অলিম্পিকের টাইমিং খুব খারাপ। সারাদিন অফিস শেষে যখন বাসায় ফিরি, ততোক্ষণে অলিম্পিকের লাইভ অ্যাকশন শেষ। তারপরেও রাতের খাবার খেতে খেতে টিভির পর্দায় চোখ রাখি। চীনারা এবার সোনায় সোনায় একাকার, আমেরিকা ঠিক এখনো পেরে উঠছে না, রাশিয়ার 'সেই'দিন অনেক আগেই শেষ। কোরিয়া, জাপান, চীন মিলে অলিম্পিকে এশিয়ানদের জয় জয়কার; কিন্তু সাউথ এশিয়ার কপালে শিকে ছেড়ে না। পাকিস্তান হকিতে গো হারা হেরেছে, বাংলাদেশের ডলি সাঁতরাবে সম্ভবত আরো পরে। হিট উৎরাবে এই আশা করতে আতঙ্ক হয়। ভারতও অলিম্পিকে দুধভাত।
হঠাৎ চোখ পড়ে দুই মাথায় পাগড়ি শিখের উল্লাস। ঘটনা কি? অভিনব বিন্দ্রা নামের এক ভারতীয় শুটিংয়ের একটা ইভেন্টে সোনা জিতেছে!
আরে, তাইতো! শুটিং দেখেই মনে পড়ে যায় আসিফ নামে আমাদেরও তো এক শুটার ছিলো, কমনওয়েলথে সোনা জিতেছিলো, তার সাথে রূপা জিতেছিলো এক ভারতীয় শুটার, হ্যাঁ এই অভিনব বিন্দ্রা সেই ভারতীয় শুটারই!
আমাদের আসিফের খবর কি? নেটে খুঁজি। অলিম্পিকে যোগ দেয়ার যোগ্যতাই তার নেই! আরো খুঁজি। একটা স্কলারশীপে চীনে গিয়েছিলো। ক্রমাগত পারফর্ম্যান্সের অবনতির কারণে ২০০৭ এর শেষে স্কলারশীপ বাতিল করে তাকে দেশে ফেরত পাঠানো হয়। খুব অবাক হই। ছেলের এ অবস্থা কেন? গাঁজা-টাঁজা ধরেছিলো নাকি? খবর নিতে হবে চীনারা কোন ষড়যন্ত্র করে তাকে গাঁজা ধরিয়েছিলো কি না।
সে খবর নেয়ার আগে আবছা আবছা আরেকটা খবর যেন মনে পড়ে পড়ে। একবার শুটিং কমপ্লেক্সে গ্যাঞ্জাম হয়েছিলো না? না মনে হয়। সে তো মুশফিকুর রহিমের ঘটনা। একবার এক রেস্টুরেন্টে মারপিটের পর পুলিশ তাকে ধরেছিলো বোধহয়। তবু ঠিক সন্তুষ্ট হয় না মন। রহিমের ঘটনা বাদেও আরেকটা গ্যাঞ্জামই হয়েছিলো, আসিফকে পুলিশ পিটিয়েছিলো সেবার বেশ আয়েশ করে।
নেটে খুঁজি। ২রা অক্টোবর, ২০০৬ বোধ হয়। আমাদের কমনওয়েলথ আর সাফ গেমসে সোনাজয়ী আসিফকে আরো অনেকের সাথে শুটিং কমপ্লেক্সের ভেতরেই'বেধড়ক' পিটিয়ে হাতের হাঁড় ভেঙ্গে দিয়ে শান্তিরক্ষা করেছিলো পুলিশ। শুটিং কমপ্লেক্সের দারোয়ান নিশ্চয়ই খুব নির্বোধ ছিলেন। নাহলে পোশাক পরা পুলিশকে শুটিং কমপ্লেক্সের সামনেই গাড়ি পার্ক করতে কেউ নিষেধ করে?
আইন জানা ছিলো না তার। হোম মিনিস্টার লুৎফুজ্জামান বাবর ঠিকই বলেছিলেন, "পোশাক পরা অবস্থায় একজন পুলিশকে আক্রমণ করা পুরোপুরি অবৈধ!" আর যেন তেন আক্রমণ নয়, একেবারে গাড়ি পার্ক করা নিয়ে খবরদারি! আমাদের কমনওয়েলথ গোলড মেডালিস্টের লাশের পরে দাঁড়িয়ে হলেও আইন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, সেটাই বড় কথা। আইনের চোখে সবাই সমান!
