পরের মুখে ঝাল খেতে আমার ভালো লাগে না। তাই সিনেমা দেখার আগে বা বই পড়ার আগে রিভিউ পড়ি না কখনোই। তবে মেহেরজানের কথা আলাদা। রিভিউ না পড়লে এই সিনেমা দেখতে যাওয়া হতো না। বেশ কিছু আলোচনা-সমালোচনা পড়ে শেষমেষ ঢুঁ দিলাম সিনেপ্লেক্সে নিজে চেখে দেখার আশায়। পড়ে আসা আলাপের বাইরেও কিছু জিনিস দেখলাম আর বেরিয়ে এলাম কিছু প্রশ্ন নিয়ে। সমাজতাত্ত্বিক বা মনস্তাত্ত্বিক বিশ্লেষণ নয়, দর্শকের আসনে বসে টাটকা অনুভূতির খসড়া লিখে রাখছি।
নতুন কী জানলাম?
১। পরিচালক রুবাইয়াত হোসেন নিজেই সালমা চরিত্রে অভিনয় করেছেন।
২। নায়িকাকে সবাই মেহের বলে ডাকে। পাকসেনা ওয়াসিম প্রেমের আতিশায্যে একসময় তাকে মেহেরজান(Meher, my darling) ডাকতে শুরু করে। অর্থাৎ মুভির নামকরণ ওয়াসিমের কল্যাণেই হয়েছে।
৩। কলাকুশলীদের প্রায় সবার অভিনয় খারাপ। সবচেয়ে খারাপ মেহের ও ওয়াসিমের। এর দায় বহুলাংশে পরিচালকের ঘাড়েই বর্তায়। নীলার ক্ষোভ বা মেহেরের প্রেমের মতো আবেগী মুহূর্তে হলভর্তি দর্শক যখন হাসিতে ফেটে পড়ে তখনই পরিচালকের প্রচেষ্টা মুখ থুবড়ে পড়ে। ওয়াসিম খান মেহেরকে প্রেম নিবেদনের জন্য জড়িয়ে ধরতে গেলে নায়িকার আড়ষ্টতার কারণেই কিনা জানি না, দুজনের মাঝে বাতাস চলাচলের পর্যাপ্ত জায়গা রাখতে গিয়ে আবেগ পুরোই কেঁচে যায়।
৪। মুক্তিযুদ্ধ শব্দটি পুরো সিনেমায় কোথাও উচ্চারিত হয় নি। ‘যুদ্ধ’, ‘একটা যুদ্ধ’ এবং ‘গন্ডগোল’ শব্দগুলো ব্যবহৃত হয়েছে।
৫। কোনো মুক্তিযোদ্ধাকেই 'যোদ্ধা' মনে হয় না। সামীর স্বাস্থ্য, পোশাক আর চালচলনে তাকে যুদ্ধফেরত নয় বরং পিকনিকফেরত মনে হয়।
৬। নায়িকার ঝাঁ চকচকে জামাকাপড় দেখলে মনে হয় যুদ্ধ উপলক্ষ্যে অর্ডার দিয়ে নতুন জামা বানিয়ে এনেছে।
৭। কণ্ঠশিল্পী অরূপ রাহী নিজে অভিনয় করেছেন যেখানে তার চরিত্রের নাম রাহী আর তার সহশিল্পী রিফাত চৌধুরীর চরিত্রের নাম অরূপ। একজনের নাম দুজনের মধ্যে ভাগ করে দেওয়ার কোনো গূঢ় কারণ রয়েছে কি না জানি না।
৮। তিরিশ-চল্লিশ বছর আগে এদেশে বিয়ের আগে মেয়েদের নাক ফোঁড়ানোর চল ছিলো না মোটেই। অথচ মেহেরজানকে দেখতে পাই নাকফুল পরতে।
এবার কিছু প্রশ্ন:
১। পরিচালক নিজেই যে সালমা চরিত্রে অভিনয় করেছেন, সেটা কোথাও উল্লেখ করেন নি কেন?
