সোয়া যুগ আগের সিনারিও:
ক্লাস সিক্সের ফাইনাল পরীক্ষায় প্রথম হওয়ার পরে আমাদের স্কুলের দপ্তরী আলী মামা কাছে ডেকে নিয়ে খুব আনন্দভরা চোখে বললেন, "এভাবে পড়াশুনা চালিয়ে যাও, ভাগ্না। এসএসসিতে ইনশা-আল্লাহ ফার্স্ট ডিভিশন পাবা।" আমি এসএসসি পর্যন্ত যেতে যেতে এমসিকিউর যুগ চলে আসে, ফার্স্ট ডিভিশন তো দূরের কথা, স্টার মার্ক্সও মুড়ি-মুড়কির দরে পাওয়া যায়। ৩৭০ এর এমসিকিউতে ৩৬৭ পেয়ে মার্ক্সের বন্যা বইয়ে দেই। রেজাল্টে আমি খুশি, মা-বাপে খুশি, স্কুলের টীচাররা খুশি - এত মার্ক্স এ অঞ্চলে এর আগে কেউ স্বপ্নেও কল্পনা করে নাই!
তবে শুভঙ্করের ফাঁকিটা অন্য যায়গায়। প্রাকটিক্যাল ক্লাসে দুয়েকবার ব্যাঙ বা জবাফুলের বংশ ধংস করেছি যতোটা না শেখার জন্য, তারচেয়ে বেশি মজার জন্য। কারণ, শেখা নিয়ে টেনশন নাই, মার্ক্স ২৫শে ২৫ তো এমনিতেই পাই। রচনামূলক অংশের জন্য বই না পড়লেও চলে; কিছু নোটপত্র ঠোঁটস্থ করে দিব্যি কমন ফেলে মার্ক্সের বন্যা বইয়ে দেয়া যায়। বাঙালি লটারীবিশ্বাসী হলেও লটারী ভাগ্য আমাদের তেমন শুভ না। সুতরাং এমসিকিউ একটু কঠিন হতে পারতো; কিন্তু ত্রাতা হিসেবে আসেন বোর্ডের কর্তাব্যক্তিরা। তারা আমাদের কষ্ট বুঝেন। প্রতি বিষয়ে ৫০০ প্রশ্নের স্যাম্পল ধরিয়ে দেন এবং ফাইনালি সকল প্রশ্ন করা হয় এই স্যাম্পল থেকেই। পাঠ্য বই কেনার জন্য অনুতাপ বোধ করি। পুরা টাকাটাই জলে গেছে। নোটপত্র আর একখানা গাইড বই হলেই তো ফাটিয়ে দেয়া যায়।
এইচএসসিতে এমসিকিউ সুযোগ থেকে বঞ্চিত হই। পরিশ্রম বাড়ে। বই কিছুটা পড়তেই হয়। তবে বইয়ের বিকল্প থাকলেও নোটের বিকল্প নেই। এবারেও নোট মুখস্ত করে, বইয়ের ৫০% সম্পর্কেও ভালো আইডিয়া না রেখেও ফুল মার্ক্সের উত্তর করে আসি।
সিনারিও ২০০৮:
এখন গ্রেড সিস্টেম। মার্ক্স সিস্টেম খারাপ, স্ট্যান্ড করা নিয়া অহেতুক 'অসুস্থ' প্রতিযোগিতা হয়, টিউশনি করে টীচারেরা লালে লাল হয়ে যায়, কোচিং সেন্টার দিয়ে অগামগাবগারা ব্যবসা করে খায়। শিক্ষাকে এভাবে ব্যবসায়ের সাথে জড়ানো কিছুতেই উচিত নয়। তার ওপরে আছে উন্নত দেশে যা হচ্ছে, আমরাও তা-ই হওয়ার আলট্রামডার্ন প্রেরণার প্রেসার। আমাদের দেশদরদী শিক্ষাবোর্ড গ্রেডিং সিস্টেম আনেন। ভালো উদ্যোগ।
সমস্যাটা অন্যত্র। এই গ্রেডিং সিস্টেম দিয়েই কিছু সমালোচনা (যেমন, ফেল করা পরীক্ষা রিপিট করলে ম্যাক্সম গ্রেডের সীমাবদ্ধতা) থাকলেও বুয়েট এক যুগেরও বেশি সময় গ্রহণযোগ্যভাবেই ছাত্রদের মূল্যায়ন করে যাচ্ছে। আমাদের শিক্ষাবোর্ড বুয়েটের সিস্টেমে যান না, তারা ৮০ পাইলে ৫, ৭৯ পাইলে একলাফে ৪এ নামাইয়া দেন।
