সিদ্ধান্ত

বইখাতা এর ছবি
লিখেছেন বইখাতা (তারিখ: শুক্র, ০২/১০/২০০৯ - ১২:১৩পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

(শুরুতে আমার নিজের কিছু অনুভূতির কথা বলে নিই। এর আগেও ’গল্প’ ক্যাটাগরিতে লেখা দেয়ার সময় এই কথাগুলি আমি বলতে চেয়েছি, কিন্তু কথাগুলো কে কেমনভাবে নেবেন, কেউ বিরক্ত হবেন কিনা এই সংশয়ে বলা হয়নি। এবার হঠাৎ মনে হলো, বলেই ফেলি; এতে লেখা নিয়ে আমার মনের অস্বস্তিবোধ তো একটু কমবে !
’গল্প’ ক্যাটাগরিতে আমি লেখা দিলেও লেখাগুলো আসলেই গল্প হিসাবে দাঁড়ায় কিনা এ ব্যাপারে আমি খুব, খুবই সন্দিহান। একটা গল্পে কী কী থাকা উচিত বা একটা লেখাকে কখন একটা সার্থক গল্প বলা যায়, আমি ঠিক জানিনা। প্রতিবার (এটা নিয়ে পাঁচবার) ’গল্প’ ক্যাটাগরিতে লেখা দেয়ার সময় আমার এমন মনে হয়েছে (ভবিষ্যতেও হবে, জানি) - এটা কি আদৌ একটা গল্প হয়েছে ! ক্যাটাগরিতে ’গল্প’ লিখে কি আমি বেশি আত্মবিশ্বাস দেখিয়ে ফেলছি না ! কাজটা কি ঠিক হচ্ছে ! কিন্তু একটা গল্প লেখার চেষ্টা করার পর যে লেখাটা বেরোয়, সেটাকে আর কোন শ্রেণীতে ফেলা উচিত ঠিক করতে না পেরে ট্যাগে ’গল্প’ই লিখি।
লেখাগুলি হয়তো গল্প হয়না বা কোনো কিছুই হয়না, তবে অবসর পেলে মাঝে মাঝে যখন একটু-আধটু লিখতে ইচ্ছা করে, তখন লিখেই ফেলছি ইদানীং (সে লেখা যেমনই হোক না কেন), সচলায়তনের পাঠক হওয়ার পর থেকে! এমনিতেই আমার লেখাগুলি দৈর্ঘ্যে বড় হয়, তার ওপর এই ভূমিকা যদি এই লেখা যারা পড়বেন তাদের বিরক্ত করে থাকে, আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত।)

সিদ্ধান্ত
এক.
’সাবের কিন্তু এই ঢংটা না করলেও পারতো ! এমন না যে ও কখনও আমাকে রান্নায় হেল্প করে না বা নিজে নিজেই চা বানায় না, কিন্তু নাজমুল ভাবী বেড়াতে আসলেই ওর চা বানানোর ধুম পড়ে যায় ! অসহ্য লাগে !’

সেলফোনটা গরম হয়ে গেছে। অন্তত একঘন্টা হবে কানে সেলফোন ধরে আছি। সেলফোন ধরেই একহাতে অফিসের জন্য একটা রিপোর্ট টাইপ করছি। কাল সকালেই লাগবে রিপোর্টটা। শায়লাকে বলতেও পারছিনা ’এখন রাখো, পরে কথা বলবো।’ বললেই ভীষণ রেগে যাবে। কিছুদিন পরপরই এইরকম একটা লম্বা ফোনালাপ হয় শায়লার সাথে আমার । অমি অবশ্য বলি না তেমন কিছু। শায়লা বলে, আমি শুনি।

কথা শেষ করে আমার আর কাজ করতে ইচ্ছা করলো না। কেমন একটা অবসাদ আমার শরীরের প্রতিটা কণায় চারিয়ে গিয়ে আমাকে অসাড় করে দিচ্ছে যেন। হাতের অঙুলটাও নাড়াতে ইচ্ছা করে না। তাই চুপচাপ বসে থাকি কিছুক্ষণ। হয়তো বৃষ্টি হয়েছে কোথাও । জানালা দিয়ে ঠান্ডা বাতাসের ঢেউ এসে গোলাপি মশারিটাকে ফুলিয়ে দিচ্ছে বিশাল এক বেলুনের মতো, আর আমার বিছানাটা হয়ে যাচ্ছে একটা গোলাপী পাল তোলা নৌকা।

রাত হয়েছে অনেক। ঘুমিয়ে পড়া উচিত। কিন্তু এখনও কাজ শেষ হয়নি আমার। নিজের সাথে বোঝাপড়াটা বাকি রয়ে গেছে। একটা একটা করে মনিটরের সবগুলি উইন্ডো বন্ধ করেও আবার মেইলটা খুললাম। অনেকবার পড়া তওসিফের মেইলটা পড়লাম আবার । ও অপেক্ষায় আছে - আমার সিদ্ধান্তের অপেক্ষায়। কিন্তু কী করবো আমি ? ফিরে যাবো ওর কাছে ? খুব তাড়াতাড়িই একটা সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত, কিন্তু পারছি না তো। একরাশ দ্বিধা আর শত-সহস্র স্মৃতির জালে জড়িয়ে যাচ্ছি বারবার।

