অনিমেষ একটি মোটামুটি সাইজের কোম্পানীর বড় কর্তা। সাত বছর আগে প্রেম করে বিয়ে করেছে দ্রৌপদীকে। সুন্দর গোছানো সংসার তাদের। এক ছেলে আর এক মেয়ে। বাবা-মা, ছোট ভাইসহ সবাই মিলে তাদের সংসার একটি ভাড়া বাসায়।
এ বছরের প্রথমদিকে অনিমেষ হঠাৎ আবিষ্কার করলো, দ্রৌপদীর সাথে একটি ছেলের প্রায়ই ফোনে যোগাযোগ হয়। ভোরবেলায় ঘুম থেকে উঠে যায় ও। বিছানা থেকে নেমে মেঝেতে শুয়ে মোবাইলে এস,এম,এস, আদান-প্রদান হয় দু'জনার।
অনিমেষ মনে মনে অস্থির হয়ে ওঠে। বউয়ের ফোন থেকে চুরি করে ছেলেটার নাম্বার। একদিন অন্য একটা ফোন থেকে কথা বলে জানতে পারে ছেলেটি মোহাম্মদপুরে থাকে। গ্রামীনফোনের নাম্বান ব্যবহার করে।
অনিমেষের কিছু বন্ধু আছে জিপি তে। ওদের কাছ থেকে ছেলেটির ডিটেইল্স নেয়। ওর নাম বিভু। মোহাম্মদপুরের বন্ধুদের কাছে খোঁজ লাগায় ওর। নিজেও কয়েকদিন অফিসের পরে ওদিকে যায় বিভুর খোঁজে। ছেলেটাকে অনিমেষ কল দেয় কয়েকবার দেখা করবার জন্য। বিভু সময় দিয়েও আসে না।
অনিমেষের দিনগুলো ভীষণ বাজেরকম কাটতে থাকে। বউকেও সরাসরি জিজ্ঞেস করতে পারছে না... কী যে করি?
একদিন সন্ধ্যায় অনিমেষ বিভুকে কল দিয়ে নিজের পরিচয় দিয়ে। জানতে চায় তাদের দু'জনার সম্পর্কের ব্যাপারে। অনেকক্ষণ কথা হয়। একসময় অনিমেষের মনে হয়, অহেতুক সন্দেহ করছে ও।
বাসায় এসে দ্রৌপদীকে সবকিছু বলে গত কয়েকদিনের ঘটনা। দ্রৌপদী সরি হয়, বলে ও বুঝতে পারে নাই অনিমেষ কষ্ট পাচ্ছে। বলে, যোগাযোগ করবে না আর।
দু'দিন পরে অনিমেষ-দ্রৌপদী কক্সবাজারে যায় ঘুরতে। সবকিছু আবার আগের মত প্রাণবন্ত হয়ে যায়।
তিন-চার মাস পরে অনিমেষ আবিষ্কার করে, সম্পর্কটা এখনো আছে ওদের। দ্রৌপদীর ফোনে একটা এস, এম, এস, পায় ও বিভুর। প্রেমিক-প্রেমিকার জন্য বরাদ্দ একটা সম্বোধনে মেসেজটার শুরু।
দিগ্বিদিক শূন্য হয়ে যায় অনিমেষের। কী করবে বুঝতে পারে না ও। একদিন সকালে অফিসে যাবার পথে দ্রৌপদীকে জিজ্ঞেস করে, তোমার আর বিভুর সম্পর্কটা কতটুকু গভীর হয়েছে?