পোলাপাইন বিপাকে পড়লো। প্রথম দুয়েক বছর A+ পেতে খবর হয়ে গেল। দেশের শিক্ষার মান কমছে না বাড়ছে, সুশীল সমাজের কাছে তার মাপকাঠি রেজাল্ট: পাশের হার এবং A+ এর সংখ্যা। সরকারেরও দুর্ণাম। দেশ ও জনদরদী বোর্ড কর্তারা আবার এগিয়ে আসলেন। সংস্কার চললো প্রশ্নপত্রের ধারায়, মার্কিং সিস্টেমে, ৮ সাবজেক্টের সাথে নবম সাবজেক্ট (যা এখনও ঐতিহ্যবাহী ফোর্থ সাবজেক্ট নামে পরিচিত) যোগ হলো। A+ পাওয়ার হিসেবটা সহজ করা হলো।
এখন ৮ বিষয়ের ৫ টায় A+ পেলেই চলে। বাকি ৩ টায় A। তাইলে গ্রেডের যোগফল দাঁড়ায়: ৫x৫+৩x৪= ৩৭। নবম বিষয়ের ৫ থেকে ২ বাদ দিয়ে বাকি ৩ এখহানে যোগ করলে যোগফল হয় ৪০, যাকে ৮ দিয়ে ভাগ করে GPA আসে ৫।
এইবার সবার অসন্তুষ্টি সন্তুষ্টিতে পরিবর্তিত হয়। তবে কিছু সংখ্যক বোকা পোলাপাইন যারা কষ্ট করে সারাবছর বইপত্র পড়ে পরীক্ষা দিতে যায়, তাদের কেমন ফাঁকা ফাঁকা লাগে। নিজেদেরকে প্রতারিত মনে হয়। কেউ কেউ গোল্ডেন A+ এর সান্ত্বনা খোঁজে, যা অফিশিয়ালি কোনো কামে আসে না। কেউ কেউ শুধু দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে, পরবর্তীতে ভালো করার মোটিভেশনটা ধরে রাখতে না পারলে তাদেরকে অন্য কেউ দোষ দিক, আমি দেই না।
কলেজ ও ভর্তি:
কোচিং সেন্টারওয়ালারা শিক্ষা নিয়ে ব্যবসায়ে লিপ্ত। তাদের কালো হাত ভেঙ্গে দিতে কলেজে ভর্তি পরীক্ষা উঠিয়ে দেয়া হয়। খুবই ভালো কথা। কিন্তু ভর্তির ক্রাইটেরিয়া তাহলে কি হবে? কেন? এসএসসির গ্রেড। তাতে সমাধান পাওয়া যায় না। দেখা যায় সিট ১০০ থাকলে ৫ গ্রেড পাওয়া ২০০০ ভর্তি হতে চায়। সমাধান? বয়স। যাদের বয়স বেশি, তাদেরকে নাও, যাদের কম, তারা বাদ। এই জিনিসটা মাথায় ঢোকে না। অপেক্ষাকৃত কম বয়সে সমান যোগ্যতার একটা ছেলে বেশি বয়সের ছেলেটির চেয়ে তো মানসিকভাবে বুদ্ধিবৃত্তিক দিক দিয়ে অপেক্ষাকৃত ভালো হওয়ার কথা। তাহলে ভালোকে বাদ দিয়ে অপেক্ষাকৃত দুবর্লকে আগে সুযোগ কেন?
আর বয়সের ভিত্তিটাকে হাস্যকর মনে হয়। দুই যুগ আগে আমার ক্লাসের ৯০% ছেলের চেয়ে আমি বয়সে অন্তত বছর তিনেকের ছোট ছিলাম। সেই আমিও দেড় বছর বয়স চুরি করেছি। এখন অফিস থেক এক ডেটে জন্মদিনের কার্ড পাই, আর আরেক ডেটে বন্ধুদের নিয়ে পার্টি করি। এই দুই যুগ সময়ে পরিস্থিতি খুব একটা পালটেছে বলে তো মনে হয় না। আর শিক্ষাগত যোগ্যতার ক্ষেত্রে বয়সের ভূমিকাটা কি, অনেক চেষ্টা করেও কিছুতেই বুঝতে পারি না। আমারও নিশ্চিত বয়স কম!
ইদানিং সরকারের মাথায় এসেছে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ক্ষেত্রেও একই ফতোয়া প্রয়োগ করতে হবে। অনেক পিএইচডি গবেষকও সরকারের এই মহতী উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসায় মুখ-বুক-পেট-*** একাকার করে দিচ্ছেন। উন্নত বিশ্বেও নাকি এমনটা আছে। দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। ভাবতে ভালো লাগার কথা। ভালোটা লাগে না, শঙ্কিত হই। হতে পারে, দেশকে ভালোই হয়তো বাসি না!
