দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন খাঁটি মুসলমানের বাংলাদেশ থেকে ইহুদি, নাসারা, খেরেস্তানদের দেশে এসে ঈমান হারানোর ভয়ে অনেকেই কুঁকড়ে যান। রাস্তাঘাটে বেপর্দা মেয়েদের চলাফেরায় এমনিতেই ঈমান হালকা হয়ে যায়, তারওপর আছে খাবার দাবারের ঝামেলা। দেশে মরা মুরগী কিংবা গরুর পরিবর্তে মহিষ খাওয়ায় উচ্চবাচ্য করি নাই, মহিষ জবাইয়ের সময় আল্লার নাম নিয়েছে, নাকি ভগবানের, নাকি বেদের মেয়ে জোছনার গান গেয়েছে, এসব নিয়েও প্রশ্ন তুলি নাই। কিন্তু ইহুদি নাসারাদের দেশে এসে ঈমানের প্রতি মায়া বেড়ে গেছে। আশেপাশের প্রত্যেকটা ভিনদেশিই শকুন চোখে আমাদের ঈমানের দিকে তাকিয়ে আছে, সুযোগ পেলেই ঈমান নিয়ে টানাটানি শুরু করবে।
ঈমানাতঙ্ক কাটাতে আল্লাহ কী কী খাবার হারাম করে দিয়েছেন, সেদিকে একটু দৃষ্টি দেয়া যাক। সুরা আল আন-আমের ১১৮ ও ১১৯ নং আয়াতে আল্লাহ বলেছেন,
"অত:পর যে জন্তুর উপর আল্লাহর নাম উচ্চারিত হয়, তা থেকে ভক্ষণ কর যদি তোমরা তাঁর বিধানসমূহে বিশ্বাসী হও|কোন কারণে তোমরা এমন জন্তু থেকে ভক্ষণ করবে না, যার উপর আল্লাহর নাম উচ্চারিত হয়, অথচ আল্লাহ্ ঐ সব জন্তুর বিশদ বিবরণ দিয়েছেন, যেগুলোকে তোমাদের জন্যে হারাম করেছেন; কিন্তু সেগুলোও তোমাদের জন্যে হালাল, যখন তোমরা নিরুপায় হয়ে যাও| অনেক লোক স্বীয় ভ্রান্ত প্রবৃত্তি দ্বারা না জেনে বিপথগামী করতে থাকে| আপনার প্রতিপালক সীমাতিক্রম কারীদেরকে যথার্থই জানেন|(৬: ১১৮-১১৯)"
আমি যা বুঝলাম, আল্লাহর নামে জবাই করা জন্তু থেকে খাওয়া হালাল। আবার আল্লাহর নাম উচ্চারণ করেও যেসব জন্তু খাওয়া হারাম (যেমন, শুকর) তা হালাল করা যাবে না। কিন্তু নিরুপায় হয়ে খেতে হলে তাও (যেমন, শুকরের মাংস) হালাল হয়ে যাবে।
উপরের আয়াত থেকে কেউ কেউ একটা প্যাঁচ বের করে বলে দেন, যে আল্লাহর নামে জবাই না করলেই তা হারাম হয়ে যাবে, যেটা আসলে ওখানে বলা নাই। এই প্যাঁচ তাহলে ছাড়ানো যাবে কিভাবে? দেখা যাক, ওই সুরারই ১৪৫ নং আয়াতে আল্লাহ কি বলেন,
"আপনি বলে দিন: যা কিছু বিধান ওহীর মাধ্যমে আমার কাছে পৌঁছেছে, তন্মধ্যে আমি কোন হারাম খাদ্য পাই না কোন ভক্ষণকারীর জন্যে, যা সে ভক্ষণ করে; কিন্তু মৃত অথবা প্রবাহিত রক্ত অথবা শুকরের মাংস এটা অপবিত্র অথবা অবৈধ; যবেহ করা জন্তু যা আল্লাহ্ ছাড়া অন্যের নামে উৎসর্গ করা হয়| অতপর যে ক্ষুধায় কাতর হয়ে পড়ে এমতাবস্খায় যে অবাধ্যতা করে না এবং সীমালঙ্গন করে না, নিশ্চয় আপনার পালনকর্তা ক্ষমাশীল দয়ালু|(৬: ১৪৫)"
এখানে যবেহ করা জন্তু যা আল্লাহ্ ছাড়া অন্যের নামে উৎসর্গ করা হয় অংশটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। আমি যেটা বুঝি, আল্লাহ ছাড়া অন্যের নামে উৎসর্গ করা হলেই তা হারাম হবে। কিন্তু যদি কারো নামেই উৎসর্গ করা না হয়; তাইলে সেটা হালাল হওয়ার পথে কোনো বাধা সৃষ্টি করে না। এই বিষয়টা কোরআনে বার বার এসেছে। যেমন,
অবশ্যই আল্লাহ্ তোমাদের জন্যে হারাম করেছেন রক্ত, শুকরের মাংস এবং যা জবাই কালে আল্লাহ্ ছাড়া অন্যের নাম উচ্চারণ করা হয়েছে| অত:পর কেউ সীমালঙ্ঘনকারী না হয়ে নিরুপায় হয়ে পড়লে তবে, আল্লাহ্ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু|(১৬:১১৫)
তিনি তোমাদের উপর হারাম করেছেন, মৃত জীব, রক্ত, শুকর মাংস এবং সেসব জীব-জন্তু যা আল্লাহ্ ব্যাতীত অপর কারো নামে উৎসর্গ করা হয়| অবশ্য যে লোক অনন্যোপায় হয়ে পড়ে এবং নাফরমানী ও সীমালঙ্ঘনকারী না হয়, তার জন্য কোন পাপ নেই| নি:সন্দেহে আল্লাহ্ মহান ক্ষমাশীল, অত্যন্ত দয়ালু|(২: ১৭৩)
তোমাদের জন্যে হারাম করা হয়েছে মৃত জীব, রক্ত, শুকরের মাংস, যেসব জন্তু আল্লাহ্ ছাড়া অন্যের নামে উৎসর্গকৃত হয়, যা কন্ঠরোধে মারা যায়, যা আঘাত লেগে মারা যায়, যা উচ্চ স্খান থেকে পতনের ফলে মারা যা, যা শিং এর আঘাতে মারা যায় এবং যাকে হিংস্র জন্তু ভক্ষণ করেছে, কিন্তু যাকে তোমরা যবেহ করেছ| যে জন্তু যজ্ঞবেদীতে যবেহ করা হয় এবং যা ভাগ্য নির্ধারক শর দ্বারা বন্টন করা হয়| এসব গোনাহর কাজ| আজ কাফেররা তোমাদের দ্বীন থেকে নিরাশ হয়ে গেছে| অতএব তাদেরকে ভয় করো না বরং আমাকে ভয় কর| আজ আমি তোমাদের জন্যে তোমাদের দ্বীনকে পূর্নাঙ্গ করে দিলাম, তোমাদের প্রতি আমার অবদান সম্পূর্ণ করে দিলাম এবং ইসলামকে তোমাদের জন্যে দ্বীন হিসেবে পছন্দ করলাম| অতএব যে ব্যাক্তি তীব্র ক্ষুধায় কাতর হয়ে পড়ে; কিন্তু কোন গোনাহর প্রতি প্রবণতা না থাকে, তবে নিশ্চয়ই আল্লাহ্ তা’আলা ক্ষমাশীল|(৫:৩)
প্রত্যেক ক্ষেত্রেই আল্লাহ ছাড়া অন্যের নামে উৎসর্গীকৃত জন্তু হারাম করার কথা বলা হয়েছে। কোনো আয়াতেই আসেনি যে, "তিনি তোমাদের উপর হারাম করেছেন, মৃত জীব, রক্ত, শুকর মাংস এবং সেসব জীব-জন্তু যা আল্লাহর নামে উৎসর্গ করা হয় নি।" সুতরাং কোনো খাদ্য হালাল হওয়ার জন্য আল্লাহর নাম নিয়ে জবাই করার কোনো বাধ্যবাধকতা নেই, শিরকের উদ্দেশ্যে বলি দেয়া না হলেই যথেষ্ট। এর বাইরে বিপদে পড়লে যে কোনো কিছু খাওয়াই ফাইন। বিপদে পড়া বা অনন্যোপায় হওয়ার সংজ্ঞা নিয়েও মাতামাতি করার মানে নেই। আল্লাহ যেহেতু সবজান্তা, তিনিই ভালো বুঝবেন কোনটা বিপদ আর কোনটা পাপ। এটা প্রত্যেকের সাথে আল্লাহর কনসার্ন, তৃতীয় ব্যক্তির নাক গলানোর কোনো এক্তিয়ার নাই।
আমি যতোটুকু বুঝি, ইসলামকে মানুষের জন্য কঠিন করা হয় নাই। কিন্তু মানুষই ইসলামকে কঠিন করে ফেলে, কেউ স্বার্থসিদ্ধির জন্য, কেউ আতঙ্কে!
--------
পোস্টে কুরআনের আয়াতগুলো তুলে ধরাই উদ্দেশ্য, সেগুলোর ব্যাখ্যা যার যার নিজের বুঝ। আমি যেটা বুঝেছি, সেটাই লিখেছি, আপনি অন্যরকমভাবে আয়াতগুলো বুঝলে সেটা আপনার বিষয়।
মন্তব্য
৬: ১১৮-১১৯ আয়াতের ...কোন কারণে তোমরা এমন জন্তু থেকে ভক্ষণ করবে না, যার উপর আল্লাহর নাম উচ্চারিত হয়, - আমি ঠিক বুঝতে পারছি না বলে মনে হচ্ছে। আপনি ব্যাখ্যাটা কীভাবে করছেন?
এখানে বাকি শব্দাংশ ২টাও একসাথে আসবে। "কোন কারণে তোমরা এমন জন্তু থেকে ভক্ষণ করবে না, যার উপর আল্লাহর নাম উচ্চারিত হয়, অথচ আল্লাহ্ ঐ সব জন্তুর বিশদ বিবরণ দিয়েছেন, যেগুলোকে তোমাদের জন্যে হারাম করেছেন;"
ইংরেজিটা এমন: And why should you not eat of that (meat) on which Allah’s Name has been pronounced (at the time of slaughtering the animal), while He has explained to you in detail what is forbidden to you, except under compulsion of necessity? And surely many do lead (mankind) astray by their own desires through lack of knowledge. Certainly your Lord knows best the transgressors.
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
ব্যাপারটা পরিষ্কার হল। অনেক ধন্যবাদ।
এটাই সারকথা। কেউ দোজখে গেলে নিজ কর্মবলেই যাবে। তা নিয়ে অন্যের উদ্বিগ্ন হওয়ার কোনো কারণ দেখি না।
|| শব্দালাপ ||
_____________________
আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।
এইটা শেয়ারে দেওয়া অতীব জরুরী, তাই অনুমতি না নিয়েই খোমাখাতায় দিলাম। স্পেসিফিক কিছু মানুষের এই জিনিসটা চোখে পড়বে আশা করছি।
==========================
আবার তোরা মানুষ হ!
==========================
আবার তোরা মানুষ হ!
একেবারে এই পয়েন্টটা নিয়েই আমাদের এখানে অনেক আলোচনা হয়েছে। আমিও মোটামুটি রেফারেন্স এতটুকু বুঝেছি, যা আল্লাহ ব্যাতিত অন্য কারো নামে উৎসর্গ করা হয়েছে, তা হারাম। কিন্তু যেটা কারো নামেই উৎসর্গ করা হয়নি, যেমন, কে এফ সির চিকেন, সেটা কি হারাম না হালাল, এই বিষয়ে কেউই নিশ্চিত নন। এটা একটা গ্রে এরিয়া।
আমি ব্যক্তিগতভাবে গ্রে এরিয়ায় বিচরণ করি। কারণটা রান্নাজনিত অলসতা এবং চিকেন উইং এর প্রতি আমার ভয়াবহ দূর্বলতা!!
তবে, অনেকের বক্তব্য হলো, যদি গ্রে এরিয়ার মাংস না খেয়ে পারা যায়, তাহলে সেটা এড়িয়ে যাওয়াই ভালো। আমাদের এখানে প্রায় সবখানেই তার্কিশ বা অ্যারাবিশ দোকানে হালাল মাংস পাওয়া যায়। তাই সুপার মার্কেটের মাংস না কিনলেও চলে। তাই উনারা কে এফ সি বা ম্যাকডোনাল্ডসও সচেতনভাবে এড়িয়ে চলেন। অবশ্যই এটা ব্যক্তির উপর নির্ভর করে এবং সব ধরণের মতামতের প্রতি আমার শ্রদ্ধা আছে।
=======================
কোথাও হরিণ আজ হতেছে শিকার;
=======================
কোথাও হরিণ আজ হতেছে শিকার;
ফাহিম, এটাকে গ্রে এরিয়ায় ঠেলে দেয়াও যুক্তিযুক্ত মনে হয় না।
তার মানে উল্লেখিত নিষিদ্ধ জিনিস/পন্থাগুলো ছাড়া কোনোকিছুই হারাম না। এটাকে গ্রে এরিয়া বললে একটা অনিশ্চয়তা ঢুকিয়ে দেয়া হয়। আল্লাহ যা হারাম করেন নাই, তা খেলে পাপের সম্ভাবনা নাই।
এটা ঠিক। বাড়াবাড়ি না করলে আর আরেকজনের ওপর চাপিয়ে দিতে না এলে কোনো সমস্যা নাই।
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
গ্রে এরিয়ার ব্যাপারটা এই কারণে আসছে যে, শুধু আল্লাহর নাম নিয়ে জবাই নয়, মাংসটা যে আদৌ জবাই হয়েছে কিনা, সেটাই তো নিশ্চিত না। অনেক জায়গায় শুনেছি শক দিয়ে গরু মারে। তাহলে সেটাকে কী বলবেন?
তাছাড়া এই বিষয়ে শুনেছি অনেক হাদিসও আছে, যেগুলো একটার সাথে আরেকটা মেলেনা। সব মিলিয়ে পুরো ব্যপারটা খুবই কনফিউজিং।
=======================
কোথাও হরিণ আজ হতেছে শিকার;
=======================
কোথাও হরিণ আজ হতেছে শিকার;
খাওয়ার জন্য জবাই করা আর শক দিয়ে মারার মধ্যে আদৌ পার্থক্য করতে হবে কিনা, এ বিষয়ে কোরআন কি বলে দেখতে হবে। তবে হাদিসে গেলেই জগাখিঁচুড়ি লেগে যাবে, তখন সমাধানের চেয়ে সমস্যারই আরো হাত-পা গজাবে।
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
যে হালাল প্রাণী কন্ঠরোধে মারা যায় বা আঘাত লেগে মারা যায় বা উচ্চ স্খান থেকে পতনের ফলে মারা অথবা শিং এর আঘাতে মারা যায় তা খেতে নিষেধ করার পেছনের কারণটুকু সম্ভবত নৃশংসতা প্রতিহত করা। পশুর মৃত্যুযন্ত্রণা যেন যথাসম্ভব কম হয় সেটা নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে। স্কুলে থাকতে নিজেকে এভাবেই বুঝিয়েছিলাম। সে হিসেবে শক দিয়ে মারা অবশ্যই যন্ত্রণাদায়ক ও নিষ্ঠুর।
_____________________
আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।
একটি প্রাণীকে কিভাবে মারা হলে সে ব্যথা কম পাবে, সেটা জানা কি সম্ভব?
সাধারণত যদি ব্রেনের সাথে শরীরের সম্পর্কটা ছিন্ন করে ফেলা হয় তাহলে আর ব্যাথা-কষ্টের অনুভূতি থাকে না (ডাক্তাররা আরো ভালো বলতে পারবে)। এজন্যই জবাইটা পশুর জন্য সবচেয়ে কম কষ্টদায়ক (গুলি করে মারা, শক দিয়ে মারা, উপর থেকে ফেলে দেয়া ইত্যাদির সাথে তুলনা করে) কিন্তু আধুনিক (!) সমাজ সেটাকে পাশবিকতা বলে।
পাগল মন
গুলির তুলনায় ছুরি দিয়ে পেঁচিয়ে পেঁচিয়ে গলা কেটে ফেলাটা পশুর জন্য সবচেয়ে কম কষ্টদায়ক??!! মাথায় গুলি করে এক মুহূর্তেই তো ব্রেইনের সাথে শরীরের সম্পর্ক ছিন্ন করে ফেলা যায়!
সেটাই তো বলি। কিন্তু মানুষজন আমার কথা শুনলে মুচকি হাসে। আরও চেপে ধরলে বলে, কিতাবে বলা আছে।
==========================
আবার তোরা মানুষ হ!
==========================
আবার তোরা মানুষ হ!