২। জার্মান দম্পতির কাছে মানুষ হওয়া যুদ্ধশিশু সারাহ বাংলা শিখলো কোত্থেকে?
৩। আর্মি ক্যাম্প থেকে নির্যাতিত হয়ে ফেরার পর নীলার চোখ ভরে স্মোকি আইশ্যাডো কোত্থেকে এলো?
৪। নীলার কি একখান সাদা জর্জেট শাড়ি আর সাদা স্লিভলেস ব্লাউজ ছাড়া আর কোনো কাপড়চোপড় নাই? বেচারি শবেবরাতের রাতেও ডানাকাটা ব্লাউজ পরে ঘুরে বেড়ায়।
৫। এই সিনেমায় সবাই শুধু বিয়ে করতে চায় কেন?
৬। মুক্তিযোদ্ধারা যুদ্ধ করার জন্য বারবার খাজা সাহেবের অনুমতি কেন চায়?
৭। মুক্তিযোদ্ধাদের গায়েগতরে, চেহারায় যুদ্ধের লেশমাত্র নেই কেন? যুদ্ধফেরত একজন সৈনিকের অমন ঝলমলে ত্বক আর থলথলে চর্বি থাকা কতখানি যৌক্তিক?
৭। মেহের সিকুইন বসানো সৌদি বোরখা কোত্থেকে পেল?
৮। আহত ওয়াসিমকে মেহের ও তার সহযোগীরা কোত্থেকে উদ্ধার করল?
৯। নায়িকার জামার কাপড়, লেসফিতা কি রুবাইয়াত টাইমমেশিনে করে একাত্তরে দিয়ে এসেছিলেন?
১০। বলতা, করতা, বলসে কোন সময়ের কোন অঞ্চলের ভাষা? "আমি তোমাকে জেনুয়িনলি ভালোবাসি"র মতো ডিজুস ভাষা রুবাইয়াত কোন যুক্তিতে একাত্তরের তরুণের মুখে গুঁজে দিলেন?
১১। সালমা মুক্তিযোদ্ধা লম্বুকে মুতা বিবাহ কেন করতে চায়? 'মুতা বিবাহ' ইস্যুটা কেন এলো?
১২। রুবাইয়াতের কি ধারণা একাত্তরে মুক্তিযোদ্ধারা বসে বসে আঙুল চুষেছে আর বিয়ের স্বপ্ন দেখেছে? দেশ কি কোনো দৈববলে স্বাধীন হয়ে গেছিলো?
সিনেমার মেসেজ কী?
- যুদ্ধ খারাপ। সবার উপর প্রেম সত্য।
- সমাজতন্ত্র, মুক্তিযুদ্ধ কোনোটাই মুক্তির পথ না। ধর্মের পথে রক্তপাতহীন সংগ্রামের মধ্য দিয়েই প্রকৃত মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
- সমাজতান্ত্রিক, মুক্তিযোদ্ধা সবাই সমান মেরুদণ্ডহীন এবং পুরুষমাত্রই কামাতুর। আর তাই ধর্ষণের দায়ে পাকবাহিনীকে একচাপা দোষী সাব্যস্ত করা অন্যায়।
ভালো কি কিছুই নেই?
- আছে। ক্যামেরা ভালো। আমরা বাংলা সিনেমায় এমন ঝকঝকে ছবি দেখার সুযোগ সচরাচর পাই না।
- একটা গান আছে- “আলোয় ভরা ঝালর আকাশ” বা তেমনই কিছু। গানটা সুন্দর।
- সালমার পাগলামি কোনো কোনো অংশে বেশ উপভোগ্য। বিশেষ করে কাঁদতে কাঁদতে যখন নিজেকে হাতপাখা দিয়ে বাতাস করতে থাকে রুবাইয়াত সেখানে ভালো করেছেন।
- সব জামাকাপড় ম্যাচিং ম্যাচিং না দেখিয়ে সালওয়ার আর কামিজের মধ্যে কম্বিনেশানের অনুপস্থিতি রাখাটা ভালো হয়েছে। তবে হালফ্যাশানের আঁটোসাঁটো ডিজাইন সেই চেষ্টাটুকু পুষিয়ে দিয়েছে বহুগুণে।
এই সিনেমা কি নিষিদ্ধ করা উচিত?