আপডেট: রেসিডেন্সিয়ালে এবার লটারীর মাধ্যমে ভর্তি হয়েছে।
ভর্তিপরীক্ষা এবং 'গ্যাপ'পূরণ:
আমাদের সাজেশনভিত্তিক পরীক্ষায় কমন ফেলা পরীক্ষা সিস্টেমের জন্য 'বইয়ে আছে, পড়ায় নাই' বিষয়ের সংখ্যা অনেক। এছাড়া স্কুল বা কলেজের শিক্ষকদের মান ও অন্যান্য ফ্যাসিলিটি, মোটকথা শিক্ষার মান সমান নয়। এক্ষেত্রে পাবলিক পরীক্ষায় রেজাল্ট ভালো করলেও স্কুল থেকে কলেজ বা কলেজ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ট্রান্সফারের সময় প্রয়োজনীয় ব্যাকগ্রাউন্ডের একটা ঘাটতি সবসময়ই লক্ষ্য করা যায়। এই ঘাটতি পূরণ করতে ভর্তি পরীক্ষার মত একটা ইন্টেন্সিভলি কম্পিটিটিভ যাচাই প্রক্রিয়ার বিকল্প নেই। কোচিং সেন্টার থেকে হোক আর নিজে নিজে পড়ে হোক, ওভারঅল শিক্ষার মান এতে অনেকটাই বাড়ে।
পাবলিক পরীক্ষাগুলো যেখানে ভালো রেজালটের জন্য পুরো বই পড়াতে পারে না, সেখানে তার ওপর ভিত্তি করে প্রয়োজনীয় ব্যাকগ্রাউন্ডের ঘাটতি নিয়ে সামনের দিকে একটা ছাত্রকে ঠেলে দিলে ঘাটতিটা পূরণ করা অত সহজ নয়।
স্পেশ্যলিস্ট বনাম হাঁতুড়ে:
এর আগে বেশ তোড়জোড় উঠেছিলো একমুখী শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে। ডেভ হোয়াটমোরের মালটিস্কিল তত্ত্বটা তখন নিশ্চয়ই বোর্ড কর্তাদের খুব মনে ধরেছিলো। সবাইকেই সবকিছু শিখতে হবে, স্পেশালিস্ট দরকার নেই - মনোভাবটা এমন। অথচ প্রত্যেকটা মানুষেরই জ্ঞান আহরণ এবং তা প্রয়োগের সীমাবদ্ধতা আছে। শার্লক হোমসের নীতিটা কাজের। মানুষের মস্তিষ্ক একটা কুঠুরী, যার ধারণক্ষমতা অসীম নয়। সুতরাং একজন এক্সপার্ট অবশ্যই তার দরকারী জিনিসগুলোকেই সুশৃঙ্খলভাবে ওই কুঠুরীতে জমা রাখবে। অদরকারী জিনিসের মিশ্রণে কাজের সময় দরকারী জিনিসই খুঁজে পাওয়া যাবে না।
কথাটা এক্ষেত্রেও খাটে। প্রধানত অর্থনৈতিক সীমাবদ্ধতা ও দুর্ণীতির কারণে আমাদের দেশে সঠিক যায়গায় সঠিক লোক বসে না। কথাটা মিডিওকারদের জন্য যতোটা সত্য, মেধার শ্রেণীতে টপ লেভেল বা বটম লেভেলের জন্য ততোটা সত্য নয়। মিডিওকার দিয়ে বড়জোর দিন আনি দিন খাই সিস্টেমে চলা যেতে পারে: কিন্তু ইনোভেটিভ কিছু করে দেশকে এগিয়ে নেয়া সম্ভব নয়। সুতরাং একমুখী শিক্ষাব্যবস্থার মত মুড়িমুড়কি একদরী সিদ্ধান্ত দেশের উন্নয়নের আশার গুঁড়ে একেবারেই বালি ঢেলে দিত। রক্ষা যে শেষ পর্যন্ত সেটা আর হয় নি।
বর্তমান ৫২ হাজার ৫ পাওয়ায় অবশ্য সেই সমস্যা নতুন করে ফিরে এসেছে। সবাই এখন ৫ পাওয়াদেরকে নিয়েই ব্যস্ত। কিন্তু যারা ৫ পেতে ব্যর্থ হয়, তারা চলে যাচ্ছে একেবারে আউট অফ ফোকাসে। যে ছেলেটার যুক্তি ও অঙ্কের মেধা টপ লেভেলের, তাকে সমাজবিজ্ঞান, বাংলা-ইংরেজি সাহিত্যে A+ পাওয়ার রেসে শামিল করা অন্যায়। সামাজিক জীব হিসেবে তাকে এসব বিষয়ে কিছুটা জেনে বড়জোর পাস করতে বলা যেতে পারে; কিন্তু A+ না পেলে সে ভালো কলেজে ভর্তির জন্য আবেদনই করতে পারবে না, তার জীবনটা সেখানেই শেষ হয়ে যায়, যে সার্ভিস সে দেশকে দিটে পারতো, তার সম্ভাবনা অঙ্কুরেই বিনষ্ট হয়।
কেন উন্নত বিশ্বকে কপিপেস্ট কোনো সমাধান নয়:
উন্নত বিশ্বকে চোখ বন্ধ করে কপিপেস্ট করা কোনো সমাধান নয়। কারণ, শিক্ষাক্ষেত্রটা অন্যান্য ক্ষেত্র থেকে সম্পর্কহীন নয়। অর্থনৈতিক দৃঢ়তা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সহজলভ্যতা এবং অর্জিত শিক্ষার ভবিষ্যত প্রয়োগ ক্ষেত্র সবকিছু বিবেচনা করে শিক্ষার প্লান করতে হয়। উন্নত বিশ্ব থেকে ধারণা নেয়া যেতে পারে, ধারণাকে আমাদের সিস্টেমের সাথে অভিযোজিত করা যেতে পারে; কিন্তু উন্নত বিশ্বের সিস্টেমকে চোখ বন্ধ করে কপিপেস্ট করা কখনোই কোনো যুক্তিতে আসতে পারে না।
সমাধান কি?:
এই প্রশ্নটা এই পোস্টের আলোচনার বিষয় হিসেবে থাক। আলোচনায় আমিও অংশ নিবো।
মন্তব্য
এধরনের একটা লেখার খূব তাগিদ অনুভব করছিলাম দীর্ঘদিন। আপনি সেই অভাবটা পূরণ করলেন।
---------------------------
স্বপ্নকে ছুঁতে চাই সৃষ্টির উল্লাসে
-------------------------------
স্বপ্নকে ছুঁতে চাই সৃষ্টির উল্লাসে
থার্ড আই ভাই, সমাধানের উপায় নিয়ে কিছু বলেন।
আমাদের আলোচনায় শিক্ষাবোর্ডের কিছু যাক বা না আসুক, অন্তত কিছু ধারণা পাওয়া যাবে।
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
জরুরি একটা বিষয়ে আলো ফেলেছেন বলাই। সহজ ভাষায় সমস্যাটার শেকড়-বাকড় উঠে এসেছে। ধন্যবাদ।
আলোচনা শুরু হোক।...
