ব্লগ

রুদাই

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: রবি, ২৪/১১/২০১৯ - ১০:৪৬পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

(দু বছর আগে সচলে কয়েকটা কিস্তি দেয়ার পর গল্পটা নিয়ে আর বসা হয়নি। আজ শেষ করে মনে হচ্ছে ঘাড় থেকে একটা বোঝা নামলো )

এক।।

এরা মাঝে মাঝেই জানতে চায়, আমি কোথা থেকে এলাম। আমি বলি, একটা ভালব টেনে। আর সে ভালবটা ছিলো সুতোয় বাঁধা।

তখন সবাই অবাক বিস্ময়ে আমার দিকে তাকিয়ে থাকে, ভালব সম্পর্কে বিন্দুমাত্র ধারণা নেই এদের, সুতো জিনিসটাও অচেনা। আমি নিজেও বুঝিয়ে বলতে পারিনা, আমার কিছু মনে নেই। এদের কৌতূহল অবশ্য ওই পর্যন্তই, খুব বেশি ঘাটায় না। আমিও নিবিষ্ট মনে কাজ করে যাই।

এখানে সবার একটাই কাজ, ছাঁকনদারি করা। আমি ছাড়া আরও একশ একুশ জন ছাঁকনদার রয়েছে এই তল্লাটে। আমরা সোনালি স্রোত থেকে রুদাই সংগ্রহ করি। ছাঁকনদার শব্দটি শুনে মনে হতে পারে আমরা বুঝি সার বেঁধে ছাঁকনি হাতে দাঁড়িয়ে থাকি আর সোনালি স্রোতটা এলেই ঝাঁপিয়ে পড়ি রুদাইয়ের খোঁজে। আসলে তা নয়।

আমরা থাকি সবুজ তল্লাটে। এখানকার ঘর-বাড়ি-রাস্তা-ঘাট এমনকি আমরা, সব কিছুই সবুজ রঙের। সোনালি স্রোতটা তরল নয়, অনেকটা বাষ্পের মতো, আবার ঠিক বাষ্পও নয়! কেউ জানেনা কী এর উৎস। কখনো দীর্ঘক্ষণ, কখনো অল্পক্ষণ, যখন আসে চতুর্দিক প্লাবিত করে চলে যায়। আমাদের সবুজ তল্লাট ফুলে ফুলে ওঠে রুদাইয়ের ভারে। স্রোত চলে গেলে আটকে পড়া রুদাইগুলোকে জড়ো করে বড় রাস্তাটার মোড়ে নিয়ে যাই আমরা, পৌঁছে দেই আরেকটা দলের কাছে। ওই দলে আছে একুশ জন, ওরা থাকে বাদামি তল্লাটে, যেখানে আমাদের যেতে মানা। এক দুজন যে চেষ্টা করেনি তা নয়, কোন এক বিচিত্র কারণে বড় রাস্তার মোড়টা পেরুনো যায়না।


ক্ষীরোদরঞ্জনের গ্লানি কিংবা নিরবালা দেবীর রক্তস্নান

নীড় সন্ধানী এর ছবি
লিখেছেন নীড় সন্ধানী (তারিখ: শনি, ২৩/১১/২০১৯ - ২:১৭অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

(সতর্কতা:এই গল্পে এমন কিছু রক্তাক্ত সত্য বিবরণ আছে যা দুর্বল হৃদয়ের জন্য সহনশীল নাও হতে পারে)

দেশকালসময় সবকিছুর উর্ধে চলে যাবার পরও ক্ষীরোদরঞ্জন নাথ কিছুতেই দৃশ্যটা ভুলতে পারছেন না। নিরবালা দেবী তাঁর স্ত্রী হলেও তার মাথার উপর নিজের কাটামুণ্ডুটি এভাবে হাজির হবে ব্যাপারটা তিনি মেনে নিতে পারেননি। তখনো তার চক্ষু মুদে আসেনি। তিনি স্পষ্ট দেখতে পেয়েছেন কয়েক সেকেণ্ডের সচেতন অচেতনের মাঝামাঝি ভাষাতীত এক মুহুর্ত ছিল সেটি। কাট্টলীর নাথ পাড়ার সবগুলো প্রাচীন বৃক্ষ, সমুদ্রের হাওয়া, চৈতালী ঝড় ক্ষীরোদরঞ্জনের সাথে একমত। তাঁর কোন অভিযোগ নেই কারো কাছে। তবে সেই ঘটনার পর থেকে তিনি শুধু ঘুরে ঘুরে সেই খুঁটিটার কাছে ফিরে আসেন। যে খুঁটির নীচে ঠেস দিয়ে বসে ছিল নিরবালা দেবী। আসলে ঠেস দেয়নি, একটা পাটের দড়িতে বাঁধা ছিল নিরবালা দেবীর শরীরটা।


ইয়েতির বংশোদ্ধার

সজীব ওসমান এর ছবি
লিখেছেন সজীব ওসমান (তারিখ: শুক্র, ১৫/১১/২০১৯ - ১১:৩৬অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:


