যুদ্ধাপরাধী মীর কাসেম আলীর বিরুদ্ধে রায়ের খবরে প্রথম আলো লিখেছে,
আংশিক প্রমাণিত দুটি অভিযোগে কিশোর মুক্তিযোদ্ধা জসিমসহ আটজনকে হত্যার দায়ে তাঁকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে ট্রাইব্যুনাল। এর মধ্যে ১১ নম্বর অভিযোগে তিন বিচারক সর্বসম্মত প্রাণদণ্ডের রায় দিলেও ১২ নম্বর অভিযোগে ফাঁসির সিদ্ধান্ত হয়েছে সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে। সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত আটটি অভিযোগে অপহরণ ও আটকে রেখে নির্যাতনের দায়ের মীর কাসেমকে সব মিলিয়ে ৭২ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
একইভাবে বিডিনিউজ২৪ লিখেছে,
মুক্তিযুদ্ধকালীন চট্টগ্রামের আলবদর কমান্ডার জামায়াতের শুরা সদস্য মীর কাসেম আলীর বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের আটটি অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে এবং দুটি অভিযোগ আংশিক প্রমাণিত হয়েছে। যে দুটি অভিযোগ আংশিক প্রমাণিত হয়েছের তার মধ্যে রয়েছে ১১ ও ১২ নম্বর অভিযোগ, যাতে হত্যার কথাও রয়েছে।
দুই ক্ষেত্রেই অনেকটা "সন্দেহাতীত" শব্দের বিপরীতে "আংশিক" শব্দটাকে দেখানো হয়েছে। বাস্তবে এই সংবাদপত্রগুলোর ভাষায় "আংশিক" প্রমাণিত অপরাধ দুটির জন্যই মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছে। এই নিউজ ২টি পড়লে সাদা চোখে এই রায়কে অযৌক্তিক মনে হবে। আংশিকভাবে প্রমাণিত অভিযোগের রায়ে কাউকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া বিষয়টা বিরাট প্রশ্নবোধক চিহ্ন হিসেবে মানুষের কাছে যাবে।
যুদ্ধাপরাধী মীর কাসেমের বিরুদ্ধে দেয়া রায়ের কপি অনলাইনে পাওয়া যায়। ৩৫১ পৃষ্ঠার পুরো রায়টি পড়ার সময় করতে পারি নি। তবে "আংশিক" শব্দের ইংরেজি হিসেবে "partial" শব্দটি রায়ে এমনকি ১বারও খুঁজে পেলাম না।
রায়ের কপির একদম শেষের দিকে রায়গুলোর একটা সারসংক্ষেপ দেয়া আছে। সেখানে মৃত্যুদণ্ড দেয়া ১১ ও ১২ নম্বর অপরাধের রায়ে বলা হয়েছে,
The accused Mir Quasem Ali is found UNANIMOUSLY guilty of the offence of ‘murder’ as crimes against humanity enumerated in section 3(2) of the International Crimes (Tribunals) Act, 1973 as listed in charge no.11. Accordingly he be convicted and condemned UNANIMOUSLY to a ‘sentence of death’ for the crimes as listed in this charge and he be hanged by the neck till he is dead, under section 20(2) of the International Crimes (Tribunals) Act, 1973.The accused Mir Quasem Ali is found BY MAJORITY guilty of the offence of ‘murder’ as crimes against humanity enumerated in section 3(2) of the International Crimes (Tribunals) Act, 1973 as listed in charge no.12. Accordingly he be convicted and condemned BY MAJORITY to a ‘sentence to death’ for the crimes as listed in this charge and he be hanged by the neck till he is dead, under section 20(2) of the International Crimes (Tribunals) Act, 1973.
স্পষ্টতই এখানে "আংশিক" বলে কিছু নাই। ১১ নম্বর অপরাধের সাজার বিষয়ে ৩ বিচারকই ফাঁসির ব্যাপারে একমত, আর ১২ নম্বরের ব্যাপারে ৩ জনে ২ জন ফাঁসির ব্যাপারে একমত।
তাহলে প্রথম আলো ও বিডিনিউজ২৪ সংবাদপত্রগুলো ১১ ও ১২ নম্বর অভিযোগ "আংশিকভাবে প্রমাণিত" এটা কোথায় পেলো? এবং আংশিকভাবে প্রমাণিত বলতে আসলে তারা কি বুঝাতে চাইছে? রায়ের এরকম অপরিষ্কার সংবাদ কি মানুষকে সন্দেহযুক্ত করে তুলবে না?
মন্তব্য
আমারও এটাই মনে হচ্ছিল যে এই আংশিক মানে কী আসলে, পরে রায় পড়ে দেখি এই অবস্থা।
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
এখন মনে হচ্ছে, এটা অর্ডারি মাল। "আংশিক" শব্দটার উৎপত্তি কোথা থেকে হলো, এখনো বুঝতে পারছি না।
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
এই প্রশ্ন আমারও ছিল। খবর পড়ার পরপরই আমি ফেসবুকে আমার পরিচিত এক ব্যারিস্টারকে প্রশ্নটা করেছিলা। ও নিজেও এই 'আংশিকভাবে' প্রমানিত ওয়ারডিং নিয়ে কনফিউজড। ওর ভাষ্যমতে রায় দেবার ক্ষেত্রে হয় কোন অভিযোগ প্রমানিত হয়, বা হয় না। এখানে আংশিকভাবে প্রমানিত হবার কোন অবকাশ আছে বলে তারও জানা ছিল না। এখন পুরনাঙ্গ রায় পড়ার পর দেখি কেস পুরা ঘোলা!
বলাইদা ধন্যবাদ এই জিনিস সামনে তুলে ধরার জন্য।
--------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
সব বেদনা মুছে যাক স্থিরতায়
হৃদয় ভরে যাক অস্তিত্বের আনন্দে...
