আজ ২০ আগস্ট।
একাত্তরের আজকের দিনে বীরশ্রেষ্ঠ ফ্লাইট ল্যাফট্যান্ট মতিউর রহমান শহীদ হন।
কতটা দু:সাহসী হলে ও দেশের প্রতি কত বেশি ভালোবাসা-মমতা থাকলে, একাত্তরে পশ্চিম পাকিস্তানের বিমানঘাঁটি থেকে বিমান ছিনতাই করে, তা নিয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতার সংগ্রামে অংশ নেয়ার ইচ্ছে ও চেষ্টা মতিউর রহমান করেন, তা ভাষায় প্রকাশ করা যায় না।
এই লেখাটি বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমানের সৃত্মির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তাঁর একাত্তরের দিনগুলো সংক্ষেপে তুলে ধরার একটি ক্ষুদ্র প্রয়াস মাত্র।
==================================================================================
১৯৭১ সালের জানুয়ারি মাসের শেষ সপ্তাহে বাৎসরিক ছুটি কাটাতে স্বপরিবারে ঢাকায় আসেন পাকিস্তান বিমানবাহিনীর ফ্লাইট ল্যাফট্যান্ট মতিউর রহমান।
এসময় তিনি পূর্ব-পাকিস্তানের রাজনৈতিক ঘটনাগুলো খুব কাছ থেকে প্রত্যক্ষ করেন এবং পূর্ব-পাকিস্তান তথা, বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের সাথে জড়িয়ে পড়েন।
০১ মার্চ কর্মস্থল পশ্চিম পাকিস্তানে ফিরে যাবার কথা থাকলেও, তিনি তা করেননি।
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পাকিস্তানী সামরিক বাহিনীর দ্বারা হাজার হাজার নিরীহ বাঙালী হত্যার ঘটনায় তিনি মানসিকভাবে প্রচন্ড আহত হন।
এই ঘটনার পর, তিনি গ্রামের বাড়ি নরসিংদীতে সাধারণ মানুষকে স্বাধীনতা যুদ্ধে যোগদানের জন্য উদ্বুদ্ধ করেন।
নরসিংদীতে থাকার সময় ০৪ এপ্রিল পাকিস্তান বিমানবাহিনী নরসিংদীতে বোমাবর্ষন করে।
পাকিস্তানের এই এয়ারবোম্বিংয়ের ঘটনা থেকে তিনি পাকিস্তান থেকে বিমান ছিনতাই করে, তা বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে ব্যবহার করার কথা চিন্তা করেন।
১৯৭১ সালের ০৯ মে তিনি পশ্চিম পাকিস্তান ফিরে গিয়ে কাজে যোগদান করেন।
উদ্দেশ্যে বিমান ছিনতাই করা।
এসময় তাকে ফ্লাইং সেফটি অফিসারের দায়িত্ব প্রদান করা হয়।
বিমান ছিনতাই করার অনেকগুলো পরিকল্পনা করেন, অনেকবার চেষ্টাও করেন কিন্তু যথাযথ সুযোগ মিলছিল না।
অবশেষে ২০ আগস্ট, ১৯৭১-এ সেই সুযোগ আসে।
২০ আগস্ট, ১৯৭১।
শুক্রবার।
সকাল ১১.১৫ মিনিট।
মৌরিপুর বিমান ঘাঁটি, করাচি, পাকিস্তান।