আমার ঘরের বাইরের একচিলতে বারান্দাটা আমার বড় পছন্দের। এই সাততলা থেকে যতদূর চোখ যায় - এখন শুধুই অন্ধকার, হঠাৎ হঠাৎ এক বিন্দু লাল, হলুদ, সাদা বা নীল আলো - আমার জীবনের মতোই। পাশের পাঁচতলার ছাদে প্রতিরাতের মতো ছেলেটা এসে হাঁটছে ফোন কানে ধরে। আর আমার এখানে, এই সাততলার বারান্দায়, নিশ্চুপ চারদিক।

নিজের মনকে যাচাই করার ইচ্ছা জাগে হঠাৎ - এই অন্ধকারে - ভাবি, তওসিফের কাছে ফিরে না গেলেও অন্য কাউকে কি আমি আর কখনো গ্রহণ করতে পারবো ? নাকি সময়ের সাথে সাথে আমার এখনকার এই অনুভূতিটাও মরে যাবে আর আমি আবার নতুন করে স্বপ্ন দেখতে পারবো ?
কোনো উত্তর পাই না মনের কাছ থেকে। কতবছর বাঁচে একটা মানুষ ? ষাট ? সত্তুর ? অনেকটা সময় কি পেরিয়ে আসিনি ? বাকি সময়টা কি একা একাই কাটিয়ে দেয়া সম্ভব হবেনা !

রেলিঙে হেলান দিয়ে ভাবতে ভাবতে এই ঠান্ডা বাতাসেও মাথা গরম হয়ে যায়। সময় কেটে যাচ্ছে বহমান তীব্র স্রোতের মতো। আর কত অপেক্ষায় রাখবো তওসিফকে ? অস্থির লাগে খুব। কিন্তু আমি যে আজকেও কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারলাম না ! তওসিফের মেইলের জবাবটাও তাই দেয়া হলো না।

দুই.
প্রচণ্ড গরম পড়েছে আজ। চকচকে, নির্মেঘ, নীল আকাশ চুঁইয়ে গাঢ় হলুদ রোদে গলে যাচ্ছে ধুলায় ধূসর রাস্তÍার কালো পিচ।
গরমে ঘেমে প্রায় গোসল হয়ে বিরক্ত মুখে বসে আছি একেবারে ভেতরের দিকে। শায়লা সেই তখন থেকে নিঃশব্দে কেঁদেই যাচ্ছে। আর আমার বিরক্তি ক্রমেই বেড়ে যাচ্ছে, - মূলত গরমেই। এদের এখানে জেনারেটরের ব্যবস্থা নাই, বিশ্বাস হয় না। ভালই তো চলে দেখি। কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ছেলেমেয়েরাই আসে বেশি। তবে সকাল আর দুপুরের এই সন্ধিক্ষণে আমরা ছাড়া আর কেউ নাই। এই সময়ে অফিস থেকে আমাকে ডেকে নিয়ে এসে কী যে শুরু করলো শায়লা !

’রিমঝিমটা না থাকলে আমি সত্যিই আর সাবেরের সাথে থাকতাম না নীতু।’

বহুবার শোনা কথাটা আবার শুনে কেন জানিনা এবার আমার মনটা খারাপ হয়ে গেল ঝপ্ করে। শায়লা সেই তখন থেকে কেঁদেই যাচ্ছে। এত পানিও আছে মেয়েটার চোখে ! বসে যাওয়া, কালচে চোখের কোল বেয়ে পানি গড়িয়ে ফোঁটায় ফোঁটায় জমা হচ্ছে কাঠের বাদামী টেবিলটায়। এত তুমুল, প্রগাঢ়, সুদীর্ঘ ভালবাসার পর নাহয় নির্লিপ্তি আর বিরক্তিই থাকতো, এত কান্না আর কষ্ট দেখতে ইচ্ছা করে না। তাই মুখ খুলি -

’তোর ভুলও তো হতে পারে। তুই ব্যাপারটাকে যেমন ভাবছিস তেমন না ও তো হতে পারে, একবার ভালো করে ভেবে দ্যাখ.....’
বাকিটা আর বলতে পারলাম না শায়লার প্রবল প্রতিবাদে - লাল টকটকে চোখের তীব্র, কিছুটা অভিমানভরা দৃষ্টির সামনে থামতে হলো। কিন্তু সত্যিই কি শায়লা যা ভাবছে সেটাই সত্যি ?! কিংবা ওর কি ভুল হচ্ছে কোথাও !