ছবিসূত্র: Ikumi Kayama


পঁচাত্তরের পনেরই আগস্ট – বেসামরিক কুশীলবেরা

নৈষাদ এর ছবি
লিখেছেন নৈষাদ (তারিখ: শুক্র, ১৫/১১/২০১৯ - ৮:০১অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

পঁচাত্তরের পনেরো আগস্টের নৃশংস হত্যাকান্ডের পেছনের বেসামরিক কুশীলবদের নিয়ে বিশ্লেষণ তেমন চোখে পড়েনি। অবশ্য সামরিক কুশীলবদের কথা বললে শুধুমাত্র সরাসরি ঘাতকদের কথাই আসে, পেছনের বড় খেলোয়াড়দের কথা বিশ্লেষণে আসে না। দু’হাজার চৌদ্দ সালে অবমুক্ত করা মার্কিন গোপণীয় তারবার্তা বিশ্লেষণ করতে গিয়ে ‘ব্যাকগ্রাউন্ড ইনফোরমেশন অভ ক্যু লিডারস’ শীর্ষক এক তারবার্তায় দু’জন বেসামরিক ব্যক্তির নাম পাওয়া যায়। ঘাতক ফারুক-রশিদের ব্যাপারেও কিছু কৌতুহল-উদ্দীপক তথ্য পাওয়া যায়।


মোহিনী আবিষ্কার

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি
লিখেছেন ষষ্ঠ পাণ্ডব (তারিখ: সোম, ১১/১১/২০১৯ - ৯:০৮অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

[justify]চলচ্চিত্র দেখার ধৈর্য চলে গেছে বহুকাল আগে। তবু কখনো কখনো এক-আধটা চলচ্চিত্র দেখা হয়ে যায়। গত তিন/চার বছরে যা চলচ্চিত্র দেখেছি তার বেশিরভাগ মনে নেই। বছর চারেক আগে মোহসীন মাখমালবাফের ‘সকৌত’ দেখেছিলাম। দেখার পর থেকে চলচ্চিত্রটা আমার মাথায় স্থায়ী আসন গেড়ে বসে আছে। এসব কথা নিয়ে একবার একটা লেখাও লিখেছিলাম। অল্পস্বল্প কিছু পাঠক সেটা পড়েছেনও। এর পর থেকে যেই চলচ্চিত্রই দেখতে নেই সকৌতের ভূত আমার মাথ


ব্রেকি সুপারস্টানার আর ভূতুড়ে সকাল

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: রবি, ১০/১১/২০১৯ - ২:১৭অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

[justify]আমার স্নাতকোত্তর ছাত্র জীবন শেষ হয়েছে মাত্র সেদিন, চার মাসও হয়নি। আমি যেই বিশ্ববিদ্যালয়ে এতদিন পড়াশুনা করেছি সেটা মেলবোর্ন শহর থেকে ২৫ কি মি দূরে। তাই গত চার বছরে আমার খুব একটা শহরে আসা হয়নি। বাসা থেকে নিজে ড্রাইভ করে ল্যাব, আবার ল্যাব থেকে বাসা। বাসা থেকে কর্মস্থল কাছে হওয়ায় ভালো করে বাসা থেকে নাস্তা করে, চা খেয়ে দুপুরের খাবার নিয়ে তারপর অফিসে যেতাম। আমার অধ্যাপকও ‘কুল’ মানুষ। ঠ


বর্ণীল বেন্ডিগো

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: শনি, ০২/১১/২০১৯ - ৯:৩০অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

[justify]যারা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েন কিংবা পড়ান তাদের জীবনে একটা সুবিধা হল, সেমিস্টার বিরতিতে খুব একটা চাপ থাকেনা। আর অসুবিধা হল যখন সেমিস্টার থাকে তখন নাভিশ্বাস উঠে যায়। আরেক জাতীয় প্রানী আছে যাদের কিনা দুইটাই করতে হয়। পড়তেও হয়, পড়াতেও হয়। এই জাতীয় প্রানীর নাম হল “ পি এইচ ডী ছাত্র”। সেমিস্টার চলাকালীন সময়ে তাদের নাভিশ্বাস শুধু না, হাপানীর টান উঠে। তাই সেমিস্টারের মাঝখানে কয়েকটা দিন বন্ধ


বুড়োদেওয়ের সাক্ষাৎ

হিমু এর ছবি
লিখেছেন হিমু (তারিখ: শনি, ২৬/১০/২০১৯ - ৭:১৮অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

লালদেড়ে প্রৌঢ়ের গায়ে কড়া ক্ষারে কাচা খানিক-রোঁয়া-ওঠা ক্ষৌম কুর্তা যেন আরেকটু ফেঁপে উঠছিলো তারই খনখনে ধমকে, "...গেরস্ত বাড়ির বৌ-ঝির কাপড় তুলে চোরডাকাত খুঁজতে হচ্ছে রাজার ঠোলাকে? আরে একেই কি বলে সভ্যতা...?" পাশে সন্ত্রস্ত মুখে দাঁড়িয়ে তার কিশোরী মেয়েটি, দু'হাত ঘাগড়ায় চেপে রেখেছে সে, কিন্তু ভারি টুলটুলে তার চেহারাটি, আমার চোখ তার দিকেই ফিরছিলো একটু পরপর।