আমাদের সাংবাদিকদের এই হাল তাহলে। রায় না পড়েই রিপোর্ট লিখে দেয়।
গোঁসাইবাবু
অনেক সাংবাদিকেরই পড়াশোনার ঘাটতি আছে। কিন্তু এতো গুরুত্বপূর্ণ নিউজে হেলাফেলার বিষয়টা ঠিক পড়াশুনার ঘাটতি থেকে উদ্ভূত না। লেখাটা সোহরাব হাসানের লেখা। আমার বিবেচনায় এই লোক প্রথম আলোর প্রোপাগান্ডা মেশিনের সবচেয়ে দক্ষ ব্রেইন।
কিছুটা কাকতালীয়; আমার আগের লেখাটিও সোহরাব হাসানের খবিশামি নিয়ে লেখা। "আংশিক" শব্দটা না বুঝে লেখা না, এটা নিশ্চিত।
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
আমাদের সাংবাদিকদের ইংরেজি জ্ঞান ভয়াবহ!!!
লেখায়
ব্লগবাড়ি । ফেসবুক
সোহরাব হাসান অনেক বুদ্ধিমান লোক। তার ইংরেজি জ্ঞানের অভাবের জন্য এরকম হয় নাই, এটা নিশ্চিত।
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
অভিযোগের টাইটেলে শুধু খুনের কথা বলা আছে, সামারিতে সাথে অপহরণ, নির্যাতন এই অভিযোগগুলা আছে। রায়ে যেহেতু গিলটি অফ মার্ডার বলা আছে, সেখান থেকেই মনে হয় এই আংশিকের ধারণা পেয়েছে।
কিন্তু রায়ে এই কথাও বলা আছে,
যা বুঝলাম আইনত "আংশিক প্রমাণিত" বলার কোন ভিত্তি এই রায়ে নাই।
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
ধন্যবাদ।
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
ছাপানো/অনলাইন পত্রিকার ক্ষেত্রে কোনও নীতিমালা কি আছে? যদি না থেকে থাকে বিকল্প ব্যাবস্থা হিসেবে তথ্য প্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারার কড়াকড়ি প্রয়োগ দেখতে চাই। লঘুপাপে গুরুদণ্ড তো অনেক হল, এবার গুরুপাপে গুরুদণ্ড হোক।
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
সরকার এই বিষয়ে তেমন কোনো কার্যকর উদ্যোগ নিচ্ছে না। মিজানুর রহমানদেরকে যখন আদালতে তলব করা হলো, তখন কয়েকদিন আলু মোটামুটি সাইজ হয়ে গিয়েছিলো। প্রোপাগান্ডা আর মিথ্যার হার অনেক কম ছিলো। এরপর আদালতে মিটমাট করেই পুরোদমে একই আকাম শুরু।
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
রায় বিকৃত করে প্রকাশ করার অপরাধে কেন এই দুই মিডিয়া হাউস শাস্তিযোগ্য হবে না?
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
হ
-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...
সবার আগে এইগুলানের আগে শাস্তি দেয়া উচিত। আদালত অবমাননা হয় না এতে?
-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...
এ বিষয়টা জোরেশোরে আসা দরকার। প্রিন্ট মিডিয়া বা টিভির লোকজন এটা নিয়ে মুভ করবে না, নিশ্চিত। অনলাইনের লোকজন এটা বুঝতে বুঝতে খবিশরা যা করার করে ফেলবে। আলুর ওই লেখার রেফারেন্স দিয়া উইকিতে নিবন্ধ হবে, ২০ বছর পরে যুদ্ধাপরাধী কাসেমের "অন্যায়" রায় নিয়া বুদ্ধিবেশ্যারা কথা বলবে।
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
একমত।
রাসিক রেজা নাহিয়েন
ধন্যবাদ।
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
ভাল ইংরেজী না জানা বা রায় না পড়ার কারণে এ ধরণের নিউজ করা হয়েছে বলে আমার মনে হয় না। আলু পত্রিকার অতীতের কার্যকলাপে আমার মনে হয় কোন দুরভিসন্ধির অংশ হিসেবে ডেলিবারেটলী এটা করা হয়ে থাকতে পারে।
এর জন্য যুক্তিসঙ্গত সময়ের মধ্যে সংশোধনী না দিলে এবং নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থণা না করলে যথাযথ আইনে এদের বিচারের আওতায় আনা হোক।
- পামাআলে
স্পট অন। প্রথম আলো প্রোপাগান্ডার ক্ষেত্রে অনেক পেশাদার। আলুতে প্রত্যেকটা দাড়িকমা হিসাব করে লেখা হয়। চিপায় পড়লে সরি বলে পার পায়।
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
আমিও কালকে এইটা নিয়ে “আংশিক” কনফিউজড ছিলাম; আংশিক প্রমাণিত কী কথা আবার। পরে পুরো মামলার নথি ডাউনলোড করে partial লিখে সার্চ দ্য খোঁজ করলাম। না পেয়ে, Unanimous লিখে খোঁজ দিয়ে দেখলাম, ১১ নম্বর অভিযোগে সর্বসম্মতভাবে ফাঁসির রায় হয়েছে, সর্বসম্মতভাবে ২, ৩, ৪, ৬, ৭, ৯, ১০ এবং ১৪ নম্বর অভিযোগের ভিত্তিতে ভিন্নভিন্ন মেয়াদে সাজা, আর ১২ নম্বর অভিযোগে সবাই সম্মত হননি, তবে সংখ্যাগরিষ্টের মতামতের ভিত্তিতে ফাঁসির আদেশ দিয়েছে। এই শেষোক্ত বিষয়টি অনুবাদের ঠেলায় হয়ে গেলো আংশিক।