আচ্ছা, বিন্দ্রা কে? অলিম্পিকে সোনা জেতা সেই শুটার যে কমনওয়েলথে রূপা পেয়েছিলো। আর আমাদের আসিফ?আমাদের কমনওয়েলথ? আমাদের সাফগেমস? আমাদের সোনা? আমাদের স্বপ্ন? আমাদের লাশ। আমাদের আইন। আমাদের হোম মিনিস্টার!
মন্তব্য
মনটা খারাপ করে দিলেন।
====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির
আসলে মন খারাপের সাথে সাথে একটু রসিকতাও কাজ করে। বুয়েট অ্যাডমিশন টেস্টে বেনজিনের সাথে ওজোনের বিক্রিয়া ভুল করার পরে খুব মজা পেয়েছিলাম, এক্ষেত্রেও অনুভূতিটা অনেকটা সেরকমই। একটু এদিক ওদিক হলে কীই না হতে পারতো! আক্ষেপ, সাথে কষ্টমিশ্রিত মজা।
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
যে দেশে মানুষ ছোট
-------------------------------------
"এমন রীতি ও আছে নিষেধ,নির্দেশ ও আদেশের বেলায়-
যারা ভয় পায়না, তাদের প্রতি প্রযোজ্য নয় "
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
হ্যাঁ, মানুষ মানে তো পাবলিক। পাবলিকের আবার কথা!
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
এটা জানতাম না, খুব রাগ লাগছে আর মন খারাপ লাগছে।
------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে
------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে
সমস্যা হলো রাগটা সাময়িক।
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
মনে হইতাছে জেলের ভিতরে গিয়া বাবররে একটা চটকানা মাইরা আসি
অজ্ঞাতবাস
অজ্ঞাতবাস
উত্তেজনা ছড়াবেন না। শান্তি বজায় রাখুন। জরুরী অবস্থাকে শ্রদ্ধা করুন।
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
পুলিশ যেখানে উচ্চ আদালতের মহামান্য বিচারপতির পতাকাবাহী গাড়িকে আটকে রাখে পুলিশের বড়কর্তাকে আগে যেতে দেবার জন্যে, এবং এ নিয়ে কারণ দর্শাতে বলা হলে উল্টে বিচারপতিকে হুমকিধামকি দেন পুলিশের মহাপরিদর্শক শহুদুল হক (অবশ্য পড়ে বাহিনী থেকে আদালত অবমাননার দায়ে একরকম বহিষ্কৃত হন), সেখানে একজন সামান্য শ্যুটার তো কিছুই না। আসিফ আমাদের শ্যুটিং স্টার, জ্বলে উঠে আবার মাটিতে আছড়ে পড়েছেন।
কোন গাছকে আমরা বেড়ে উঠতে দেবো না। সব কদমছাঁট হতে হবে।
হাঁটুপানির জলদস্যু
কদমছাঁট না পুরা খাসীকরণ প্রকল্প...
অজ্ঞাতবাস
অজ্ঞাতবাস
এইটাই। ইটাচাপার ভিতর থেকেও যদি কোনো গাছ বেড়ে উঠতে চায়, তাকেও রোলার চাপা দিতে হবে। আমাদের সামাজিক জীবনে প্রতিযোগিতার চেহারাও এমন। অন্যের চেয়ে ভালো করে নয়'; বরং অন্যকে খারাপ করতে বাধ্য করে আমরা জয়ের আনন্দে বেশি উৎফুল্ল হতে অভ্যস্ত।
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
এমনই হয়ে আসছে বাংলাদেশে। এসব চিন্তা করলে অনেক কিছু বলতে ইচ্ছে করে। এরপরে মুখটা তেতো হয়ে আর কিছু বলা হয় না।
ওয়েবসাইট | ব্লগস্পট | ফেসবুক | ইমেইল
বলাটা খুব দরকার। না কাঁদলে মায়ের দুধও পাওয়া যায় না, আর তো জলপাইয়ের আচার!
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
জলপাই-আচার বলতে কিন্তু অন্য জিনিস বোঝায় - বিশেষ জায়গায় নিয়ে বিশেষভাবে যে আচার-পদ্ধতি প্রয়োগ করা হয়ে থাকে, যা মিষ্ট বা টক স্বাদের নয়, বিশুদ্ধ তেতো।
-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
সকালে ক্লাসে যাবার আগে এই খবরটা প্রথম আলোতে দেখেই বেশ রাগ হচ্ছিল...
