! এত লেখাপড়া শিখে, দেশী বিদেশী ডিগ্রী নিয়ে এই শিখছ! এটা একটা কাজ হলো! অসভ্য বেতমিজ কোথাকার! "
মেয়েটির মাথা নত। চোখ নত। জড়োসড়ো হাতদুটি কোলের উপর নেতিয়ে। অদৃশ্য হাতকড়া দৃঢ় মুষ্ঠিতে চেপে আছে ওর অসাড়, আহত হাতদুটো। পায়ে শেকল পরা ছিল সেই শৈশব থেকেই। মুষলধারে গালিবর্ষন হচ্ছে মেয়েটির ওপর।
বয়সন্ধির ছয়টা বছর ছিল কবর আজাবের মত বিভীষিকাময়। আর নির্মমভাবে উপুর্যপুরি গজব প্রদানকারী ব্যক্তিটি হলেন 'ঘরের শত্রু বিভীষণ' আমার মা। টক-ঝাল-মিষ্টি আমার কিশোরীবেলা নিমতিতা হয়ে গিয়েছিল ওনার অত্যাচারে। নিয়মিতভাবেই আমাদের ভেতর অনুষ্ঠিত প্রচন্ড উত্তপ্ত বাকবিতন্ডার এক পর্যায়ে আমি ওনাকে ঘায়েল করতে এ্যাটম বম্ব মারতাম,
"তুমি আমার সাথে এরকম ঘসেটি বেগমের মত আচরন কর কেন?!"