গ্রামের স্কুল। আমি হোস্টেলে থাকতাম। পাশেই ছিলো পুলিশ ক্যাম্প। এই পুলিশদের সাথে আমাদের মোটামুটি ভালো সম্পর্ক ছিলো। তারা মালপানি ভালো পেলে বিশেষ বিশেষ রান্না-বান্না হতো এবং আমরাও দাওয়াত পেতাম। ইদ্রিস নামে একজন ছিলো। কাকু ডাকতাম। আমাদেরকে ফ্যামিলির ছবি দেখাতো। কাকী সুন্দরী মাল। তার একটাই মেয়ে; কিন্তু পড়ে নাকি থ্রিতে। এত পিচ্চি নিয়া আমাদের তেমন আগ্রহ নাই। তবে একবার তার হাতে যে খাসি রান্না খেয়েছিলাম, এখনও সে স্বাদ মুখে লেগে আছে।
পুলিশদের বেতন যা-ই হোক, বেতনের কানাকড়িও যে তাদের নিজেদের দৈনন্দিন কাজে ব্যয় হতো না, তা নিশ্চিত করেই বলা যায়। দৈনন্দিন ইনকামের সোর্স তারা নিজেরাই ক্রিয়েট করে নিতো। কাউকে পিটাতে হবে? ব্যস, পুলিশ ক্যাম্পে এসে কিছু টাকা দিয়ে গেলেই হবে। এক রুমে বন্ধ করে কিছুক্ষণ ধোলাই দিয়ে ধোলাই খাওয়া পক্ষ থেকেও টাকা নিয়ে তারপর ছেড়ে দেয়া হবে। এগুলা মনে করেন বখশিশ। দিন চলার জন্য তাদেরকে বখশিশের টাকায়ও হাত দিতে হতো না। কিছুটা দূরেই নদী। নৌকা চলে, চলে ফেরি পারাপার। ঘাট দিয়ে টোল আদায় করে। জেলেরা ইলিশ মাছ ধরে। সকাল বেলা নিয়মমাফিক একজন চলে যেত। টাটকা ইলিশ নিয়ে ফিরতো। সাথে টোল থেকে চাঁদা। এবং তা দিয়ে বাকি বাজার। তারপর ভ্যানে চেপে সোজা পুলিশফাঁড়িতে।
এবার ৩৭ বছরের আগের কথা বলি। স্কুলটা তখনও ছিলো। তবে পাশে পুলিশ ফাঁড়ি ছিলো না, ছিলো আর্মি ক্যাম্প, পাকি হানাদারদের। এদেশের মানুষকে দিয়ে কবর খুঁড়িয়ে সেই কবরেই তারা যেমন লাইন ধরে গুলি করে মারতো সেই মানুষগুলোকেই, তেমনিভাবে যার বাড়িঘর পুঁড়িয়ে দিয়ে এলো, তার গোয়ালের গরু দিয়েই চলতো এদের রাতের আহার। সে বছর লবণের দাম খুব বেড়ে যায়। পাক কমান্ডারদের কাছ থেকে সার্টিফিকেট ম্যানেজ করে যে লোকগুলা তখনও এলাকায় ছিলো, তারা ভয়ে ভয়ে হলেও অর্থনীতির সূত্র মেনে এটা সেটা নিয়ে ভ্রাম্যমান বাজারে বসে যেত।
একবার এমন এক লোক বোম্বাই মরিচ বিক্রি করতে বসে গেছে। বিরাট সাইজ। পাকি সৈন্যরা এসেচে তাদের রসদ কালেকশনে। বোম্বাই মরিচের কালার দেখে তাদের জিভে জল। ভেবেছে কোনো রসালো ফল হবে। লোকটা ভাঙ্গা ভাঙ্গা উর্দুতে যতোই বুঝায়, এইডা ঝাল জিনিস, তারা ততোই খেপে যায়। তুম বাঙালি ঝুট বোলতা হ্যায়! লোকটা দেখে এই আবালগুলা নিয়া তো মহাবিপদ! যা শালা, তাইলে বোম্বাই মরিচই নিয়া যা।
লোকটা মরিচের ঝুড়ি দিয়েই এদিক-ওদিক তাকিয়ে ছুট লাগায়। তার আর পাত্তা নেই। তবে কিছুক্ষণ পরে ঠোঁট লাল হওয়া কিছু মাথামোটা পাকি সৈন্যকে উৎকট খিস্তি করতে শোনা যায়।
মন্তব্য
বোম্বাইয়ের বোম্বেটে বোম্বাই মরিচ!
