• Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_clear_votes_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_electoral_list_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_results_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_votes_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_writeins_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).

ইংরেজী সংবাদপত্রে মুক্তিযুদ্ধ [পর্ব-এক]

বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ পাঠাগার ও গবেষণা কেন্দ্র এর ছবি
লিখেছেন বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ পাঠাগার ও গবেষণা কেন্দ্র [অতিথি] (তারিখ: শুক্র, ২৯/০৩/২০১৩ - ২:৫৮পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

একাত্তরে দেশী/বিদেশী ইংরেজী পত্রিকায় মুক্তিযুদ্ধের উপর প্রকাশিত রিপোর্টগুলো আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধের গুরুত্বপূর্ণ দলিল হিসেবে বিবেচিত হয়।

'বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ পাঠাগার ও গবেষণা কেন্দ্র' একাত্তরে দেশী/বিদেশী ইংরেজী পত্রিকায় মুক্তিযুদ্ধের উপর প্রকাশিত রিপোর্টগুলো বাংলায় অনুবাদ করার উদ্যোগ গ্রহণ করে। এই অনুবাদগুলো সবার মাঝে ছড়িয়ে দেয়ার উদ্দেশ্যে অনলাইনে ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ করা হবে।

আজকের পর্ব: ১৯৭১ সালের ২৭ মার্চ দ্য ডেইলি টেলিগ্রাফে প্রকাশিত ডেভিড লোশাকের রিপোর্ট।

অনুবাদ করেছেন: সাব্বির

২৭ মার্চ,১৯৭১
দ্য ডেইলি টেলিগ্রাফ
ডেভিড লোশাক, দিল্লী।

পূর্ব-পাকিস্তানে গৃহযুদ্ধের আগুন জ্বলে উঠেছে
‘শেখ মুজিবুর রহমান একজন বিশ্বাসঘাতক’.....জেনারেল ইয়াহিয়া

পূর্ব-পাকিস্তানে গতকাল হতে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়েছে।

ধর্মের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত রাষ্ট্র পাকিস্তানের পশ্চিমাংশের সৈন্যদের সাথে পূর্বাংশের বাঙালীদের তীব্র যুদ্ধ হচ্ছে, অনেক মানুষ হতাহত হয়েছে। ভারতের মত বিশাল রাষ্ট্রকে মাঝখানে রেখে ভৌগলিকভাবে পশ্চিম পাকিস্তান হতে হাজার মাইল দূরে থাকা পূর্ব পাকিস্তানের সাথে গতকাল রাত হতে সারা বিশ্বের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে আছে।

পশ্চিম পাকিস্তান হতে পাঠানো সত্তর হাজার সুসজ্জিত সৈন্যদের সাথে পূর্ব পাকিস্তানের ইপিআর ও পুলিশ বাহিনীর বাঙালী সদস্যদের প্রচন্ড যুদ্ধ শুরু হবার পর হতে পূর্ব-পাকিস্তানের বিদ্রোহী নেতা শেখ মুজিবুর রহমান সম্পর্কে কোন খবর পাওয়া যাচ্ছে না। ঢাকার একটি সূত্র মতে, শেখ মুজিবুর রহমানকে তাঁর ঘনিষ্ট পাঁচ সহযোগীসহ গ্রেফতার করা হয়েছে।

ঢাকাসহ পূর্ব-পাকিস্তানের অন্যান্য শহরগুলোতে কারফিউ জারি করা হয়েছে। পশ্চিম পাকিস্তানী সৈন্যরা ঢাকা বেতারকেন্দ্র দখল করার দাবি করছে। ঢাকা ও চট্টগ্রামসহ পূর্ব-পাকিস্তানের বিভিন্ন শহরে ব্যাপক সংঘর্ষের এবং পশ্চিম পাকিস্তানী সৈন্যদের হাতে বিপুল সংখ্যক বেসামরিক বাঙালীকে হত্যা ও গ্রেফতারের খবর পাওয়া যাচ্ছে।

গতকাল রাতে পশ্চিম পাকিস্তান হতে বেতারে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান শেখ মুজিবুর রহমানকে বিশ্বাসঘাতক ও বিচ্ছিন্নতাবাদী অভিহিত করে বলেছে, ‘এই অপরাধের শাস্তি পেতেই হবে। আমি এই ক্ষমতালোভী-রাষ্টদ্রোহীকে পাকিস্তানের বারো কোটি মানুষের ভাগ্য নিয়ে খেলা করতে দেবো না।’

শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি অনুগত বাঙালী সৈন্যরা চট্টগ্রামের বেতারকেন্দ্রটি তুমুল যুদ্ধের পর পশ্চিম পাকিস্তানী সেনাদের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেবার দাবি করেছে। গতকাল রাতে ‘স্বাধীন বাংলা বেতার’ নামে একটি বেতারকেন্দ্র, শেখ মুজিবুর রহমান পূর্ব-পাকিস্তানের স্বাধীনতা ঘোষনা করেছেন বলে প্রচার করেছে।

পশ্চিম পাকিস্তানী সৈন্যদের ঘিরে ফেলেছে

ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট, ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলস ও পুলিশের বাঙালী সদস্যরা চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, সিলেট, যশোর, বরিশাল ও খুলনায় পশ্চিম পাকিস্তানী সৈন্যদের চারদিক থেকে ঘিরে ফেলেছে বলে ‘স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্র’ হতে প্রচার করা হয়েছে।

শেখ মুজিবুর রহমান বলেছেন, পূর্ব-পাকিস্তানের গর্ভনর জেনারেল টিক্কা খানের অধীনে থাকা পশ্চিম-পাকিস্তানী সৈন্যরা রাজারবাগে অবস্থিত পূর্ব-পাকিস্তান রাইফেলসের ব্যারাক ও পুলিশ লাইনে অর্তকিত আক্রমন করে অসংখ্য বাঙালীকে হত্যা করেছে। বাঙালীরা স্বাধীনতার জন্য প্রাণপণে লড়ছে। হে মহান আল্লাহ, স্বাধীনতা সংগ্রামে আমাদের সাহায্য করুন।

অপরদিকে, পূর্ব-পাকিস্তানের গর্ভনর জেনারেল টিক্কা খান বাঙালীদের স্বাধীনতার সংগ্রামকে যেকোন উপায়ে ধুলিসাৎ করা হবে বলে ঘোষনা দিয়েছে।

জেল পেনাল্টী

বাঙালীর স্বাধীনতার সংগ্রামকে নসাৎ করার জন্য পাকিস্তান সরকার বেশ কিছু শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহন করেছে।

• স্বাধীনতার ঘোষনা প্রচারকারীদের দশ বছরের কারাদন্ড দেয়া হবে।

• কোন রাজনৈতিক কর্মসূচী পালন করা যাবে না।

• পূর্ব-পাকিস্তানের বর্তমান অবস্থা নিয়ে কোন প্রকার প্রকাশনা করা যাবে না এবং বিদেশী কোন খবর পাঠানো যাবে না।

• শেখ মুজিবুর রহমানের আহবানে যেসব সরকারী ও আধা-সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারী অফিস-আদালত বর্জন করেছেন, তাদের বাধ্যতামূলকভাবে অফিস-আদালতে প্রত্যাবর্তন করতে হবে।

• সকল আগ্নেয়াস্ত্র সরকারের কাছে জমা দেয়ার আদেশ দেয়া হয়েছে। প্রকাশ্যে লাঠি নিয়েও বের হওয়া যাবে না।

• কোন প্রকার হরতাল বা, অসহযোগ কর্মসূচী পালন করা যাবে না।

• পাকিস্তান সেনাবাহিনী যেকোন সময় যেকোন প্রতিষ্ঠান বা, ব্যাক্তিকে জেরা ও তল্লাসী করতে পারবে।

জেনারেল টিক্কা খান বলেছে, বাঙালীরা পূর্ব-পাকিস্তানের পরিস্থিতি চরম অস্থিতিশীল করে তুলেছে। পাকিস্তানের অবস্থা স্বাভাবিক করতে হলে ও একতা ধরে রাখতে হলে বাঙালী বিচ্ছিন্নতাবাদীদের লাগাম টেনে ধরতে হবে।

গতকাল রাতে পশ্চিম পাকিস্তানী সরকারের আদেশে ঢাকায় দ্য ডেইলি টেলিগ্রাফের সাংবাদিক সাইমন ড্রিং-সহ অন্যান্য বিদেশী পত্রিকার সাংবাদিকরা হোটেলে অবরুদ্ধ ছিলেন।