চারদিনের জায়গায় দুইদিন বাবার বাসায় কাটিয়ে হঠাৎ ফিরে এসে, তেমনি হঠাৎ দরকারবশত গেস্টরুমের আলমারি খুলে যদি পাওয়া যায় একটা অচেনা কিন্তু না-নতুন, ব্যবহৃত শাড়ি আর অনেক জিজ্ঞাসাবাদ, অনুসন্ধানের পরও যদি সেই শাড়ির উৎস সম্পর্কে নিঃসন্দেহ হওয়া না যায়, তাহলে ঠিক কেমন লাগতে পারে ? ঠিক আছে, সাবের ভাইয়ের কলিগ, কলেজজীবনের সহপাঠি দীপা নাহয় এই শাড়িতেই কিছুদিন আগে রিমঝিমের জন্মদিনে ওদের বাসায় এসেছিলো, কিন্তু এতেই কি প্রমাণিত হয় সাবের ভাই আর দীপা সুযোগ নিয়েছে ? সুযোগ নেয়ার ইচ্ছা থাকলে শাড়ি রেখে যাওয়ার মতো কাঁচা কাজ কি করতো ? নাকি ওরা ধরেই নিয়েছিলো শায়লা চারদিনের আগে কিছুতেই ফিরবে না !
জানিনা - আর এইসব ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ করেই বা কী লাভ ! শায়লাকে এখন কোনো কিছুই বোঝানো যাবেনা - অথবা আদৌ বোঝানোর মতো কি কিছু আছে !

কিন্তু আমার সমস্যা হলো - অনেকদিনের চেনা সাবের ভাইযের সাথে এই ঘটনাটাকে কিছুতেই মেলাতে পারছিনা। অনেকরকম অভিযোগ শুনেছি - সাবের ভাইকে নিয়ে। পাশের বাসার নাজমুল ভাবী, তিনতলার তাহসিনা, ইয়াহু-মেসেনজারে কোনো এক অচেনা মেয়ে - এরকম আরো কিছু মেয়েকে নিয়ে সাবের ভাইকে শায়লার সন্দেহ আমার কাছে বাড়াবাড়ি মনে হতো বা এখনো হয়তো হয় - সেই বিশ্ববিদ্যালয়-জীবনের শান্ত,ভদ্র, চুপচাপ, একটু-লাজুক, বেশ রাশভারী সাবের ভাইয়ের সাথে এসব অভিযোগ ঠিক মেলাতে পারিনা একদম। এসব অভিযোগের কিছুটাও যদি সত্যি হয়ে থাকে, তারপরও আজকে যা শুনলাম - আমি ঠিক বিশ্বাস করতে পারছি না অথবা হয়তো বিশ্বাস করতে চাইছি না।

কী অশ্চর্য ! বিশ্বাস না করারই বা কী আছে। বিশ্বাস জিনিসটা যে কী আশ্চর্যরকম ভঙ্গুর সেটা কি আমি নিজের জীবন দিয়ে বুঝিনি ! একটা সহজ, স্বাভাবিক, শান্ত দুপুর - আমার জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেয়া একটা দুপুর কি আমাকে শেখায়নি যে সব অসম্ভব আর অবিশ্বাস্য ঘটনাই আসলে খুব সহজভাবে ঘটা সম্ভব !
আচমকা শায়লা ফুঁসে উঠলে আমি ভাবনা-চিন্তা থামিয়ে ওর দিকে মনোযোগ দিই।

’এত কিছুর পরও ঐ মহিলা নিজের ছেলেকে কিছুই বলবেনা। সব নাকি আমার সন্দেহ! তার ছেলের কোনো দোষ নাই !’

’ ঐ মহিলা’ মানে শায়লার শাশুড়ি। অপাদমস্তক ভদ্র, বিনয়ী শায়লা তার শাশুড়িকে বরাবর এভাবেই সম্বোধন করে আমার সামনে !

ওর কথায় হঠাৎ নিজের শাশুড়িকে মনে পড়ে গেল আমার। কী আদরটাই না করতেন আমাকে। অথচ এখন ! এমনকি ফোনেও আমার সাথে কথা বলতে চান না। এতটা বিতৃষ্ণা আর বিরাগ কী আমার প্রাপ্য ছিলো ! সংসার ভেঙে যাবার দোষটা কি একা আমার ?! কী জানি, হয়তো আমারই।

অজান্তে, অনিচ্ছায় গড়িয়ে পড়া চোখের পানি আড়াল করতে আমি চায়ের কাপটা মুখের কাছে ধরে মাথা নিচু করি, চায়ে চুমুক দেই, আড়চোখে শায়লাকে দেখি।

শায়লা নিঃশব্দে কাঁদে আর আমি ওর কান্না দেখতে দেখতে ভাবি সেই দুপুরটার কথা, ভাবি আর হিসাব করি - ভুল করেছি নাকি ঠিক করেছি, হিসাব করতে করতেই একটা সিদ্ধান্ত নেয়ার চেষ্টা করি, পারিনা।

তিন.

আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে আমার বিরক্ত লাগে, সাজতে আমার কখনোই ভালো লাগেনা। তওসিফ চাইতো বলেই সাজতাম যতœ করে, মনোযোগ দিয়ে আয়নায় চোখ রেখে। এখন আর সাজিনা, তবু আয়নার সামনে দাঁড়ালেই আমার তওসিফকে মনে পড়ে, মনে পড়ে বলেই বিরক্ত হই।

আজ রাতে পুনর্মিলনী ধরণের ছোটোখাটো একটা প্রোগ্রাম আছে সাদিয়ার বাসায়। কিছু বন্ধুবান্ধব আসবে, সপরিবারে, একসাথে আড্ডা দেবো এমনটাই উদ্দেশ্য। তওসিফের কাছ থেকে চলে আসার পর থেকেই এইরকম আড্ডা আমি এড়িয়ে চলি। তবে, ’আমি একদম ঠিক আছি’ - এটা বোঝানোর জন্যই এইসব জমায়েতগুলি পুরোপুরি এড়িয়ে যাই না। তাই নিজেকে নিত্যদিনের মতো একটা হালকা হাসিখুশী মুখোশের মোড়কে আবৃত করে রাস্তায় নামি।

সাদিয়ার বাসায় এখনও তেমন কেউ আসেনি। আমরা দুই তিনজন বসে টুকটাক কথা বলছি আর টিভিতে চোখ বুলাচ্ছি মাঝে মাঝে। কী একটা বিনোদনমূলক অনুষ্ঠান হচ্ছে। অদ্ভুত সব কাটছাঁটের পোশাক প’রে, অদ্ভুতভাবে হাত পা নাড়িয়ে, অদ্ভুত উচ্চারণে কিছু ছেলেমেয়ে ছেলেবেলা, বন্ধুত্ব এইসব নিয়ে আড্ডা দিচ্ছে। আমি যখন খুব মনোযোগ দিয়ে একজনের ভারী মেকআপের আড়াল থেকেও ভেসে ওঠা মিষ্টি চেহারার সাথে কী রকম আর কী রঙের পোশাক পরলে মানাতো ভালো ভাবছি, তখুনি রীতিমতো হইচই করে ঢুকলো শায়লা, সাথে সাবের ভাই আর রিমঝিম। একটু অবাক হলাম।

এই বারান্দাটা প্রায় অন্ধকার। ভেতরের বা বাইরের অলো এসে পড়েনি এখানে। বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছি, একা, শায়লার জন্যই অপেক্ষা করছি। তিনদিন আগের কান্নাকাটির পর ওকে এমন হাসিখুশি, উচ্ছ্বল, ঝলমলে দেখবো - এটা অপ্রত্যাশিত ছিলো। শায়লা আসতেই আমি একটা প্রশ্নবোধক হাসি ছুঁড়ে দিলাম।

’কক্সবাজার যাচ্ছি কালকে। তিনদিন থাকবো।’ কিছুটা লাজুক, সংকুচিত কণ্ঠ ওর।
’হঠাৎ !?’
’সাবেরের প্রমোশনের সেলিব্রেশন। তোকে বলতে ভুলে গেছিলাম ওর প্রমোশনের কথা !’
হুম, এতো কান্নাকাটির মধ্যে ভুলে যাওয়াটাই স্বাভাবিক !

খুব সন্তুষ্ট দেখাচ্ছে শায়লাকে। আমি আর জানতে চাইলাম না দীপার ব্যাপারে কী হলো। আমি আসলে কিছুই বুঝতে পারছিনা। দীপার ব্যাপারটা কি তাহলে মিটমাট হয়ে গেছে ! কিন্তু এইরকম একটা ব্যাপার মিটমাট হয়ে যায় কীভাবে ! আমি তাহলে কেন পারলাম না ?! সমস্যাটা কি তাহলে সত্যিই আমার মধ্যে ! আমার মধ্যেই কি তাহলে সহিষ্ণুতার বেশি অভাব ? কিন্তু চোখের ভেতর আটকে যাওয়া একই ছবি বারবার দেখতে দেখতে আমি কি আর ততওসিফের সাথে স্বাভাবিক হতে পারতাম ? নাকি মনের ভেতর অবিশ্বাস আর ঘৃণা পুষে রেখে কোনোমতে দাম্পত্য সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার মধ্যেই আছে সব সার্থকতা ! নাকি আমি আসলে একটা যাচ্ছেতাই ধরণের মানুষ - দাম্পত্য সম্পর্কের অযোগ্য !