- দরকার নেই। প্রভাব বিস্তার করার মতো শক্তিশালী কোনো শিল্পকীর্তি এটা না। তবে রুবাইয়াতের দর্শনবিচারে তার হাত থেকে ইতিহাসকে নিরাপদ দূরত্বে রাখাই মঙ্গলজনক। কিন্তু হ্যাঁ, আজ রুবাইয়াত পারেন নি, কাল অন্য কেউ হয়ত পারবেন। ভবিষ্যতে কেউ হয়ত বেশ মুন্সিয়ানার সাথেই ইতিহাসের বিকৃতি ঘটাবে। সে হিসেবে মেহেরজান নিয়ে আরেকবার ভাবনার দরকার আছে।
আমার ব্যর্থতা:
সিনেমায় আমি প্রেম বা যুদ্ধ কোনোটাই খুঁজে পাই নি।
আমার রেটিং:
১০-এ ৩ [১ নাম্বার ক্যামেরার জন্য, ১ নাম্বার মিউজিকের জন্য আর সার্বিক প্রচেষ্টার জন্য ১ নাম্বার গ্রেস]
আবার দেখব?
- পাগল!
মন্তব্য
চানপুরের চান মিয়াকে হার মানিয়ে দিলো রুবাইয়াত। এরপর মীর শওকতের তেলের ড্রামের মতো কিছু শুনলে সেটাকে রুবাইয়াত স্কেলে মাপা যেতে পারে। যেমন গোলাম আজম ভাষাসৈনিক, এরকম দাবি শুনলে আমরা ঠাঠা করে হেসে বলতে পারি, "পুরাই রুবাইয়াত!"
এইবার সুন্দর করে ইংরেজিতে একটা গুছায়ে রিভিউ লিখে ফেল IMDbতে। ঢুকলেই দেখতেসি ইউজার রেটিং ৯.২/১০। মেজাজ খারাপ হইতেসে। আচ্ছা, আমাদের দেওয়া ভোটগুলা কি গোনা হইতেসে না?
==========================
আবার তোরা মানুষ হ!
পল্লব, ভোট মোটে পাঁচটা। এবং এই পাঁচটা ভোটই বোধকরি রুবাইয়াত সংশ্লিষ্ট কারো দেয়া। এইটা নিয়া টেনশনের কিছু নাই। আমার খারাপ লাগে অন্য জায়গায়। লোকজন বেশ উৎসাহিত হয়ে মেহেরজান দেখতে যাচ্ছে। এতে করে যে রুবাইয়াত গংদের টাকা-পয়সা দিয়ে প্যাট্রোনাইজ করছে, তা কিন্তু না শুধু। কোথায় যেনো পড়লাম কেউ একজন বলছে (ফেসবুকেই সম্ভবত), যারা এতো টাকা দিয়ে সিনেমা বানালো তারা নিশ্চয়ই দর্শকের টিকেটের টাকার দিয়ে চেয়ে নেই। আসলেই তাই।
রুবায়াইতাদের টাকা পয়সার দরকার নেই, যথেষ্টই আছে। কিন্তু যখন তার সাথে "বক্সঅফিস হিট" আরও বালছালমার্কা হিটের খেতাব লেগে যায়, তখন ব্যাপারটা একটু 'কেমন' হয়ে যায়। লোকজন সিনেমা দেখে এসে গালি দিলো, নাকি বমি করলো- সেইটা কিন্তু পরের ব্যাপার। এগুলা কাউন্ট হবে না। কাউন্ট হবে তার সিনেমার কাটতি কেমন হলো! পাবলিক সিনেমা হলে গেলো কীনা! হিট কতগুলো হলো!