আমি আইন বিশেষজ্ঞ নই, তবে যদ্দুর জানি, আদালতে বিচারকাজ শুরু হয় এইটা ধরে নিয়ে যে, অভিযুক্ত আসামী নিরপরাধ। এরপর, বিবাদীর (বা ওইপক্ষের আইনজীবীর) দায়িত্ব সেটা ভুল প্রমাণ করা, এবং এটাও প্রমাণ করা যে আসামীর বিরুদ্ধে সন্দেহাতীত তথ্যপ্রমাণ আছে যা তাকে দণ্ড দেয়ার জন্য পর্যাপ্ত। সেটা প্রমাণিত না হলে আসামী খালাস পেয়ে যায়। বিবাদীপক্ষ প্রমাণ করতে না পারলে আসামীকে প্রমাণ করার দরকার নাই যে সে নিরপরাধ।
----------------------------
নয় মাসে হলো তিরিশ লক্ষ খুন
এরপরও তুমি বোঝাও কি ধুন-ফুন
বিষয়টা নিয়ে জনসচেতনতা দরকার, বিষয়টার প্রতিবাদ হওয়া দরকার। আজকের প্রথম আলোর প্রোপাগান্ডা, আগামীকালের যুদ্ধাপরাধীর রেফারেন্স।
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
আমি বিডিনিউজের ওই রিপোর্টার এবং সম্পাদকমহলে অলরেডি একটা প্রতিক্রিয়া পাঠিয়েছি। একটা আস্ত লেখাই লেখতে চাইলাম রেফারেন্সসহ, কিন্তু আপনার এই লেখার মূল বক্তব্যের চেয়ে আমারটা খুব আলাদা কিছু না বিধায় আরেকটা লেখা লেখলাম না, যদিও সেটা আংরেজিতে। তাছাড়া, একই বিষয়ে লেখলে আমারটা নকল মনে হওয়ারও সম্ভাবনা প্রবল। ভাগ্যিস সকালবেলা সচলটা ঘুরতে আসলাম, মূলত আমার লেখাটা পোস্টানোর জন্য, এবং আপনার এই লেখাটা দেখলাম।
যাই হোক, বিডিনিউজে মূল কনসার্নটা জানিয়েছি। দেখা যাক কী হয়। প্রথম আলোসহ অন্যান্য পত্রিকার গোচরেও বিষয়টা আনা উচিত। অভিমান করে বসে না থেকে বিষয়টা নিয়ে সোচ্চার হওয়া দরকার, নাইলে প্রথমালোর এজেন্ডাই বাস্তবায়িত হবে, আমরা যথারীতি ধরা।
----------------------------
নয় মাসে হলো তিরিশ লক্ষ খুন
এরপরও তুমি বোঝাও কি ধুন-ফুন
বিবিসির রিপোর্টেও দেখলাম 'আংশিকভাবে প্রমাণিত'র ইংরেজী লেখা। তারা সকলেই একই প্রপাগান্ডার অংশ হতে পারে অথবা আমাদের দেশের পত্রিকাগুলো বিবিসি থেকে কপি মারছে। প্রতিবাদপত্র বিবিসিতেও পাঠাতে হবে।
লাইন দুটো- "It also partially proved a further two of the charges brought against the media tycoon."
লিংক- http://www.bbc.com/news/world-asia-29870007
গোঁসাইবাবু
এগুলো ইচ্ছেকৃত প্রোপাগান্ডা ছড়ানোর চেষ্টা। এবং কোন একদিন ছাগুরা পেপার কাটিং নিয়ে বলবে দেখেন সেইদিনের পত্রিকাগুলো এই রায় নিয়ে কি বলেছিলো? আমার মনে হয় সরকারের এই বিষয়ে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া উচিত, এমন নীলচে হলুদ সাম্বাদিকদের আইনের মুখোমুখি করা উচিত।
-------------------------------------------
আমার কোন অতীত নেই, আমার কোন ভবিষ্যত নেই, আমি জন্ম হতেই বর্তমান।
আমি অতীত হবো মৃত্যুতে, আমি ভবিষ্যত হবো আমার রক্তকোষের দ্বি-বিভাজনে।
এই লেখাটি পড়ার পর প্রথম আলোতে নিউজটির প্রতিবেদক(এবং উপ সম্পাদক) সোহরাব হাসানের সাথে টেলিফোনে কথা বললাম, এবং সত্যি সত্যি আশ্চর্য হলাম। আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম- ১১ এবং ১২ নম্বর রায় দুটি কি আসলেই আংশিকভাবে প্রমানিত? যদি তাই হয়, তাহলে সে ক্ষেত্রে কোন রকম সাজা কি দেয়া যেতে পারে? উত্তরে তিনি বললেন- আংশিকভাবে বলতে এটা বোঝানো হয়েছে যে উক্ত দুটি অভিযোগে মীর কাসেম আলীর বিরুদ্ধে একাধিক জনকে হত্যা, নির্যাতন, গুম, ইত্যাদি অভিযোগ ছিল, এর মধ্যে হয়ত হত্যার অভিযোগ প্রমানিত হয়েছে, গুমের অভিযোগ প্রমানিত হয় নি, এই রকম আর কি। আমি আবার জিজ্ঞেস করলাম- এর মধ্যে উক্ত দুটি অভিযোগের অন্তর্গত কোন কোন অভিযোগ যে অপ্রমানিত, সে তথ্যটি কোথায় পেলেন? যদি আসলেই সেরকম কিছু হয়ে থাকে, তাহলে সেই অভিযোগ কোনগুলো? তখন তিনি আমাকে এ বিষয়ে জানতে রায়ের বিস্তারিত পড়ে দেখতে বললেন। আমি আবার জিজ্ঞেস করলাম- অপ্রমানের বিষয়টি আপনি জানলেন কি ভাবে, বিস্তারিত রায় পড়ে? এবারে তিনি বললেন- আসলে আমরা সংবাদটি পেয়েছি নিউজ এজেন্সি মারফত, এটি তাদেরই ভাষ্য। এরপর তিনি বললেন মোক্ষম কথাটি- "আসলে এই সংবাদটি নিয়ে পাঠকমহলে কিছুটা(?) বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে"। লে হালুয়া..............