আমি আড্ডায় জমে যাই, হাসি, কথা বলি, খাই, কিন্তু আমি কী কথা বলি, কেন হাসি, নিজেই বুঝতে পারিনা। সবকিছু ঝাপসা লাগে। মাথার ভেতর ঘুরপাক খায় সেই দুপুরটা।

একটা স্থিরচিত্রের মতো ছবিটা লেপ্টে থাকে আমার দৃষ্টিতে। একটা ছোট দৃশ্য। এতটা সহজ আর স্বাভাবিকভাবে সেই দৃশ্য জুড়ে আছে সময়ের ফ্রেমে যেন এটা আর দশটা সাধারণ দৃশ্য থেকে আলাদা কিছুনা।
আমার আর তওসিফের ছোট বাসা, আমাদের শোবার ঘর, ঘরের দরজায় দাঁড়িয়ে আমি - বিদ্যুৎস্পৃষ্টের মতো, আর ঘরের ভেতরে আমাদের বিছানায় তওসিফ আর ...আর কে ?!
আর লিনা ! আমার, তওসিফেরও ছেলেবেলার সঙ্গী - প্রিয় বান্ধবী। আর ওই একটা মুহূর্ত, একটা ছোট নিঃশ্বাসের সমান ওই সময়টা আমাকে একবারে ভেঙেচুরে দিয়ে গেল - চিরদিনের মতো।

সেই দুপুরের ঘটনা আর কেউ জানেনা আমরা তিনজন ছাড়া, কেউ কখনো জানবেওনা। শুধু কেউ কখনো বুঝতে পারেনা, কখনো বুঝতে পারবেও না - কেন এক সকালে আমার আর তওসিফের পথ আলাদা হয়ে গেল ! আমার অগোচরে কি সমান্তরাল আরেকটা সম্পর্কে জড়িয়ে ছিলো ওরা ! নাকি সেটা ছিলো একটা হঠাৎ ঘটে যাওয়া ঘটনা ! জানিনা, জানতে চাইনি। আমি কিছুতেই মানতে পারিনি, মানতে পারবোও না। প্রিয়জনের ওপর থেকে নিখাদ বিশ্বাস ভেঙে যাবার মতো কষ্ট আর কী আছে !

চার.
কম্পিউটার স্ক্রীণের দিকে তাকিয়ে আছি, ঘুমাচ্ছে রিমঝিম, পাশে চাপা কণ্ঠে কাঁদছে শায়লা। কী করার আছে আমার ! গতানুগতিক শব্দে, কথায় শায়লাকে সান্ত্বনা দেয়া যায়, কিন্তু আমার কেন জানিনা কোনো কথাই বলতে ইচ্ছা করছে না - একটা অদ্ভুত অবসাদে।

সাবের ভাই ভুল করে তার ইমেইল আইডির জায়গায় পাসওয়ার্ড লিখে ফেলায় আর ঠিক সেই সময়ে শায়লা পেছনে দাঁড়িয়ে থাকায় পাসওয়ার্ডটা দেখে ফেলে শায়লা। আর তার ফলাফল হচ্ছে আজকের এই বিকাল - ওদের বাসায় আমি, শায়লার কম্পিউটারের সামনে বসে আছি - অন্যের চিঠি, ডায়েরী গোপনে পড়ার অভ্যাস না থাকলেও বসে বসে সাবের ভাইয়ের ইমেইল পড়ছি।

’আমি কি দেখতে খুব খারাপ হয়ে গেছি নীতু ? ’

শায়লার বড় বড় টানা চোখের দীর্ঘ পাপড়িগুলো লেপ্টে আছে পানিতে। ফর্সা চিবুক, নাকের ডগা লাল, চোখের কোলে রাত জাগার কালো দাগ, আমার এই বন্ধুটা বড় সুন্দর ! শায়লা যেমন সুন্দর, সাবের ভাইও তেমনি সুদর্শন; সাথে ওদের মেয়ে ফুটফুটে রিমঝিমকে দেখলে কেউ বলবে না এই আপাত সুখী পরিবারটার আড়ালে লুকানো আছে এত অবিশ্বাস, সন্দেহ, প্রতারণা আর অ-সুখ। বিছানায় দেবশিশুর মত রিমঝিম ঘুমিয়ে। এই মেয়েটার মুখ চেয়ে কি ওরা পারেনা সব ভুলে আবার সেই আগের নির্মল, বিশ্বাস আর ভালবাসায় ভরা দিনগুলিতে ফিরে যেতে ! কিন্তু এখন কি আর চাইলেও সেটা সম্ভব ! ভুলটা ঠিক কোথায় হচ্ছে, কেন হচ্ছে বা আসলে কার কতটুকু ভুল হচ্ছে !

সাবের ভাই এসেছেন আধাঘন্টা হলো। আমি আর সাবের ভাই বসে আছি ওদের বসার ঘরে। বুঝতে পারছি, সাবের ভাই কিছু একটা বলার জন্য মনে মনে প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ভেতরে বেডরুমে শায়লা তৈরী হচ্ছে বাইরে যাবার জন্য। আমি আপাতত অপেক্ষা করছি। শায়লার জন্য, সাবের ভাইয়ের কথার জন্যও।

’নীতু, শায়লা তোমাকে আমার সম্পর্কে যা যা বলেছে, তুমি কি সব বিশ্বাস করেছো ?’
একটু চমকে ইঠলাম। এভাবে সরাসরি প্রশ্ন আসবে এমনটা ভাবিনি।

’'িবশ্বাস করো নীতু, এর প্রায় সবই মিথ্যা। ’
মিথ্যা ! বলে কী লোকটা ! একটু আগেই তো সাবের ভাইয়ের মেইলগুলি পড়লাম, অপরিচিত এক মেয়েকে পাঠানো, আবেগময় চিঠি ! কী ভণ্ড একটা মানুষ !
আমি নিশ্চুপ। আসলে কথা বলার রুচিই হয় না আমার।

’ কী আর বলবো তোমাকে, বিয়ের পর থেকেই শায়লার অহেতুক, অবিরাম সন্দেহে এখন আমি ক্লান্ত।’
কিন্তু সন্দেহ কী সবসময় অমূলক ছিলো !