-----------------------------------------------
সচল থাকুন... ...সচল রাখুন
-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না
শোহেইল ভাই, থ্যাংক্স।
একটা বিদঘুটে সমাধান প্রস্তাব করে একটা পোস্ট দিবো চিন্তা করছি। তখন আলোচনা জমবে।
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
খুবই জরুরী পোস্ট।
কিন্তু, আমরা আলোচনা করলাম, সমাধান ও উঠে এল বেশ ভালো ভালো...কিন্তু আমাদের কন্ঠ কোথাও পৌছালো না... লাভ কি?
-----------------------------------------------------
We cannot change the cards we are dealt, just how we play the hand.
---------------------------------------------------------------------------
একা একা লাগে
এটা বলা যায় চিন্তার চর্চা। আজ আমি হয়তো একভাবে সমস্যাটাকে দেখছি, তার সমাধান চিন্তা করছি, আপনি হয়তো অন্যভাবে দেখছেন বা এমন সব বিষয়ের ওপর আলো ফেলছেন, যা আমার চোখ এড়িয়ে গেছে। আমাদের আলোচনা থেকে যদি একজন মানুষও ধারণা পায় কি হওয়া উচিত, তাহলে কি হলো বা না হলো তার বাইরেও বিষয়টার গুরুত্ব থাকে।
কন্ঠ আজ না পৌঁছায়, আগামি দিনে যখন একজন রেনেট শিক্ষাবোর্ডের প্রধান হবে, তখন আজকের আলোচনাটা তার কাজে লাগবেই। আর আমাদের কন্ঠ যে পৌঁছায়, সচলায়তনের সাম্প্রতিক ঘটনা তো তা-ই প্রমাণ করে।
যাহোক, সমাধান বিষয়ে আপনার মতামত আশা করছি। আর মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ।
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
চমৎকার আলোচনা বলাইদা। মজার ব্যাপার হল গত ১৫ দিন ধরেই একই বিষয়ের উপর লেখবো লেখবো ভেবেও সময় করে লেখতে পারছিলাম না। এখন মনে হচ্ছে ভাগ্যিস লিখি নি !!
বিজ্ঞান শিক্ষা নিয়ে আমার একটা সিরিজের ডিউ পোস্ট আছে, আপনার লেখাটা দেখে মনে পড়লো
অলমিতি বিস্তারেণ
অলমিতি বিস্তারেণ
পোস্টান। আলোচনায় অংশ নেয়া যাবে।
এ পোস্টে আমি ত শুধু সমস্যার কিছুটা তুলে ধরলাম। সমাধান নিয়ে সময় করে মন্তব্য দিয়েন, বা আলাদা পোস্ট ও দিতে পারেন।
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
সমাধান 'ব্যাক টু দ্য প্যাভিলিয়ন', মানে আগের সিস্টেমে ফেরত যাওয়া। আগের মানে ফার্স্ট ডিভিশনের আমল আরকি।
মার্কিং সিস্টেমেরও কিছু সমস্যা আছে। যেমন, মার্কিং বা রচনামূলক প্রশ্নের উত্তরে পরীক্ষক টু পরীক্ষক মার্ক্সের ভিন্নতা খুব বেশি হতে পারে। আবার নিজের অভিজ্ঞতা থেকে বলি, বোর্ডে প্লেস করা নিয়ে দৌড়াদৌড়ি জিনিসটারও কিছু খারাপ দিক আছে। হাই স্ট্যান্ডার্ড নোট তৈরি করতে যে সময় ব্যয় করা হয়, বই পড়তে সে সময় দেয়া হয় না।
আমার কাছে শিক্ষার উদ্দেশ্য হলো 'শিক্ষা'। নোটভিত্তিক পড়াশুনাটা সেই শিক্ষা দিবে না। আর আগে যে 'কমন' প্রশ্নের চল ছিলো, সেটা 'শিক্ষা'র জন্য খুব বাজে ব্যাপার ছিলো।
আচ্ছা, এমনটা হলে কেমন হয়? প্রশ্নপত্র এভাবে করতে হবে, যাতে মোটামুটি পড়াশুনা করে পাস মার্ক্স পাওয়া যায়; কিন্তু খুব ভালো করতে হলে বই খুব ভালোভাবে পড়তে বাধ্য হতে হয়। 'কমন' প্রশ্ন সিস্টেমটা রোধ করা কিন্তু সহজেই সম্ভব।