নিউজ এজেন্সি যদি বলে মতিউর রহমান একটা কুত্তার বাচ্চা, সেটা কি আলুপেপারে কোনো যাচাইবাছাইসম্পাদনা ছাড়া ছাপিয়ে দেওয়া হবে?
সোহরাব হাসানের সাথে সরাসরি কথা বলার জন্য ধন্যবাদ।
আপনার অভিজ্ঞতা থেকে পুরোপুরি পরিষ্কার, সোহরাব হাসানরা ইচ্ছাকৃতভাবেই এই মিথ্যা প্রচার করেছে। সে প্রথমে "হয়তো"র আবরণে নিজের মনগড়া ব্যাখ্যা দিয়ে মিথ্যাকে হালাল করার চেষ্টা করেছে। পুরোপুরি আটকে যাওয়ার পরে অন্যের উপর দোষ চাপিয়ে দিয়েছে। সংবাদটির বিষয়ে সৎ থাকলে উল্টাপাল্টা ব্যাখ্যা দিয়ে হালাল করার চেষ্টা করতো না। আর বিষয়টি ভুল প্রমাণিত হওয়ার পরে সরি বলে সেটা সংশোধন করতো।
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
এক্কেরে জায়গামত গুল্লি। শেয়ার দিলাম
রাষ্ট্রপক্ষের সমস্ত স্বাক্ষ্য প্রমাণ পুঙ্খানুপুঙ্খরূপে পরীক্ষা বা পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, ২ এবং ১৬ নম্বর সাক্ষীর কেউ দাবী করেনি তারা জসিমকে অপহৃত হতে বা নির্যাতিত হতে দেখেনি । তাদের স্বাক্ষ্যে তারা দাবী করেন, তাদের যে ঘরে আটকে রাখা হয়েছিল সেখান থেকে তারা আর্ত চিৎকার শুনতে পেয়েছিলেন এবং চিৎকার থেমে যাওয়ার কিছুক্ষন পর আসামী ও তার সংগীরা জসিমের দেহ বয়ে নিয়ে আসে এবং রুমের ভেতর ছুড়ে দেয় । এর কিছুক্ষন পরই জসিম মারা যায় । তাদের দুজনের মিলিত স্বাক্ষ্য থেকে এটা নিশ্চিত ভাবে বলা যায়, ঐ আর্ত চিৎকার অসহায় মুক্তিযোদ্ধা জসিম ছাড়া আর কারো নয় ।
দেখা যাচ্ছে বিডিনিউজের "৭০ বছরের বৃদ্ধার সাক্ষীতে ফাঁসির" দাবীটি অসত্য । আদালত ৬ জন সাক্ষীর স্বাক্ষ্য নিয়েছে এবং ২ জন সাক্ষী যারা ডালিম হোটেলের ঐ নির্যাতন কক্ষে জসিমের সাথে ছিলেন তাদের স্বাক্ষ্য আমলে নিয়েই রায় দেয়া হয়ছে ।
অনুবাদ ঃ স্বাক্ষ্যপ্রমাণ থেকে এই প্রমাণিত হয় যে, মীর কাশেম আলী মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যা করার এক হীন এবং প্রতিশোধপরায়ন উদ্দেশ্যে নিয়োজিত ছিলেন এবং এই উদ্দেশ্যেই তিনি এবং তার কুখ্যাত আল-বদর বাহিনীর সহযোগীরা কিশোর মুক্তিযোদ্ধা জসিমকে হত্যা করে । যেভাবে কিশোর জসিমের উপর পাশবিক নির্যাতন চালানো হয় এবং তার আহত দেহ ছুড়ে ফেলা হয় তা যে কোন বোধ সম্পন্ন মানুষের বিবেককে নাড়া দেয় । এই নৃশংসতার ব্যাপ্তি এবং অপ্রাপ্ত বয়স্ক এক কিশোরের উপর অমানবিক নির্যাতনের অপরাধ বিচারে আসামী হিসেবে দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি পাওয়ার যোগ্য এবং বিন্দুমাত্র ক্ষমা প্রদর্শনের যোগ্য নয় । তাই কিশোর মুক্তিযোদ্ধা জসিমকে অপহরন, আটকে রাখা, নির্যাতন এবং হত্যার অপরাধে আসামী মীর কাশেম আলীকে ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইমস ট্রাইবুন্যাল অ্যাক্ট, ১৯৭৩ এর ২০ (২) ধারা অনুসারে মৃত্যুদন্ড দেয়া হলো ।
রায়ের এই অংশ বা অন্য কোন অংশেই "আংশিক প্রমানিত" এমন কোন শব্দ বা বাক্য খুজে পাওয়া যায় না । আরো দেখা যাচ্ছে বিডিনিউজের ৭০ বছরের বৃদ্ধার সাক্ষ্যে ফাঁসির শিরোনামটিও বিভ্রান্তিকর ।
দস্যু ঘচাং ফু
==============================
চৈনিক নই, আমি নিতান্তই ভেতো বাঙালী,
নাই কোন তলোয়ার, কি বোর্ড খানাই সম্বল খালি;
জামাত দেখিলে তেড়েফুড়ে তাহাতেই ঝড় তুলি ।
কোন উকিল মোক্তারের সাহায্য ছাড়াই ৩৫১ পৃষ্ঠার রায় ঘেটে খুটিনাটি বিশ্লেষন বুঝতে পারার আবেগ সামলাতে না পেরে প্রথমে আলাদা পোস্ট হিসেবেই লিখে ফেলেছিলাম । আলোচনার ধারাবাহিকতা বজায় রাখার জন্য এই পোস্টের নিচেই কমেন্ট হিসেবে জুড়ে দিচ্ছি । আগের কমেন্টের সাথে কিছুটা ওভারল্যাপ করতে পারে । তার উপর আইনের ভাষার কতটা ভাবানুবাদ গ্রহনযোগ্য আর কতটা নয় সেই ব্যপারেও কনফিউজড । তাই অগ্রিম ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি ।
দুটো বিষয় মুলত খুজে দেখার চেষ্টা করেছি রায়ের পাতা ঘেটে ঃ
১। " আংশিক প্রমাণিত "
২। "৭০ বছরের বৃদ্ধার সাক্ষীতে ফাঁসি"
১। " আংশিক প্রমাণিত "
===================
প্রথম আলো এবং বিডিনিউজ২৪