’মাঝে মাঝে আমার কী মনে হয় জানো ?’
চুপচাপ তাকিয়ে থাকি।

’ শায়লা যা সন্দেহ করে সত্যিই তা করে ফেলি ! এমনিতেই তো শান্তি বলতে আর কিছু নাই আমাদের জীবনে !’

করার কী আর কিছু বাকি আছে ! আর এটা কী কোনো অজুহাত হতে পারে কোনো পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ার ! কী হাস্যকর ! এসব কথা প্রবল ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও বলতে পারিনা মুখ ফুটে, ঠোঁটের ডগায় আটকে যায়। হয়তো বয়সের বড় একটা পার্থক্য অথবা সাবের ভাইয়ের সহজাত ভারী গাম্ভীর্য অথবা আমার নিজের অকারণ, বিরক্তিকর সংকোচ বা এর সবকিছুই একসাথে আমাকে চুপ করিয়ে রাখে, কথা বলতে দেয়না। সাবের ভাই একাই কথা বলে যায়।

’আর আমার আব্বা - আম্মার সাথে ওর ব্যবহারের কথা তো তুমি জানোই। ’

সাবের ভাইকে খুব হতাশ লাগছে এখন। এটা সত্যি, শ্বশুরবাড়ির সবার সাথে শায়লার ব্যবহার ঠিক খারাপ না, তবে বেশ শীতল। কিন্তু এই শীতল সম্পর্ক কী শুধুমাত্র শায়লার জন্যই তৈরী হয়েছে ! নিশ্চয়ই না ! এবার একটা লম্বা লেকচার দেয়ার জন্য মুখ খুলেও চুপ করে যাই, আমার আর একটু সময় দরকার সাবের ভাইয়ের সাথে তর্কে নামার জন্য, আরো একটু প্রস্তুতি, আরো কিছু খুঁতবিহীন, অকাট্য, দৃঢ় প্রমাণ দরকার। আর কিছুদিন যাক।

নিচু স্বরে, অসহায়, হতাশ মুখে সাবের ভাই কী সব বলে, আমি ঠিকমত শুনিও না, হয়তো খুব পরিচিত এক ধরণের বিতৃষ্ণা বোধ করছিলাম বলেই ! আর শুনেই বা কী হবে ! আমি কী করতে পারি ! নিজের জীবনটাই যেখানে নিজে ঠিক করতে পারলাম না !

কিছু না বলে বেরিয়ে এলেও মনের মধ্যে কেমন একটা অস্বস্তি লেগে থাকলো, সাবের ভাইয়ের জন্য কেন জানিনা একটু একটু খারাপও লাগছিলো।
শায়লা যা বলে তার কতটুকু আসলে সত্যি আর কতটুকু সন্দেহ ! সাবের ভাইয়ের পাঠানো ইমেইলগুলি তো আর মিথ্যা না। আর সেই শাড়ির ব্যাপারটা ! ভাবার চেষ্টা করলাম - সাবের ভাইয়ের জায়গায় তওসিফ, আর শায়লার জায়গায় আমি হলে কী করতাম !
আরে ! এটা কেমন প্রশ্ন হলো! কী করতাম সেটা কি ক’রে দেখাইনি আমি !

পাঁচ.

শায়লা একটা স্কুলে পড়ায়। একটা কাজে এসেছিলাম ওর কাছে। অফিস থেকে ছুটি নিয়েছি, তাই শায়লা আর যেতে দিলোনা। ওর সাথে গল্প করতে করতেই অনেকটা সময় পেরিয়ে গেলো। সাবের ভাইয়ের প্রসঙ্গ ইচ্ছা থাকলেও তুলতে পারলাম না, ওর কলিগরা কাছে থাকায়।
স্কুল ছুটি হয়ে গেছে, শায়লা আর ওর আরো কিছু কলিগের সাথে আমিও বেরিয়ে এলাম বাইরে। চলে যাবো।

বাইরে দাঁড়িয়ে কথা বলছি আমরা কয়েকজন, হঠাৎ দেখি সাবের ভাই আর রিমঝিম - আমাদের দিকেই এগিয়ে আসছে, ওরা বাইরে অপেক্ষা করছিল শায়লার জন্য।

