আবার রোদ্দুরে

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি
লিখেছেন অছ্যুৎ বলাই (তারিখ: সোম, ১২/১১/২০০৭ - ৪:১০অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

আমার ঘরময় জঞ্জালের স্তুপ
বহু বছরের অভ্যস্ত উদাসীনতায়
খেয়ালী শিশুতোষ বেখেয়ালী স্বপ্নের দোষে
দুষিত জঞ্জালে ধুমায়িত সেদিনের সেই বিশুদ্ধ অবকাশ
হাসফাঁসও ছিলো না তেমন
ক্রমাগত অভ্যস্ততার সোমে রোদ্দুর হারানো দিন
নিঃসঙ্গ-একাকী প্রচন্ড সত্ত্বায় এলোমেলো রাফখাতার বিষণ্ণ টুকরো টাকরা
তার মাঝে উঁই ঢোকে, ঢোকে ধেঁড়ে ইঁদুর

রাতে বিরেতে আমি তখনও নাসিকায় সুর তুলি
অধিকার ভুলি
সৌরভ মনে হয় ইঁদুরের লাদিগুলি অবচেতনায়
আমার চারিধারে একে একে জমে টুকরো টাকরা খুচরো ঋণ

একদিন ভোরে
রোদ্দুরে মাতে ফড়িংয়েরা
আমি অন্ধকার ঘরে তখনও স্বপ্নের খাই স্বপ্নের পরি
জঞ্জালগুলো ধাক্কা মারে
উঠি না
আরো জোরে তারপর খোঁচায় জোরে শোরে
আমার ক্রমাগত জঞ্জাল আমাকেই চেপে ধরে
তখনও বাইরে রোদ্দুর
আমি প্রচন্ড অন্ধকারে

সিগারেট ফুঁকে ফুঁকে ধুঁকে ধুঁকে চলা ফুসফুসে
এখন আর বাতাস ধরে না তেমন
বন্ধুর মতো দেশলাইটা তবু খুঁজে পাই তিল তিলে হারানো শক্তির শেষে
কখনো পড়িমরি কখনো হামাগুড়ি
জঞ্জালে ছুঁড়ে দেই বন্ধুর ক্রোধ
পোঁড়ে ঘর জানালার পর্দা ফটফট করে ফুটে পোঁড়ে উঁইয়ের ঝাড়
সেই সাথে পোঁড়ে কুটকুটে জঞ্জাল আর সব ধেঁড়ে ইঁদুরেরা
দমকলে খবর দেই না
স্বাধীনতায় ভস্ম হোক জীবাশ্ম হোক অসুস্থ জঞ্জাল

কালসিটে দাগ এখানে সেখানে
পোঁড়া পোঁড়া জানালা দুয়ার ঘর বারান্দা
কারো কালো রক্ত
ময়লার ঝুড়িতে পাঠিয়ে দেই সব
তারপর দাগ গুলো ঘষে ঘষে আমি তখন রঙতুলি হাতে খেয়ালী নতুন কিশোর
পরের সকালে ভোর হয় আসলেই
আহ! কত চকচকা ঝকঝকা হতে পারে রোদ্দুর!


মন্তব্য

মানুষ এর ছবি

ভালো লাগল।

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

মানুষ, অনেক কৃতজ্ঞতা।

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

শেখ জলিল এর ছবি

এক কিশোরের জঞ্জাল সরানোর অঙ্গীকার..বেশ ভাল্লাগলো।

যতবার তাকে পাই মৃত্যুর শীতল ঢেউ এসে থামে বুকে
আমার জীবন নিয়ে সে থাকে আনন্দ ও স্পর্শের সুখে!

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

কাকু, অনেক ধন্যবাদ। আসলে জঞ্জাল সরিয়ে বৃদ্ধই আবার কিশোর হয়ে গেছে। আমাদের জন্যও এই জঞ্জাল সরানো বড়ই দরকার। অনেক তো হলো। জঞ্জালই এখন ঘরের দখল নিতে চায়!

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

??? এর ছবি

এক ভয়ংকর গল্প মনে পড়ে গেল। কোথায় পড়েছিলাম, সম্ভবত সেবা প্রকাশনীর কোনো অনুবাদ বইয়ে। এক ছাত্র, নিরিবিলি পড়ার জন্য শহরতলীর এক পোড়োবাড়ি ভাড়া নিল। সে বাড়িতে অনেক ইঁদুর। এবং একটা বিশাল ধাড়ি ইঁদুর, সেটা রাত বারটা বাজার পর বাড়ির ড্রয়িংরুমে এসে হাজির হয়। ভুতের গল্প.... আশা করি ভয় পান নি!!
..............................................................
শুশুকের ভয়ে কাঁপতে কাঁপতে সাঁতরে এসেছি কুমীরে-ভরা নদী!

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

দাদা, এইটা তো ভূত না। এইটা সাক্ষাৎ যমদূত।

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

জাঝা

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।