পশ্চিম পাকিস্তান হতেও সহিংসতার খবর পাওয়া যাচ্ছে। সেখানে, ভূট্টোর সমর্থকরা বাঙালীদের ঘর-বাড়ি-দোকানে ব্যাপক হামলা চালায়। লাহোরের কাছে লালপুর শহরে বসবাসরত বাঙালীদের উপর ব্যাপক হামলার প্রেক্ষিতে সেখানকার প্রশাসন কারফিউ জারি করেছে।

আলোচনা ভেস্তে গেছে

পূর্ব-পাকিস্তানে উদ্ভুত অচলাবস্থা সমাধানকল্পে শেখ মুজিবুর রহমানের সাথে এগারো দিন ধরে আলোচনা করার পর কোন সিদ্ধান্তে উপনীত না হয়ে হঠাৎ করে প্রেসিডেন্ট জেনারেল ইয়াহিয়া খান ঢাকা ত্যাগের পর পূর্ব-পাকিস্তানে বাঙালীদের উপর সহিংসতা শুরু হয়।

গত কয়েকদিনের আলোচনা থেকে মনে হয়েছিল, পূর্ব-পাকিস্তানের অবস্থার উন্নতি ঘটবে কিন্তু বাস্তবতা হল সমঝোতা হবার কোন সম্ভাবনা ছিল না, বরং বাঙালী নেতাদের সাথে জেনারেল ইয়াহিয়ার নিষ্ফল আলোচনা পশ্চিম-পাকিস্তানী সেনাবাহিনীকে পূর্ব-পাকিস্তানে এসে নিজেদের অবস্থান গ্রহণে প্রচুর সময় করে দিযেছে।

এর আগে, মার্চের ০৬ তারিখ এক ভাষণে জেনারেল ইয়াহিয়া খান পাকিস্তানের অখন্ডতা ধরে রাখতে সামরিক হস্তক্ষেপ করার ইঙ্গিত দিয়েছিল।

সহিংসতার আশঙ্কা

পূর্ব-পাকিস্তানে দীর্ঘমেয়াদী মারাত্মক সহিংসতা হবার আংশকা করা যাচ্ছে। একটি সুসজ্জিত-শক্তিশালী সেনাবাহিনী মুক্তিকামী একটি জাতিকে দমিয়ে রাখতে পারবে কি-না, তা এখন দেখার বিষয়।

ভারত সরকার পশ্চিম ও পূর্ব-পাকিস্তানের মধ্যকার আকাশপথ বন্ধ করে দিয়েছে। এখন পশ্চিম পাকিস্তান হতে রসদ-বোঝাই বিমানগুলো শ্রীলংকা হয়ে ছয় ঘন্টার পথ পাড়ি দিয়ে পূর্ব-পাকিস্তানে যাচ্ছে। সমুদ্রপথে পশ্চিম ও পূর্ব-পাকিস্তানের এই দূরত্ব এক সপ্তাহেরও বেশি।

পশ্চিম-পাকিস্তানী সেনাবাহিনী মারাত্মক শক্তি প্রয়োগ করে ও ব্যাপক সহিংসতার মাধ্যমে পূর্ব-পাকিস্তানের স্বাধীনতার আন্দোলন হয়তো সাময়িকভাবে অবদমিত করতে পারবে কিন্তু পূর্ব-পাকিস্তানের স্বাধীনতা অবিশ্বম্ভাবী।

রিপোর্টের কাটিং:






মন্তব্য

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

ইংরেজীটা টাইপ করে সচলায়তনের ইংরেজী সেকশনে জুড়ে দিলে আরো ভালো হয়। সার্চ করে খুঁজে পাবে তাহলে লোকে।

অতিথি লেখক এর ছবি

ভালো পরামর্শ দিয়েছেন। মূল খবরের ইংরেজী দ্রুত পোস্ট করার চেষ্টা করব।

-সাব্বির

তানিম এহসান এর ছবি

(Y) (Y)

অতিথি লেখক এর ছবি

অনেক ইনফর্মেটিভ । ভালো লাগলো বেশ । পরবর্তী পর্বগুলোর অপেক্ষায় থাকলাম ।

- তালেব মাষ্টার

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।