আমাকে ওরা আমার বাড়ির রাস্তায় নামিয়ে দেবে বললেও ওদের সাথে আমি যেতে চাইলাম না, ইচ্ছা করলো না। ওরা এখন চলে যাচ্ছে। শায়লা, সাবের ভাই আর রিমঝিম। আমার সাথে এখনও দাঁড়িয়ে আছে শায়লার দুই কলিগ। শুনতে পচ্ছি ওরা বলছে নিচু স্বরে -
’কী দারুণ সুখী একটা কাপ্ল, তাই না !’
’হুম, একদম টিভির অ্যাডগুলির মতো !’
হাসি পায় আমার।

শায়লা একবার তাকালো পেছন ফিরে। পরিতৃপ্ত একটা মুখ ! অবাক হয়ে যাই আমি। কীভাবে এত পরিতৃপ্ত থাকতে পারে শায়লা ! নাকি এটা ওর ভান, কলিগদের সামনে অভিনয় ? ! বুঝতে পারিনা। সত্যি কিছুই বুঝতে পারিনা আমি। তাহলে আমি কি ভুল করেছি ? শায়লা যদি এইরকম সত্যিকারের বা আপাত-সুখী একটা দাম্পত্যজীবন চালাতে পারে, তাহলে আমি কেন পারবো না ! তওসিফ কি আমার কাছে বারবার ক্ষমা চায়নি ! তওসিফ কি এখনও আমার জন্যই অপেক্ষা করে নেই ! আরো স্পষ্ট করে বললে, একটা ইমেইলের জবাবের অপেক্ষায় ?! ফিরে যাবো নাকি যাবোনা সেই সিদ্ধান্ত নিতে না পেরে যে জবাব আমি এখনো দিতে পারিনি !

জানালার কাচ নামিয়ে রিমঝিম হাত নাড়ে আমার দিকে আর তখুনি বিদ্যুচ্চমকের মতো আমার মনে হয় - এইরকম একটা দেবশেশুর মতো আত্মজা থাকলে বোধহয় সবকিছু তুচ্ছ করা যায়। সবকিছু ভুলে যাওয়া যায়। শায়লাকে কি এজন্যই এক পরিতৃপ্ত, সন্তুষ্ট দেখাচ্ছে ! কিন্তু, একটা ফুটফুটে সন্তান থাকলেই কি খুব প্রিয়জনের বিশ্বাসভঙ্গের সব ঘটনা ভুলে তার সাথে স্বাভাবিক জীবনযাপন করা যায় ! আমি হিসাব মেলাতে পারি না। কিন্তু মেলাতে না পারলেও যে আমার চলবে না ! একটা সিদ্ধান্ত নিতে আর কতো দেরী করবো আমি ! মনের ভেতর হাজার কথা, স্মৃতি, হিসাব-নিকাশ, কষ্ট, বিচিত্র সব আবেগ, অনুভূতি প্রবল স্রোতের মত তোলপাড় করে আমাকে অবশ করে দিয়ে যায়। দাঁড়িয়ে থাকতেও কষ্ট হয় কেন জানি।

শায়লা, সাবের ভাই আর রিমঝিমের চলে যাওয়া দেখতে দেখতে ভাবতে থাকি আমি আর ভাবতে ভাবতেই হঠাৎ বুঝতে পারি এবার আমি তওসিফের মেইলের জবাব দিতে পারবো, আমার সিদ্ধান্ত আমি নিয়ে ফেলেছি।

বহুদিন পর আমার জীবনের সবচেয়ে জরুরী সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলার পর আমার আর একমুহূর্তও দেরী সহ্য হয়না। খুব দ্রুত পায়ে হাঁটতে থাকি, আকাশ মেঘলা ছিলো দুপুর থেকেই, এখন ফোঁটায় ফোঁটায় শুরু হয়েছে বৃষ্টি। গ্রাহ্য করি না, একটা রিক্শা দরকার আমার, তাড়াতাড়ি বাসায় যেতে হবে, বাসায় গিয়েই কম্পিউটারের সামনে বসবো, জবাব দেবো তওসিফের মেইলের, এরপর শান্তি ! বহুদিন ধরে অচেনা এই শান্তির জন্যই আমি তুমুল বৃষ্টির মধ্যে দ্রুতপায়ে বাসার দিকে হাঁটি।


মন্তব্য

শাহেনশাহ সিমন এর ছবি

ট্যাগ বিষয়ে বলতে পারি, কাস্টোমাইজড ট্যাগে 'বড়গল্প' বসিয়ে দিতে পারেন।

লেখা ভালো লেগেছে। তবে একদম শুরুতে 'হয়তো বৃষ্টি হয়েছে কোথাও' পড়ে শেষে যে প্রধান চরিত্র বৃষ্টিতে ভিজবে, সেটা বুঝতে পারছিলাম। ছোটখাট কিছু বিচ্যুতি চোখে পড়েছে, ওগুলো বাদ দিতে পারলে ভালো একটি গল্প দাড়াবে এটা।

