ঈশ্বরের খেয়াল খুশীর ফাঁদে পড়িয়া আদম কন্টকাকীর্ণ ধরাধামে পতিত হইলেন। এতদিন স্বর্গে বসিয়া 'কুন' ফর্মূলায় পানাহার ও ঈভ সঙ্গম করিয়া যে সুখভোগ করিতেছিলেন, তাহা সুদে আসলে গায়ের রক্ত মশককূলকে ভেট দিয়া প্রায়শ্চিত্ত করিতে থাকিলেন। কিয়ৎ বৎসর নির্জন বসবাসকাল অতিক্রান্ত করিয়া আবার যখন ঈভের সান্নিধ্য প্রাপ্ত হইলেন, তখন প্রাথমিক ধাক্কা অনেকটাই কাটাইয়া উঠিয়াছেন। ধরাধামের আলোবাতাস আর মশককূলকেই আপন করিয়া লইয়াছেন। দুষ্টু জন্তজানোয়ারদিগ হইতে রক্ষা পাইবার কলাকৌশলও আয়ত্ব করিয়া ফেলিয়াছেন।
সবই ঈশ্বরের অভিপ্রায়। আদম-ঈভ অতিশয় রতিক্ষম ছিলেন। তৎকালে গিনেস বুক নাম্নী আজব জিনিসের কালেকশন রাখিবার দুরভিসন্ধিমূলক ব্যবস্থা না থাকায় সঠিক পরিসংখ্যান আজ আর উদ্ধার করা সম্ভব নহে। তদাপিও ইহা নিশ্চিত করিয়া বলা যায়, উহারা চরম ফলনশীল ছিলেন। বৎসর ঘুরিতে না ঘুরিতেই জোড়ায় জোড়ায় মানব সন্তানের সৃষ্টি হইতে থাকিলো। দুর্ভাগ্যক্রমে উহারা সবাই ঠিক আদমের মত গুণাবলী অর্জন করিতে সমর্থ হইলো না। ইহার দায়িত্ব কিছুটা আদমের ওপরেও বর্তায় বটে। পোলাপাইন মানুষ করিবার নিমিত্তে পর্যাপ্ত সময় ব্যাঙ্কে না থাকিলে উহাদিগের জন্মদান হইতে বিরত থাকাই সর্বোত্তম। অবশ্য আদমকে দোষারোপ করিলে তাহাকেও ন্যায়বিচার বলা যাইবে কিনা, সে ব্যাপারে ঘোরতর সন্দেহ বিদ্যমান। সেই কালে পরিবার পরিকল্পনার কোনো এনজিও ছিলো না এবং ঈশ্বরের কৃপায় আদম ভীম অপেক্ষাও শক্তিমান সুপুরুষ ছিলেন।
যাহা হউক, আদম সন্তানগণ দুষ্টু জন্তুজানোয়ারদিগ হইতে রক্ষা পাইবার কলাকৌশল আয়ত্ব করিলেও নিজেরা একে অন্যের পশ্চাৎদেশে হুল ফুটাইতে লাগিলো। দিনমান ক্যাচাল লাগিয়াই থাকিলো। আদম অতিশয় বিরক্ত হইলেন; কিন্তু ইহার সমাধা কিরূপে করিবেন, তাহা তাহার মস্তিষ্কে খেলিলো না। নিতান্তই নিরূপায় হইয়া তিনি ঈশ্বরের কৃপা প্রার্থনা করিলেন। ঈশ্বর এতক্ষণ বসিয়া বসিয়া মজা দেখিতেছিলেন। কিন্তু আদমের প্রার্থনায় তাহার মন গলিলো; তিনি পাশের ফেরেশতাটিকে ডাকিয়া একখানা পুস্তক ধরাইয়া দিয়া কহিলেন, "ইহা আদমকে দিয়া আইসো। তাহাকে বলিবা, ইহাকে ধর্ম বলে। কি ক্যাচাল হইলে কিরূপে সমাধা করিতে হইবে, এই পুস্তক তাহার মেডইজি।"
মেডইজি হাতে পাইয়া আদমের জানে পানি ফিরিয়া আসিলো। কিন্তু এইভাবে আর কতদিন চলে। কালের পাকচক্রে পড়িয়া আদম বুড়া হইলেন। তাহার বেয়াড়া সন্তানগণ আর বৃদ্ধ পিতার কথায় কর্ণপাতকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করিলো না। আদম একবুক কষ্ট ধারণ করিয়া ধরাধাম ত্যাগ করিলেন।
আদম মরিয়া পঞ্চভূতে লীন হইলেও উপরিউক্ত ক্যাচালের লুপ বিরাজমান থাকিলো। ঈশ্বর মাঝে মাঝে মেডইজি পাঠান; কিন্তু সবকিছু শেষ পর্যন্ত যেই লাউ, সেই কদুতে পর্যবসিত হইলো। ঈশ্বর গবেষণা করিয়া দেখিলেন, সবচাইতে ক্যাচালমান আদম সন্তানগণ তাহাদের দুর্বুদ্ধির সদ্ব্যবহার করিয়া ঈশ্বরের মেডইজিকেই ক্যাচাল কর্মে ব্যবহার করিতে থাকিলেন। ঈশ্বর কাউকে ডাকিয়া আনিতে বলিলে উহারা তাহাকে ঠিকমত পেঁদাইয়া দাঁতদুত ভাঙ্গিয়া কায়দামত কাবু করিয়া পিছমোড়া দিয়া বান্ধিয়া আনিতে লাগিলো। মেডইজির কথাকে বিকৃত করিয়া ধর্মের নামে মনুষ্য বলি চলিতেই থাকিলো।