সেটাই। মাথায় গুলি করলে মৃত্যুযন্ত্রণা সবচেয়ে কম হওয়ার কথা। ওখানে আবার অন্য যুক্তি। ওতে নাকি শরীরের রক্ত বেরিয়ে যায় না। একই যুক্তিতে নাকি শূকর হারাম। কারণ শূকরের ঘাড় নেই বলে ভেইন খুঁজে পাওয়া যায় না। সেজন্য ঠিক নিয়মে জবাই করা কঠিন। এগুলো যতখানি না যুক্তি তারচেয়ে বেশি নিজের ধারণাকে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা মনে হয়। প্রাণীর যন্ত্রণার কথা ভাবলে কেএফসি চিকেন খাওয়া বন্ধ করা উচিত সবার আগে। ওখানে নাকি মুরগিগুলোকে হরমোন দিয়ে এমন বড় করা হয় যে ওগুলো ঠিকভাবে চলতে ফিরতে পারে না, শরীরের ভারে পা ভেঙে পড়ে যায়। জবাইয়ের পরে সংজ্ঞা থাকা অবস্থাতেই ব্রয়লারে দিয়ে দেওয়া হয়। এ নিয়েই পামেলা আন্টি অনেক হৈ চৈ করেছেন।
_____________________
আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।
নিচে হাসিব ভাই একটা ভিডিও দিয়েছেন। মাথায় একটা পেরেক ঢুকালো মনে হল, গরু মারা গেল। তারপর ঝুলায়ে নিয়ে রক্ত বের করে ফেলা হল। জবাই করার চেয়ে এফেক্টিভ মনে হল।
==========================
আবার তোরা মানুষ হ!
==========================
আবার তোরা মানুষ হ!
মনেহয় সুষুম্নাকাণ্ড কেটে ফেললেই সবথেকে পেইনলেস ... অথবা মস্তিষ্কের ব্যাথা সংবেদনকারী অংশে গুলি করলে।
পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।
পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।
মাংস খাওয়া বাদ দেয়াটা প্রাণীদের জন্য সবচেয়ে কম কষ্টকর।
প্লিজ, হাসায়েন না তো! অনেক কাজ সামনে, এখন খ্যাক খ্যাক করে হাসাহাসি করে মনঃসংযোগের বারোটা বাজানো কি উচিত হবে?!
ভালো লেখা।
ধর্ম নিয়ে যত মতভেদ তা হচ্ছে ব্যাখ্যা এবং অর্থান্তরের সমস্যা। ১৪০০ বছরেরও বেশী পুরোনো একটি টেক্সট যা তখনকার পরিস্থিতি উদ্দেশ্য করে গ্রন্থিত হয়েছিল তাতে বাস্তব সমস্যার পরিপূর্ণ সমাধান চাইতে গেলে এইসব ব্যাখ্যার আশ্রয় নিতেই হবে। এবং অর্থান্তরে মতভেদগুলো একে অপরের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়ার মত পরিস্থিতির জন্ম দেয়।
ইহুদী- নাসারাদের দেশে গিয়ে যাদের ঈমান সংক্রান্ত সমস্যা হয় তারা ইন্দোনেশিয়া চলে আসতে পারেন। এইখানে পানি, খাঁটি ফলের রস পর্যন্ত হালাল ছাপ মেরে বিক্রি হয়। খেতে গিয়ে ফ্রাইড রাইস উইথ সিফুড নিয়েছি - তো সেখানে অক্টোপাস, জেলি ফিশ ইত্যাদি হাবিজাবি থাকায় জিজ্ঞেস করলাম এগুলো কি খাওয়ার যোগ্য? বলল ১০০% হালাল। আমাকে একজন বলেছে এখানকার উলেমা সংগঠন - যারা হালাল সার্টিফিকেট দেয় তারা নাকি উপরি পেলে শুকরের মাংশতেও হালাল সিল দিয়ে দেবে। আর ইন্দোনেশিয়া তো অনেক উদার দেশ - পাড়ার মোড়ের দোকানে পর্ক পাওয়া যায়, মদ বিয়ারও - খালি রমজানের সময় একটু নিয়মমাফিক ঢেকেঢুকে রাখে। এ তো চমৎকার জীবন - সার্টিফিকেটে মুসলমান - অথচ ঘুষ নেয়া, মিথ্যা কথা বলা, মদ খাওয়া, মিনি স্কার্ট ইত্যাদি লাইফস্টাইলে পরিণত। এখনও জিজ্ঞেস করি নাই এর মাজেজা কি। হয়ত আপনার মত কোন ব্যাখ্যা দিয়ে দেবে।
তবে তারা জীবনটিকে উপভোগ করছে ও সামনে এগিয়ে যাচ্ছে। আমাদের মত না ঘরকা - না ঘাটকা অবস্থায় নেই।
পৃথিবী কথা বলছে আপনি কি শুনছেন?
পৃথিবী কথা বলছে আপনি কি শুনছেন?
ইনফ্যাক্ট ধর্ম নিয়ে আকামের সবচেয়ে বড় অস্ত্র হলো এই ব্যাখ্যা। কুরআনের ক্ষেত্রে আল্লাহ একে সবিস্তারে বলা গ্রন্থ হিসেবে বর্ণনা করেছেন, তারপরেও এক একজন মাতব্বরি করে এক এক রকমের ব্যাখ্যা নিয়ে হাজির হয় এবং সে ব্যাখ্যাকে অন্যের ওপর চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা চলে। বাস্তব সমস্যার পরিপূর্ণ সমাধানও নির্ভর করে ক্ষেত্রের ওপর। নিজের জন্য কোরআনের অর্থ যেভাবেই বুঝি, তাতে তেমন ঝামেলা নাই, যদি না অন্যের মাথায় বাড়ি দেয়ার জন্য সেটাকে ব্যবহার করা হয়। ভালো মানুষ হওয়ার জন্য ধার্মিক হওয়া আবশ্যক না, তবে ঈশ্বর/আল্লাহ কনসেপ্টের মাধ্যমে মানুষকে মানুষ হওয়ার জন্য ধর্ম প্রভাবক হিসেবে কাজ করে এবং এটার ক্ষেত্র ওই পর্যন্তই থাকা উচিত। প্রত্যেকটা ইনডিভিজুয়াল ভালো মানুষ হলে সমাজে ক্যাচাল হওয়ার কথা না।
আর আপনি যেমনটা উদাহরণ দিয়েছেন, ওভাবেই হালাল/হারাম কনসেপ্ট প্যাচাইয়া এখন মূলত বিজনেসের কাজেই ব্যবহার করা হয়।
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
বলাইদা, সত্য কথা বলেছেন একটা - হালাল-হারাম কি জিনিস এটা মনে হয় ইহুদী-নাসারাদের দেশে না আসলে বুঝতামই না!
প্রচন্ড কনফিউজিং একটা ব্যাপার! প্রথম প্রথম এর-ওর ব্যাখ্যায় আমি এতই কনফিউজড ছিলাম যে, মাছ খেতে গেলেও জিজ্ঞেস করতে মন চাইতো, 'ভাই, মাছটা হালাল তো?'
যাই হোক, এখন বেশ ভাল আছি! বাঁচতে হলে খেতে হবে - এই নীতিতে বিশ্বাসী! সো কোন প্রবলেম নাই আর......
অফটপিকঃ আচ্ছা, একটা জিনিস আপনার কাছে জানতে চাই! সিগারেট খাওয়া কি হারাম নাকি? কোথাও লেখা আছে? আপনি কিছু জানেন এ ব্যাপারে?
==========================
একটাই কমতি ছিল তাজমহলে,
......তোমার ছবিটি লাগিয়ে দিলাম!
==========================
একটাই কমতি ছিল তাজমহলে,
......তোমার ছবিটি লাগিয়ে দিলাম!
সিগারেট খাওয়া, আমি যা বুঝি, হারাম। যে খাবারগুলোতে নিজের ক্ষতি ছাড়া লাভ হচ্ছে না, সেগুলো হারাম করা হয়েছে। প্লাস, আপনি সিগারেট খেলে আশেপাশে ননস্মোকার কেউ থাকলে তার গন্ধে খারাপ লাগে, ক্ষতি তারও হচ্ছে, সিগারেটে অপচয়, এমন আরও নানা কারণে এই জিনিসটা হারাম। মুখে সিগারেটের গন্ধ নিয়ে ঘোরাটাকে চরমভাবে নিরুৎসাহ করা হয়। আমি কোন রেফারেন্স দিতে পারছি না। যা জানি বললাম আর কি।
==========================
আবার তোরা মানুষ হ!
==========================
আবার তোরা মানুষ হ!
হুমম......ধূমপানে বিষপান!
''স্মোকিং ইজ হাইলি অ্যাডিকটিভ, ডোন্ট স্টার্ট!''
==========================
একটাই কমতি ছিল তাজমহলে,
......তোমার ছবিটি লাগিয়ে দিলাম!
==========================
একটাই কমতি ছিল তাজমহলে,
......তোমার ছবিটি লাগিয়ে দিলাম!
আমি যতটুকু বুঝি, সিগারেটকে হারাম করে কোরানে কিছু বলা হয় নি। তবে যে কোন নেশাকে হারাম বলা হয়েছে। সেই সংগাতে সিগারেট, মদ, এমনকি আমাদের পানের নেশাও হারাম হওয়া উচিত। (তবে সচলায়তনের নেশাকে কী বলা যায় ভেবে দেখতে হবে )
-লাবণ্য-
ফাহ_বেগম@ইয়াহু
এ ব্যাপারে জাকির নায়েকের ফতোয়া দেখা যাক:
জাকির নায়েকের ফতোয়ায় সে উল্লেখ করেছে যে সুরা ২:১৯৫ এ আছে, "Do not make your own handthe cause of your own destruction." যেহেতু বিজ্ঞান আবিষ্কার করেছে সিগারেট খেলে ক্যান্সার হয়, ব্রঙ্কাইটিস হয় bla bla bla, সেহেতু কুরআনের ২:১৯৫ মতে আর সবচেয়ে বড় কথা মুসলিম স্কলাররা একমত হওয়ার ফলে সিগারেট এখন 'হারাম'!
জাকির নায়েককে ১০০% বিশ্বাস না করে যদি আয়াত ২:১৯৫ দেখা যায়, তাহলে ওখানে লেখা আছে,
"আর ব্যয় কর আল্লাহর পথে, তবে নিজের জীবনকে ধ্বংসের সম্মুখীন করো না| আর মানুষের প্রতি অনুগ্রহ কর| আল্লাহ্ অনুগ্রহকারীদেরকে ভালবাসেন|(২:১৯৫)"
ইংরেজিতে, " And spend of your substance in the cause of Allah, and make not your own hands contribute to (your) destruction; but do good; for Allah loveth those who do good."
এখানে যতোদূর বুঝলাম অতিরিক্ত দানশীল হয়ে সর্বশান্ত হওয়ার ব্যাপারে বলা হয়েছে, ধুমপান, মদ্যপান বা অন্য কোনো 'কু'-অভ্যাসের ফলে নিজেকে ধংসের ব্যাপারে কিছু এই আয়াতে নাই।
(যাহোক, এটা আমার বুঝ, কোরআনের কোনো ব্যাখ্যা দরকার হয় না, যার মতো সে বুঝলেই হলো।)
তবে আমাদের মুসলিম স্কলাররা হলেন আল্লাহর বাপ! তারা যা বলবেন, সেটাই সই। তাদের মতে, ধুমপান আগে 'মাকরূহ ছিলো, এখন হারাম, (ভবিষ্যতে কি হবে তারাই জানেন )'।
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
আমি যদ্দুর জানি, ধূমপান হারাম, তবে কোরানে এটাকে ধাপে ধাপে হারাম করা হয়েছে। যেহেতু অনেক সাহাবীর এই অভ্যাস ছিল, তাই প্রথম ধাপে খালি নিরুৎসাহ দেওয়া হয়েছে, পরের ধাপে মুখে গন্ধ নিয়ে নামাজ পরা নিষিদ্ধ করা হয়েছে, যেন অন্য নামাজীদের সমস্যা না হয়, শেষ ধাপে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সুতরাং কোরানে প্রতিটি ধাপই থাকতে পারে। এই ব্যাখ্যাটা যদ্দুর মনে পড়ে গোলাম মোস্তফার বিশ্বনবী বইয়ে ছিল, হাতের কাছে নেই তাই চেক করে দিতে পারছি না। আর ধূমপানের বদলে মদ্যপানও হতে পারে।
___________________
রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি
___________________
রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি
আমার কথা হল আমি জবাই করা মাংস খেলে জগত সংসারের কি ক্ষতি, আর আমারই বা কি ক্ষতি?
যদি কেউ রাম শাম যদু মধুর নামে জবাই করে আর আমি যদি সেইটা খাই সেটাকে হারামের ( যার পরিনাম ব্যপক শাস্তি!!) পর্যায়ে ফেলার কি আছে সেটাও আমার মাথায় ঢোকেনা। আর জবাই বাধ্যবাধকতার এর ক্ষেত্রে কেন মাছ বা অন্যদেরকে আমালে নেয়া হলনা সেটাও মাথায় ঢোকেনা।
meghladin@gmail.com
প্রানীর শরীরের সব রক্তবিন্দু বের করে দেয়ার জন্যই জবাই করার বাধ্যবাধকতা। রক্তই হচ্ছে রোগ-জীবানুর বাহক, তাই রক্ত বের করে দেওয়াটাই হচ্ছে মূল উদ্দেশ্য!
==========================
একটাই কমতি ছিল তাজমহলে,
......তোমার ছবিটি লাগিয়ে দিলাম!
==========================
একটাই কমতি ছিল তাজমহলে,
......তোমার ছবিটি লাগিয়ে দিলাম!
প্রাণীর শরীরের সব রক্তবিন্দু জবাই করলেও বেরিয়ে যায় না, তবে অনেকখানি বেরিয়ে যায়। মাংসের ভেতরে কিছু রক্ত থেকে যায়। সব রক্ত বের হয়ে গেলে সেটার ওয়ালমার্টে পাওয়া মাংসের মতই ঘাসঘাস লাগবে।
==========================
আবার তোরা মানুষ হ!
==========================
আবার তোরা মানুষ হ!
রক্ত বের করে দিলেই রোগ জীবানু শেষ? কোন সময়ে বাস করেন হে?
====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির
হাহাহাহা......এটা আমার কথা না, শোনা কথা! হুবুহু প্রশ্নটা আমিও করাতে তখন আমাকে কেউ একজন বুঝিয়ে দিয়েছিল! আমি সুবোধ বালকের মতই মেনে নিয়েছিলাম!
যাই হোক, তাহলে রক্ত বের করে দেবার মাজেজাটা কি?
==========================
একটাই কমতি ছিল তাজমহলে,
......তোমার ছবিটি লাগিয়ে দিলাম!
==========================
একটাই কমতি ছিল তাজমহলে,
......তোমার ছবিটি লাগিয়ে দিলাম!
একদম এই কথাটাই আমিও বলি। আমার নিজের মনে হয়, খাওয়ার যোগ্য যেকোন কিছুই খাওয়া যায়।
জবাই করার পেছনে যে যুক্তি সেটা হল, রক্তটা যেন বেরিয়ে যায়। ওয়ালমার্টের মাংস সম্বন্ধে যদ্দুর জানি, গরু গুলি করে মেরে তারপর রক্ত ড্রেইন করে মাংস ভালমত ধুয়ে তারপর বেচে। প্রথম প্রথম মাংস খেলে তাই মনে হত ঘাস খাচ্ছি, কারণ, রক্ত-চর্বি কিছুই নাই। পরে এক অ্যা্রাবিয়ান দোকান থেকে আড়াইগুণ দামে "হালাল" মাংস কিনে যখন আমার স্ত্রীর মুখ থেকে আস্ত বুলেট বের হল, ঠিক করলাম ওয়ালমার্টই ভাল।
ছোটবেলায় ঈদে গরু জবাই খুব আনন্দের সাথে দেখতাম। একটু বড় হলে জবাইয়ের সময় এবং পরপর প্রাণীটার যন্ত্রণায় পা ছোড়াছুড়ি আর ঘড়ঘড় শব্দ, আর মাঝেমাঝে চোখ দিয়ে পানি গড়িয়ে পড়া দেখে ঠিক করলাম, আর জবাই করা দেখব না। শুনেছি, কসাইখানাগুলোতে মাথায় গুলি করে গরু মারা হয়। আমার ওয়ালমার্টের মাংস খাওয়ার পেছনে আরেকটা কারণ যোগ হল তারপরে।
শূকরের মাংস হারাম কেন এইটার কোনও সদুত্তর পাইনি এখনও (কেউ কি দিতে পারবেন?)। নানানরকম রোগের কথা শুনি, জীবাণুর কথা শুনি, যেগুলার প্রায় একই ফ্যামিলির রোগজীবাণু গরুর মাংসেও থাকে, ভালমত রান্না না করে গরু খাওয়ার জন্য আফ্রিকায় একবার চোখের কৃমির প্রকোপ বেড়েছিল যদ্দুর মনে পড়ে। সাম্প্রতিক সোয়াইন ফ্লুর প্রকোপ দেখা দেওয়ার পরে অনেকে বলা শুরু করল, "হুম, হুম, বুঝে দেখ, কেন শূকর খাওয়া হারাম, আল্লাহর গজব নাযিল হয়েছে।" আমি মুচকি হেসে তাদেরকে বাংলাদেশের বার্ড ফ্লুর কথা মনে করিয়ে দেই, তারপর তারা আর কিছু বলার খুঁজে পায়না। এখানে এসে স্বাস্থ্যসচেতন চৈনিকদের শূকর খাওয়ার অভ্যাস থেকে এখন আমি আরো কনফিউজড।
ঠিকমত রান্না করা যেকোন কিছুই আমি চেষ্টা করে দেখি। অবশ্যই আগে জেনে নেই, জিনিসটা কি, যেমন, তেলাপোকা নিশ্চয়ই খাব না, হারাম-হালাল ইস্যুর কথা জানিনা, আমার ঘেন্না লাগে, তাই। মুখে দিয়ে উপাদেয় মনে হলে খাই, না হলে বলি, "নো, থ্যাঙ্কস।"
==========================
আবার তোরা মানুষ হ!