_________________________________
ভরসা থাকুক টেলিগ্রাফের তারে বসা ফিঙের ল্যাজে
_________________________________
ভরসা থাকুক টেলিগ্রাফের তারে বসা ফিঙের ল্যাজে
তারেক আপনার লেখাটা ভাল লাগল। চালিয়ে যান...........................
হা হা হা। (বিপ্লব)
কি মাঝি? ডরাইলা?
ওরে! (বিপ্লব)
আমাদের চিন্তাই আমাদের আগামী: গৌতম বুদ্ধ
একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...
জোশ!!
____________________________
লাল গানে নীল সুর হাসি হাসি গন্ধ......
লাল গানে নীল সুর, হাসি হাসি গন্ধ
দারুণ, দারুণ!!
পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।
মজাক লইলাম
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল
এই মরিচরে আমরা সিলেটিরা বালি নাগা মরিচ
যুদ্ধের সময় সিলেটের আম্বরখানায় এরকম একটা ঘটনা ঘটেছে বলে শুনেছিলাম
এক লোক বসেছে নাগা মরিচ নিয়ে। এমন সময় পাকিরা হাজির
জিজ্ঞেস করে এগুলো কী?
লোকটি সোজা বলে এক ধরনের ফল। খুব মিষ্টি
সাথে সাথে পাকিরা নাগামরিচগুলো তুলে খাওয়া শুরু করে আর সেই লোক ঝেড়ে দৌড়....
০২
রাজাকারদের কিন্তু এই নাগামরিচ থেরাপি দেয়া যায়
ধরে এনে দুই পা ফাঁক করে নাগা মরিচ ভেঙে ঢুকিয়ে দিলেই হবে
- কামরাঙা মরিচ বলে আমাদের দিকে।
লীলেন ভাইয়ের বুদ্ধিটা আমার মাথায় খেলছিলো যখন লেখাটি পড়ছিলাম।
গ্রেট (লীলেন) এন্ড স্মল (ধুগো) পিপোল অলসো থিংক এ্যালাইক (সামটাইমস)!
_________________________________
<সযতনে বেখেয়াল>
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
আইস্লা! জটিল।
ওয়েবসাইট | ফেসবুক | ইমেইল
মন্তব্যের জন্য সবাইকে ধন্যবাদ। লীলেন ভাইকে স্পেশাল ধন্যবাদ অনুরূপ আরেকটি কাহিনী বর্ণনার জন্য। তবে ধুগো সেই স্পেশালে ভাগ বসানোর অপচেষ্টা করায় তাকে রাজাকারদের ওপর কামরাঙা/নাগামরিচ থেরাপী প্রয়োগের ভার দেয়া হলো।
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
হি হি হি।
____
নায়েফ
পাকি কুত্তার এ কী হাল,
বোম্বাই মরিচে কেমন ঝাল?
ভাল লাগল, এই সিরিজটা ভাল লাগসে।
মজা পেলাম, তারপর দন্ত বিকশিত হলো লীলেন ভাই এর ২ নাম্বার এ দেয়া প্রসতাবে। যেহেতু সুমহান দায়ীত্ব দেয়া হয়েছে, অপেক্ষায় থাকবো ধুসর গোধুলীর কাছ থেকে উনাদের ‘কামরাঙা মরিচে’র রাজাকার প্রয়োগে।
মনে পরে গেলো এই কিছুদিন আগে পড়া (নজরুল ভাই এর লিঙ্ক ধরে) শূণ্যসথান পূরনের সেই পোষ্টটি, আজকেই মৃদুলের সাথে কথা হলো, আমি “সংসার ত্যাগী সন্ন্যাসী”র খোজ নিলাম, মানুষটার সাথে দেখা করার খুব শখ!
আমাদের জাহাঙ্গীরনগরে জামাত-শিবির-রাজাকারদের নিয়ে নানানরকম শ্লোগানের একটা মরিচ পরিবর্তিত রুপে দিলাম, শূণ্যসথান পূরন করুন
জামাত শিবিরের ---
মরিচ -- একসাথে
নতুন মন্তব্য করুন