রচনামূলকজাতীয় প্রশ্ন, ফর্মূলার প্রমাণ, উপপাদ্যের প্রমাণ এইগুলা যত কম থাকে ততোই মঙ্গল। ছাত্ররা বিষয়টা বুঝে তা 'প্রয়োগ' করতে পারছে কিনা, সেটা যাচাই করাই হোক পরীক্ষার উদ্দেশ্য। এতে মুখস্তবিদ্যার চর্চাও কমবে।
পাশাপাশি মিডিওকারদের পাস মার্ক্স যাতে পড়াশুনা করার পরেও আটকে না যায়, সেজন্য কিছু 'কমন' প্রশ্ন অবশ্য থাকা উচিত।
এই মুহূর্তে আমারও খুব গোছানো চিন্তাভাবনা নেই। তবে 'শিক্ষা'র প্রকৃত মূল্যায়ন হয়, ছাত্রদের মধ্যে শেখার আগ্রহ সৃষ্টি হয়- এরকম একটা সিস্টেম অবশ্যই তৈরি করা সম্ভব।
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
বলাইদা, আপনার এই মন্তব্যে আলোচনার ভালো খোড়াক আছে। কিন্তু এই মূহুর্তে প্রচন্ড মাথা ব্যথায় স্ক্রিনে আর তাকাতে পারছি না।
আশা করছি আগামীকাল সুস্থ শরীরে এনিয়ে আমরা আলোচনা করতে পারবো।
আবারো ধন্যবাদ। এ বিষয়টা নিয়ে আলোচনার অভাব অনেকদিন ধরেই অনুভব করছিলাম। আপনি একটা দারুন উদ্যোগ নিয়েছেন
অলমিতি বিস্তারেণ
অলমিতি বিস্তারেণ
গুটে বেসারুং!
আগে রেস্ট নিন। তারপর ঠান্ডা মাথায় দেশের আলোচনা ...
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
আমাদের শিক্ষাব্যবস্থাকে বিভিন্ন রন্ধ্রে ডান্ডা ঢুকিয়ে তার সংবেদনশীলতা পরীক্ষা করা হচ্ছে, এ-ই আমার মত।
আমি নিজে মাঝারি মাপের ছাত্র ছিলাম সারাজীবন, কিন্তু আমি দীর্ঘ সময় টিউশনি করেছি। বেশ যত্ন নিয়ে করেছি, আমার ছাত্রছাত্রীরা বোধহয় সবাই জীবিত, দুয়েকজন হয়তো সচলায়তন পড়েনও, তাঁরা সাক্ষী দিতে পারবেন। লেখাপড়া নিয়ে আমি আমার অনুজদের অভিজ্ঞতাটাও তাই জানি। অন্তত তিনটা ভিন্ন পদ্ধতির ভেতর দিয়ে গেছে আমাদের সময়টা। আমি নিজে পরীক্ষা দিয়েছি সেই ৫০০ প্রশ্নব্যাঙ্কের আমলে। এরপর প্রশ্নব্যাঙ্ক উধাও হলো, এমসিকিউ রয়ে গেলো। তারপর ইন্টারমিডিয়েট স্তরের বেশ কিছু জিনিসপত্র এক ধাক্কায় সেকেন্ডারিতে নামিয়ে আনা হলো, ইন্টারমিডিয়েটে যোগ করা হলো অনার্স লেভেলের শুরুর দিকের কিছু ব্যাপারস্যাপার।
আমি নিজে ছাত্র হিসেবে যে সময়টা পার করে এসেছি, সেটি বোধহয় শেষ সুস্থ শিক্ষাক্রমের যুগ। এরপরে আমি আমার ছাত্রছাত্রীদের ভুগতে দেখেছি। তাদের নির্মমভাবে মুখস্থ করতে হয়েছে বহুকিছু, অনেক জিনিস তারা ঠিকমতো বুঝতে পারেনি, এবং রীতিমতো একটা বিতৃষ্ণা নিয়ে জিনিসগুলি পরীক্ষার পর ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছে।
আমার উপলব্ধি হচ্ছে, যাঁরা শিক্ষাব্যবস্থায় পরিবর্তনগুলি উপস্থাপন করতে চান, তাঁদের কোন দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা নেই। সম্ভবত কোন একটি প্রকল্পের অধীনে তাঁরা এই কাজ শুরু করেন, এবং যে কোনভাবে নতুন কিছু চালু করে কাজ দেখানোর বা কাঁধ থেকে কাজ নামানোর চেষ্টা করেন। তাঁরা নিরীক্ষা করেন ক্লাস নাইন থেকে ক্লাস টুয়েলভের ছেলেমেয়েদের ওপর, যারা এই চার বছরের আগের আট বছর অন্য লয়ে পড়াশোনা করে অভ্যস্ত ছিলো।
আমার মতে কোন পরিবর্তন শুরু করা উচিত একদম শুরু থেকেই। সম্ভব হলে ক্লাস থ্রি থেকে। পরীক্ষার পদ্ধতি যদি পরিবর্তিত হয়, তাহলে সে সময় থেকেই হওয়া উচিত।