==========================
আবার তোরা মানুষ হ!
ওল্ড টেস্টামেন্টে মনে হয় খুব কাছাকাছি যুক্তি আছে এই ভরসায় লিখছি। শুকর নাকি হাতির পুরিষ থেকে সৃষ্ট নোংরা প্রাণী তাই বিধিনিষেধ। আমার ব্যক্তিগত ধারনা, শুয়োরের মাংসে যে টিনিয়াসোলিয়াম ব্যাক্টিরিয়া (টেপওয়ার্ম) থাকে তা খেয়ে মানুষ হয়তো প্রায়শই অসুস্থ হত তাই এই নিষেধাজ্ঞা।
"ছুটলে কথা থামায় কে/আজকে ঠেকায় আমায় কে"
ছুটলে কথা থামায় কে/আজকে ঠেকায় আমায় কে
শূকর হাতির গু থেকে কেমনে হলো বুঝতে পারছি না।
শূকরের মাংস খেয়ে এই অসুখ হত আগে, যখন মাংসের প্রসেসিং এখনকার মত ছিল না। এখন যুগ বদলেছে, মানুষের জ্ঞান বেড়েছে। আর একইরকম জীবাণু আমরা যেগুলো খাই, তার মধ্যেও থাকবে যদি ভালমত ধোয়া না হয়, প্রসেস করা না হয়।
==========================
আবার তোরা মানুষ হ!
==========================
আবার তোরা মানুষ হ!
শূকরের পরিপাকতন্ত্রের সাথে মানুষের পরিপাকতন্ত্রের খুব সাদৃশ্য আছে। এটা প্রাচীন ইহুদি ড়্যাবাইরা লক্ষ করেছিলেন। তাঁদের ধারণা হয়, শূকর যেসব রোগে আক্রান্ত হতে পারে, শূকরের মাংস খেলে সেক্ষেত্রে একই রোগ মানুষেরও হতে পারে, যেহেতু পরিপাকতন্ত্র একই রকমের। তারা সে কারণে শূকরের মাংস খাওয়া নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। পরবর্তীতে সেটি ইসলাম ধর্মেও বাহিত হতে দেখা যায়। এই ধারণাটা একেবারে অমূলক না হলেও কিছুটা মিসলিডিং। কারণ শুধু শূকর নয়, যে কোনো প্রাণীর মাংস থেকেই রোগজীবাণু মানুষের শরীরে আসতে পারে, যদি সেটা ঠিকমতো পরিষ্কার করা না হয়। গরুর মাংস থেকে ম্যাড কাউ ডিজিজ, শূকর থেকে সোয়াইন ফ্লু, পাখি থেকে বার্ড ফ্লু ... অণুজীবের জগতটা অন্যরকম।
শূকর আর গরু থেকে দীর্ঘদিন কিন্তু ইনসুলিন নেয়া হয়েছে মানুষের চিকিৎসার জন্যে। শূকরের ইনসুলিনের সাথে মানুষের ইনসুলিনের পার্থক্য একটা অ্যামাইনো এসিডে, গরুর সাথে তিনটায়। মানুষের শরীর একটা অ্যান্টিবডি তৈরি করে এগুলোর বিরুদ্ধে, এ কারণে এখন ব্যাকটেরিয়ার জিনে সামান্য পরিবর্তন করে ইনসুলিন কালচার করা হয়।
যে কোনো টাবুর পেছনেই একটা সামাজিক বা অর্থনৈতিক কারণ থাকে। হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা গোমাংস ভক্ষণ করে না কয়েক হাজার বছর ধরে, কিন্তু আর্যরা পশুপালক ছিলো, তারা গরু নিয়মিতই খেতো [অতিথি শব্দের একটা প্রতিশব্দ ছিলো "গোঘ্ন", যার আগমন উপলক্ষে গরু হনন করা হয়]। যখন পশুপালন থেকে প্রাচীন ভারত কৃষির দিকে বহুলাংশে ঝুঁকে পড়ে, তখন গরু হয়ে ওঠে সম্পদের প্রতীক, যে দুধ দেয়, হালচাষে বল যোগায়, ভারবহনের জন্যে গাড়ি টানে। গরু তখন আর কেবল খাদ্য নয়। গরু হত্যার ওপরে একটা টাবু আরোপিত হয়, যা একটি ধর্মীয় আচারে পরিণত হয়েছে। শূকরের ব্যাপারটাও অনেকটা এমনই। ইসলাম ধর্মে ঠিক কোন সময়টায় শূকরমাংস নিষিদ্ধ হয়েছে, সেটা জানা গেলে এর সামাজিক কারণটাও জানা যাবে।
নতুন একটা সিস্টেম সবসময়ই কিছু টাবু আরোপ করে পুরনো সিস্টেম বা প্রতিদ্বন্দ্বী সিস্টেম থেকে নিজেকে পৃথক করে। সময়ের সাথে এই টাবুগুলো কিছু রয়ে যায়, কিছু মুছে যায়, কিছু পরিবর্তিত হয়। কেউ যদি খুব কঠোরভাবে প্রাচীন টাবুগুলি মেনে চলেন, আমার কোনো সমস্যা নেই। তবে সেগুলো ব্যক্তিগত চর্চায় সীমাবদ্ধ রাখতে পারলে সবার জন্যে স্বস্তিকর হয় ব্যাপারটা।
আমার মনে হয় শুকর খওয়ার ব্যাপারে মুসলিমদের নিষেধাজ্ঞা বা স্পেনীয় খ্রীষ্টানদের অতি মাত্রায় শূয়োর খাওয়ার পেছনে হয়তো ক্রুসেডের ভূমিকা ছিল। ভোজন-নৃতত্বে আমার সীমিত কেতাবী জ্ঞানে দেখেছি স্পেন এবং পশ্চিম বিশ্বে শূয়োর খাওয়া মধ্যযুগে ক্রমশই বেড়েছে। হিন্দুদের গো-ভক্ষণে নিষেধাজ্ঞা বিষয়ে হিমু যে কারনগুলি দেখিয়েছেন তা ছাড়াও আমার মনে হয় সামাজিক কারণ ছিল এই যে "ওদের" (মুসলিমদের বা পরে খ্রীষ্টানদের) খাবার আমরা খাই তো না-ই বরং পূজো করি। এই গোঁড়ামি ক্রমশ বেড়েছে। কয়েকজন গোঁড়া হিন্দু "রামায়ণ-বিদ" এই কারণে বলেন রামায়ণে নাকি কোত্থাও লেখা নেই রাম-সীতারা মাংস খেতেন, তাঁরা নাকি ফলমূল ভোজী ছিলেন :-)। আগে আমি এ নিয়ে গুচ্ছ তর্ক করতাম, আজকাল অজমূর্খদের সাথে আর তর্ক করি না, বেকার সময় নষ্ট হয়।
-------------------------------------
------------------------------------
"ছুটলে কথা থামায় কে/আজকে ঠেকায় আমায় কে"
ছুটলে কথা থামায় কে/আজকে ঠেকায় আমায় কে
উইকি ঘেটে জানলাম যে শূকরের মাংস unclean ধরা হয়, কারণ তারা সর্বভূক, সামনে যা পায় তাই খায়, এর মধ্যে মরা প্রাণীর মাংস, ক্ষুধা মাত্রা ছাড়ালে নিজের বাচ্চাও আছে। শূকরের এই খাদ্যাভাসের কারণে অনেক আগে থেকেই শূকরের মাংসের প্রতি মানুষের একটা ঘৃণা আছে মনে করা হয়, যেমন ধরেন, তেলাপোকা বা ইদুরের মাংস দেখলে আমরা নাক সিটকাবো। কিন্তু এই যুক্তি খাটে বন্য শূকরের বেলায়। গৃহপালিত শূকরকে কেউ মরা শূকর বা এমন কিছু খাওয়াবে না।
মার্ভিন হ্যারিস নামে এক নৃতত্ত্ববিদের কথা দেখলাম। ইনি বলছেন -
১) শূকরের জন্য লাগে আর্দ্র আবহাওয়া, লাগে ছায়াওয়ালা জায়গা, যেখানে ইসরায়েল এবং মধ্যপ্রাচ্যের আবহাওয়া শুষ্ক আর গরম। শূকরের গা ঠান্ডা রাখার জন্য প্রচুর পানি দরকার হয়।
২) শূকরের চরে খাওয়ার মত ঘাসজাতীয় জিনিস ঐ এলাকায় নাই। তাই তার বদলে এক খাওয়াতে হত শস্য, যেটা মানুষেরও খাদ্য। এককথায় একই খাবার নিয়ে মানুষ আর তার গৃহপালিত পশু দুইটার মধ্যে মারামারি।
এইসব কারণে ঐ এলাকায় শূকরপালনে লাভের থেকে ক্ষতি অনেক বেশি এবং সে কারণে শূকর খাওয়ার অভ্যাসও কম বা নাই। আর মরা প্রাণী খাওয়ার জন্যে ঘেন্না তো আছেই।
ইহুদীদের কোশার (kosher) খাবারের সংজ্ঞায় বলা, তৃণভোজী আর জাবর কাটে এমন আর সাথে ভাগ হওয়া ক্ষুর আছে এমন প্রাণী কোশার। শূকর দ্বিতীয় ক্রাইটেরিয়া পূরণ করলেও জাবর কাটে না। জাবর না কাটলে ঘাসের সেলুলোজ পুরোপুরি ভাঙ্গেনা।
আরো কয়েকটি উইকি লিংক দেই।
http://en.wikipedia.org/wiki/Taboo_food_and_drink
http://en.wikipedia.org/wiki/Unclean_animals
==========================
আবার তোরা মানুষ হ!
==========================
আবার তোরা মানুষ হ!
"উইকি ঘেটে জানলাম যে শূকরের মাংস unclean ধরা হয়, কারণ তারা সর্বভূক, সামনে যা পায় তাই খায়, এর মধ্যে মরা প্রাণীর মাংস, ক্ষুধা মাত্রা ছাড়ালে নিজের বাচ্চাও আছে। শূকরের এই খাদ্যাভাসের কারণে অনেক আগে থেকেই শূকরের মাংসের প্রতি মানুষের একটা ঘৃণা আছে মনে করা হয়, যেমন ধরেন, তেলাপোকা বা ইদুরের মাংস দেখলে আমরা নাক সিটকাবো। "
পল্লব এই যুক্তি কিন্তু বোয়াল, মাগুর, কৈ এবং আরো অনেক প্রিয় মাছের ক্ষেত্রেও সত্য। কিন্তু মাছের বেলায় আমরা বাঙালীরা ক্ষমা-টমা করে দি তাই না ? আপনার লেখাটা খুব-ই তথ্যসমৃদ্ধ। ধন্যবাদ।
--------------------------------
"ছুটলে কথা থামায় কে/আজকে ঠেকায় আমায় কে"
ছুটলে কথা থামায় কে/আজকে ঠেকায় আমায় কে
আরে, কৃষিবিজ্ঞানে পড়েছিলাম মাছের খাবারে মুরগীর বিষ্ঠা দেওয়ার কথা।
বুঝেন না? খোড়া যুক্তি দরকারমত খাটাতে হয়।
==========================
আবার তোরা মানুষ হ!
==========================
আবার তোরা মানুষ হ!
টাবুর উপর ভৌগোলিক কারণ থাকতে পারে।
আমার নানা একটা ইন্টারেস্টিং প্রবন্ধ লিখেছিলেন, টাইটেল ছিল "ভূগোল ও ভগবান"। আমাদের ধর্মটা মধ্যপ্রাচ্য থেকে আসা বলে আমরা পশুর হালাল-হারাম নিয়ে মাথা ঘামাই, মাছ নিয়ে নিশ্চিন্ত। তেমনি আমাদের কাছে স্বর্গ মোটামুটি সেন্ট্রাল এসি করা জায়গা। আরবদের পছন্দসই "হুরপরী"ও আছে সেখানে।
গ্রীনল্যান্ড থেকে আগত ধর্মে মাছের উপর অনেক নিষেধ থাকবে, পশু ভক্ষণ অনেক সোজা হবে। স্বর্গ হবে সেন্টালি হিটেড জায়গা। ধর্মের রিচ্যুয়ালগুলো অনেকখানিই স্থানীয়।
বাংলাদেশে নির্মিত হলে ধর্মে "চুরি, চামারী, হল দখল, এসিড মারা" খুব বড় অপরাধ হবে না, প্রকাশ্যে চুম্বন ভয়াবহ অপরাধ হতে পারে।
তেমনি মার্কিন দেশে তৈরি ধর্মে দেশ দখল জায়েজ হলেও গর্ভপাত...কোনদিনও না।
++++++++++++++
ভাষা হোক উন্মুক্ত
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
হাহাহাহা! কঠিন যুক্তি!
==========================
আবার তোরা মানুষ হ!
==========================
আবার তোরা মানুষ হ!
আমার ব্যাখ্যাও এরকম, আমার বাবাও তাই বলেন।
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
আমি দেখতে চাই না বন্ধু তুমি
কতখানি হিন্দু আর কতখানি মুসলমান
আমি দেখতে চাই তুমি কতখানি মানুষ।
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
আমি দেখতে চাই না বন্ধু তুমি
কতখানি হিন্দু আর কতখানি মুসলমান
আমি দেখতে চাই তুমি কতখানি মানুষ।
হিন্দুদের গরু না খাওয়ার ফতোয়া আসে নেপালের রাজার কাছ থেকে। তখন এত গরু খাওয়া হতো যে, একটা সময় দেখা গেল খোদ চাষবাসের জন্য গরু পাওয়া যাচ্ছে না। তখন ব্যাপারটাকে সামাল দেওয়ার জন্য নেপাল রাজদরবার থেকে এই আদেশ জারি করা হয় যা পরবর্তী সময়ে ধর্মের আওতায় চলে আসে।
রেফারেন্স দেওয়ার জন্য এই মুহূর্তে বইটা হাতের কাছে নাই। বিস্তারিত পাবেন 'হিন্দুদের দেব-দেবীর উৎপত্তির রহস্য' বইতে।
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
শিক্ষাবিষয়ক সাইট ::: ফেসবুক
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
এই কাহিনী সত্য হলে ইরাক যুদ্ধের থেকে বেশি গুলি প্রতিদিন লাগার কথা । শোনা কথা ছাড়া কোন সোর্স আছে যে গুরু বাছুর গাভি শুওর গুলি করে মারে ?
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
এইটা একদম উড়াউড়া আসে নাই তো ভাই। আমাদের এলাকায় প্রায়ই কয়েকজন বাংলাদেশি মিলে স্থানীয় কসাইখানায় গরু কিনে জবাই করিয়ে মাংস ভাগ করে নেই। যারা হালাল খুঁজে তারা তো আছেই, আর আমরা বাকিরা আছি, কারণ ওয়ালমার্টের থেকে হিসাবে দাম কম পড়ে, আর নিজেরা বলে একটু চর্বি-হাড্ডি রেখে দেওয়া যায়, যাতে একদম ঘাস খাওয়ার মত না লাগে। সেখান থেকে দেখে আসা বলেই একথা বলা। আর বললামই তো, আমরা নিজেরাই আরব দোকানের হালাল মাংস খেতে গিয়ে বুলেট পেয়েছি।
==========================
আবার তোরা মানুষ হ!
==========================
আবার তোরা মানুষ হ!
এইটা হলো একটা মাংস প্রসেস করার কারখানা । আগ্রহীরা দেখতে পারেন ।
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
প্রিভিউ দেখেই আর ভেতরে ঢুকতে পারলাম না। ছোটোবেলায় কুরবানির সময় ঠেলে পাঠাতো দেখতে। কখনো মজা পাইনি। এখন তো কুরবানির দিন ঘর থেকেই বের হই না।
_____________________
আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।
হুমম। জ্ঞান অর্জন হল। আমি যেটার কথা বলছি, সেটা বেশ ছোট স্লটারহাউজ। সব জায়গার সিস্টেম এক নাও হতে পারে। এইখানে যেমন দেখলাম, মাথায় পেরেক ঠুকে দিল মনে হল। এটাও পড়েছিলাম একটা সাইটে।
==========================
আবার তোরা মানুষ হ!
==========================
আবার তোরা মানুষ হ!
কুরআন + আমার ব্যাখ্যা= আমার ব্যাখ্যা
কুরআন + তথাকথিত স্কলারদের ব্যাখ্যা = ইসলামের বিকৃতি
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
মুখে রুচলে, ভালো লাগলে আমি এটা-সেটা ঠিকই খাই।
==============================
হা-তে এ-ক প্র-স্থ জো-ছ-না পা-ড়ে-র ঘ্রা-ণ
আলোকবাজি
==============================
হা-তে এ-ক প্র-স্থ জো-ছ-না পা-ড়ে-র ঘ্রা-ণ
খোমাখাতা
আল্লাহ বা ঈশ্বর আমাকে কিছুই বলে দেন নি, কাজেই শুকর গরু সব খাই। কে কোন বই-তে কি লিখে গেছে সে সব মিলিয়ে খেতে গেলে ফুটপাথ-এর স্টল থেকে আর চিকেন রোল খেতে হত না - কে জানে সেই চিকেন properly উত্সর্গ করা হয়েছে কি না!