_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না

বইখাতা এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ আপনাকে, পড়ার জন্য ও মতামত রাখার জন্য।
ট্যাগের ব্যাপারে আপনি ঠিকই বলেছেন, আমি নিজেও কাস্টোমাইজড ট্যাগে ’বড় দৈর্ঘ্যের গল্প’ লিখবো ঠিক ক’রেও শেষ মুহূর্তে ভুলে গেছি।

অতিথি লেখক এর ছবি

বাহ, বেশ ভাল লাগলো। যদিও অনেক সময় নিয়ে পড়তে হয়েছে, কিন্তু ভাল লেগেছে। একটা গতি আছে আপনার লেখায়।

- অনুপম ত্রিবেদি।

বইখাতা এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ আপনাকে, আমার এই বড় লেখা সময় নিয়ে পড়ার জন্য, মতামত রেখে যাওয়ার জন্য।

স্নিগ্ধা এর ছবি

প্রিয় বইখাতা, আপনাকে আগেও বলেছি, আবারও বলছি - আপনি এক দারুণ গল্পকার! গল্পের ব্যাকরণ আমিও যে কিছুমাত্র জানি তা নয়, শুধু একজন পাঠক হিসেবে এটুকু বলতে পারি আপনার গল্প লেখার সহজাত ক্ষমতাটা খুব সুলভ কিছু নয়! অতি পরিচিত, অসংখ্যবার ঘটে যাওয়া এবং অবিরত ঘটতে থাকা এইসব দৈনন্দিনতা নিয়ে লেখা গল্প পাঠককে শেষ পর্যন্ত পড়তে বাধ্য করা, মুখের কথা নয়!

আরো লিখুন, অনেক ...... হাসি

বইখাতা এর ছবি

খুব কৃতজ্ঞ বোধ করছি এতোটা উৎসাহ দেয়ার জন্য। নিজের লেখার মান নিয়ে এতো সন্দিহান থাকি, আপনার মন্তব্যে স্বস্তি পেলাম। হাসি
অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

স্বপ্নহারা এর ছবি

খুব ভাল লেগেছে!

-------------------------------------------------------------
স্বপ্ন দিয়ে জীবন গড়া, কেড়ে নিলে যাব মারা!

-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...

বইখাতা এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ ।

সাইফ তাহসিন এর ছবি

চলুক খালাম্মা, ভালু লাগসে

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

বইখাতা এর ছবি

সবসময়ের মতোই আমার বড় বড় লেখা পড়ার জন্য, উৎসাহ দেয়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে । হাসি

অতিথি লেখক এর ছবি

ভালো লাগলো পড়তে। আরও লিখুন হাসি
জুয়েইরিযাহ মউ

বইখাতা এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ আপনাকে। হাসি

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

আমি গল্পকার নই, মাঝে মাঝে গল্প লিখি...খুব ভালো গল্প বুঝি -এমন দাবীও করা যায় না।
কিন্তু লেখা পড়ে (আগেরগুলো এবং এটাও) মনে হচ্ছে- আপনার একটা সহজাত 'পরিপূর্ণ গল্প ' লেখার হাত আছে। আপনার বিষয়বস্তু সব গল্পে হয় চেনা/শোনা/ বহুল প্রচলিত একটা কিছু- কিন্তু লেখার গুণে সেটা আকর্ষণীয় হয় অনেক...
দারুণ লেগেছে। নিয়মিত লিখুন না আরো...

---------------------------------------------------------------------------

মধ্যরাতের কী-বোর্ড চালক

বইখাতা এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ আপনাকে সুহান। ভালো লেগেছে জেনে খুশী হলাম। এরপর আবার লিখলে, লেখার ভুল-ত্র“টিগুলোও ধরিয়ে দেবেন কিন্তু।

মাহবুব লীলেন এর ছবি

চমৎকার গল্প
চমৎকার টানটান
উপরের ভূমিকাটার কোনো দরকার ছিল বলে মনে হয় না
বরং গল্পটাকেই খাটো করেছে ওটা

বইখাতা এর ছবি

আমার এই সামান্য লেখা আপনার চমৎকার লেগেছে জেনে খুবই আনন্দিত হয়েছি। আর ভূমিকার ব্যাপারে বলবো, নিজের লেখার মান নিয়ে প্রথম থেকেই আমি যে সংশয়ে থাকি সেটারই প্রতিফলন এই ভূমিকা। তবে এইরকম ভূমিকা এবারই প্রথম, এবারই শেষ।
অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাকে, সময় নিয়ে আমার লেখা পড়ার জন্য ও মন্তব্য করার জন্য।

নাহার মনিকা এর ছবি

আকর্ষনীয় সহজ বলার ভঙ্গী, ভালো লাগলো খুব।
ওপরের ভূমিকাটা আপ নার নিজের লেখার ক্ষেত্রে আসলেই দরকার ছিল না।

বইখাতা এর ছবি

আপনার লেখা যে আমি কী মুগ্ধ হয়ে পড়ি ! আমার লেখা আপনার ভালো লেগেছে জেনে সত্যি খুব খুশী হয়েছি। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।