কিছুদিন আগে পত্রিকায় পড়লাম, প্রশ্নের মানে স্তরীভবনের প্রস্তাব করা হয়েছে। ব্যাপারটা অনেকটা এমন, সহজ প্রশ্ন, যার উত্তর বই পড়লেই জানা যায়, তার নম্বর ১। আরেকটু কঠিন প্রশ্ন, যার জন্যে কোন সূত্র বা নিয়ম জানতে হবে, তার নম্বর ২। আরেকটু কঠিন প্রশ্ন, যার জন্যে বিষয়টি সম্পর্কে ভালো জ্ঞানের পাশাপাশি নিজের বিচারবুদ্ধি খাটাতে হবে, তার নম্বর ৩। আর সবচেয়ে কঠিন প্রশ্ন, যা ছাত্রের বিশ্লেষণ ক্ষমতা যাচাই করবে, তার নম্বর ৪। মোট দশ নম্বরের এক সেট প্রশ্ন একটি টপিকের ওপর। এমন দশ সেট প্রশ্নের ওপর মোট একশো নম্বরের পরীক্ষা। এই পদ্ধতি নিয়ে অনেক আলোচনাও হয়েছিলো, আমার কাছে পদ্ধতিটি খারাপ লাগেনি।
ষান্মাসিক পরীক্ষাগুলিতে যদি কোনভাবে উপস্থাপনকে অন্তর্ভুক্ত করা যেতো, ভালো হতো। এই ব্যাপারটা জার্মানিতে পড়তে এসে হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছি, এটা খুব জরুরি।
কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার বিকল্প আমি দেখি না। আমি সেই স্কুল থেকেই ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে ভর্তি হয়ে আসছি সব জায়গায়। এই ব্যবস্থার কারণে কর্তৃপক্ষের কেন জ্বলে, আমি জানি না। কোচিং সেন্টারগুলির ব্যাপারে তাঁদের আপত্তি থাকলে তাঁরা সেগুলির ব্যাপারে আলাদা ব্যবস্থা নিন, বাচ্চাগুলিকে ভোগানোর দরকার কী?
একটা আশঙ্কা কাজ করে মনের মধ্যে, ব্যাপারটা পুরো উল্টো নয়তো? হয়তো এ সব কিছুই কোন দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার অংশ! দেশে ছাগুতৈরি ও ছাগুসম্প্রসারণ প্রকল্প হয়তো এটা।
শিক্ষাপরিকল্পকদের নিজেদের ছেলেমেয়েরা কোথায় পড়েন, তার ওপর তদন্ত হলে আমি রিপোর্টটা পড়তে প্রচন্ড আগ্রহী। দরকার হলে পয়সা দিয়ে পড়বো। কোন সাংবাদিক বন্ধু কি এর ওপর একটা অভিসন্দর্ভ লিখতে পারেন?
হাঁটুপানির জলদস্যু
- এমন হলে কেমন হয় যে পরীক্ষার ৯০ শতাংশ হবে এমসিকিউ আর বাকি ১০ শতাংশ আসবে রচনামূলক।
এমসিকিউ এর কোনো ধরাবাঁধা নিয়ম নেই। মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষার মতো, সঠিক উত্তর একটাও হতে পারে, অনেক গুলোও হতে পারে। উত্তর পুরোপুরি সম্পূর্ণ না হলে কোনো নম্বর নাই।
রচনামূলকের ১০ শতাংশ নিয়ে একটা কর্মশালা হতে পারে পরীক্ষকদের নিয়ে। কোন কোন ক্রাইটেরিয়া আর কন্ডিশনে কতো শতাংশ মার্কস দেয়া যাবে এই নিয়ে একটা সার্বজনীন বিধি থাকতে পারে।
এই সিস্টেমে পোলাপানের মেইন বই না পড়ে উপায় নাই। আর মেইন বই পড়লেই পোলাপাইন গাইড ফাইড আর সুবিশাল নোটের পেছনে দৌঁড়ানো বন্ধ করবে। শিক্ষার আসল মতলব যে 'শিক্ষা' সেটা লাভ করার উপায় এই একটাই। তবে-
শিক্ষার্থীর মেধার ক্রম নির্ধারণের লক্ষ্যে এমসিকিউকে ৯০ থেকে ৮০ বা ৭৫ শতাংশে নামানো যেতে পারে। বাদ বাকীটা থাকবে যথারীতি রচনামূলক এবং নিয়ম একই।
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
তার আগে মনে হয় পাঠ্যবই সহজবোধ্য ও প্রাঞ্জল ভাষায় লিখা উচিত, যেন ছাত্রছাত্রীদের বোধগম্য হয়, এবং আনন্দদায়ক হয়।
-----------------------------------------------------
We cannot change the cards we are dealt, just how we play the hand.