কাফের হয়ে ভাল মন্দ খাওআই ভাল - পুরোনো বই পত্র ইতিহাস জানার জন্যেই ঠিক আছে, guide book হিসেবে নয়।
পানীয়ের ব্যাপারে হারাম-হালাল সংক্রান্ত কী বলা আছে?
বেশ তথ্য সমৃদ্ধ ! বিদেশে অনেকের অনেক মত, কেউ ম্যাক চিকেন খায় কেউ খায় না। আমি মনে করি এটা ধর্মের প্রতি কার কতখানি জোর তার সাথে রিলেটেড। যে যত বেশি ধারমিক সে হালাল এর তত কঠিন ব্যাখ্যা মেনে চলে। হমমম, ঠিক আছে। কিনতু কেউ আছে নামায রোজার বেলায় ঠিক নাই, কিনতু হালাল হারাম নিয়ে তুলকালাম। ৫০ কিমি দুর থেকে হালাল মাংস কিনে আনবে, কিনতু ২ কিমি দুরে মসজিদে জুমমা পড়তে যাবে না।এই হল আমাদের অবসথা।
আমার আম্মু শুয়োর খেতে মানা করেছে, তাই খাই না... কিন্তু অন্য মাংসের ব্যাপারে তো কিছু বলে নাই
কী লক্ষ্মী ছেলে গো!
_____________________
আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।
আইচ্ছা মদ খাওয়া কি হারাম ? না কি মদ খেয়ে মাতাল হওয়াটাই খালি নিষিদ্ধ ?
নেশা হয় এমন জিনিস হারাম। মদ সেই ক্যাটেগরিতে পড়ে। স্কুলে ধর্মস্যারকে জিগেস করেছিলাম (ইনি একটু চিন্তাবিদ ছিলেন ) যে টিভিতে দেখেছি, ঠান্ডায় জমে যাওয়া মানুষকে গা গরম করার জন্য ব্র্যান্ডি ইত্যাদি দেওয়া হচ্ছে, সেটা কী হবে? স্যার বলেছিলেন, ঐটা খেয়ে তো আর ঐ লোক নেশা করছে না, বরং ঐ অবস্থায় ঐটুক মদ খাওয়া তার প্রয়োজন, এখানে হারাম-হালালের তর্ক আসে না।
মূল লেখাতেও মনে হয় কয়েকটা আয়াতে দেখলাম নিরুপায়, প্রয়োজন এসবের কথা বলা।
কয়েকদিন আগে লার্নার্স পারমিটের পরীক্ষা দিলাম, সেখানে পড়লাম এক শট মদ খেলে এক ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হবে স্টিয়ারিং হুইলের পিছনে বসার আগে, ঐ এক শট মদের এফেক্ট ততক্ষণ থাকে।
আমার নিজের মত, মাথা ঘুরাইলে থাক, খায়াম না, এমনে স্বাদ খারাপ না হলে এক চুমুক, কিন্তু আমি স্বাদ ভাল পাইনাই। অনেকে বলে, খাইতে থাকলে অভ্যাস হইলে একসময় আর স্বাদ খারাপ লাগে না, কিন্তু একটা খাবার আমার অভ্যাস করে ভাল লাগানোর ইচ্ছা নাই।
==========================
আবার তোরা মানুষ হ!
==========================
আবার তোরা মানুষ হ!
আমার এক প্রবাসী বন্ধুকে দেখেছি, ম্যাক চিকেন বা এই জাতীয় খাবার গ্রহণের আগে সে "আল্লাহু আকবার" বলে হাতের ঈশারায় চিকেন উইংসটিকে জবেহ করার ভঙ্গি করে হালাল করে নেয়! no kidding, একদম সত্যি বলছি!
হাহাহাহাহা!
আমার এখানে একটা মোল্লা ফ্যামিলি আছে। ভাইয়া চাকরি করে ভাল, বাড়ি আছে, দুইখান গাড়ি আছে। ভাবী আমার বউকে "মুসলিম সিস্টারস সামথিং" থেকে আমাদেরকে ধর্ম নিয়ে নানান মেইল পাঠায় মাঝেমাঝে। পাব্লিক প্রোগ্রামের জন্য স্টুডেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের ফান্ডের পয়সা খরচ করিয়ে আড়াইগুণ দামের "হালাল মাংস" কেনায়। মাংস কেনা হয় সেই দোকান থেকে যেখান থেকে "হালাল" ট্যাগ মারা মাংস কিনে আমি আর টিউলিপ মুখে বুলেট পেয়েছি। চিন্তা করছি আপনার কথাটা তাদের মেইল করে দিব। কম খরচে মাংস কিনে বিনামূল্যে হালাল করে নেয়া যায়
==========================
আবার তোরা মানুষ হ!
==========================
আবার তোরা মানুষ হ!
"ওমা উহিল্লা লিগয়রিল্লাহি বিহি" (৫:৩)
"ওমা উহিল্লা বিহি লিগয়রিল্লাহ" (২:১৭৩)
যেগুলোর মানুষের সুবিধার্থে অনুবাদ করা হয়েছে, 'আল্লাহ ছাড়া (গয়রিল্লা) অন্য কারো নামে'।
কিন্তু আরবি জানে এরকম কাউকে জিজ্ঞাসা করে দেখেন, এর শাব্দিক অনুবাদ হচ্ছে, 'আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো জন্য'...
লি অর্থ 'জন্য',
'লিগয়রিল্লাহ' হচ্ছে 'আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো জন্য'।
যদি হাদীস আর 'আল্লাহর বাপ' আলেমদের বাদ দিয়ে ইসলামকে বুঝতে হয়, তাহলে তো ব্যপারটা আরও কঠিন হয়ে গেল... আপনাকে কেএফসি খাওয়ার আগে গিয়ে জিজ্ঞাসা করতে হবে, মুরগি জবাইটা কি অর্থনৈতিক লাভের 'জন্য' ছিল, নাকি আল্লাহর 'জন্য' ছিল।
এবং তারপরে নিজেদের উঠানে নিজের হাতে জবাই করে খাওয়া ছাড়া হালাল খাওয়ার উপায় দেখছি না। কারণ কে কি 'জন্য' জবাই করছে, তার কোন গ্যারান্টিই আপনি কোন কালেই পাবেন না।
উপরের একটা মন্তব্যে "ভূগোল ও ভগবান" লেখাটার কথা বলেছি। আশ্চর্য ব্যাপার, দেখা গেল ইন্টারনেটে আছে অতি পুরানো এই লেখাটা।
কিছুটা রিলেভেন্ট বলে আগ্রহীদের জন্য লিঙ্ক দিলাম।
++++++++++++++
ভাষা হোক উন্মুক্ত
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
ধন্যবাদ বলাই, এটা লিখবার জন্য। যারা খাঁটি মুসলমান(??) ইহুদি, নাসারা, খেরেস্তানদের দেশে (?) থাকে। তাদের দ্বারা এই হারাম/হালালের জ্বালায় আমদের কী পরিমাণ জ্বলতে হয়, তা' লিখতে গেলে মহাভারত হয়ে যাবে। এটা পড়া শেষ করেই আমাদের 'হালাকা পার্টির' আমির ও তার চেলাদেরকে লিংটা ইমেল করলাম। উহঃ কী যে শান্তি পেলাম!
জুবায়ের বলতো, "এখানে আমরা হালাল কামাই। এই হালাল কামাই দিয়ে যা কিনে খাবো, সবই হালাল।"
@ হাসিব
ধন্যবাদ এটা শেয়ার করবার জন্য। এই রকমই একটা জায়গায় আমি একবার গিয়েছিলাম। ওটা ছিলো মুসলমানদের কসাইখানা। পার্থক্য শুধু এইটুকু-- ইলেকট্টিক শক দেবার ডিভাইসটা চাপ্টামতো ওতে আল্লাহ আকবর লেখা আর একজন কলো মুসলিম শকটা দিচ্ছিলো।
--------------------------------------------------------------------------------
নিউ ইয়র্ক শহরে "বায়তুল হালাল" নামে একটা প্রতিষ্ঠান আছে। এই প্রতিষ্ঠানটি কুইন্স ও ব্রুকলীনের অনেকগুলো বাঙ্গালী দোকানে হালাল মুরগী, খাসি ইত্যাদি সাপ্লাই করে। আমি প্রতিষ্ঠানটির মালিক সোহেল ভাইয়ের বাড়িতে ভাড়া থাকতাম।
স্বল্পশিক্ষিত সোহেল ভাই চমৎকার স্প্যানিশ বলেন। তার প্রতিষ্ঠানের অধিকাংশ কর্মচারীই স্প্যানিশ ভাষাভাষী।
সোহেল ভাই একদিন আমাদের মুরগী জবাই সম্পর্কে বলছিলেন। তার দোকানের হিস্পানিক কর্মচারীরা ক্যাসেট প্লেয়ারে কোরান তিলাওয়াৎ চালিয়ে দিয়ে একের পর এক মুরগী ধরে এক কোপে কল্লাটা ঘ্যাচাং! হয়ে গেল হালাল মুরগী!
"গোপনে যে বেশ্যার ভাত খায়,
তাতে ধর্মের কি ক্ষতি হয়।
লালন বলে জাত কারে কয়
এ ভ্রম তো গেল না।।"
আমার মোটা মাথায় এখনও হারাম, হালাল বা জাতের ধারণা ঠিক আয়ত্ব করতে পারি নাই; কি আর করার!
এই বিশ্লেষনটির জন্য ধন্যবাদ। এভাবে আগে ভেবে দেখিনি।
আমি নিজেও এখন এই নীতিতে বিশ্বাসী। যেদিন থেকে এভাবে দেখতে শিখেছি, সেদিন থেকে আমাদের ধর্মপালনকে আর ভয়ংকর বা কষ্টসাধ্য মনে হয় না।
ব্যক্তিগতভাবে ধর্মীয় অনুশাসন খুব একটা পালন না করলেও, আপনার বর্ণিত আম-জনতার মত আমিও এই 'ইহুদি-নাসারা'দের দেশে খুব হালাল হারাম বেছে খাওয়া ধরেছি। নামাজ পরি না নিয়মিত, অথচ খাবার বেলায় বলি হারাম খেলে ইবাদৎ নষ্ট হবে! আমার কাছে যখন হালাল খাওয়া আছে, তখন কেন হারাম খেতে যাব? সেইফ থাকা আর কি। এখন নতুন ভাবে হালাল হারাম দেখার চেষ্টা করব। চেষ্টা করার কথা বলছি কারণ সংস্কার বা বিশ্বাস থেকে বের হয়ে আসা কিন্তু সহজ না।
কিঞ্চিত অটঃ আমি নিজেও আজকাল ধর্মীয় অনুশাসনের ব্যাপারে শুধু কোরানের রেফারেন্স খুজি। কিছুদিন আগে কোরবানীর বাধ্যবাধকতা নিয়ে খট্কা লাগার পর, কয়েক জনকে জিজ্ঞাসা করে জানলাম এটা কোরানে সবার জন্য (সামর্থ থাকলেও) ফরজ করা হয়নি, তবে আমি পুরোপুরি নিশ্চিত না এখনও। এব্যাপারে কেউ ভেবে দেখতে পারেন।
-লাবণ্য-
ফাহ_বেগম@ইয়াহু
আলোচনা ভাল লাগল। তবে আমি চাই এই হালাল-হারাম আরো কিছুদিন বেঁচে থাকুক। কারণ প্রিজার্ভার দেওয়া মাংসের জায়গায় টাটকা হালাল মাংস আমার অনেক বেশী ভাল লাগে আর দেড়গুণ দাম দিয়ে হলেও আমি তাই খাই। এখন মাংসের ব্যাপারে আমি হালাল ছাড়া আর কিছু খাই না ...
পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।
পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।
আমার কিছু জার্মান বন্ধুও এই তরিকায় বিশ্বাসী । ওরা তুর্কি দোকানের হালাল মাংস কিনে খায় । এখানে সুপারমার্কেট বা মেৎসগেরাই (কসাইখানা) থেকে তুর্কি দোকানের গরু/ভেড়ার মাংসের দাম কম । তবে দাম কম থাকলেও টাটকা জিনিস পাওয়া যায় । আমি ওখান থেকে মাংস (মুরগী বাদে) আর সসেজ কিনি । মেৎসগেরাইতে ঐ কোয়ালিটির জিনিস পাওয়া যায় কিন্তু দাম অনেক বেশী পড়ে ।
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
- আচ্ছা, নতুন কোনো আইন জানেন নাকি? গরুর মাংস এখন হাড্ডি সহ কিনতে পাওয়া যায় না। কয়েক বছরের পরিচিত মোস্তফার দোকান থেকে মাংস কিনি এখন। মাঝখানে বেশ লম্বা সময়ের জন্য ব্যাটা লা-পাত্তা হয়ে গিয়েছিলো বড় দোকান দিবে বলে। তো এই লম্বা সময়টাতে হাড্ডিঅলা বাছুরের মাংস পাওয়া গেলেও প্রাপ্ত বয়স্ক গরুর মাংস পাওয়া যায় নি। সুপারমার্কেট তো বটেই, কোনো তুর্কী দোকানেও পাই নি। কোথায় যেনো শুনেছিলাম, "দার্ফ মান নিশট!"
আজকে মোস্তফার দোকানে যখন কিনতে গেলাম, তার কর্মচারীও আমাকে একই কথা সাফ জানিয়ে দিলো, "হাড্ডিঅলা মাংস নাই, হুদা মাংস নিতে পারেন। নাইলে বাছুর জিন্দাবাদ"। অথচ এই ইস্টারের ব্রেকের সময়েই একই দোকান থেকে কিনে আনলাম। ফিরে আসবো এমন সময় মোস্তফা বের হলো ভেতর থেকে। আমাকে দেখে এগিয়ে এলো, আমি জিজ্ঞেস করলাম মাংস নেই কেনো! ও বললো, আছে তো! দাড়াও দিচ্ছি। কর্মচারীকেও আমাকে দেখিয়ে বললো, পরবর্তীতে মাংস চাইলে যেনো ফিরিয়ে না দেয়!
এই ঘটনাটার পর থেকেই মনে হচ্ছে কেবল, হাড্ডিঅলা মাংস খেয়ে আইন ভাঙছি নাকি জার্মানীর!?
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
আমি তো কিনলাম কাইলকা হাড্ডি সহ সিনার গোস্ত।
অজ্ঞাতবাস
অজ্ঞাতবাস
- কী জানি! আপনেরা আইছেন পরে একটা বড় তুর্কিশ সুপার মার্কেটে গেছিলাম মনে আছে? ঐটাতে হাড্ডিঅলা মাংস চাইছি পরে আমারে বাছুরের মাংস দেখায়া কৈছে গরু নাকি এ্যালাউড না!
আর আগে যেইসব দোকানে হর হামেশা হাড্ডিশুদ্ধা পাইতাম, ঐখানে খালি থকথকা মাংস পাওন যায়। হয় ঐগুলা কিনতে হয় নাইলে বাছুর বা ভেড়া খাইতে হয়!
একমাত্র মোস্তফাই দেখলাম হাড্ডি বেচে। কিন্তু কালকে অর কর্মচারীর ঐরকম ছুপছুপা খেলার কারণে আবার কেমন জানি পানসা লাগতাছে। কিছু না হৈলে তো ভালৈ!
আহেন, হাড্ডিঅলা প্যাকেট কৈরা থুইয়া দিছি।
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
পোষ্টটি মূল্যবান আর আলোচনাগুলোও বেশ উপভোগ্য। এধরণের আরেকটি লেখা ছবিসহ এখানে আছে, পড়ে দেখতে পারেন।
লেখাটা ভাল লাগল।
ইসলামকে আসলেই আমরা অনেক জটিল করে ফেলি অনেক সময়ে।
--------------------------------------------------------
--------------------------------------------------------
হারাম না হালাল?
...........................
Every Picture Tells a Story
- মকরূহ মনে হয়।
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
ছবিটা মনে হয় ঠিকমত আপলোড হয়নাই। দেখতে পাচ্ছিনা।
==========================
আবার তোরা মানুষ হ!
==========================
আবার তোরা মানুষ হ!