সবসময় ফার্স্ট হ্যান্ড এক্সপেরিয়েন্সের দরকার নাই। নিতে হয় না।
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
সেটাই তো মনে হয় অব্জেক্টিভ, প্রথম সিনেমা বানিয়েই চোখে পড়ে যাওয়া, ইন্টারন্যাশনাল কাস্ট ইকুইভ্যালেণ্ট টু ইন্টারন্যাশনাল রিভিউ, আর এদেশে আমরা প্রতিবাদ করলেও, বিদেশে কে প্রতিবাদ করতে যাবে! এত এত টিকেট বিক্রি, অতদিন ধরে হাউস্ফুল চলেছে, এসব দিয়ে 'জনপ্রিয়তা' কামাই আন্তর্জাতিক মহলে, তারপর কান-এ পাঠানো, অস্কারে পাঠানোর গ্রাউণ্ড তৈরি (এমনিতেই মন্ত্রীর আত্মীয়স্বজন, কাজেই চেনা-জানা, ব্যাকিং যথেষ্ট পাবে), স্লাম-ডগ যেমন অভিনয় না পারা নায়িকাকে হিট করে দেয়, বিদেশি বিশেষজ্ঞ দিয়ে অস্কার পেয়ে যায় 'জনপ্রিয়তার' জোরে, সেভাবেই দুই-একটা বিদেশি পুরস্কার জিতে যাওয়াই মুখ্য কথা এখানে। তাইলেই এই পরিচালক আর তাঁর স্বামীর প্রযোজনা সংস্থাকে পরবর্তী প্রোডাকশন নিয়ে মাথা ঘামাতে হবে না, পাবলিসিটির সময়ে যে 'মেহেরজানের' ক্রিয়েটর লিখলেই কেল্লা ফতে!
(মুখের ভেতরটা তেতো হয়ে গেল, গালি জিনিসটা আমি সহজে দেই না... সিনেমাটা দেখলে যে কী বেরুবে ভাবছি!)
পল্লব ভাই: আইএমডিবি বলছে 'ডেইলি আপডেটেড' রেটিং।
এখানে আরো ইনফরমেশন। কালকে রাতে আমরা ভোট দেবার পরে এখনো ২৪ ঘন্টা হয় নাই। আরেকটু দেখা যাক।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
আচ্ছা, যারাই IMDb তে ভোট দিয়েছেন বা দেবেন, একটু লক্ষ্য করুন -
সিনেমার পেজ-এ যে তারা, সেগুলোতে ক্লিক করে দিলে কিন্তু তা আপনার 'পার্সোনাল রেটিং' হবে।
Vote না।
অনুগ্রহ করে তারার নিচে খেয়াল করুন -
ঐখানে User: ( এতটা Votes) লেখাটায় ক্লিক করুন,
এবার নতুন পেজ আসবে।
সেখানে Log in করুন (ই-মেইল আইডি দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করুন অথবা ফেসবুক দিয়েও করতে পারেন)।
এবার একটা ড্রপ-ডাউন মেনু আসবে - Your Vote লেখা।
সেখান থেকে আপনার ভোট সিলেক্ট করে পাশের Vote ট্যাবে ক্লিক করুন।
'Your vote has been counted' লেখা দেখালে বুঝবেন যে ভোট ঠিকমতো দেয়া হয়েছে।
২৪ ঘন্টার ভেতরে আপডেট হবে।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
ভালো লিখেছ।
ট্রেইলর দেখে হিন্দি সিরিয়ালের মত লেগেছে।
IMDB তে একটা ছোট রিভিউ দাও।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
দিয়েছি গত রাতেই। এখনো অ্যাপ্রুভ হয়নি।
_____________________
আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।
