কলেজে পড়ি তখন। হোস্টেলে বসবাস। সোলায়মান আমার রুমমেট। এসএসসিতে স্ট্যান্ড করা মাল। তখন ফার্স্ট ইয়ার। আই মিন ক্লাস ইলেভেন। প্রতি তিন মাসে পরীক্ষা হতো। আমার মত মহা ইরেগুলারদের জন্য যা ছিলো মহাবিরক্তিকর বিষয়। সামনে এই বিরক্তিকর জিনিসের দ্বিতীয় দফা।
ঘুমায়া গেছি এক রাইতে। ঘন্টা দুই-তিনেক পরে আবার উঠেছি। বাথরুমের চাপ। তখন ঘুমানোর আগে নিয়ম করে এক প্যাকেট চকলেট দুধ আর একগ্লাস পানি খাওয়া হত। রাত সাড়ে তিনটা। সোলায়মান তার টেবিলে তখনো বসা। টেবিল ল্যাম্প জালিয়ে। আমি চোখ খুলে সেদিকে প্রথমে তাকাই। মাথায় হাত দিয়ে তার দীর্ঘ চুলের ওপর নির্দয় শক্তি পরীক্ষা চলছে। সাথে ধুত্তুরির মশকো। জিগাই, "কি হইছে রে ব্যাটা ছুলু? ঘুমাস না ক্যান?"
- ঘুমাইছিলাম। ঘুম আসতেছে না। টেনশনে।
- টেনশন কিসের?
- বজলুর সিলেবাস কমপ্লিট!
বজলু আরেক স্ট্যান্ড করা মাল। তাই তাদের কম্পিটিশন। বজলুর সিলেবাস শেষ মানে সোলায়মানের টেনশনে ঘুম নষ্ট।
খানিক বক্তৃতা ঝাড়ি, "বজলার সিলেবাস শেষ, তাতে তোর সমস্যা কি? নিজের পড়া নিজে কর। এখনো তো প্রচুর সময়।"
তারপরে দেই মোক্ষম চাপা, সান্ত্বনা হিসেবে যা ধনন্তরি, "বজলা এত আগে সিলেবাস শেষ করে দেখবি পরীক্ষার আগে ঠিকই ভুলে গেছে। তুই ব্যাটা পরীক্ষার ঠিক আগে আগে পড়ে গরমাগরম লিখতে পারবি। ওই হালায় দেখবি নিশ্চিত ফেল মারবো! অহন ঘুমা।"
সোলায়মান ঘুমায়। কিছুক্ষণের মধ্যেই নাক ডাকা গাঢ় ঘুম। আহ কি শান্তি! মনে মনে একটা স্বস্তির শ্বাস ছাড়ি। আমিও যে সবসময় লাস্ট মিনিট ম্যান! কি যে হবে! ধুর! এত চিন্তার কি আছে। আজ মরলে পরশু তিন দিন। চিন্তাভাবনা দুশ্চিন্তায় বিবর্তিত হওয়ার আগে আমিও ঘুমকে জড়িয়ে ধরি। শান্তি! কী শান্তি! সুলায়মানের নাসিকা গর্জন কেন, সিরাজউদ্দৌলার কামান গর্জনও আর এ শান্তি নষ্টাতে পারবে না।
মন্তব্য
ড্যাম থিং আর ড্যাম নাই ব্রাদার।
মহা সুস্বাদু লাগছে।
ফাটাফাটি হৈছে!
.......................................
ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ
অজ্ঞাতবাস
উত্তম ব্লগরব্লগর।
-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
ধন্যবাদ।
আসলে অন্যের ভালো লিখার প্রেসারে না গিয়া সবাই সচলকে আরো বেশি সচল করা দরকার। কার কোন লিখা কার যে ভালো লাগবে, কে জানে!
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
ভাল লাগল।
তবে, অল ক্রেডিট গোজ টু বদ্দা। বদ্দা এমনই একটি লেখা দিলেন আর সবারই কীবোর্ড ফুঁড়ে লেখা বের হওয়া শুরু হল। আমি বদ্দার লেখা পড়েই তিনটা লেখা লিখে ফেলেছি। তবে বেশি হয়ে যাবে বলে সেগুলো পোস্ট করছিনা।
(আচ্ছা, সবাই আপনাকে বদ্দা বলে কেন? আপনি কি সবথেকে বড়?)
প্রকৃতিপ্রেমিক, বড়রাই বোধ হয় বদ হয়।
আর বদ থেকে বদ দাদা।
-----------------------------------------------
সচল থাকুন ---- সচল রাখুন
-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না
বদ্দা হইলো গিয়া বদের হাড্ডি। নিজে ফাঁকি মারবো, মাগার পাবলিকরে লেখার জন্য গুতাইবো।
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
নতুন মন্তব্য করুন