অচ্ছুত বলাইকে ধন্যবাদ ইসলামকে সরলিকরনের মহতি উদ্যোগ হাতে নেবার জন্য। আর বিশ্লেষনের চেষ্টা করাকেও সাধুবাদ জানাই। আমি কোরান বিশেষজ্ঞ নই। তবে একটা বিষয় লক্ষ্য করলাম আপনি আন'আম থেকে ১১৮-১১৯ উল্লেখ করেছেন আবার ১৪৫ উল্লেখ করেছেন। মাঝখানের অনেক আয়াতের সাথে ১২১ নম্বর আয়াতটি কি পড়েছিলেন? আমি মায়ারেফুল কোরান থেকে অনুবাদ উদ্ধৃত করছি,
৬:১২১ -"যেসব জন্তুর উপর আল্লাহর নাম উচ্চারিত হয়না সেগুলো থেকে ভক্ষন করো না, এ ভক্ষন করা গোনাহ। নিশ্চয় শয়তানরা তাদের বন্ধুদের প্রত্যাদেশ করে - যেন তারা তোমাদের সাথে তর্ক করে। যদি তোমরা তাদের আনুগত্য কর তোমরাও মুশরিক হয়ে যাবে।"
এর নিচে তাফসিরকারের ব্যখ্যা এরকম,
এখানে শব্দচয়ন থেকে আল্লাহর নাম নেয়া বলতে জবেহ করার সময়কে বুঝান হয়েছে। এক্ষেত্রে শব্দটির বিশ্লেষন করেছেন তাফসিরবিদ। আরবি শব্দ বলে উদ্ধৃত করতে পারছি না।
শব্দগুলি বিশ্লেষন করে সেখানে বলা হচ্ছে এখানে হালাল হবার শর্ত দু'টি - (মূল আয়াতেও এটা পরিষ্কার)
১) যবেহ করা
২) যবেহ করার সময় আল্লাহর নাম উচ্চারন করা।
মোদ্দাকথা হল ইসলাম বা অন্যকোন ধর্মে বিশ্বাস না করা অথবা হালাল-হারাম বেছে খাওয়া বা না খাওয়া যার যার ব্যক্তিগত পছন্দের ব্যপার। কিন্তু যে কোন জীবনাচরনকে ইসলামিক প্রমানের জন্য ইসলামের রীতিনীতিকে বিকৃত করার একটা প্রবৃত্তি অনেক ক্ষেত্রেই কাজ করে। এব্যপারে কিছুটা সাবধান থাকাই বোধ হয় ভাল।
ধন্যবাদ।
পুরা জিনিসটা তিন জায়গায় তিনভাবে না বলে এক জায়গায় লিখে দিলে কি সমস্যা ছিল বুঝলাম না...কোন পাগলে বলে ধর্ম সোজা
আপনার কথা শুনে বুঝতে পারছি আসলেই ইসলাম আরো সহজ হলে ভাল হত। আপনি একা না আমারো একই দশা। তবে সোজা কি সোজা না সেইটা আলাদা বিষয়। কিন্তু এই প্রসংগে বিজ্ঞানী আইনস্টাইনের বানী চিরন্তনী থেকে একটা বানি মনে পড়লঃ
"Everything should be made as simple as possible, but not simpler."
কোরান সংকলনের ইতিহাস পড়ে দেখতে পারেন। যদ্দুর পড়েছি, আমার মনে হয়েছে সব বিভিন্ন প্রেক্ষিতে বিভিন্ন সময়ে লেখা, সবগুলোর পেছনে একটা অভিন্ন ধারণার অস্তিত্ব ছিল না; যেমনটা আমরা মনে করি - যে বক্তব্য একটাই ছিল, গূঢ় করা হয়েছে ইচ্ছাকৃতভাবে। বরং মনে হয় যে, একটি সত্তা প্রায় বিশ বছরের ব্যাপ্তিতে সমাজ এবং জীবনকে বারবার বোঝার চেষ্টা করছে নিজের দৃষ্টিকোণ থেকে। ফলে কোনো বিষয় নিয়ে এই ব্যাপ্তির শুরুর দিকে সত্তাটির যে ধারণা ছিল, মাঝের বা শেষেরদিকের দর্শন তার থেকে বহুক্ষেত্রেই ভিন্ন।
আমাদেরও কাজ সেটাই। নিজেদের জীবনের ব্যাপ্তিতে নিজেদের জীবন ও সমাজকে অর্জিত অভিজ্ঞতার প্রেক্ষিতে বিচার বিবেচনা করার সুযোগ তৈরী করা। কোরান লেখকের বিবেচনা বা দর্শন তাঁকে যেভাবে সপ্তম শতকের আরবের সামাজিক প্রেক্ষাপট বুঝতে সাহায্য করেছিল, একবিংশ শতাব্দীর এই অতি-পরিবর্তিত পরিবেশে আমাদের পরিপার্শ্বের প্রেক্ষাপট বোঝার উপায়ও সেই একই - নিজের বিবেচনা ব্যবহার। সপ্তম শতাব্দীর কোনো বিবেচনার তুলনা সেটার সঠিক সমাধান হওয়া আবশ্যক নয়।
(মন্তব্য দেখি লগে লগে আহে )
স্কুলে ধর্মশিক্ষায় পড়েছিলাম, শরীয়াতের উৎস ৪টা - কুরআন, হাদীস, ইজমা (আলিমদের সমন্নিত সিদ্ধান্ত) আর কিয়াস (নিজের বিবেক)। ঠগের ভিড়ে ৩ নম্বরটা ব্যবহারের কোন উপায় পাইনা আর ৪ নম্বরটা কেউ এমনেই ব্যবহার করে না। সবাই খালি কিতাব খোঁজে।
==========================
আবার তোরা মানুষ হ!
==========================
আবার তোরা মানুষ হ!
একটি ভালো আয়াতকে উদ্ধৃত করেছেন। সবগুলো আয়াত একসূত্রে বাঁধা কিনা, বোঝার চেষ্টা করি।
(আমার পোস্টের উদ্দেশ্য কোরআনের ব্যাখ্যা না, ইসলামের সরলীকরণ-জটিলীকরণও না, আয়াতগুলো তুলে ধরে নিজে যা বুঝি সেটা লেখা। কোরআনের মাধ্যমে ইসলামের প্রকৃত নির্দেশকে পাওয়া গেলেই আমি খুশি।)
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
আলোচনা ভাল লাগল। এইভাবে সবকিছু জটিল করে তোলার কোনো অর্থ পাই না, কিছু লোকের স্বার্থসিদ্ধি ছাড়া।
কৌস্তুভ
সৈয়দ মুজতবা আলী জার্মানির বন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে খোজাদের ওপর পিএইচডি
করেন।
শুয়োর মাংসের এই মহামিলনস্থলে এসেই কি-না জানা যায় না, তিনি বলেছিলেন, "শাস্ত্রে বলা আছে, শূকরের মাংস খাওয়া হারাম। তবে, আমার পাপ মন বলে, না জেনে খেতে ভালোই লাগে।"
হিন্দুরা আগে ভয়ঙ্কর গোভক্ষক ছিলেন। যজুর্বেদের দুটি অংশের একটি কৃষ্ণপথব্রাহ্মণে বলা হচ্ছে, "ঘরে অতিথি এলে আশপাশ থেকে চারজন ব্রাহ্মণ ডেকে এনে গোমাংস দিয়ে পরিতৃপ্তিসহকারে তাদের ভোজন করাতে হবে।"
অশ্বমেধ যজ্ঞের মতো চালু ছিল গোমেধ যজ্ঞও, যেখানে গরু বলি দেওয়া হতো।
তান্ত্রিকদের মহাগ্রন্থ 'মহাতন্ত্রসার'-এ (সম্ভবত) বলা হচ্ছে, শিবের মুখ দিয়েই বলা হচ্ছে, আট রকমের মাংস বৈধ তন্ত্রসাধনায় ব্যবহারের জন্যে। তার মধ্যে প্রথমটিই গোমাংস।
মহাভারতের শান্তিপর্বে রন্তিদেব নামে এক রাজার কথা পাওয়া যায় যিনি প্রতিদিন এতো এতো চতুষ্পদ প্রাণী বধ করতেন ব্রাহ্মণ ও অন্যদের ভোজন করানোর জন্যে যে, ওই গবাদি পশুর নিঃসৃত চর্মের রস থেকে জন্ম নেয় 'চর্মন্বতী' নামে এক নদী, এখন যা পরিচিত 'চম্বল' নামে। তাঁর ভোজনসভায় ব্রাহ্মণেরা গোলযোগ করতেন, "ওহে, আমার পাতে মাংস কম পড়েছে, শুধুই হাড়, এদিকে আরো মাংস দাও'-এই বলে।
রামায়ণে উল্লেখ নেই সরাসরি গোমাংস ভক্ষণের, তবে তাঁরা মাংসভক্ষণ করতেন প্রচুর। মাংস না খেলে তাঁদের একদিনও চলতো না, অমাংসভোজন তাঁদের কাছে ছিল 'উপবাস'।
মহাভারতে কৃষ্ণ ও অর্জুনের এবং যাদব ও কৌরবদের মাংস ভক্ষণ ও মদ্যপানের (রমণীদেরও) প্রচুর উদাহরণ পাওয়া যায়।
সুতরাং, দীয়ত্যং ভোজ্যতাং...
---মহাস্থবির---
আনোয়ার-আল-আওলাকি এর একটি উক্তি মনে পড়ছে,
( সতর্কতাঃ আওলাকি যুক্তরাষ্ট্রে বর্তমানে তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী এবং প্রেসিডেন্ট ওবামা কর্তৃক কিছুদিন পূর্বে Assassinated হবার জন্য আদিষ্ট হয়েছেন। যাক তবে, ঘাবড়ে যাবার কারণ নেই )
"Do NOT Change Islam (to your convenience), Change Yourself!
We do NOT Custom-Make Islam to Serve us,
We follow Islam to FIT in it"
মহানবী ( সাঃ ) এর একটি হাদীস নিম্ন্ররূপ,
"আমার অনুসারীদের মধ্যে এমন একদল থাকবে যারা অবৈধ যৌন-সম্পর্ক এবং মদ্যপানকে বৈধ মনে করবে"
এ দুটো উক্তি পরিবেশনের অর্থ আলোচনা নিরুৎসাহিত করা নয়। খতিয়ে দেখা, তলিয়ে দেখা অবশ্যই জরুরী। আমার এই মন্তব্যে কোরান বা হাদিস থেকে সরাসরি উদ্ধৃত অংশগুলো বিনা দ্বিধায় ইসলাম। বাকি অংশ, বা বাকি কারো উদ্ধৃতি আসলেও ইসলাম কিনা সেটা পাঠকদের বিবেচনার বিষয়।
হালাল হারামের প্রসঙ্গটিতে যাবার আগে একটু বলি যে আগের মূল পোস্টে , "আমি যতদূর বুঝি", "আমার পড়ে মনে হল" ---- ইত্যাদি বাক্যাংশ চোখে পড়লো।
ব্লগার "অছ্যুৎ বলাই" নিজের বিচার-বুদ্ধি দিয়ে এই যে বিশ্লেষণ করছেন -- এটাই তাফসীর---- Exegesis বা ব্যাখ্যা । এই একই ব্যাখ্যার প্রয়াস হাজার বছর ধরে বহু লোকে করেছেন... ১২০০ সালে ফাখর-আল-দ্বীন-আল-রাজি করেছেন , ১৩০০ সালে ইবন খাতির করেছেন। ... পার্থক্য হল যে, আপনার এই বিশ্লেষণটি হঠাৎ উঁকি দেয়া একটা চিন্তা, কাজের ফাঁকে চট করে লিখে ফেলা ব্লগ, আর তাদের ক্ষেত্রে এই বিশ্লেষণই ছিল 'জীবন' / 'নেশা' / ধ্যান / স্বপ্ন ------ 'স-ব'।
হালাল-হারাম মানার ব্যাপারে মুমিন-দের দার্শনিক বনাম বৈজ্ঞানিক ভিত্তি
একজন মুসলমানের ( মানে একজন বিশ্বাসীর ) জন্য পুরো ব্যাপারটা খুবই সোজা -সাপটা!
-- কেন শূকরের মাংস খাওনা ?
-- কারণ নবী মানা করেছেন।
-- কেন শূকরের মাংস খাওনা ?
-- কারণ বিশ্ব-ব্রক্ষ্মান্ডের যিনি স্রষ্টা ,...... শূকর, মকর-- প্রতিটি প্রাণ যিনি সৃষ্টি করেছেন তিনি মানা করেছেন।
ব্যাস ! তিনি মানা করেছেন এটুকুই যথেষ্ট।
মুমিন ( a believer )-এর শূকর-মাংস বর্জন একারণে নয় যে, তা কোন এক গবেষণায় অস্বাস্থ্যকর বলে প্রমাণিত হয়েছে, বরং বর্জনের "মূল" বা "প্রধান" কারণ তিন-শব্দের এই সহজ সত্যটা, --->"তিনি-মানা-করেছেন"। এরপর যদি গবেষণায় আসলেই ক্ষতিকর কিছু প্রমাণিত হয় তাহলে ভাল। গবেষণার ফলাফলকে স্বাগতম। যদি গবেষণায় উল্টোটা প্রমাণিত হয়, (অর্থাৎ শূকরের মাংস ১০০ ভাগ স্বাস্থ্যকর) তাকেও স্বাগতম। আজকের প্রযুক্তি, আজকের বিজ্ঞান দিয়ে যতটুকু বোঝা যায়, তাতে শূকরের মাংস হতে পারে "আপাত-স্বাস্থ্যকর"।
হতে পারে ১০০ বছরে বিজ্ঞান আরো অনেক এগোবে।
হতে পারে আজ থেকে ১০০ বছর পরের Microscope -এ চোখ রেখে গবেষকরা খুঁজে পাবেন নতুন কিছু...... পাল্টাবেন তত্ত্ব।
হতে পারে আগের গবেষণায় সীমাবদ্ধতা ছিল। কিন্তু বিশ্বাসীর কাছে সব সীমাবদ্ধতার ঊর্ধ্বে যে সত্ত্বা তা হল 'খোদা'। তাই আজকের সীমাবদ্ধ বিজ্ঞানের উপজাত আপাত-সত্যের চেয়ে খোদার লিখে যাওয়া বইয়ের দুটো লাইন মুমিন( believer )-এর কাছে অনেক বড় সত্য... অনেক শক্ত দলিল ( greater Evidence ).
পুরনো প্যাঁচাল >>
প্রথমে মানুষ ভাবতো পৃথিবী স্থির, সূর্য ঘোরে। ( Geocentric Model ).
এরপর কোপার্নিকাস, কেপলার, গ্যালিলিও হয়ে Heliocentrism ( সূর্য স্থির , পৃথিবী ঘোরে ) প্রতিষ্ঠা পায়। কোরানে বলে, সূর্য নাকি ঘোরে...
যতসব বানোয়াট ধর্মীয় বুজরুকি !!
"এই দেখ দেখ !! হাতে কলমে বৈজ্ঞানিক প্রমাণ যে পৃথিবীই ঘোরে সূর্যকে মাঝখানে স্থির রেখে!!"
আরো শত বছর পেরিয়ে যায়......
মানুষ আরো দেখে মহাকাশ চোখ মেলে...
মানুষ আরো বোঝে Heliocentrism -ও একদম নিঁখুত কোন তত্ত্ব নয়।
সূর্যও আসলে সমগ্র সৌর-জগৎ সমেত ঘুরে আসে গ্যালাক্সিকে কেন্দ্র করে। গ্যালাক্সি ও নাকি ঘোরে... -- (ও! তাহলে basically সবাই ঘোরে!!) সূর্য নিজ অক্ষের চারিদিকেও নাকি ঘোরে.
বিভিন্ন সময়ে প্রতিষ্ঠিত প্রতিটি তত্ত্বই ( ভুল হোক, অসম্পূর্ণ হোক ), সেই সেই সময়ের নিরীখে "শুদ্ধ বিজ্ঞান"। সূর্যও যে গ্যালাক্সিকে কেন্দ্র করে ঘোরে এটা প্রতিষ্ঠিত হবার মাঝখানের শত বছর কোরান ছিল "অবৈজ্ঞানিক মধ্যযুগীয় বুজরুকি"। এ সময়টা কি তাহলে সবাই ইসলাম ত্যাগ করেছিলেন? মুমিনরা কি সূর্যের ঘূর্ণন প্রমাণিত হবার অপেক্ষায় বসে ছিলেন? তারপর আবার প্রমাণ সাপেক্ষে ইসলামে পুনঃপ্রবেশ করেছেন? অবশ্যই না! হেলিওসেন্ট্রিজম সত্য না জিওসেন্ট্রিজম সত্য ---- তার উপর মুমিনের ঈমান (বিশ্বাস / faith ) ঝুলে থাকে না। সত্যিকার মুমিনের জন্য ইসলাম পরম সত্য। বিজ্ঞানের সাথে তার সামঞ্জস্য - অসামঞ্জস্যে তার এসে যায় না।
-- বিজ্ঞান পালটায় ( এটাই বিজ্ঞানের সৌন্দর্য )
-- সংবিধান পালটায়
-- ইসলাম পাল্টায় না।
( কারণ যা মনুষ্য বিচার-বিবেচনার সাথে পাল্টায়,
যা সর্বকালীন নয়, তা দৈব হতে পারেনা।
আর যা দৈব নয় তাতে বিশ্বাস করার কোন মানে হয় না।
তাই ইসলাম পাল্টাবে না কখনই। এটাই ইসলামের সৌন্দর্য! )
ইহুদিদের মাংসের ঘটনাঃ আল্লাহ-র নামে জবেহ (Slaughter) না করা মাংস খাওয়ার অনুমতি।
আল্লাহ-র নামে খাওয়া না খাওয়া নিয়ে আপনার শঙ্কা দূর করে এমন একটি সুন্দর হাদিস নিচে তুলে দিলাম। ( যদিও, আপনি যেহেতু হাদিসের কোন অংশই গ্রহণ করেন না, তাই হয়ত আপনার জন্য এটা তেমন কিছু নয় । ) আরবে ইহুদিরা তাদের "তোরা" / তাওরাহ /(torah )( বা স্থূলভাবে বললে Old Testament ) অনুযায়ী পশু জবাই করতো। যেহেতু (According to Islamic Theology) তাওরাত, ইঞ্জিল ( roughly New Testament ) এগুলো এক আল্লাহরই বার্তা, শুধু বিভিন্ন Messenger-এর হাত ধরে বারংবার মানুষকে পাঠানো, তাই এই গ্রন্থগুলোতেও কোরানের মত পশু জবাই-এর নির্দেশনা পাওয়া যায়।
People of the Book ( আহল-আল কিতাব তথা Jews and Christians) তাই প্রায় অনুরূপ প্রক্রিয়ায় পশু জবাই করতো। হাদিসটি নিম্ন্ররূপঃ
হযরত আয়েশা (রাঃ) ( নবীজির স্ত্রী ) হতে বর্ণিত,
"একদল অনুসারী রাসূল (সাঃ) এর কাছে এসে বলল,
'আমাদেরকে কিছু লোক মাংস যোগান দেয়, কিন্তু তারা জবাই এর সময় আল্লাহর নাম নেয় কি না নেয় তা আমরা জানি না....'