দ্রৌপদী কোন কিছু না বলে কাঁদতে থাকে। অনিমেষের কেমন যেন লাগতে শুরু করে। ও কোনভাবেই বউয়ের চোখে পানি দেখতে পারে না।
দ্রৌপদীকে সান্ত্বনা দিতে শুরু করে। বলতে থাকে, দেখ তোমার কাউকে ভালো লাগতেই পারে। একটা সম্পর্ক তৈরী হতেই পারে। কিন্তু আমি চাই তা জানতে যাতে যে কোন কিছুর জন্য নিজেকে প্রস্তুত রাখতে পারি।
দ্রৌপদী আবারো সরি হয়।
এরমধ্যে অনিমেষ বিভুকে রাজী করায় তার সাথে দেখা করার জন্য। একদিন সন্ধ্যায় দু'জনার দেখা হয় ধানমন্ডি লেকের পারে মেডিনোভার সামনে।
অনিমেষ দেখে নেহাতই কম বয়সের ছেলে একটা। অনেকক্ষণ দু'জনে বসে আড্ডা দেয়। বিভুর জন্য একটা গিফ্ট নিয়ে যায় ও। সেটা ওকে দেয়।
বিভু ড্রেস ডিজাইনার। ও অনিমেষকে বললো একটা পাঞ্জাবী করে দিবে। দ্রৌপদীর জন্যও একটা শাড়ি দিতে চাইলো। ও অনিমেষের নাম্বারটা ব্লক করে দিয়েছিলো। প্রমিজ করলো আনব্লক করে দিবে।
কিন্তু দেয়নি।
বাসায় এসে অনিমেষ দ্রৌপদীকে বলে কী কী ঘটলো।
এরপর একদিন সকালে অফিসে যাবার পথে অনিমেষ বিভুকে দেখে রাস্তা পার হচ্ছে। ও দ্রৌপদীকে বললো, ঐ দেখো তোমার বিভু... বলতে বলতেই ওদের গাড়ীটা অনেক দূর চলে এসেছিলো। দ্রৌপদী বললো, বিভুর সাথে আর যোগাযোগ নাই। অনিমেষ জানতে চাইলো, কেন? ও বললো, তুমি পছন্দ করছো না যে!
দিন কেটে চললো..... গত পরশু দ্রৌপদীর ফোনে একটা মজার গেম খেলছিলো অনিমেষ। হঠাৎ কী মনে করে বিভুর নাম্বারটা চাপলো ও। নাম্বারটা সেভ করা আছে দ্রৌপদীর ফোনে, অন্য নামে... ওর এক ছাত্রের নামে, যেখান থেকে মাঝে মাঝেই কল, মেসেজ আসে... অনিমেষ দেখেছে।
সারাক্ষণ অনিমেষের মনে হতে থাকে, কী করি?
কী করি?
মন্তব্য
বিভুর নামটাই কি ভুল করে আরিফ লিখেছেন?
যাইহোক, অনিমেষের উচিৎ নিজেরও চুটিয়ে প্রেম শুরু করে দেয়া। সুন্দর, উহুলালা গোছের কেউ হলে ভালো হয়। তেমন কাউকে না পাওয়া গেলে আল্লায় যেমন কপালে রাখছে, তেমনই সই।
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
'কী করি'?
আমি মানুষ ভাল নই, বিভু- দ্রৌপদী দুজনকেই সম্ভবত একদফা পিটিয়ে দিতাম!
গল্পের কয়েকটা শব্দ বেখেয়ালে ওলটপালট রয়ে গেছে বোধহয়..
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
আমার দেখা অনেকের জীবনেই এমন ঘটনা ঘটতে দেখেছি,তাই পড়ে কিছুটা "সত্য ঘটনা অবলম্বনে" বলে মনে হল।
মন্তব্যে সহমত।
কেউ_না
ভালু পাই নাই।
আচ্ছা পড়লাম, এতদিন কোথায় ছিলেন?
...........................
Every Picture Tells a Story
এ সময়ে কি করি, কি করি ভাবতে ভাবতেই আসোলে সম্পর্কের শেষ হয়ে যায়। (ব্যক্তিগত ধারনা)
একটু ইয়ে; জিপিতে বন্ধু থাকলেই কি নাম্বার বের করা যায়? (সাধারন কৌতুহল)
_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না
_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না
প্রথমেই সরি হয়ে নিই ....
গল্পটা প্রথমে আরিফকে নিয়েই শুরু করেছিলাম। শেষ করে মনে হলো অনিমেষ আর দ্রৌপদীর মাঝে আরিফ চরিত্রটা কেমন একটা ধর্মীয় কনফ্লিক্ট কনফ্লিক্ট লাগছিলো।
তাই নামটা বদলে বিভু করে দিয়েছিলাম। কাজটা পুরোপুরিভাবে করা যায়নি এখন বুঝলাম। লেখালেখি ব্যাপারটায় বেজায় আনাড়ি তো!
ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন নিশ্চই....
"কেউ-না", ঘটনা থেকেই তো গল্পের শুরু হয়... তাই না ?
"সিমন", সেরকম কেউ থাকলে বের করা যায় বই কি!
সেলিম ভাই, কেমন আছেন? হঠা্ৎই ফেসবুকে আপনার পোস্টগুলো দেখে মনে হলো, সচলায়তনকে মিস করছি... তাই !!!
******************************************
Everyone thinks of changing the world,
but no one thinks of changing himself.
******************************************
*****************************************************
Everyone thinks of changing the world,
but no one thinks of changing thyself.
*****************************************************
নতুন মন্তব্য করুন