পাঞ্জাবী পাইলট রশীদ মিনহাজ উড্ডয়নের প্র্যাকটিস করার জন্য টি-৩৩ বিমান নিয়ে রান দিয়ে এগুচ্ছিল। হঠাৎ বিমানটির সামনে এগিয়ে যান মতিউর রহমান, ইশারা দিয়ে রশীদকে বুঝালেন বিমানের পেছনের দিকে সমস্যা হয়েছে। সমস্যা দেখবার জন্য রশীদ বিমানের উপরের ঢাকনা (কেনোপি) খুললে, ওকে কিছু বুঝতে না দিয়ে দ্রুত লাফ দিয়ে বিমানের ভেতরে ঢুকে পড়েন মতিউর রহমান। মুহুর্তকাল দেরী না করে হাতের ক্লোরোফরম দেয়া রুমাল রশীদের নাকে চেপে ধরলেন মতিউর, অজ্ঞান হয়ে যায় রশীদ।
এরপর, অজ্ঞান রশীদকে পেছনের সিটে ঠেলে পাঠিয়ে, বিমানটি দ্রুত ভারত সীমান্তের দিকে চালিয়ে নিতে যাচ্ছিলেন মতিউর। কিন্তু হলো না। কিছুক্ষন পর পাকিরা টের পেয়ে* চারটি বিমান নিয়ে মতিউরের পিছু নিল। কিন্তু ওরা মতিউরকে বাগে আনতে পারল না।
ভারত সীমান্ত থেকে আর মাত্র কয়েক মিনিট বাকি। এসময় রশীদের জ্ঞান ফিরে আসে। শুরু হয় ধস্তাধস্তি। তবু সর্বশক্তি দিয়ে সবকিছু ঠিক রাখার চেষ্টা করলেন মতিউর। কিন্তু না, আর পারলেন না। ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে রশীদ ইজেক্ট সুইচ চাপলে মতিউর বিমান থেকে ছিটকে পড়েন। কিন্তু প্যারাসুট না থাকাতে তিনি মাটিতে পড়ে শহীদ হন। তাঁর মৃতদেহ বিমান বিধ্বস্তের স্থান হতে প্রায় আধ মাইল দূরে পাওয়া যায়।
মতিউর রহমান বিমান থেকে ছিটকে পরার কিছুক্ষন পরে, নিয়ন্ত্রনহীন বিমানটি রশীদসহ ভারত-সীমান্ত হতে মাত্র ৩৫ মাইল দূরে পাকিস্তানের সিন্ধু প্রদেশের খাট্টা অঞ্চলের জিন্দাগ্রাম এলাকায় বালির পাহাড়ে আছড়ে পড়ে।
মতিউরের স্বপ্ন পূরণ হলো না কিন্তু তিনি দেখিয়ে দিলেন স্বাধীনতার স্পৃহা মানুষকে কি পরিমাণ দু:সাহস এনে দেয়।
মতিউর রহমানের এই দু:সাহসী ঘটনা মুক্তিযোদ্ধাদের মনোবল শতগুণ বাড়িয়ে দেয়।
পাকিস্তান সামরিক কর্তৃপক্ষ মতিউর রহমানের মৃতদেহ উদ্ধার করে মশরুর বিমান ঘাঁটির চতুর্থ শ্রেণীর কবরস্তানে কোনমতে দাফন করে।
পরবর্তীতে, অসামান্য বীরত্ব ও অকল্পনীয় দু:সাহসের এবং আত্মত্যাগের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাঁকে "বীরশ্রেষ্ঠ" উপাধিতে ভূষিত করে।
দীর্ঘ ৩৫ বছর পর, ২০০৬ সালের ২৩ জুন বীরশ্রেষ্ঠ ফ্লাইট লেফট্যান্ট মতিউর রহমানের দেহাবশেষ পাকিস্তান হতে বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনা হয় এবং পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় ২৫ জুন মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে পুনরায় সমাহিত করা হয়।
বীরশ্রেষ্ঠ ফ্লাইট ল্যাফট্যান্ট মতিউর রহমানকে অবনত মস্তকে শ্রদ্ধা ও অসীম ভালোবাসার সাথে স্মরণ করছি...