নবীজি প্রত্যুত্তরে বলেন, 'খাবার আগে শুধু আল্লাহর নাম স্মরণ করে নিয়ে খাবে' "
উৎস = সহীহ বুখারী, গ্রন্থ ৬৭, খন্ড ৭, নং ৪১৫
এই হাদীসটির বক্তব্য অত্যন্ত স্পষ্ট। এর পর আর কোন সংশয়ের অবকাশ থাকে না। একমাত্র সংশয় হল, প্রাণীটি আসলেও সঠিক ভাবে জবেহ করা হয়েছিল কিনা। জবাই এর ব্যাপারটা অত্যন্ত অত্যন্ত অত্যন্ত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ! নিচে বলছি কেন...
রক্ত হারাম! ( Prohibited ) রক্ত হারাম! এবং রক্ত হারাম!
রক্ত পান হারাম। এ ব্যাপার টা মন্তব্যে অনেকে হালকা বলেছেন কিন্তু পরে আবার লাজে গুটিয়ে গেছেন। মাংস ভক্ষণের অন্যতম প্রধান শর্ত হল ফিনকি দিয়ে পূর্ণ স্রোতে রক্ত বের হয়ে যাওয়া। কোন অবস্থাতেই দেহের ভেতর রক্ত আটকা (Blood trapped inside Body) পড়লে চলবে না। আমাদের হয়ত সবার-ই কম বেশী এমন অভিজ্ঞতা হয়েছে যে খুব আঘাত পেয়েছি কিন্তু উপরের চামড়া কাটেনি। তখন কি হয়? বাইরে থেকে দেখতে পাই চামড়ার নিচে রক্তপাত (internal bleeding ) হয়ে জায়গাটা লালাভ হয়ে উঠেছে। এভাবে আটকা পড়া রক্ত কোন অবস্থাতেই ইসলাম-সম্মত হতে পারে না।
বন্ধুর মুরগী রান্না
আমার এক বন্ধুর সাথে প্রায়ই ফোনে কথা হয়। সেও হালাল হারামের ব্যাপারে মনোযোগী হবার চেষ্টা করে সবসময়। যুক্তরাষ্ট্রে আসার পর প্রথমে সে Costco দোকান থেকে non-হালাল মুরগী কিনে নিয়ে আসে (ড্রাম স্টিক)। ফোনে কথা হচ্ছিল, মাংস রান্না করা নিয়ে। চৌহদ্দিতে হালাল মাংসের দোকান নেই, তাই হারাম টাই কেনা।
মাংস জ্বাল দেয়া মাত্রই ভুর ভুর করে ভেতরের রক্ত বের হয়ে আসে। তা মসলা-ঝোলের সাথে মিলে মিশে একাকার হয়ে যায়।
মরিচের লাল আর রক্তের লাল একটা পর্যায়ে আর আলাদা করা যায়না।
রান্না শেষে তাই নিয়ে সে খেতে বসে।
আমি বললাম,
- কি করলি? এ তো ভুল...... হারাম !!
বন্ধু চুপচাপ। কিছু বলে না। খানিক পরে ফোনের ওপাশ থেকে বলল,
-- জানি তো, কি করবো? পয়সা দিয়ে কেনা।
-- তাই বলে রক্ত খাবি ?
কেন এমন হল ? কারণ মুরগী জবাই করা হয়নি। ১০-১২ দিন আগে প্যাকেট করা মুরগীর দেহে যে রক্ত আটকা পড়েছিল, তা রান্নার হাঁড়িতে বেরিয়ে আসে ভক-ভক করে। পরবর্তীতে বন্ধু জানায়, বাকি প্যাকেট গুলো রান্নার সময় সে রান-গুলোর ( ড্রাম স্টিক গুলোর ) একদম ভেতর থেকে ধমনীগুলো খুঁজে বের করে। এরপর টুথপেস্টের মত তা থেকে টিপে টিপে বিপুল পরিমাণ রক্ত সে বের করে রান্না চাপানোর আগে। এগুলো এত সূক্ষ্ণ পর্যায়ে কেউ ঘেঁটে দেখেনা। মাংস চুলায় চাপিয়ে ঢেকে দিলেই চলে। কিন্তু মুমিনদের জন্য ব্যাপারটা আমল না দিলে চলে না। শুধু জবাই করলেই হয়না, পূর্ণ স্রোতে রক্ত প্রবাহিত হবার জন্য "সময়" দেয়া উচিত। ঠিক মত জবাই করা মুরগীর ভেতরে যে রক্ত কিছুটা থাকে না, তা না। কিন্তু সেক্ষেত্রে ধমনীগুলোতে অমন টিউব-ভর্তি কাঁচা রক্ত বসে থাকে না। বা তা রাঁধলে তেলে ঝোলে রক্তস্নান হয়ে যায় না।( ধমনী থাকে দেহের ভেতরের দিকে ... এবং এতে হৃদপিন্ড থেকে সরাসরি পাম্প হওয়া রক্ত তীব্র স্রোতে প্রবাহমান থাকে। এই প্রবাহমান রক্ত দেহের ভেতর আটকে ফেলা যাবে না। So Release the Kraken!)
যদি বাকি নিয়ম গুলো খেয়াল করি, তাহলে দেখা যায় প্রাকৃতিক / স্বাভাবিক কারণে মৃত প্রাণী, উঁচু স্থান থেকে পতিত প্রাণী সবার ক্ষেত্রেই চামড়ার আবদ্ধে রক্ত আটকে যাবার ব্যাপারটা বিদ্যমান। ( এটা কেউ একজন আগেও একটি 'প্রতি'-মন্তব্যে উল্লেখ করেছেন, তবুও আবার খোলাসা করলাম। )
আজকের এই ব্যস্ত দুনিয়ায় কে করে এত ঝামেলা ? একটা একটা করে মুরগী জবেহ করা, তার পর সময় নিয়ে রক্ত বের হতে দেয়া --- এসব করলে হাজারে হাজারে প্যাকেট কিভাবে বাজারজাত করা যাবে ? চৌদ্দশ বছর আগের বাস্তবতা আর এখনকার গতিময় বাজার মেলাতে গেলে চলবেনা" ---
না !!! আপত্তিটা এখানেই। পাল্টাতে হলে নিজেকে পালটাও। হাজার হাজার পশু তড়িৎস্পৃষ্ট করে বধ করার কৌশল বা জবাইখানার সার্বিক অস্বাস্থ্যকর অবকাঠামো, মেশিনাদি---- এগুলো পাল্টাতে হবে। ১৪০০ বছর আগে রেখে যাওয়া নবীর দিক-নির্দেশনাকে নয় ......
কারণ ইসলাম এসেছিলই পাল্টাবার আহবান নিয়ে। প্রাগিসলামিক সময়ে ( প্রাক + ইসলামিক তথা ইসলাম-পূর্ববর্তী সময়ে, এমন শব্দ আদতে অভিধানে নেই ) মদ্যপান কোন ব্যাপার ছিলনা। কি হয় খেলে একটু-আধটু? কি হয় বিবাহের বাইরে একটু আধটু দেহের সম্পর্ক থাকলে?
কিন্তু না, ইসলামে প্রবেশের মানেই পাল্টাতে হবে---- ইসলামকে নয়, "নিজেকে"। চেষ্টা শুরু করতে হবে অল্প অল্প করে। অবিশ্বাসীদের জন্য এত সব বিধি নিষেধ দমবন্ধ-করা, অস্বস্তিকর! তাদের জন্য,
"যতক্ষণ বাঁচি ততক্ষণ মৌজে"। ---সত্য।
বিশ্বাসীদের জন্য নিজেকে এতটা ছকে বেধে ফেলা বা আজকের আনন্দ থেকে নিজেকে কেটে ফেলাটা "বিসর্জন"। তার জন্য আজকের হাতছানি ছাপিয়ে আরো বড় সত্যের সামনে একদিন দাঁড়াতে হবে। সেই ক্ষণটির জন্য তার অনন্তর অপেক্ষা।
সুতরাং, তার জন্য
যতক্ষণ হৃদ-স্পন্দন ততক্ষণ অপেক্ষা...
রেজোয়ান লিখেছেন
মেহবুবা লিখেছে্ন
তাই, এ দুটোর কোনটিই ইসলাম হতে পারে না। ( আমার দৃষ্টিতে)
কোশের নিয়ে মন্তব্যঃ
ফোনের ঐ একই বন্ধুটিই দোকানে ইহুদিদের কোশের ( Kosher ) মাংস খাওয়া নিয়ে পরামর্শ চেয়েছিল। (Hebrew National Beef ).আমি তখন তাকে হযরত আয়েশার ( রাঃ) হাদিসটির কথা বলি। পরে সে আমাকে জানিয়েছিল, Hebrew National Company টির ওয়েবসাইটে বিস্তারিত উল্লেখ করা আছে যে, তারা কড়াকড়িভাবে বাইবেলীয় পদ্ধতিতে পশু জবাই করে। ( following rigorous Biblical procedure ). আগেই বলেছি, ( যদিও বিশালাংশে বিকৃত করে ফেলা হয়েছে), তাওরাতের ( Torah, Old testament etc.) অনেক বিধান ইসলামের কাছাকাছি ( যেহেতু Koran and [untainted] Torah are by the same Author, according to Islam ). তাই বহুযুগ আগে মা আয়েশার (রাঃ) বর্ণিত হাদিসের বলে, বিদেশের মাটিতে ইহুদিদের বাজার-জাত মাংসটাই সবচেয়ে আস্থার সাথে খাওয়া যায় (যদি হালাল দোকান আশে পাশে না থাকে) । ব্যক্তিগত ভাবে আমি কোশের খাদ্যের উপর আস্থাশীল।
শূকর সমাচারঃ
হিমু লিখেছেন,
Rabbi রা তো তাহলে বলতে হবে,
"মানব দেহের সংগঠন" ( Human Anatomy ), শূকরের পরিপাকনালী ইত্যাদি বিষয়ে ব্যাপক জ্ঞান রাখতেন। যা হোক, আলোচনা যখন পরিপাকনালী পর্যন্ত গড়ালই তখন দুটো কথা বলি,
স্বপ্নযোগেই হোক, কাকতালই হোক আর গবেষণার মাধ্যমেই প্রাপ্ত হোক Rabbi দের এই পর্যবেক্ষণ মূলত সঠিক। শূকর আর গরু- ছাগলের পরিপাক নালীর মধ্যে একটি প্রধান পার্থক্য হল
১)শূকর এবং মানুষ উভয়ের পাকস্থলী এক প্রকোষ্ঠী। ( monogastric ). পরিপাকের সময় খাদ্য খুব দ্রুত একটি মাত্র প্রকোষ্ঠের মধ্য দিয়ে যায়। অন্ত্রে ( Intestine ) প্রবেশের আগে এই এক প্রকোষ্ঠের রাসায়নিক ক্রিয়ার প্রভাব খাদ্যের উপর পড়ে। তুলনায় গবাদি পশুর ( গরু-ছাগল ) পাকস্থলী বহুপ্রকোষ্ঠী ( poly + gastric ). গরুর পাকস্থলীতে পরিপাকের সময়, খাদ্য তিনটি প্রকোষ্ঠ পার করে তবেই অন্ত্রে পৌঁছায়। শূকর মানুষের মত এক প্রকোষ্ঠী পরিপাকে অংশ নেয়।
২) গরু ছাগল প্রভৃতি জাবর-কাটা প্রকৃতির প্রাণীর পরিপাক অনেক দীর্ঘ। (Ruminative Digestive system ). সেখানে মানুষ বা শূকর পরিপাক করে খুব তাড়াতাড়ি ( ১-২ ঘন্টার আশেপাশে )। তুলনায়, গবাদি পশু একে তো খায় নির্বাচিত লতাপাতা, তার উপর প্রাণীভেদে ৮-১৬ ঘন্টার পরিপাকে অংশ নেয়। এসময় দীর্ঘ রাসায়নিক পরিবর্তনের পর খাদ্যের মৌলিক উপাদান গুলো রক্তপ্রবাহে প্রবেশ করে।
বলাই বাহুল্য, শূকরের সংক্ষিপ্ত পরিপাক, খাদ্যের সীমিত রাসায়নিক প্রক্রিয়াকরণ, নির্বিচার খাদ্য নির্বাচন, ইত্যাদির কারণে নানান ধরণের পরজীবি কৃমি ও ক্ষতিকর পদার্থ ( toxic elements ) অপরিবর্তিত অবস্থায় রক্তপ্রবাহে ঢুকে পড়ে। এই রক্তপ্রবাহ ধরে তা মাংসের ফাঁকে ফাঁকে আশ্রয় নেয়। মানুষ-ও যদি শূকরের মত নির্বিচারে সব কিছু খাওয়া শুরু করে তাহলে Toxic Element দেহে জমা হওয়াটা সময়ের ব্যাপার মাত্র। শূকরের মাংসের কৃমি ও পরজীবি খুব সহজেই মানব পরিপাক নালীতে জায়গা করে নিতে পারে। পক্ষান্তরে গরু ছাগলের মাংস এমনটা "কৃমির স্বর্গ" নয়। মাংস মাত্রই তাতে পরজীবি কৃমি থাকতে পারে। সেই হিসেবে গরুর মাংসেও কৃমি খুঁজে পেতে পারেন। কিন্তু দীর্ঘ পরিপাক ও সুনির্বাচিত খাদ্যের কারণে অধিকাংশ সুস্থ গরুর মাংস ক্ষতিকর নয়। ব্যাপারটা পরিসংখ্যানের। ১০০ টা গরুর ৫-৬ টার মাংস আপত্তিজনক হতে পারে, ১০০ ঘন-কিউব মাংসের ০.১ ঘন কিউবে কৃমির বিস্তার থাকতে পারে। অন্যদিকে ১০০ শূকরের ৮০ টাতেই কৃমির অবাধ বিস্তারের সম্ভবনা ।
শূকরের পরিপাক সংক্রান্ত তথ্য গুলো http://edis.ifas.ufl.edu/an012 <-- এই উৎস থেকে নেয়া।
ইসলামে অনুমোদিত একমাত্র মৃত মাংস( Dead Meat ) ...... মাছের খাদ্যাভাস, ও রেচন ( Excretion )
ইসলামে একমাত্র অনুমোদিত মৃত মাংস মাছ। নিচের হাদীস টি দেখুন
" আব্দ-আল্লাহ ইবন উমার বলেন মহানবী বলেছিলেন যে,
--- সুনান আবু দাঊদ ( সুনান আবু দাঊদ হাদিসের তৃতীয় বৃহত্তম গ্রন্থ। এই বিশেষ হাদিসটি USC Collection এ নেই )
রক্তের ক্ষেত্রে "যকৃত ও প্লীহা" বলতে, পরিষ্কারের পর, এদের সাথে চলে আসা অবিচ্ছেদ্য রক্ত বোঝানো হয়েছে ধরাটাই যৌক্তিক।
নিদ্রালু লিখেছেন
ভাবার মত প্রশ্ন।
মাছের সাথে মানুষ/ গরু-ছাগল ইত্যাদি অন্যান্য উন্নত মেরুদন্ডী প্রাণীর রক্ত-সঞ্চালনে একটা খুবই মৌলিক পার্থক্য আছে। সেটা হল মাছের রক্ত-সঞ্চালনতন্ত্র একচক্রী। অর্থাৎ , রক্তের গতিপথ একটা একচক্র বর্তনী। অন্যদিকে গবাদি পশুর দেহে রক্তের গতিপথ দ্বিচক্র বর্তনী। একটা চক্র হৃদপিন্ড আর ফুসফুসের মাঝে, আরেকটা চক্র হৃদপিন্ড আর দেহের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের মাঝে। প্রথম চক্র ফুসফুস থেকে রক্তে অক্সিজেন নিয়ে আসে। আর দ্বিতীয় চক্র দিয়ে অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্ত প্রচন্ড চাপে পাম্প করে দেহের প্রত্যন্ত অংশে পাঠিয়ে দেয়া হয় ( হাত -পা )। দ্বিতীয় চক্রের প্রচন্ড চাপের ব্যাপারটা খুব জরুরী। এই চাপ না থাকলে রক্ত (তথা অক্সিজেন) সবখানে পৌঁছে দেয়া সম্ভব হত না।