কমেন্টের সেকশন থেকে দেখতে পাচ্ছি এই আংশিক প্রমাণিত তত্বের সপক্ষে প্রথম-আলো সোহরাব হোসেন নিউজ এজেন্সির ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে দিচ্ছেন । এই ব্যপারে লেখক শুরুতেই প্রশ্ন তুলেছেন এবং জানাচ্ছেন আংশিক এর ইংরেজী ৩৫১ পৃষ্ঠার রায়ে তিনি কোথাও খুজে পান নি ।
অনুবাদ ঃ স্বাক্ষ্যপ্রমাণ থেকে এই প্রমাণিত হয় যে, মীর কাশেম আলী মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যা করার এক হীন এবং প্রতিশোধপরায়ন উদ্দেশ্যে নিয়োজিত ছিলেন এবং এই উদ্দেশ্যেই তিনি এবং তার কুখ্যাত আল-বদর বাহিনীর সহযোগীরা কিশোর মুক্তিযোদ্ধা জসিমকে হত্যা করে । যেভাবে কিশোর জসিমের উপর পাশবিক নির্যাতন চালানো হয় এবং তার আহত দেহ ছুড়ে ফেলা হয় তা যে কোন বোধ সম্পন্ন মানুষের বিবেককে নাড়া দেয় । এই নৃশংসতার ব্যাপ্তি এবং অপ্রাপ্ত বয়স্ক এক কিশোরের উপর অমানবিক নির্যাতনের অপরাধ বিচারে আসামী হিসেবে দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি পাওয়ার যোগ্য এবং বিন্দুমাত্র ক্ষমা প্রদর্শনের যোগ্য নয় । তাই কিশোর মুক্তিযোদ্ধা জসিমকে অপহরন, গুম, নির্যাতন এবং হত্যার অপরাধে আসামী মীর কাশেম আলীকে ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইমস ট্রাইবুন্যাল অ্যাক্ট, ১৯৭৩ এর ২০ (২) ধারা অনুসারে মৃত্যুদন্ড দেয়া হলো ।
রায়ের এই অংশ বা অন্য কোন অংশেই "আংশিক প্রমানিত" এমন কোন শব্দ বা বাক্য খুজে পাওয়া যায় না । উপরের কমেন্ট থেকে আরো জানছি সোহরাব হোসেনের দাবী করছেন, "হয়তো হত্যা, গুম, নির্যাতনের কয়েকটি প্রমানিত হয়েছে কয়েকটি হয়নি তাই আংশিক প্রমাণিত বলা হচ্ছে " অথছ উপরের ভারডিক্ট অফ সেনটেন্স সেকশনে পরিষ্কার বলা হচ্ছে অপহরন, গুম, নির্যাতন এবং হত্যার অভিযোগে ফাঁসি দেয়া হচ্ছে । মানে দাড়াচ্ছে সোহরাব হোসেনের এই দাবিটিও অমুলক।
২। "৭০ বছরের বৃদ্ধার সাক্ষীতে ফাঁসি" ( বিডিনিউজ২৪ এর দাবি )
==========================================
স্বাক্ষ্য পর্যালোচনা করে জানা যাচ্ছে ঃ
এই অভিযোগ প্রমাণ করতে রাষ্ট্রপক্ষ ৬ জন সাক্ষীর মৌখিক স্বাক্ষ্য এবং একটি প্রকাশিত লেখাকে প্রমাণ হিসেবে উপস্থাপন করেছেন ।
রাষ্ট্রপক্ষের সমস্ত স্বাক্ষ্য প্রমাণ পুঙ্খানুপুঙ্খরূপে পরীক্ষা বা পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, ২ এবং ১৬ নম্বর সাক্ষীর কেউ দাবী করেনি তারা জসিমকে অপহৃত হতে বা নির্যাতিত হতে দেখেনি । তাদের স্বাক্ষ্যে তারা দাবী করেন, তাদের যে ঘরে আটকে রাখা হয়েছিল সেখান থেকে তারা আর্ত চিৎকার শুনতে পেয়েছিলেন এবং চিৎকার থেমে যাওয়ার কিছুক্ষন পর আসামী ও তার সংগীরা জসিমের দেহ বয়ে নিয়ে আসে এবং রুমের ভেতর ছুড়ে দেয় । এর কিছুক্ষন পরই জসিম মারা যায় । তাদের দুজনের মিলিত স্বাক্ষ্য থেকে এটা নিশ্চিত ভাবে বলা যায়, ঐ আর্ত চিৎকার অসহায় মুক্তিযোদ্ধা জসিম ছাড়া আর কারো নয় ।
দেখা যাচ্ছে বিডিনিউজের "৭০ বছরের বৃদ্ধার সাক্ষীতে ফাঁসির" দাবীটি অসত্য । আদালত ৬ জন সাক্ষীর স্বাক্ষ্য নিয়েছে এবং ২ জন সাক্ষী যারা ডালিম হোটেলের ঐ নির্যাতন কক্ষে জসিমের সাথে ছিলেন তাদের স্বাক্ষ্য আমলে নিয়েই রায় দেয়া হয়ছে ।
প্রশ্ন হচ্ছে কিসের ভিত্তিতে কিংবা কি উদ্দেশ্যে প্রথম আলো এবং বিডিনিউজের "আংশিক প্রমানিত", "৭০ বছরের বৃদ্ধার সাক্ষীতে ফাঁসি" এমন বিভ্রান্তমুলক সংবাদ ছড়াচ্ছে । এমন গুরুত্বপুর্ন মামলার রায় বুঝতে বা ভাবানুবাদ করতে তাদের ভুল হয়েছে এটা মেনে নেয়াটাও বেশ কষ্টকর । তাদের এই সংবাদ সুত্র হিসেবে তুলে ধরে জামাতের প্রোপাগান্ডা মেশিন ছড়াবে তাদের মিথ্যার বেশাতি । আন্তর্জাতিক মহলে লবিস্ট নিয়োগ করা হবে বাংলাদেশের উপর চাপ বৃদ্ধি করার জন্য । তবে সবচেয়ে আশংকার যায়গা হচ্ছে বাংলাদেশের তথাকথিত শিক্ষিত সমাজের একটি বড় অংশ যারা সুলুক সন্ধান না করেই এই সব নামকরা প্রত্রিকার সংবাদ বেদ বাক্য হিসেবে মেনে নেয় । এদের মাধ্যমে এই বিভ্রান্তি ছড়াবে স্নো-বলের মত । সংঘাতপূর্ন পরিবেশ উসকে দেয়ার জন্য যদি আমারদেশের মাহমুদুর রহমানকে গ্রেফ্তার করা হয়ে থাকে থাহলে একই আইন কি আদলতের রায় বিকৃত ভাবে প্রচারের দায়ে প্রথম আলো বা বিডিনিউজ২৪ এর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না কেন ?