এই মেসেজটা রুবাইয়্যাত আফায় জুশ কইরা দিসে ... উনি খুব ভালুই বুঝতে পারছে উনি এই দুইন্যাত ক্যামতে আসছে আর উনার পুলাপাইন গুলারে ক্যামতে আনবো। পুরুষ পোলা গুলান 'কামাতুর' না হইলে তো আর এইসব ঘটনা ঘটানো যায় না। তুমরা বুকা, তাই এইসবের বিরুদ্ধে লাগছো, এখনও সময় আছে রুবা আফার দলে যুগ দ্যাও।
==========================================================
ফ্লিকার । ফেসবুক । 500 PX ।
তবে রুবাইয়াতের দর্শনবিচারে তার হাত থেকে ইতিহাসকে নিরাপদ দূরত্বে রাখাই মঙ্গলজনক।
ঠিক।
তবে, একটা কথা, ছবি মুক্তির পর প্রচারণার জন্য আর পরিচালকের বিশেষ খাটনি করতে হয়নি। নেগেটিভ পাবলিসিটি ইজ আ পাবলিসিটি। আবার জোর প্রতিবাদ করতে হবে, সেটাও ঠিক।
"তবে রুবাইয়াতের দর্শনবিচারে তার হাত থেকে ইতিহাসকে নিরাপদ দূরত্বে রাখাই মঙ্গলজনক"।।।।।।।।।।।
দর্শনবিচার করতে গিয়ে ইতিহাসকে ধর্ষণ করল ।। ওয়াক থু ,,,,,,,,,,,
আমারতো এখন মনে হচ্ছে আমরা যারা মেহেরজান মুভিটার বিরুদ্ধে প্রচারণা চালাইতেছি তারা আসলে মুভিটার টিকেট বিক্রি বাড়াইতেছি, সবাই যদি নিজের চোখে দেখে কমেন্ট করতে চায় তাইলেইতো মুভি সুপারহিট। কিছু জিনিস আছে দূর থেকে দেখেই ঘৃণা করতে হয়, কাছে যাওয়া লাগে না।
মাহফুজ খান
খেল খতম
_____________________
আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।
মুতা বিয়ে হলো স্বল্পকালীন কন্ট্রাক্ট ম্যারেজ। এর উদ্ভব মূলত প্রস্টিটিউশনকে একটা ইসলামের নামে বৈধতা দেয়ার আকাঙ্ক্ষা থেকে। সালমা মুক্তিযোদ্ধা লম্বুকে মুতা বিয়ে করতে চায় কারণ মুক্তিযোদ্ধার লাইফের কোনো বেইল নাই। বিশেষ করে পাকি সেনাদের সামনে মুক্তিযোদ্ধাদের কোনো আশা নাই। কিন্তু সালমার যে এখনই দরকার! সুতরাং মুতা বিয়েই সেরা সমাধান। কামও হলো, আবার লম্বু মরে যাওয়ার পরে মুতার মেয়াদ শেষ হলে সে আর 'বিধবা' হলো না। পরিচালিকা সম্ভবত তার আমেরিকাপ্রবাসী জীবনে পাকিসান্নিধ্যে এরকম বিয়ের ঘটনা স্বচক্ষে দেখেছেন।
কারণ, মুক্তিযোদ্ধারা হলো ছোটোলোকের বাচ্চা! বনেদী, খানদানী মুসলিম লীগার পীস প্রত্যাশী খাজা সাহেবের কথার বাইরে এক বাল নড়ারও সাধ্য তাদের নাই।
কারণ, খানসোনারা খুব ভদ্রনুক। তারা মেহেরজানের মুক্তিযোদ্ধাদেরকে প্যাঁদায় না। সর্বোপরি এটা হলো যুদ্ধের ব্যাকগ্রাউন্ডে পেয়ার মহব্বতের ছিনেমা। এখানে যুদ্ধ থাকবে, গণ্ডগোল থাকবে, পাকিসোনা থাকবে, খাঁচায় পোষা মুক্তিযোদ্ধাও থাকবে। তবে তাদের চেহারায় যুদ্ধের ছায়া থাকবে না, থলথলে চর্বি থাকবে, তিব্বত স্নো মাখা চকচকে ফেইস থাকবে এবং তারা বন্দুকের বুলেট মুখে পুরে ললিপপের মতো চুষবে।