==================================================================================
ছবি:
এক।
ক্যাডেট মতিউর রহমান।
দুই।
১৯৫৬ সালে তোলা ছবি: কিশোর মতিউর রহমান।
তিন।
পরিবারের সদস্যদের সাথে মতিউর রহমান (শেষ সারির ডানদিক থেকে প্রথমজন)।
চার।
১৯৪১ সালের ২৯ অক্টোবর, পুরান ঢাকার ১০৯ আগা সাদেক রোডের পৈত্রিক বাড়ি "মোবারক লজ"-এ জন্মগ্রহণ করেছিলেন মতিউর রহমান।
পাঁচ।
১৯৬৮ সালে তোলা ছবি। স্ত্রী মিলি রহমানের সাথে মতিউর।
ছয়।
১৯৭১ সালের জুলাই মাসে তোলা ছবি।
স্ত্রী ও দুই মেয়ের সাথে মতিউর রহমানের তোলা শেষ পারিবারিক ছবি।
বাবার কোলে মাহিন আর মায়ের কোলে তুহিন।
ছবিতে মাঝখানে একটি ছোট মেয়েকে দেখা যাচ্ছে। ওর নাম জাহেদা।
জাহেদাকে মেয়েদের খেলার সাথী হিসেবে করাচি নিয়ে যান মতিউর; উদ্দেশ্য ছিল, যাতে বাচ্চারা খেলাচ্ছলে বাংলা চর্চা করতে পারে।
সাত।
সহকর্মীদের সাথে মতিউর রহমান (প্রথম সারিতে ডান থেকে দ্বিতীয়জন)।
আট।
১৯৭১ সালে মার্চ-এপ্রিল মাসে নরসিংদীতে জনগণকে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের ব্যাপারে উদ্বুদ্ধ করার সেই দিনগুলোতে এই শার্টটি প্রায় পরিধান করতেন মতিউর রহমান।
নয়।
অসামান্য বীরত্ব ও অকল্পনীয় দু:সাহসের এবং আত্মত্যাগের জন্য বাংলাদেশ সরকার মতিউর রহমানকে "বীরশ্রেষ্ঠ" উপাধিতে ভূষিত করে।
দশ।
বীরশ্রেষ্ঠ পদক।
এগারো।
২০০৬ সালের ২৩ জুন বাংলাদেশে পাঠানোর উদ্দেশ্যে পাকিস্তানের মশরুর বিমান ঘাঁটির চতুর্থ শ্রেণীর কবরস্তান হতে বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমানের দেহাবশেষ উত্তোলন করা হয়।
বারো।
পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় ২০০৬ সালের ২৫ জুন মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমানের দেহাবশেষ সমাহিত করা হয়।
[এই ছবিটি তুলেছেন রণদীপম বসু]
==================================================================================
* রশীদ মিনহাজ জ্ঞান হারানোর পূর্বে কোনভাবে কন্ট্রোলরুমে বিষয়টি জানিয়েছিল অথবা, কিছু একটা দেখে কন্ট্রোলরুমের সন্দেহ হয়।
# উপরের ছবিগুলোর মাঝে শেষ ছবিটি বাদে অন্য ছবিগুলো কে বা, কারা তুলেছেন এবং ছড়িয়ে দিয়েছেন; সে সম্পর্কে জানতে পারিনি। যে বা, যারা এই ছবিগুলো তুলেছেন এবং ছড়িয়ে দিয়েছেন, তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা রইল।
==================================================================================
স্মরণিকাটি লিখেছেন-
সাব্বির হোসাইন
আহবায়ক সদস্য
একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটি, চট্টগ্রাম।
==================================================================================
মন্তব্য
স্যালুট সারা জীবনের নায়ককে
facebook
অবনত মস্তকে স্রদ্ধা ও অসীম ভালবাসা ।
অরিত শাকিল
মুভি হওয়া উচিৎ।
..................................................................
#Banshibir.
আমার জানামতে হয়েছে। রিয়াজ ছিল সেখানে।
র.নাহিয়েন
রিয়াজ নিজেও পাইলট শুনেছিলাম. মুভির নাম জানেন বস?
..................................................................
#Banshibir.
"অস্তিত্বে আমার দেশ", যতদূর মনে পড়ে
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
অনেক অনেক শ্রদ্ধা।
শ্রদ্ধা
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
ছবিটি মূল পোস্টের সাথে যোগ করা বেমানান হতো। তাই, মন্তব্যের ঘরে যোগ করলাম।
একাত্তরে বাঙালী হয়েও যারা এই বাংলার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছিল, "বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান সম্পর্কে" তাদের প্রতিক্রিয়া:
[সাব্বির হোসাইন]
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
বীরশ্রেষ্ঠ মতিউরের অন্য ছবিগুলো দেখিনি কখনই। এজন্যে অনেক ধন্যবাদ লেখককে।
সবাই দয়া করে ৯নং কমেন্টটা দেখে নেবেন।
আমার ছেলেবেলার নায়ক। এই ছবিগুলো দেখে হৃদয় জুড়িয়ে গেল। সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত ছবিটি ছাড়া বাকী ছবিগুলো সত্যিই মনে জায়গা করে নিল।
অসংখ্য ধন্যবাদ লেখার জন্যে।
র.নাহিয়েন
যত বার স্মরি, তোমার আত্মত্যাগে নুয়ে আসে মাথা! তোমাকে স্যালুট, হে বীরশ্রেষ্ঠ!