জামাতি ঘরানার পত্রিকা ইনকিলাবকে বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িকতার বিষ ছড়িয়ে পরে ক্ষমা চেয়ে পার পেয়ে গিয়েছে বেশ কয়েকবার । প্রথম-আলোও শাহবাগ আন্দোলনের সময় সেই পথে কয়েকবারই হেটেছে । এমন সংবাদের ইন্ধনে যদি আবার এক দফা সংঘর্ষ শুরু হয়, তার দায় প্রথম-আলো বা বিডিনিউজ কাঁধে তুলে নিবে বলে তো মনে হয় না । ক্ষমা চেয়েই পার পেয়ে যাবার চেষ্টা করবে, কারণ বাংলাদেশের মানুষ খুব সহজেই ভুলে যেতে পারে । এই মিথ্যাচার এবং তারপর ক্ষমা প্রার্থনার চক্র থেকে মুক্তির পথ হিসেবে আইনের সুষ্ঠ প্রয়োগ দরকার । কেবল ধর্মানুভুতিতে আঘাতের ছুতোয় ব্লগার গ্রেফতার করার সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে সমাজে বিশৃংখলা সৃষ্টির প্রকৃত কুশীলবদের দিকে নজর দেয়া উচিৎ ।
দস্যু ঘচাং ফু
==============================
চৈনিক নই, আমি নিতান্তই ভেতো বাঙালী,
নাই কোন তলোয়ার, কি বোর্ড খানাই সম্বল খালি;
জামাত দেখিলে তেড়েফুড়ে তাহাতেই ঝড় তুলি ।
এই শ্রমসাধ্য কাজটি করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। আমার পোস্টটিই বরং আপনার পোস্টে কমেন্ট হিসেবে মানায়।
বুঝা যাচ্ছে, রায়ের বিষয়ে এই বিকৃত খবরটি ইচ্ছাকৃতভাবেই করা হয়েছে। এদেরকে আইনের আওতায় আনার দায়িত্ব সরকারের। তবে সরকারের কান পর্যন্ত বিষয়টা যাতে পৌঁছায়, সে দায়িত্ব আমাদের।
এই গুরুত্বপূর্ণ ভুলটা সহজে চোখে পড়বে না। কিন্তু এটা রায়ের ব্যাপারে কনফিউশন সৃষ্টি করবে। এবং ভবিষ্যতে এটাকেই ছাগুরা রেফারেন্স হিসেবে দেখিয়ে প্রোপাগান্ডা ছড়াবে।
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
দস্যু ঘচাং ফু
==============================
চৈনিক নই, আমি নিতান্তই ভেতো বাঙালী,
নাই কোন তলোয়ার, কি বোর্ড খানাই সম্বল খালি;
জামাত দেখিলে তেড়েফুড়ে তাহাতেই ঝড় তুলি ।
প্রথম আলোর গৃহপালিত কলামিস্ট হাসান ফেরদৌস তার "প্রথম আলোর শক্তি" শিরোনামের লেখায় বলেছে,
১। "সুশাসনের ব্যাপারে গত সরকারগুলোর ক্ষেত্রে প্রথম আলো বিরোধিতাপূর্ণ অবস্থান নিয়েছে। দেশের দুটি প্রধান রাজনৈতিক দলই প্রথম আলোকে নিজেদের বিরোধী পক্ষ বিবেচনা করে।"
- কথা সত্য। প্রথম আলো মাইনাস টু বাস্তবায়নের কান্ডারি। তারা আওয়ামী লীগেরও বিরোধী, বিএনপিরও বিরোধী। তারা নিজেদের সুশীল স্বার্থে ডিরেক্ট বা ইনডিরেক্ট সামরিক শাসনের পক্ষে কাজ করে। আর টাকার বিনিময়ে জামায়াতসহ যুদ্ধাপরাধীর হয়ে ভাড়া খাটে।
২। "ওয়ালটার লিপম্যান একসময় নিউইয়র্ক টাইমস ও ওয়াশিংটন পোস্ট-এর উদাহরণে পত্রিকার এই বিরোধিতাপূর্ণ ভূমিকাকে গণতন্ত্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবে বর্ণনা করেছিলেন। সরকার নিজে যখন তার ভুল বুঝতে ব্যর্থ হয়, তখন সংবাদপত্র ‘দৌবারিক’ হয়ে সে ভুল ধরিয়ে দেয়। প্রথম আলো ক্রমেই সেই দৌবারিকের দায়িত্ব পালন করছে।"
- বস্তুত গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় সরকারের ভুল ধরার প্রধান দায়িত্ব বিরোধী দলের, কোনো পত্রিকার না। তাদের কাজ সংবাদ পরিবেশন করা, সরকারের নীতিনির্ধারণে সরাসরি ভূমিকা রাখা না। বিশুদ্ধ "জনস্বার্থে" বা "দেশের স্বার্থে" কোনো সংবাদপত্র প্রতিষ্ঠিত হয় না। সংবাদপত্রের ভিত্তি থাকে মূলত আর্থিক এবং সুনির্দিষ্ট মতাদর্শিক। সংবাদপত্রগুলো নিজস্ব মতাদর্শবিরোধী বা আর্থিকভাবে ক্ষতিকর কোনো সংবাদ পারতপক্ষে প্রচার করে না।
এখন প্রশ্ন হলো, প্রথম আলোর ভূমিকাই যেখানে দেশের সবচেয়ে বড়ো ২টা দলের বিরোধিতা করা - এই ২দলের সমর্থক দেশের প্রায় ৭০% মানুষ - সেখানে প্রথম আলোর এই স্বঘোষিত "দৌবারিক" চরিত্রে অভিনয়ের যৌক্তিকতা কতোটুকু?