মাছ বা একচক্রী রক্ত-সঞ্চালনতন্ত্র সমৃদ্ধ প্রাণীদের সব এক চক্রে বাঁধা। হৃদপিন্ড, ফুলকা আর দেহের প্রত্যন্ত অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ মিলে একটা মাত্র বর্তনী। ফুলকার কাছে এসে রক্ত আর পানির ভেতর অক্সিজেন বিনিময়ের জন্য সময় দিতে হয়। তাই এই একচক্রে রক্ত এত দ্রুত চালানো বারণ। সারকথা, মাছের দেহে রক্ত প্রবাহ শ্লথ। উৎস
"জোর করে মাছ ধরে যদি জবাই ও দেন, কখনই স্তন্যপায়ীদের মত "ফিনকি" দিয়ে পূর্ণ স্রোতে রক্ত বের হবে না"
মেরুদন্ডী প্রাণীদের মধ্যে একদম নিচের দিকে হবার কারণে মাছের গঠন অপেক্ষাকৃত ভাবে অনেক সরল। মানুষ বা গরু-ছাগলের ক্ষেত্রে আপনি যেমন হাত-পা, আঙুল ইত্যাদি অংশে জটিল রক্তজালিকা বিন্যাস দেখতে পাবেন মাছে তা পাবেন না। অবশ্যই ফুলকা এলাকায় খুবই সূক্ষ্ণ জালিকাবিন্যাস চোখে পড়বে কিন্তু আমি বলছি মাংশল অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের কথা। নিম্ন রক্তচাপে খুব বেশী দূরে রক্ত পাঠানো যায়না বলে পরিধির দিকে রক্তজালিকার বিস্তার ক্রমে কমে আসে।[উৎস] এ কারণে যত লেজের দিকে আসা যায় রক্তের গতায়াত তত কম। সরল গঠনের জন্য তাই মাছের দেহের রক্তের ছড়াছড়ি পেটির গহবরে কেন্দ্রীভূত । গবাদি পশুর মত রক্তের জাল --অস্থি, পায়া, রান-- সবকিছুর সাথে পেঁচিয়ে পরিধির এত গভীরে প্রথিত নয়। গঠন বিচারে তাই গবাদি পশু অনেক জটিল। হৃদপিন্ড থেকে বহু দূরের এসব দেহাঙ্গের সাথে ওতপ্রোতভাবে পেঁচিয়ে থাকা রক্তনালী থেকে রক্ত বের করার একমাত্র উপায় তাই, সঠিকভাবে তা জবাই করা।
মাছের রক্ত ও রেচনঃ
নিচের ছবিতে মাছের সাথে অন্যান্য মেরুদন্ডী প্রাণীর পার্থক্য দেখুন।
ছবি: মানুষের রক্ত।
ছবি: মাছের রক্ত। পরিপার্শ্বে প্রচুর পানি থাকায় মাছের রক্ত থেকে ক্ষতিকর এমোনিয়া নিষ্কাশন সহজ।
রক্ত হারাম হবার অনেক কারণের মধ্যে আরো একটি কারণ হিসেবে দেখানো যায় ক্ষতিকর এমোনিয়ার উপস্থিতিকে। খাদ্য পরিপাকের পর বর্জ্য হিসেবে যে এমোনিয়া তৈরী হয় তা রক্তে ঘুরে বেরায়। রক্ত থেকে ছেঁকে তা বের করে দিতে হয় মূত্র দিয়ে। এর জন্য আমরা বাইরে থেকে পানি খাই। অনেকক্ষণ পানি না খেলে এই দুর্গন্ধযুক্ত বর্জ্য এমোনিয়া জমতে থাকে রক্তে। মাছেদের জন্য পানির অবাধ প্রাপ্যতার কারণে এমোনিয়া নিষ্কাশন সহজ। শুধু বৃক্বীয় রেচনই নয়, চারপাশে পানির সাথে অসমোসিস প্রক্রিয়ার ফুলকা দিয়ে অনেকটা এমোনিয়া সরাসরি পানিতে বেরিয়ে যায়। ছবিতে দেখুন মাছের রক্ত কতটা লঘু বা পাতলা। এমনিতে আপনি যত পিঠ বা লেজের দিকের টুকরা খাবেন তাতে রক্ত সরবরাহ তত কমে আসবে। তারপরও রক্ত পরিষ্কার করে রান্না করা মাছের লঘু রক্তের কিয়ৎ পরিমাণ যদি আপনার পাতে গড়ায়ও তাতে ক্ষতিকর এমোনিয়ার ঘনত্ব নগণ্য বলে ধরা যায়। মাছের রক্ত খাওয়া অবশ্যই “হারাম” ( prohibited ). এখানে সেটাকে হালাল করার চেষ্টা হচ্ছে না। বরং জবাই “না” করা মাছ খাওয়ার ফলাফল/ ক্ষতি যাচাই করা হচ্ছে। মূল প্রসঙ্গটি ছিল, রান-উরু-পায়াতে জটিল ধমনী-বিন্যাস যুক্ত গবাদি পশু কেন জবাই করতে হবে আর লঘু রক্তের মাছ কেন জবাই করতে হবে না।
হরফ লিখেছেন,
নিচের ছবিটি দেখুন।
ছবিঃ শূকরের মাংসের ফাঁকে ফাঁকে জমে থাকা পরজীবি কৃমির লার্ভা।
লার্ভা ( কৃমির অপত্য দশা ) গুলো ফোসকা ( Cyst ) গঠন করে মাংসপেশীর একদম ভেতরে জায়গা করে নেয়। এখন ভেবে দেখুন পিজার উপর ছড়ানো শূকরের মাংসের কথা।
এবার নিচের ছবিটি দেখুন।
ছবি: মাছের পাকস্থলীর দেয়ালে আংটার মত লেগে থাকা কৃমি।
মাছেও পরজীবি কৃমি থাকতে পারে ( অবশ্যই সর্বভূক মাছের কথা হচ্ছে )। মাছে বসবাসকারী অধিকাংশ পরজীবি, মাছের জন্য ক্ষতিকর নয়। ( প্যারা ৪, লাইন ১, উৎস > ফ্লোরিডা মাছ সংরক্ষণ কমিশম রিপোর্ট)। ক্ষতিকর এর মানে হল, পাকস্থলীর দেয়াল ভেদ করে রক্তস্রোতে কৃমি প্রবেশ, মাংসে সংক্রমণ, পাকস্থলীর দেয়াল ঝাঁঝরা করে দেয়া ইত্যাদি।
যে সকল পরজীবি লার্ভা রক্তস্রোত পর্যন্ত অন্তর্ভেদ করতে পারে তাদের ক্ষেত্রেও মাছের শ্লথগতির রক্ত, হৃদপিন্ড থেকে দূরের অঙ্গে সীমিত রক্ত সরবরাহ ইত্যাদি ব্যাপার বিবেচনা করুন। পরজীবির বিস্তার তাই পরিপাকনালী এবং এর আশেপাশের বা কাছাকাছি অঙ্গে কেন্দ্রীভূত। সুতরাং, মাছের পেটি-র গহবর পরিষ্কারের সময় অধিকাংশ পরজীবি দূর করা সম্ভব।[ আমার কথা নয়, উৎস দেখুন > লাইন ৮, জাতিসংঘ FAO নিবন্ধ।।
মাছ আর মানুষের পরিপাকনালীতে উল্লেখযোগ্য বৈসাদৃশ্য বিদ্যমান। অন্যদিকে শূকর আর মানুষের প্রায়-সদৃশ পরিপাকনালীতে একই পরজীবির আবাস স্বাভাবিক। ব্যাপারটার পরিসংখ্যানগত ভিত্তি মুখ্য। খুঁজলে পরে, Anisakis এর মত পরজীবি পাওয়া যাবে যাদের জীবন পরিক্রমা, মানুষ ও মাছ, উভয়ের অন্ত্র জুড়ে ব্যাপ্ত। কিন্তু “অধিকাংশ” মাছ, “অধিকাংশ” পরজীবি, স্বল্প সময়ে রান্নার সুযোগ --- ইত্যাদি মাপকাঠির নিরীখে মাছ কতটা নিরাপদ তা গুরুত্বপূর্ণ।
তীক্ষ্ণ দাঁত ও নখরযুক্ত প্রাণীর মাংস হারামঃ
ছবি : (Fang) –যুক্ত প্রাণীর মাংস খাওয়া হারাম। ছবিতে বেড়ালের Fang (তথা canine teeth )
রাসূলুল্লাহ ( সাঃ ) খাইবার যুদ্ধের সময় বলেন,
যদি সত্যিকার অর্থে বিশ্বাসের স্থান না থাকে, তাহলে এত জীববিজ্ঞান বিশ্লেষণ অর্থহীন। যুক্তরাষ্ট্রের একটি ঘটনা দিয়ে শেষ করি আলোচনা।
১৯৩০ সালে সমগ্র যুক্ত্ররাষ্ট্রে সকল মদের উপর নিষেধাজ্ঞা ও তৎপরবর্তী আন্দোলনঃ
ছবিঃ মদের নিষেধাজ্ঞার সময় ডেট্রয়েট(Detroit) এর একটি মদ-কারখানা বাজেয়াপ্ত করছে পুলিশ
শুনলে অবাক হতে হয় যে, ১৯২০-১৯৩০ সময়কালে যুক্তরাষ্ট্র পুরোপুরি মদ নিষিদ্ধ করে দেয়ার উদ্যোগ নেয়া হয়। ( আজকের বাস্তবতায় যা অকল্পনীয় )। সংবিধানের ১৮-তম সংশোধনীতে ( 18th Amendment to the U.S. Constitution ) সকল প্রকার মদের উৎপাদন, সরবরাহ ও বিক্রি বন্ধ করে দেয়া হয়। হাজার বছর আগে, কঠোর খলিফা হযরত উমার ( আঃ) ঠিক যেভাবে ঘরে ঘরে গিয়ে মদপান হচ্ছে কিনা তদন্ত করে দেখতেন, সেভাবে, ইউ.এস পুলিশ মদের কারখানা পরিদর্শন ও তদন্ত করতো ( ছবি তে দেখুন )। এটা আসলে “ফিতরাত আল ইনসান”।( ইসলামী মতে, ফিতরা হল প্রত্যেকের ভিতর সুপ্ত, স্রষ্টায়-বিশ্বাসের-প্রবণতা। ফিতরার কারণে প্রত্যেকেই শরীয়ার দিকে ফেরৎ আসতে চায় অবচেতন ভাবেই ( যেমন খাম্মার বা AlChohol বর্জন)। প্রত্যেক শিশুই ফিতরাহ সহ জন্মায়। সে হিসেবে সবাই মূলত মুসলমান এবং যে সকল ভিন্ন ধর্মাবলম্বী পরবর্তীতে ইসলাম গ্রহণ করেন তাদেরকে আধুনিক মতে “Convert to Islam” না বলে “Revert to Islam” বলা হয়। ) যা হোক তাই, হিন্দু, বৌদ্ধ হোক আর খ্রীষ্ট ধর্মাবলম্বী মার্কিনীরাই হোক মদপান যে অনুচিত এটা তারা ফিতরার কারণে ধরতে পারে এবং সেটা রাষ্ট্রে আইন হিসেবে কড়াকড়িভাবে প্রয়োগের তাগিদ অনুভব করে। বলাই বাহুল্য এ নিয়ে জনমনে তীব্র অসন্তোষ সৃষ্টি হয়। মহামন্দার ( The Great depression 1930s ) সময় পরিস্থিতি আরো খারাপ হয়ে ওঠে। রাস্তার সন্ত্রাসী ও মদের কালোবাজারীদের সাথে পুলিশের এখানে ওখানে প্রায়ই সংঘষ বাঁধতো। আইন-প্রয়োগকারী বাহিনীর পিছনে এই অতিরিক্ত খরচ বিপুল অর্থের ব্যাপার, যা সরকারের জন্য বোঝা হয়ে দাঁড়ায়। অবশেষে বাধ্য হয়ে সরকার এই আইন প্রত্যাহার করে নেয়। আজকের ব্যক্তিকেন্দ্রিক / আত্মকেন্দ্রিক মার্কিন সমাজে এ ধরণের উদ্যোগ “ব্যক্তি স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ” বলে পরিগণিত হয়। বর্তমান দর্শন অনুযায়ী সরকার এধরণের হস্তক্ষেপ করতে পারে না। করলে ব্যাপারটা অনেকের জন্যই অস্বস্তিকর।
১৪০০ বছর আগের মদিনার ঘটনাঃ
এবার একটি অনুরূপ ঘটনা বলি।প্রথম যখন মদ্যপান পুরোপুরি নিষেধ এর আয়াৎটি নাজিল হয়, নবীজী (সাঃ) তখন ব্যাপারটা তাঁর নিকটতম সাহাবা ( সঙ্গী )-দের বলেন। তারা পরবর্তীতে মদিনা শহরের রাস্তায় রাস্তায় ব্যাপারটা ঘোষণা করেন। গোত্রে গোত্রে যুদ্ধ, ব্যভিচার ইত্যাদির মত আরব পুরুষদের মধ্যে বহুকাল ধরে মদ্যপান এর রীতি চলে আসছিল ইসলামের আগমনের পূর্বে। যেদিন মদিনার রাস্তায় মদ্যপানের নিষেধাজ্ঞা ঘোষিত হয়, সেদিনের বর্ণনা দিয়ে আনাস-ইবন-মালিক বলেন, “আমার হাতে মদের পাত্র ছিল। ঘোষণা শোনবার পর আমি পাত্রটা ছুড়ে ফেলে দিই মাটিতে। যাদের হাতে পাত্র ছিল তারা তা ছুড়ে ফেলে, যাদের মুখে চুমুকের পর মদ ছিল তারা তা উগরে ফেলে থুথুর সাথে। সেদিনের মদিনার পথঘাট, বর্জিত মদের প্লাবনে প্লাবিত হয়ে যায়”। অর্থাৎ সবাই তৎক্ষণাৎ মদ বর্জন করেন। এতদিনের মদোভ্যাস মুহুর্তের ব্যবধানে পরিহার। কিভাবে? আস্থা, ঈমান, ফিতরা!
যা হোক। পরিশেষে বলি, ( ইসলামের দৃষ্টিতে ) ইসলাম সমগ্র মানব জাতির জন্য। এটা সবার অধিকার যেমন, তেমনি সবার দায়িত্ব-ও বটে। যা আমার দেহের জন্য খারাপ তা বাকি মানুষের দেহের জন্যও খারাপ। তাই এই হালাল হারাম গুলো মেনে চলায় সচেষ্ট থাকা উচিত। হালাল হারাম বিষয়ে পোস্ট বা আলোচনা সবসময়ই প্রাসঙ্গিক (মূল পোস্টের কথা বলছি)। এই দীর্ঘ মন্তব্যটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ। প্রকাশিত হলে বাধিত থাকবো।
-- মোল্লা
আপনার বিশ্বাস নিয়ে আমি কোনো মন্তব্য করতে চাই না। কিন্তু আমি দেখতে পাচ্ছি, আপনি বিশ্বাসের প্রাবল্যের পাশাপাশি আবার সেই যুক্তিই দেখাতে চাইছেন। এটা একধরনের স্ববিরোধিতা বলে মনে করি। কবে বিজ্ঞান উল্টো কথা বলবে, সেই ভরসায় বসে থাকতে পারে বিশ্বাসী ব্যক্তি, যুক্তিবাদী পারে না।
আপনি হয়তো এ-ও স্বীকার করবেন, বিশ্বাসী একজন লোক সারাজীবন ধরে একটা কিছু নিয়ে "গবেষণা" করে সেটার স্বপক্ষেই যুক্তিতর্ক তুলে ধরেন, বিপক্ষে নয়। ধর্মগবেষকরা সেসব যুক্তিই তুলে এনেছেন, যা তাদের বিশ্বাসের সপক্ষে কাজ করেছে, বিপক্ষে নয়। আবার ঐ কাজের ফাঁকে লিখে রাখা কোনো ব্লগেও এমন যুক্তি থাকতে পারে, যেটার গুরুত্ব কারো সারাজীবনের কাজের চেয়ে বেশি ধারালো। ভাবুন ব্ল্যাকের ফিডব্যাক সমীকরণ, যার বদৌলতে আজ গোটা সিগন্যাল আর কন্ট্রোল সিস্টেমের চেহারা পাল্টে গেছে, ওটা তিনি একটা ফেরিতে বসে লিখেছিলেন।
আপনি বেশ খোঁজখবর রাখেন, একটু কি সূর্যের ঘোরার ব্যাপারে আয়াতগুলো দেবেন?