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।
ক্লাস ওয়ানে পড়েছিলাম বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমানের কথা। তখন থেকেই তিনি ছিলেন আমার নায়কদের একজন।
____________________________
খুব ভাল লাগল। অনেক অনেক শ্রদ্ধা জাতির এই শ্রেষ্ঠ সন্তানের জন্য। লেখককে ধন্যবাদ । আর ছবিগুলিও ভাল লেগেছে।
বাংলার ঈগলকে শ্রদ্ধা জানালাম।
বীরশ্রেষ্ঠ মতিউরের অন্য ছবিগুলো আমি-ও দেখিনি এর আগে।অপনাকে ধন্যবাদ।
সিরিজ হলে ভালো হয়,বাকী বীরশ্রেষ্ঠদের নিয়ে-ও লেখা আসুক।
এই বাংলায় যে তার সমাধি দেয়া হয়েছে, এতেই অনেক সান্ত্বনা এলো মনে।
লেখা ও ছবির জন্য অনেক ধন্যবাদ।
----------------------------------------
কামরুজ্জামান পলাশ
- একলহমা
__________________________________________
জয় হোক মানবতার ।। জয় হোক জাগ্রত জনতার
এই মহানায়কদের ছবির মতো দেশপ্রেমের আবেগটাও যেন আমরা এবং আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম শত শত বছর ধরে বুকে আগলে রাখতে পারি।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
শ্রদ্ধা।
১) ক) অপারেশান সার্চলাইটের প্রারম্ভে সিনিয়র জুনিয়র সব বাংগালী অফিসারের ছুটি বাতিল হল, কিন্তু মতিউরের হল না কেন?
খ) একে বাংগালী অফিসার, তদুপরি সে মার্চ ১ এ কাজে যোগদানের বদলে নিদেনপক্ষে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত নরসিংদীতে উপস্থিত ছিল, তাকে আবার সরাসরি পাকিস্তানের ফ্লাইট অপারেশনের কাজে লাগানো হচ্ছে কিভাবে?
২) "রাডার ফাঁকি দিয়ে" - ঠিক কোন প্রযুক্তি বলে এটা সম্ভব হচ্ছিল?
৩) ক) টি-৩৩ এর কেনপির ভিতরে কি ধস্তাধস্তি করা সম্ভব?
খ) টি-৩৩ এর পিছনে বসে কি সামনের সিট ইজেক্ট করা সম্ভব?
গ) সামনের সিট ইজেক্ট করার পরে কি পিছনের সিটে বসে ঐ বিমান পরিচালনা করা সম্ভব?
১ নং প্রশ্নকৃত ঘটনাগুলো ঐতিহাসিক সত্য। মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রনালয় অথবা, বিমান বাহিনীর তথ্য কেন্দ্র থেকে কারনগুলো জেনে নিতে পারেন।
রাডার ফাঁকি দেবার বিষয়টি লিখার ভুল ছিল; তা, সংশোধন করা হয়েছে।
৩. রশীদ ইজেক্ট সুইচ চেপেছিল। এর ফলে, মতিউর রহমান বিমান থেকে ছিটকে পড়েছিলেন। পরবর্তীতে, নিয়ন্ত্রণহীন বিমানসহ রশীদ বিধ্বস্ত হয়।
এটুকু ঐতিহাসিক সত্য।
ক. তাই, অনুমান করে নেয়া যায়, রশীদের জ্ঞান ফিরলে মতিউরের সাথে তার হাতাহাতি/ ধস্তাধস্তি হয়।
খ. একপর্যায়ে, রশীদ ইজেক্ট সুইচ হাতের নাগালে পাওয়ার পর তা ব্যবহার করে অথবা, হাতাহাতি/ ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে ইজেক্ট সুইচে চাপ পড়ে যায়।
গ. পিছনের সিটে বসে বা, সামনের সিট ব্যাতিত টি-৩৩ বিমান চালনা করা যায় কি-না, সে প্রশ্নের উত্তর বিমান বিশারদ থেকে জেনে নিতে পারেন।
