আমার বুকের ওপরে ছুটিয়ে রাজ্যসফরে চলেছেন মহারাজ
তার পদস্পর্শ পাবার আশায় আমি শরীর ছড়াচ্ছি প্রান্তরময়
তারা খচিত তার উষ্ণীষে ঢেকে যায় বন্যা মহামারী হত্যাদৃশ্য।
ঘোড়ার খুরাঘাতে আমার মাংস ছেঁড়া রক্তধারায় লোহিতাভ
যমুনা কিনারে রাধা ও একশ জন নগ্ন কামিনী স্নানার্থিণী,
বৃন্দাবনে স্বচ্ছ জীবনের সৌগন্ধ বুকে পাখিরা
উড়ে এসে সারিবদ্ধ বসে আছে মহারাজের গমন পথের দুপাশে-
পাখিদের সৌন্দর্য ও সংগীত একদিন মানুষেরও হবে,
আপাততঃ নেই
সত্যশিল্প হবে একদিন,
পার্থিব মেয়ের মিথ্যে মেকআপের মোহ কেটে গেলে
একদা কঙ্কালাকীর্ণ দেখেছিলাম সমুদয় জন্ম,
মানুষের ভাঙাচোরা কন্ঠ ও বাদ্যযন্ত্রের ওপর
পুচ্ছনাচানো পাখির সংগীত ছুঁয়ে ছুঁয়ে
মহারাজ চলেছেন রাজ্যসফরে।
বিনাশ ছাড়া নবসৃষ্টি নেই, তার পদতললীন শুয়ে আছি প্রান্তময়
শরীর ছিঁড়ে ছিঁড়ে আমার মোহন মৃত্যু হলে যদি পাখিজন্ম পাই।
আমি ক্রমশঃ কুৎসিত, আলপিনের মতো প্রখর দাড়িময় মুখ
কোন, কোমলতায় ছোঁয়াবো ?
মাংস ছেঁড়া দাঁতে শ্বাপদগন্ধ, পতিত মানুষ অধিক অধঃপতিত আমি
চুপসানো হলদে স্তনে ব্যর্থ চুম্বনরত
আদিগন্ত আতাম্র মাঠে ঝলসানো বুক
ফিরে এসেছি মহারাজ তোমার পদসেবায়, প্রেমে।
দ্বিতীয়ার চাঁদ ধনুকের মতো ধরে আছো বাহুতে
আমার শরীর ছিলায় পরিয়ে ছুঁড়ে দিচ্ছো পাতালে, শিলায়, নীলিমায়
এ তোর উপহাস নাকি ভালোবাসা?
ভুমিকম্পে প্রলয়ে জেগে উঠি রাত্রি দিবসে
নীল বিষফুলে সাজিয়ে তুলি তোমার অন্তহীন সূবর্ণ চাঁদোয়া
হে মহাত্রাতা,তবে কি আমার পরিত্রান নেই ?
১৯৭৯-১৯৮০
মন্তব্য
নতুন মন্তব্য করুন