রক্ত খাওয়া নিয়ে আপনার সচেতনতার কথা জেনে ভালো লেগেছে। আমি নাসারাদের প্যাক করা মুরগি কিনে এনে খাই, আপনার বন্ধুর মতো অভিজ্ঞতা কখনোই হয়নি। আর একটা ব্যাপার হচ্ছে, জবাই করলেও প্রাণীর শরীরে কিছু না কিছু রক্ত থাকবেই, যদি না আপনি উল্টো করে ঝুলিয়ে রাখেন। নাসারাদের মুরগি প্রসেসিং প্ল্যান্টেও কিন্তু মুরগি উল্টো করে ঝোলানো থাকে, আর গলা কেটে রক্ত বের হয়ে যেতে দেয়া হয়। শুধু তা-ই নয়, বোল্ট অ্যাকশন ড্রিল দিয়ে মারা গরুকে উল্টো করে ঝুলিয়ে প্রায় সাথে সাথে বুক-পেট ফাঁসিয়ে তার শরীরের যাবতীয় তরল বের করে দেয়া হয়। কারণ এখানকার নাসারারা খোদাকে ভয় না পেলেও কাস্টোমার, আইনব্যবস্থা আর জরিমানাকে ভয় পায়।
আপনি আমার নাম উদ্ধৃত করে যে কথাগুলো বলেছেন, তাতে আমি একটু বিস্মিতই হলাম। কারণ প্রাচীন ধর্মযাজকদের কাজ শুধু উপাসনালয়ে সীমাবদ্ধ ছিলো না (আধুনিক ধর্মযাজকদেরও নয়)। আপনি হয়তো মেন্ডেলের নাম শুনেছেন (জেনেটিকসের জনক বলা যেতে পারে তাকে), তিনিও একজন যাজক ছিলেন। সকল যাজকই পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ, ওয়াজ, আরবী শিক্ষা আর কোরবানির সময় গরু জবাইতে ব্যস্ত থাকেন না। ইমাম বুখারি যেমন হাদিস নিয়ে গবেষণা করতেন।
শূকরের পরিপাকতন্ত্র নিয়ে আপনার ফতোয়া পড়ে আমি বাকরুদ্ধ। আপনি কি বলতে চান, গরু ছাগলের পরিপাকতন্ত্র তিন প্রকোষ্ঠ বলে সেটা তার কোনোটার রাসায়নিক প্রভাব অন্ত্রে ঢোকা খাবারের ওপর পড়ে না? আর আপনার কি ধারণা, কেবল "প্রকোষ্ঠের রাসায়নিক প্রভাব"ই সব অসুখ-বিসুখের মূল? আপনার কি ম্যাড কাউ ডিজিজের কথা মনে আছে? অসুখ নির্ভর করে জীবাণুর প্রকৃতির ওপর, পরিপাকতন্ত্র কয় প্রকোষ্ঠের, তার ওপর না।
মানুষ, শূকর আর গরুছাগলের খাদ্য পরিপাকের সময় নিয়ে আপনার ফতোয়া পড়ে আমি আবারও বাকরুদ্ধ হলাম। অনুগ্রহ করে যা জানেন না, তা নিয়ে কথা বলবেন না। আপনি মানুষ বা শূকর, কোনোটার পরিপাকের সময় নিয়েই কিছু জানেন না। আপনার দেয়া লিঙ্কে শূকরের পরিপাকের সময় নিয়ে কিছুই বলা নাই। আর নির্বাচিত লতাপাতার ব্যাপারটা একেবারেই বুঝি নাই। প্রাণীর শরীর খাবারকে চেনে এভাবে, হজম করার জিনিস + হেগে বের করে দেবার জিনিস + জীবাণু। হজম করার জিনিস প্রাণী হজম করে, হেগে বের করে দেবার জিনিস হেগে বের করে দেয়, আর জীবাণুকে বিভিন্নভাবে ট্রিট করে। কৃমি বা অন্যান্য জীবাণু মানুষ, শূকর, গরু, উট, হাতি, সবকিছুতেই সমান সম্ভাবনা নিয়ে আক্রমণ করতে পারে।
আপনার এই বারবার "সুনির্বাচিত" কথাটা পড়ে মনে হচ্ছে, গরু-ছাগল আর শূকরগুলি প্রত্যেকেই রেস্তোরাঁয় গিয়ে মেনু বেছে অর্ডার দিয়ে খাবার খায়। বাস্তবতা হচ্ছে, গরু-ছাগল-শূকরের তেমন সুনির্বাচিত খাবার নাই, তারা যে ফার্মে থাকে, সে ফার্মের ফডার ম্যানেজমেন্ট তাদের হয়ে সুনির্বাচন করে, আর শূকরের ফার্ম বলেন বা গরুর ফার্ম, তাদের খাবার যদি জার্ম-ইনফেক্টেড হয়, কর্তৃপক্ষ এসে ব্যবস্থা নেবে। আর ফার্মে শূকর খালি খাবারই খায় না, ওষুধও খায়। কারণ সে একটা স্পর্শকাতর পণ্য যোগান দেয়, মাংস, যে মাংসে সমস্যা থাকলে তার ফার্মের মালিকের ব্যবসা ডুবতে সময় লাগবে না।
আর হ্যাঁ, গরু আর শূকরের মাংসের ঐ স্ট্যাটিসটিক্স কোত্থেকে পেলেন, একটু জানাবেন।
রাসূল (সাঃ) তো যকৃতের রক্ত আমাদের জন্যে হালাল করেছেন, আপনি কি তাই বলে রক্তসহ কলিজা খাবেন কখনো? মনে হয় না। সেটাকে কেটেকুটে ভালোমতো ধুয়েই খাবেন। এটাই হচ্ছে মূলমন্ত্র, যা খাও ভালোমতো ধুয়ে খাও।
তেরোশো বছর সুপ্ত থাকার পর তেরো বছরের জন্যে যে ফিতরার টানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নামকাওয়াস্তে অ্যালকোহল ব্যান করেছিলো, সেটাকে ইসলামের নামে ভেলকি হিসেবে চালিয়ে দেয়ার সস্তা কৌশলটা প্রচণ্ড বিরক্তিকর লাগলো। এখানেই বোধহয় যাপনীয় ইসলামের পর্দা ছিঁড়ে প্রোপাগাণ্ডীয় ইসলাম বেরিয়ে আসে। আর প্রত্যেক শিশুই জন্মসূত্রে মানুষ, আমরা তাকে এক একটা ধর্মের লেবেল দেই, এবং আমাদের মধ্যে খুব কম লোকেই ক্যান রিভার্ট টু দ্যাট হিউম্যান স্টেইট।
মদিনা শহরে সেদিন যদি কেউ এক কথায় মদ পরিত্যাগ না করতো, রাসূলের অন্যতম সহচর উমরের তরবারি কি তাকে ক্ষমা করতো মোল্লা ভাই? আমার মনে হয় করতো না। উমরের টেম্পারের কথাও তো হাদিসেই লেখা আছে, নাকি? ফিতরার টান, নাকি তলোয়ারের ভয়, কে জানে কোনটা বেশি শক্তিশালী?
হিমু ভাই, মন্তব্যটা পড়তে পড়তে যে কথাগুলো গুছালাম, পড়ে শেষ করে দেখি আপনিই সেগুলো আরও সুন্দর করে গুছিয়ে বলে দিলেন। অশেষ ধন্যবাদ।
মোল্লা, আপনার বিশ্বাস নিয়ে আমিও কোন কথা বলব না। তবে আপনার যুক্তিতর্ক দেখে খালি ছোট্ট একটা কথা মনে পড়ছে। ধরেন, দুই বন্ধু রাতের বেলায় গোরস্তানের পাশ দিয়ে হাঁটছে, হঠাৎ দেখে একটা কবরের উপরে সাদা কিছু একটা ভাসছে। এক বন্ধু ভূতে বিশ্বাসী। সে ভূত মনে করে উলটা দিকে দৌড় দিল। আরে বন্ধু ভূতে বিশ্বাস করে না বলে ভয় পেলেও একটু এগিয়ে গিয়ে দেখল, কবরের উপরে একটা গাছের ডাল থেকে সাদা কাপড় ঝুলছে।
এখন আপনি বলুন, কার কাজ ঠিক হল।
==========================
আবার তোরা মানুষ হ!
==========================
আবার তোরা মানুষ হ!
আপনার সুবিশাল মন্তব্যে জন্যে ধন্যবাদ। এই অধমের একটা সরল প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে আপনি যে ভাবে স্তন্যপায়ী প্রানী এবং মাছের শরীরবৃত্তীয় গঠন, রক্ত সঞ্চালন, রক্তের গঠন ইত্যাদির অবতারণা করেছেন তা সত্যিই প্রশংসার(!) দাবীদার। আপনার দেওয়া জ্ঞানে আমি যথেষ্ট আলোকিত এবং পুলকিত হয়েছি। তবে ভবিষ্যতে যে হালাল খাব তার কোন নিশ্চয়তা দিতে পারছিনা। কারণ গত ৩০ বছর ধরে যা পাই তাই খাই নীতিতে চলে শরীরের তেমন কোন ক্ষতি হয়েছে বলে মনে হচ্ছেনা। আর আসেপাশে লোকজন হরদম শুকরের মাংস খাচ্ছে তাতেও তেমন কিছু ক্ষতিবৃদ্ধি দেখছিনা। তাই ব্যাবহারিক দিকথেকে আপনার মারফতী বিজ্ঞান ব্যাখ্যার কোন সত্যতা আমি খুঁজে পাইনি।
আপনার সুবিধাবাদী এই অবস্থানটি খুবই প্রশংসনীয়। যখনই ধর্মের কোনকিছু বিজ্ঞান(!) সম্মত হবে তখন সেগুলো জোরগলায় বলে বেড়াবেন আবার বিরোধ দেখাদিলেই বলবেন আজকের বিজ্ঞান হয়ত ঠিকটা বলতে পারছেনা ১০০ বছর পরে ঠিকই আসল জিনিষটা আবিষ্কার হবে।
আরে কি বলেন, তালগাছটা তো এদেরই
==========================
আবার তোরা মানুষ হ!
==========================
আবার তোরা মানুষ হ!
অন্ধবিশ্বাস আর যুক্তির অবস্থান দুই বিপরীত মেরুতে। আট আনা অন্ধবিশ্বাস আর আট আনা যুক্তির যোগফল শূন্য। কেউ অন্ধবিশ্বাসী হতে চাইলে তার কাছ থেকে যুক্তি আশা করাই অযৌক্তিক। আবার কোনো যুক্তিবাদীর কাছ থেকে অন্ধবিশ্বাস প্রত্যাশা করাও বোকামি।
_____________________
আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।
শুয়োর রান্তেছি। সন্যাসীর ফর্মূলায়। অতি অল্প আঁচে বাড়তি পানি ছাড়া বেশী মসলা দিয়া ফালাইয়া থুইছি। আরো ঘন্টা খানেক পর কৈতারুম কেমন হৈল।
অজ্ঞাতবাস
অজ্ঞাতবাস
আমিও আইজ গিয়া বরাহ রান্ধুম।
------------------------------------------------------------------------
অভ্র আমার ওংকার
খাইতে খারাপ হওয়ার কথা না, তবে একটা গন্ধ থাকে কেমন জানি পিজ্জা খাইতে গিয়ে পাইসি। আপনারটায় গন্ধ না থাকলে জানায়েন। রেসিপিটা কই? লিঙ্ক দিতে পারবেন?
আমার এক চাইনিজ বন্ধুর রান্নাতেও গন্ধ পাইনাই, কিন্তু ওরে গুতায়ে রেসিপি বাইর করতে পারিনাই, বুঝেনা অ্যাকচুয়ালি কোন জিনিসগুলা (সবই) আমারে বলা লাগবে।
==========================
আবার তোরা মানুষ হ!
==========================
আবার তোরা মানুষ হ!
কোন ঝোলটোল নাই। জাস্ট পিঁয়াইজের ভুনা। গজব ঝাল। লগে বাসমতি না... ,মোডা চাইলের ভাত..লগে এক্টু কাঁচা পিঁয়াইজ .....ওরে নারে....
অজ্ঞাতবাস
অজ্ঞাতবাস
আররে খাইসে! আপনে থাকেন কই? কাছেপিঠে থাকলে এখনই আইতাসি!
==========================
আবার তোরা মানুষ হ!
==========================
আবার তোরা মানুষ হ!
আটলান্টিকের এই পাড়ে। আইতে আইতে হাঁড়ি শ্যাষ ...
অজ্ঞাতবাস
অজ্ঞাতবাস
এই পাড় মানে কোনটা? আম্রিকা না ইউরোপ? আইচ্ছা, নিজেরাই রান্ধুম, আমার বিবিরে ধরায়ে দিলে সে মশল্লা ভালই বুঝে।
ভাল কথা, পর্ক কিনতে গিয়া প্রত্যেকবার পিছাইসি গায়ে লাইগা থাকা গিদগিদা চর্বি দেইখা, চর্বি ফালাইসেন কেমনে? কোন সহজ প্রসেস?
==========================
আবার তোরা মানুষ হ!
==========================
আবার তোরা মানুষ হ!
পিজ্জায় সরাসরি বরাহের মাংস তো কমই দেয়, বেশী দেয় ধোঁয়ামারা (স্মোকড প্যাপিরনি/সালামি) নয়তো লবনমারা (বেকন), দুইটাই অনভ্যস্থ রসনায় বিভৎস লাগতে পারে। কিন্তু তাতে মাংসের দোষ নাই, সেটা ধোয়া বা লবনের দোষ।
পিজ্জার পেপারনি, সালামি বোধ হয় গরু-শূকর মিশায়ে করে, খারাপ লাগে না, বেকনও কিছুতে দিয়া খাইতে ভালই। সালামি ভাইজা স্যান্ডুইচও বানাইসি, ব্ল্যাক ফরেস্ট হ্যামও খাইসি সাবওয়েতে। এগুলায় গন্ধ পাইনাই। গন্ধ পাইসি যখন পিজ্জায় হ্যাম নিসি তখন।
==========================
আবার তোরা মানুষ হ!
==========================
আবার তোরা মানুষ হ!
সব গরু বেহেস্তে যাবে, কারণ ওরা মাংস খায় না
আমি আগে জানতাম না জবাহ এর সময় আল্লাহ র নাম নেয়ার কথা টা যে কুরানে লেখা আছে। কিছুদিন আগে জানলাম।অনেক তর্কই করা যায়, কিন্তু শেষ তো নাই। নিচের লিঙ্কটা পড়ে দেখতে পারেন, এ সম্পরকিত কুরানের সব আয়াতগুলো দেয়া আছে।
http://www.madania.org/index.php?option=com_content&view=section&id=4&Itemid=4
আর কোন যুক্তি তর্ক দিয়ে হালাল হারাম নিরধারন না করে এটাই কি উচিত না যে, আল্লাহ নিষেধ করেছেন? গন্ধম ফলের কি দোষ ছিল, সে তো একটা ফল মাত্র। কে কতটা মানি না মানি সেটা আমাদের বিশ্বাসের জোরের উপর। আর কতটা নিরুপায় হলে আল্লাহ কতটুকু মাফ করবেন, তা শুধু আপনি আর আল্লাহ ই জানবেন।যুক্তি দিয়ে বানী পরিবর্ত্ন নয়, আসুন, যদি বিশ্বাস করুন তো চেষ্টা করুন আপনার সর্বোচ্চ... আর আল্লাহ তো সবই দেখেন, নিরুপায় হলে মাফ করবেন আশা করি।
এই কথাগুলো ঠিক এইভাবেই বুঝায়ে বুঝায়ে আমি টায়ার্ড হয়ে গেছি। মাইনষে তাও বুঝতে চায় না।
কুরানে ৪ জায়গায় ঠিক এই একই কথা লেখা আছে। সমস্যা হচ্ছে আমাদের মধ্যে যারা ধর্ম নিয়ে বেশি লাফঝাপ দেই। যাদের ঈমানে সামান্য কথায় ঘা লেগে যায়, তারা অধিকাংশই জীবনে একবারও পুরা কোরআন মাতৃভাষায় পড়ি নাই।
অধিকাংশ ধার্মিক-ই অভ্যসবশত ধর্ম পালন করে - বাবা মা করেন, দাদা নানারা করতেন, তাই করেন। এর ফলে ধর্মে অনেক 'মিথ' ঢুকে পরেছে। মানুষ সেগুলা যাচাই না করেই ধর্ম পালন করে। 'আমি ধর্ম বিশ্বাস করি' কথাটা বলার মানেই হচ্ছে আমি ধর্মটা জেনেছি অতপর বিশ্বাস করেছি। যে তার নিজের ভাষায় ধর্ম-গ্রন্হটাই একবার পড়ল না, সে কিভাবে ধর্ম জানতে পারে সেইটা মাথায় ঢুকে না। বিশ্বাস তো আরও পরের ধাপ। অথচ ধার্মিকদের ভেতরে এই জাতটাই বেশি - জানে না কিন্তু বিশ্বাস করে। এদের কেউ কেউ আবার দাবী করেন, 'প্রশ্ন না করে মেনে নেওয়াটাই তো ঈমান, দেখেশুনে প্রমান নিয়ে মানার ভেতরে ঈমানের কিছু নাই' হায়রে সেলুকাস!
প্রশ্ন করে করেই যে আজ এদ্দুর আসা হল, সেই কথাটা এই অর্বাচীনদের কে বুঝাবে।
অসাধারন পোষ্ট, ভালো লাগলো ।
অনেক ধন্নবাদ।
‘‘যেসব জন্তুর উপর আল্লাহর নাম উচ্চারিত হয় না, সেগুলো থেকে ভক্ষণ করো না; এ ভক্ষণ করা গোনাহ। নিশ্চয় শয়তানরা তাদের বন্ধুদেরকে প্রত্যাদেশ করে-যেন তারা তোমাদের সাথে তর্ক করে। যদি তোমরা তাদের আনুগত্য কর, তোমরাও মুশরেক হয়ে যাবে।’’ সূরাহ্ আল-আন’আমঃ১২১।
এইভাবে তৃতীয় ব্যাক্তিদের অধিকারে আঘাত করাডা ঠিক না, সংখ্যাগরিষ্ঠের অনুভূতিতে আঘাত লাগবে।
পুনশ্চঃ হিমু লোক্টা এত্তগুলান ধৈর্য কোইত্তে পায়? আবারও অবাক হলাম।
পুনঃপুনশ্চঃ লিংক কাজ করে না, তাসনীম ভাই। আবার দিতে পারেন কি?
আব্বার কাছেও মোটামুটি অনুরূপ কথা শুনতে শুনতেই বড় হয়েছি কিনা!
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
নতুন মন্তব্য করুন