মতিউর বিমান থেকে ছিটকে পড়ার পর বিমানটি রশীদসহ বিধ্বস্ত হয়। রশীদ বিমান নিয়ন্ত্রনে নিতে পারলে নিশ্চয় তা বিধ্বস্ত হতো না।
শুরুতেই বলে রাখি, কাউকে অপদস্থ করার উদ্দেশ্য় নিয়ে আমার প্রশ্নগুলো করছিনা। কিন্তু ৭১ এর বীরশ্রেষ্ঠদের ইতিহাস আমাদের জাতীয় পরিচিতি, সেখানে রূপকথার কোন স্থান থাকতে পারেনা।
উইকির ছবিগুলো বিবেচনা করুন। পাকিস্তান বিমান বাহিনীর T33 এর কোন একটির মত সজ্জার হবার কথা। আরো জেনে রাখুন লকহিডের জেট বিমানের যাত্রীর কাছে প্য়ারাসুট থাকেনা, ওটা লাগানো থাকে প্রতিটা আসনের সাথে। উড়ন্ত বিমানে আপদকালীন প্রকৃ্য়ায় ক্য়ানপি ও সামনের আসন একসাথে খোলে ও বিস্ফোরকের মাধ্য়মে সামনের আসন বিমান থেকে বিচ্ছিন্ন হয় ও তার বিমান থেকে নিরাপদ দূরত্বয় প্য়ারাসুট খোলে। এই ছবিটি দেখুন।
এবার আপনার বর্ণনার সাথে মিলিয়ে (ক) রশীদ বিমানের উপরের ঢাকনা (কেনোপি) খুললে, ওকে কিছু বুঝতে না দিয়ে দ্রুত লাফ দিয়ে বিমানের ভেতরে ঢুকে পড়া (খ) অজ্ঞান রশীদকে পেছনের সিটে ঠেলে পাঠিয়ে, বিমানটি দ্রুত ভারত সীমান্তের দিকে চালিয়ে নেয়া (গ) উড়ন্ত বিমানের ভেতরে ধস্তাধস্তি - এগুলোকে আবার ভাবুন।
ঐরকম নকশার বিমানে এই ঘটনা গুলো কি সম্ভব?
সিরাজ উদ দৌলার অন্ধকূপের বিষয়টি মাথা এলো।
আপনি এক কাজ করতে পারেন; প্রশ্নগুলো সব একত্রিত করে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রনালয়ে ও সামরিক বাহিনীর কাছে একটি চিঠি লিখতে পারেন।
আপনি যে প্রশ্নগুলোর অবতারণা করেছেন, তা নিয়ে গবেষণা হতে পারে। ইতিহাস হয়তো তখন নতুন করে লিখতে হতে পারে।
আপনাকে একটি তথ্য দিই- সরকারি নথিতেই রাডার ফাঁকি দেয়ার কথা উল্লেখ আছে।
আমার বর্ণনাটুকু বাংলাদেশ সরকারের নথি এবং তৎকালীন বিভিন্ন পত্রিকা অনুসারে ঐতিহাসিক সত্য হিসেবে এখন পর্যন্ত প্রমাণিত।
যেহেতু সন্দেহটি আপনার, তাই এর বিহিত করবার দায়টুকুও আপনার বলে মনে করি।
- সাব্বির হোসাইন।
\জয় বাঙলা, জয় বঙ্গবন্ধু/
------------------------------------------------------------------
মাভৈ, রাতের আঁধার গভীর যত ভোর ততই সন্নিকটে জেনো।
আপনাকে ধন্যবাদ। আশা করছি আরও লিখবেন আমাদের বীরশ্রেষ্ঠ’দের নিয়ে।
সকল শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা!
এমন বীর সন্তানকে লালন করেছে যে দেশমাতা, সেই দেশমাতা কতোখানি গর্ব অনুভব করে। শ্রদ্ধা এই বীরকে, বাঙ্গালী আমৃত্যু তোমার অবদান, দেশপ্রেম ভক্তিভরে মনে রাখবে।
আমার হৃদয়ের আঙ্গিনায়
এখনও শুনিতে পাই
তোমার ঐ দিপ্ত চেতনার দুনলা বন্দুকের গর্জন ।
আমায় তুমি কবে ডাকবে ,
কবে তুলে দিবে জং ধরা মরচে পড়া হাতিয়ার ...
স্তম্ভিত পথচলা ,ক্লান্ত শ্রান্ত বাহু দুখানা,
দেখে স্বপ্ন তুলে নেবে আবার ঐ হাতিয়ার।।
তুমি ডাক দিবে কি আমায়??
আমি যে কান পেতে রই।
বিজয়ের মাস...
লাখো শহীদের আত্মার শান্তি কামনা করে বলি,
আমরা কি পারিনা দিতে তার বিন্দুতুল্য অবদান!!?
নতুন মন্তব্য করুন