৩। "সে ক্রমেই একটি ‘রেফারেন্স’ মাধ্যম হয়ে উঠছে। এ কথার অর্থ, পাঠক এই পত্রিকায় প্রকাশিত খবরে আস্থাবান, তাকে সূত্র হিসেবে ব্যবহার করে সে নিজের মতামত নির্ধারণ করছে। প্রথম আলোয় প্রকাশিত খবরের ভিত্তিতে সরকারি প্রশাসনিক হস্তক্ষেপ ঘটেছে, এমন ঘটনা হরহামেশাই আমরা দেখেছি। অন্য অনেক পত্রিকা অথবা টিভি নেটওয়ার্ক প্রথম আলোয় প্রকাশিত খবরকে তথ্যসূত্র হিসেবে ব্যবহার করছে, এ-ও নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা। এমনকি জাতীয় সংসদেও প্রথম আলোয় প্রকাশিত খবর তথ্যসূত্র হিসেবে উল্লেখ করার দৃষ্টান্ত আছে।"
- এক্ষেত্রে ঘটনাগুলো সত্য হিসেবে ধরে নেই। এবং তখনই চমকে উঠতে হয়। আমরা বিভিন্ন অভিজ্ঞতায় দেখেছি, প্রথম আলো ইচ্ছাকৃতভাবে মিথ্যা বা অর্ধসত্য সংবাদও পরিবেশন করে থাকে। পরিসংখ্যান করলে দেখা যাবে, পুরোপুরি বস্তুনিষ্ঠ সংবাদের হার ১০% ও হবে না। উদাহরণস্বরূপ, যুদ্ধাপরাধী মীর কাসেমের রায়ের নিউজেই তারা মিথ্যা কথা লিখেছে। যে অপরাধে ফাঁসির রায় দেয়া হয়েছে, সেটাকে "আংশিক" প্রমাণিত বলে মিথ্যাচার করেছে। এরকম একটি সংবাদপত্রকে রেফারেন্স ধরে জনমত নির্ধারণ বা প্রশাসনের হস্তক্ষেপের মতো গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাগুলো ঘটতে থাকলে সেটা দেশের জন্য শুভফল বয়ে আনবে না।
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
বিডিনিউজ থেকে এইটা জানাইসে:
আমি যা বুঝলাম, উনারা “আংশিক” শব্দটা লিখলেও, প্রকৃত অর্থে এইটা বোঝাননি যে, অপরাধ আংশিক প্রমাণিত হয়েছে। বরং, ওই নির্দিষ্ঠ ‘চার্জ’-এর আংশিক প্রমাণিত এইটাই বোঝানো হয়েছে। অর্থাৎ, ওই চার্জের মধ্যে যে-কয়টি অভিযোগ (যেমন, অপহরণ, আটক, নির্যাতন, হত্যা ইত্যাদি) সেগুলোর সবক’টি প্রমাণিত হয়নি, তবে আটক এবং হত্যার অভিযোগ প্রমাণিত, এবং সে-কারণে সর্বসম্মতভাবে ফাঁসির রায় এসেছে।
যাউকগা, এইবার খালি ঝুলায়া দেও
----------------------------
নয় মাসে হলো তিরিশ লক্ষ খুন
এরপরও তুমি বোঝাও কি ধুন-ফুন
এখানে রায়ের যে টেক্সট দেয়া আছে, সে অনুসারে অপহরণের বিষয়টিও প্রমাণিত। অপহরণের ক্ষেত্রে আই-উইটনেস নাই; কিন্তু "...it may lawfully be presumed that he was so kept there in protracted confinement, on abduction and the perpetrators were..."