আরেকটা তথ্য খেয়াল করার মত
বিন্দ্রা সোনা পেয়েছেন ৫৯৬ স্কোর করে যা আসিফের সর্বোচ্চ কমনওয়েলথ এর স্কোর থেকে মাত্র ২ বেশি।
---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!
---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!
একটু এদিক-ওদিক হলে - সেইদিন পুলিশ ওভাবে হামলে না পড়লে, মিগ-২৯ এর বাজেট থেকে কিছু বাঁচিয়ে শুটিংয়ে ব্যয় করলে, কতো কিছুই না হতে পারতো!
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
আপনার লেখার টাইটেল এইভাবে পড়লে একটু শান্তি লাগে:
অভিনব বিন্দ্রা সোনা! পেয়েছে
====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
হায় রে!
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
দীর্ঘশ্বাসের সময়গুলো মনে রাখা খুব দরকার।
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
মন খারাপ করা লেখা।
আমাদের বাংলাদেশে মন ভালো করতে হলে দিবাস্বপ্নের বিকল্প নেই যে!
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
কাকু,
চোখে আঙল দিয়া দেখাইলে কাম অয় না, চোখটা উপড়াইলে বুঝি কিছুটা বুঝতো...
যতবার তাকে পাই মৃত্যুর শীতল ঢেউ এসে থামে বুকে
আমার জীবন নিয়ে সে থাকে আনন্দ ও স্পর্শের সুখে!
কাকু, আসলে তাগো বুঝার দরকার নাই, তারা পঁচারক্ত, তাদেরকে শরীর থেকে ঝেড়ে ফেলার বিকল্প নেই।
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
ক'দিন আগে আমার ননাস ক্ষোভ করে বলছিল কিছু কথা। তার ছেলে এখন লস এ্যাঞ্জেলসে স্কলারশিপ নিয়ে পড়াশুনা করছে। সেখানে সে যখনই কোন কাজের প্রতি আগ্রহের আ করে প্রফেসর তাকে ব্যাকআপ সাপোর্ট দেয়ার সাধ্যমত চেষ্টা করে। এই ছেলেই বুয়েটে নিজ উদ্যোগে কিছু ছাত্রদের নিয়ে রবোকন কম্পিটিশনে যোগ দেবার জন্য রবোট বানাতে গেলে ওদের বের করে দেয়া হয় ----শুধু শুধু রুম ব্যবহারের অজুহাতে। ঐ কম্পিটিশনে এই ছেলের দল শ্রীলংকা আর সম্ভবত পাকিস্তানকে হারিয়ে দিয়ে আসে। পরবর্তীতে অবশ্য ন্যুনতম কিছু সুবিধা এরা পেয়েছিল। যা দিয়ে আজও বছর বছর বুয়েটের কিছু ছেলে রবোকন কম্পিটিশনে অংশ নিচ্ছে।
.....................................................................................
সময়ের কাছে এসে সাক্ষ্য দিয়ে চ'লে যেতে হয়
কী কাজ করেছি আর কী কথা ভেবেছি..........
.....................................................................................
সময়ের কাছে এসে সাক্ষ্য দিয়ে চ'লে যেতে হয়
কী কাজ করেছি আর কী কথা ভেবেছি..........
হায় !
...........................
সংশোধনহীন স্বপ্ন দেখার স্বপ্ন দেখি একদিন
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
বলাইদার জন্যে রেখে গেলাম, আসিফের ঘটনাটার তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া।
-----------------------------------
... করি বাংলায় চিৎকার ...
-----------------------------------
বই,আর্ট, নানা কিছু এবং বইদ্বীপ ।
দুপুরের দিকে ব্লগটা পড়ার থেকে খালি আক্ষেপ হচ্ছে। ইশ!!
---------------------------------
জানিনা জানবোনা... কোন স্কেলে গাইছে কোকিল
গুনিনা আমি গুনিনা...কার গালে কটা আছে তিল
-----------------------------------------------------------------
কাচের জগে, বালতি-মগে, চায়ের কাপে ছাই,
অন্ধকারে ভূতের কোরাস, “মুন্ডু কেটে খাই” ।
-----------------------------------------------------------------
কাচের জগে, বালতি-মগে, চায়ের কাপে ছাই,
অন্ধকারে ভূতের কোরাস, “মুন্ডু কেটে খাই” ।
বিন্দ্রার সোনা জিতার খবরটা বাসায় এসে শুনলাম তারপর আপনার লিখা আসলেই মন খারাপ করা ব্যাপার।
নতুন মন্তব্য করুন