ঈশ্বর পরবর্তী মেডইজিতে উহাদিগকে সাবধান করিয়া দিলেন, "ধর্ম লইয়া বাড়াবাড়ি করিস না ছাগোলেরা। মেডইজি দিয়া সীমালঙ্ঘন করিস না বাপ। ইহা তোদের লাইগা বিধান। এই বিধান দিয়া তোরা নিজেগো ধবংস করিস না। ইহা ফ্যাসাদ কমাইবার যন্ত্র। ইহা ব্যবহার করিয়া নোতুন করিয়া ফ্যাসাদের উদ্ভব ঘটাইলে তোদের খবর করিয়া দিবো।"
ঈশ্বরের সাবধানবাণীকে উহারা থোড়াই কেয়ার করিলো। রাগে ফুসিতে ফুসিতে ঈশ্বর মেডইজি পাঠানো বন্ধ করিয়া দিলেন। এখন তিনি শুধু কিয়ামতের অপেক্ষায় আছেন। যেদিন ক্যাচাইল্যা সবগুলারে কপ করিয়া গলা টিপিয়া ধরিয়া রোষকষায়িত লোচনের অগ্নিতে ভস্ম করিয়া দিবেন।
মন্তব্য
আমি শেষ আলামত নিয়া ভাবতেছি। স্ত্রীলোকের ভয়ে চড়ার মতো গাছ ততদিনে অবশিষ্ট থাকবে তো?
.......................................
ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ
অজ্ঞাতবাস
আল্লাহ তুমি ইহাদিগকে হেদায়েত কর। ইহারা তোমারে লইয়া কিসব বিতঙ করে। এদের জাঝা দান করো আল্লাহ।
------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
পড়িয়া মজা পাইলাম।
_________________________________
ভরসা থাকুক টেলিগ্রাফের তারে বসা ফিঙের ল্যাজে
_________________________________
ভরসা থাকুক টেলিগ্রাফের তারে বসা ফিঙের ল্যাজে
রেটিং কমাইয়া দিছি। কিন্তু এখনও দেখায় না।
-----------------------------------------------
সচল থাকুন ---- সচল রাখুন
-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না
সবাইকে ধন্যবাদ।
ব্যান সিস্টেম আসুক। তখন রেটিং কমানোর মজা দেখাবো।
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
জাঝা। বিপ্লব।
হাঁটুপানির জলদস্যু
মারহাবা
জটিল হইছে।
অনেকক্ষণ হাসছি বাকি দিনটাও হাসুম।
____________________________
লাল গানে নীল সুর হাসি হাসি গন্ধ......
লাল গানে নীল সুর, হাসি হাসি গন্ধ
আমার আপত্তি শুধু শিরোনামে।
লেখা জব্বর। কিন্তু শিরোনামটা সেই তুলনায় একটু ওল্ড ফ্যাশনড হয়া গেছে। মানে এই শিরোনাম আগে আরো অনেক গেছে তো। দেখলে মনে হয় আগের লেখা।
-----------------------------------------------
সচল থাকুন ---- সচল রাখুন
-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না
চরম হৈছে ... ...
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
হ । শিরোনাম দেখে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বিতর্ক অনুষ্ঠানের কথা মনে পড়ে গেলো- 'গ্রাম ভালো না শহর ভালো, বিজ্ঞান আশীর্বাদ না অভিশাপ?'
লেখা ভালো লাগলো যথারীতি
-----------------------------------
'পড়ে রইলাম বিধির বামে,ভুল হলো মোর মুল সাধনে'
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
সহজ ভাষায় জটিল কথা ... এই না হলে চোর্দা!! ... থুক্কু
একমত ... ভাল লাগল
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
জাঝা দানকারী সবাইকে আল্লাহ উত্তম প্রতিদান দিন। আমীন।
শিরোনাম গতানুগতিক করার আইডিয়াটা পেপসি থেকে কাট করা। বোতল রিসাইক্লিং আর কি!
মুকিত ভাই, স্পেশ্যল কৃতজ্ঞতা।
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
দারুন!!!
পড়লাম। ভাল লাগলো।
নতুন মন্তব্য করুন