অপরাধ প্রমাণের ক্ষেত্রে সবসময় আই-উইটনেস দরকার নাই, কনটেক্সচুয়াল এভিডেন্সই যথেষ্ট। রায়ে অপহরণের বিষয়টিকে অপ্রমাণিতও বলা হয় নাই। সুতরাং এটা বিডিনিউজের নিজস্ব ব্যাখ্যা হলে গ্রহণযোগ্য নয়।
এখন, বিচারপতি ওবায়দুল হাসান আসলে কি বলেছেন, সেটা গুরুত্বপূর্ণ। তিনি আসলেই "আংশিক" প্রমাণিত বলেছেন কি না, বা অপহরণের বিষয়টি প্রমাণিত হয় নি বলেছেন কি না, এটা তার বক্তব্য শুনলে বুঝা যাবে। ইউটিউবে সার্চ দেই।
শ্রমসাধ্য কাজটি করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
বোকা মানুষ, উপমা ছাড়া বুঝি কম।
ধরুন, সফিকের সামনে পোলাও, খিচুরি, কাচ্চি বিরিয়ানী, খাসির রেজালা, বোরহানি রাখা আছে। সফিক বেচারা এত কিছু একবারে খেতে পারে না। খিচুরি খেয়েই পেট ভরে ফেলল, সামান্য একটু পোলাও আর কাচ্চি চেখে দেখল। প্রথমালোর এক সাাংবাদিক ওখানে হাজির থাকলে পরেরদিন খবরের শিরোনাম হবে,
"আংশিক খেয়েই পেট ভরতে হল শফিক ভাইকে, কাচ্চি তেমন খেতেি পারেননি"
হা হা। চরম উদাহরণ।
তবে এই কেসে আসলে অপহরণও প্রমাণিত হয়েছে। আই-উইটনেস নাই; কিন্তু কনটেক্সচুয়াল এভিডেন্স আছে। অপহরণ ছাড়া জসিমরা তো আর নিজের ইচ্ছায় ডালিম হোটেলে যায় নাই।
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের নানা ধাপেই নানা রকম বাঁধা-বিপত্তি, ধোয়াঁশা তৈরীর চেষ্টা চলছেতো চলছেই, তার প্রতিরোধ ও হচ্ছে নানা ভাবে - বলাই দা, আনু-আল হক, দস্যু ঘচাং ফু, আব্দুল্লাহ এ.এম. কোন ছাড়াছাড়ি নাই।
এই লেখাটা চোখে পড়ল ঃ
প্রতিথযশা পত্রিকার একাউন্টিং পাস সংবিধান বিশেষজ্ঞের ত্যানা প্যাচানীর জবাবে
লিংকের জন্য ধন্যবাদ।
তবে এটা ঠিক ত্যানা প্যাচানি না। আমি মোটামুটি নিশ্চিত, মিজানুর রহমানও ৪৭ ধারা জানে। জেনেশুনেই সে তথ্যটাকে হাইড করেছে। সে যে জানে, তার প্রমাণ পিয়াস করিমের ধ্ম্ম ভাই মন্ত্রী আনিসুল হকের ঘাড়ে বন্দুক রেখে ১০৫ ধারার বয়ান দিয়েছে, যাতে নিজে পিছলানোর একটা সুযোগ পায়। মিজানুরকে চার্জ করা হলেই সে আনিসুলের কথা বলবে, এটা পুরোপুরি নিশ্চিত। প্রথম আলো এই স্টাইলেই (তথ্য হাইড করে) সবচেয়ে বেশি প্রোপাগান্ডা ছড়ায়।
এই ইস্যু নিয়ে লেখা: যুদ্ধাপরাধীকে বাঁচাতে প্রথম আলোর সংবিধান বিকৃতি।
বাংলাদেশের স্বার্থে যুদ্ধাপরাধীবান্ধব প্রথম আলোকে আইনের আওতায় আনা হোক।
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
বলাই দা
আনু-আল হক, দস্যু ঘচাং ফু, আব্দুল্লাহ এ.এম.
________________________
সেই চক্রবুহ্যে আজও বন্দী হয়ে আছি
মুলত দুটি কারণে এই বিষয়গুলোতে বেশ গুরুত্ব দেয়া প্রয়োজন ।
১. যতদুর মনে পড়ে কামরুজ্জামানের রায়ের ক্ষেত্রে ডিভাইডেড ভারডিক্ট হয়েছে এমন শিরোনামে কয়েকটি সংবাদপত্র খবর করেছে । কনফিডেনশিয়ালিটি রক্ষার্থে বিচারপতিতের এই মতবিরোধের কারণ বা ব্যক্ষা দেয়া হয় কিনা তা জানিনা কিন্তু প্রসিকিউশনের উচিৎ এই ব্যপারে সম্ভাব্য কারণ/ব্যক্ষা সাধারন মানুষের সামনে তুলে ধরা । এতে করে আইন কম বোঝা মানুষের কাছে ব্যপারগুলো পরিষ্কার হয় । মিডিয়া, জামাত, বামাত সহ সকল প্রকার আঁতাতুর্কে গুজব ছড়ানোর সুযোগটা কম থাকে । "আংশিক প্রমাণিত" কথাটার বিষয়েও একই কথা খাটে । প্রতিপক্ষ গুজব ছড়ানোর আগেই গুজবের সম্ভাবনাটা নাকচ করে দেয়াটাই সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ ।
২। কয়েকদিন আগে আসিফ মুনীর বিডিনিউজের মতামত সেকশনে রায়ের ভবিষ্যৎ কলামে লিখেন,
ভাবনাটা আমার কাছে বেশ যৌক্তিক মনে হয়েছে কারণ রাঘব-বোয়াল যুদ্ধাপরাধী, যাদের কুকীর্তি সর্বজনবিদিত তাদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণ করতেই যদি প্রসিকিউশনকে হিমসিম খেতে হয়, বিচারকরা বিভক্ত হয়ে পড়েন তাহলে এর পর যখন আঞ্চলিক পর্যায়ের রাজাকারদের বিচারের আয়তায় আনা হবে তখন তা প্রমাণ করাটা প্রায় অসম্ভবের পর্যায়ে পড়বে । কামারু ঝুলে যাচ্ছে কিন্তু মীর কাশেম, নিজামীর আপিলের সুযোগ থেকে যাচ্ছে । একজন বিচারপতি যদি "আংশিক প্রমাণিত" শব্দটা ব্যবহার করে থাকেন তাহলে আপীলের রায়ের ক্ষেত্রে তার প্রতিফলন হবে কিনা সেটা নিয়েও ভাবার প্রয়োজন আছে ।
দস্যু ঘচাং ফু
==============================
চৈনিক নই, আমি নিতান্তই ভেতো বাঙালী,
নাই কোন তলোয়ার, কি বোর্ড খানাই সম্বল খালি;
জামাত দেখিলে তেড়েফুড়ে তাহাতেই ঝড় তুলি ।
নতুন মন্তব্য করুন