---------------------------------------------------------------------------
একা একা লাগে
- ঐটা আমার প্রবলেম না, জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের।
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
ঠিক কইরা বলেন, "এসো নিজে করি"-র কয়টা অনুশীলন নিজে করেছিলেন?
-----------------------------------------------------
We cannot change the cards we are dealt, just how we play the hand.
---------------------------------------------------------------------------
একা একা লাগে
- ঠিক কইরা কী কমু? আগে কন ঐ নিজে করার জিনিষ কোথায় আছিলো!
আর আমি যেই সিস্টেমের কথা কইলাম, সেই সিস্টেম আমার সময় হৈলে বিশাল আন্দোলনে নেতৃত্ব দিতাম। এইখানে আইসা অবশ্য হিমুর জরিপের কথাটা মন দিয়া আবার পইড়া নিলাম।
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
আসলে সমস্যা অনেক।
-পাঠ্যবই
-পাঠদান পদ্ধতি
-প্রশ্নপত্রের ধরন
-গ্রেডিং সিস্টেম (বর্তমান গ্রেডিং সিস্টেম অর্থে নয়)
-ছাত্রসংখ্যার তুলনায় অত্যন্ত কম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (এই কমের মধ্যে মান সম্পন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা আরো কম)
এদের মধ্যে যে কোন একটি পরিবর্তন করে (অন্যগুলো অপরিবর্তিত রেখে) তেমন কোন সুফল পাওয়া যাবে না।
-----------------------------------------------------
We cannot change the cards we are dealt, just how we play the hand.
---------------------------------------------------------------------------
একা একা লাগে
খুবই ইন্টারেস্টিং টপিক। তাই মফিজ হয়েও দুই পয়সা যোগ করার লোভ সামলাইতে পারলাম না।
রাতারাতি পাঠ্যপুস্তক বা শিক্ষাপদ্ধতি পরিবর্তন করে কোন লাভ হবে বলে মনে হয় না। এমনকিছু সিলেবাসের অন্তর্ভুক্ত করে কোন লাভ নেই, যা পড়ানোর মত শিক্ষকই আমাদের নেই। এর বড় প্রমাণ হল যখন নবম-দশম শ্রেণীর সিলেবাসে উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের পাঠ্যক্রম ঢুকানো হয়, বড় বড় সব স্কুলের টীচাররাও তখন যথেষ্ঠ খাবি খাচ্ছিলেন তা গলাধঃকরণ করতে, ছাত্র-ছাত্রীদের কথা তো বাদই দিলাম। পরিবর্তনটা প্রথমে শুরু করতে হবে যারা শিখাবে তাদের দিয়েই। স্কুল-কলেজের শিক্ষকতা পেশাকে আরো আকর্ষণীয় করে তুলতে হবে। বেতন-ভাতা বাড়িয়ে এমন পর্যায়ে নিয়ে যেতে হবে, যাতে মেধাবী ছেলে-মেয়েরাও উতসাহী হতে পারে এ পেশায় আসতে। নিয়মিত ট্রেনিঙের ব্যবস্থা থাকতে হবে। সামাজিক গ্রহণযোগ্যতা বাড়িয়ে তুলতে হবে যাতে কেউ গর্ব করে বলতে পারে, "আমি স্কুলে পড়াই।" আর এটা অবশ্যই এক দিনে বা এক বছরে সম্ভব না, দরকার দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার, যদিও এটা যথেষ্ঠ উচ্চাভিলাসী শোনাতে পারে।
আর সিলেবাসের পরিবর্তন করার ব্যাপারে আমি হিমুর সাথে একমত। শুরু করলে একদম প্রথম থেকেই শুরু করা উচিত, নবম-দশম না, একেবারে প্রথম শ্রেণী থেকে। স্কুল-কলেজ আলাদা না করে একবারে হাই স্কুল সিস্টেম চালু করা উচিত। এস এস সি-র কোন দরকার আছে বলে আমার মনে হয় না, শুধু শুধু পয়সা নষ্ট। ছেলে-পেলে একবারে দ্বাদশ শ্রেনী পর্যন্ত পড়বে, তারপর বসবে এইচ এস সির জন্য। আলাদা বোর্ডেরও কোন দরকার নেই। বিভাগীয় পর্যায়ে আলাদাভাবে প্রশ্নপত্র তৈরি করা বা মেধা বিবেচনা করার কোন যৌক্তিকতা নাই, পুরা দেশব্যাপি একই প্রশ্নপত্র হইলে সমস্যা কি? আর ডিভিশন বা গ্রেডিং কোন সিস্টেমেই আমার আপত্তি নাই, তবে মেধাতালিকা থাকা উচিত। আর আলু-পটল সবই যেন একই দরে বিক্রি না হয়ে যায়, সেটাও খেয়াল রাখতে হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য অবশ্যই আলাদা পরীক্ষার ব্যাবস্থা থাকতে হবে। তবে পরীক্ষায় বসার যোগ্যতা হতে হবে বিষয়ভিত্তিক, যেমন যে গণিতে ভর্তি হতে চায়, তার জন্য বাংলা-ইংরেজির নম্বর হিসাব করা যাবে না, তবে অবশ্যই গণিতে একটা নির্দিষ্ট নম্বর থাকতে হবে।
বাপরে, অনেক কথা লিখে ফেলছি। আপাততঃ এইটুকুই থাক।
-----------------------------------------------------
We cannot change the cards we are dealt, just how we play the hand.
---------------------------------------------------------------------------
একা একা লাগে
[আর ডিভিশন বা গ্রেডিং কোন সিস্টেমেই আমার আপত্তি নাই, তবে মেধাতালিকা থাকা উচিত। আর আলু-পটল সবই যেন একই দরে বিক্রি না হয়ে যায়, সেটাও খেয়াল রাখতে হবে।]
---একমত।
-------------------------------------------------------
আমি সেই অবহেলা, আমি সেই নতমুখ, নীরবে ফিরে চাওয়া, অভিমানী ভেজা চোখ।
তুখোড় আলোচনা।
মন্তব্যগুলোও বেশ জোড়ালো।
যতবার তাকে পাই মৃত্যুর শীতল ঢেউ এসে থামে বুকে
আমার জীবন নিয়ে সে থাকে আনন্দ ও স্পর্শের সুখে!
অসুরদের ভোলানোর জন্য নাকি সিনথেটিক তিলোত্তমা ম্যানুফ্যাকচার করেছিলো দেবতারা। আসুন আমরা এরকম একটা তিলোত্তমা শিক্ষাব্যবস্থার সিনথেসিস করি।
মফিজ ভাইয়ের প্রস্তাব থেকে একটা ফীচার আমরা নিতে পারি, এইটা খুব পছন্দ হয়েছে।
তবে মফিজ ভাইয়ের এই প্রস্তাব বাস্তবায়নের রাস্তাটা কঠিন। এই পয়েন্টে আরো আলোচনা হতে পারে।
পরীক্ষার ফল এর ব্যাপারে ধারণাটাই একদম পাল্টানো উচিত। আমরা একটা নাম্বারের মূলা ঝুলিয়ে রাখি (বর্তমানে এটা ৮০)। এখন ৮১ পেলে যা, ৯৯ পেলেও তা। এই ভোগলামির কোন অর্থ হয় না। যে ছেলে অঙ্কে ৮১ পেয়েছে, তার সাথে যে মেয়ে অঙ্কে ৯৯ পেয়েছে, তার অনেক পার্থক্য আছে।
বরং তুলনাটা হওয়া উচিত সামগ্রিক। ধরি ২০১০ থেকে আমার প্রস্তাবিত পদ্ধতি চালু হবে কল্পরাজ্য জংলাদেশে। সেক্ষেত্রে ২০১০ সালের পরীক্ষার ফল হবে বেঞ্চমার্ক। সবার নাম্বার সেখানে একটা ডেটাবেজে ঢুকিয়ে তার গড় আর স্ট্যান্ডার্ড ডেভিয়েশন (বাংলায় কী বলে এটাকে, ভেদাঙ্ক?) বার করতে হবে। তারপর প্রত্যেকের অবস্থান জানাতে হবে নরমাল ডিস্ট্রিবিউশন করে। যদি আবুলের চেয়ে মাত্র ০.৫% পোলাপান বেশি মার্ক পায় গণিতে, আর সুফিয়ার চেয়ে গণিতে ৫% পোলাপান বেশি মার্ক পায়, তাহলে আবুল সুফিয়ার চেয়ে গণিতে অনেক এগিয়ে।
২০১১ সালের পরীক্ষার ফল আবার ২০১০ সালের ফলের সাথে জুড়ে দেয়া হবে। এবার গড় পাল্টাবে, স্ট্যান্ডার্ড ডেভিয়েশন পাল্টাবে। পরিবর্তিত ডিস্ট্রিবিউশনে এবার আবার ফল প্রকাশ করা হবে।
অর্থাৎ, কোন পরীক্ষার্থী শুধু নিজের বর্ষের পোলাপানের সাথেই নয়, তার পূর্ববর্তী ছাত্রদের সাথেও একটা প্রতিযোগিতা করবে। প্রয়োজনবোধে দু'টো আলাদা ফলও দেয়া যেতে পারে, শুধু ঐ বছরের জন্যে একটা আর সামগ্রিকভাবে আরেকটা। পোলাপানের পারফর্ম্যান্সের গতিমুখও তাতে পরিষ্কার হবে।
হাঁটুপানির জলদস্যু
এই পদ্ধতিতে মনে হয় GRE ,SAT এর স্কোরিং করা হয়।
মে, ২০০৯: এসএসসি পরীক্ষায় এবার জিপিএ ৫ এর সংখ্যা আরো বেশি। দেশের শিক্ষা তরতর করে এগিয়ে যাচ্ছে। তবে সংখ্যাগুলো জেনে আরো হতাশাগ্রস্ত হই। হয়তো আমি ঠিক 'তাদের' মত দেশপ্রেমিক নই।
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
নতুন মন্তব্য করুন