একাত্তরে পাকিস্তানের ধর্ষণ প্রোজেক্টের অন্যতম উদ্দেশ্য ছিলো বাঙালির হিন্দুয়ানী প্রভাবকে মুক্ত করে সাচ্চা মুসলিম তৈরি। যতো ধর্ষণ, ততো সাচ্চা মুসলিমের বাচ্চা! সুতরাং এটা যুদ্ধের উদ্দেশ্যকেই সমর্থন করে। স্বল্পকালীন মুতা বিয়ের কনসেপ্টও এর সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। সমস্যা হলো বিবাহপূর্ব সঙ্গম একটি পাপী জিনিস, মুতা বিয়ে পূণ্যের, একইভাবে ধর্ষণ একটা নাফরমানী শব্দ; কিন্তু বিয়ে বেহেশতী জিনিস। একসাথে এতো পাকিসোনাও পাওয়া যাবে না। কিন্তু সব বিয়েই পাকিসোনাদের সাথে হলে চালাকিচিত্রে বৈচিত্র থাকে না। সুতরাং বৈচিত্রের স্বার্থে কিছু কিছু বিয়ের পাত্র কাঁচের বোয়েমের মুক্তিযোদ্ধাও হতে পারে, আসল প্রোডাকশনের সময় না হয় পাকিসোনা ইউজ করা হবে।
দেশ স্বাধীন হইছে ভারতের ষড়যন্ত্রে! আর সবই একচোখা ইতিহাস! আমাদেরকে এখন ভিন্ন অ্যাঙ্গেলে একাত্তরের ইতিহাসকে চর্বণ-চোষণ-দেখন করতে হবে।
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
অট: আমি সিরিয়াসলি মন্তব্যের 'লাইক' করার অপশনটা মিস করছি।
লিস্টে যোগ করার জন্যে কিছু প্রশ্ন -
১। মুক্তিযুদ্ধের ৩৮ বছর পরের কাহিনি যদি দেখিয়ে থাকে, যুদ্ধশিশু সারাহকে সিনেমায় কত বছর দেখানো হয়েছে? (ট্রেইলার দেখে অনেক কমবয়সী মনে হয়েছে মধ্যবয়সী নারী না)
২। সিনেমায় উর্দু গাজল ব্যবহারের যৌক্তিকতা কী?
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
আমিও মিস করছি লাইক বাটন
প্রশ্নের উত্তর:
১। সারাহ্ চরিত্রে অভিনয় করেছেন নাসিমা সেলিম। উনি হালকাপাতলা গড়নের আর চুল ছোট করে ছাঁটা বলে বয়স কম মনে হয়েছে হয়ত, কিন্তু পর্দায় বয়সের অসংগতি চোখে পড়ে নি।
২। পাকিস্তানের প্রতি পরিচালকের দুর্বলতা লক্ষণীয়। সাংস্কৃতিক মেলবন্ধনের উদ্দেশ্যে উর্দু গান যোগ করেছেন হয়ত। বাঙালি মেয়ের জন্য কেন উর্দু গান ব্যবহৃত হলো সেটা জানতে এই মন্তব্য দ্রষ্টব্য
_____________________
আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।
_____________________
আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।
ভালো পর্যবেক্ষণ এবং সুপাঠ্য। কিন্তু 'বালুচদা'-র কথা কিছু বললেন না??
ওসিরিস, কোথাও একটা 'ো' কার দিতে কি ভুলে গেছিস নাকি??
ধৈবত
মুভিটা দেখার ইচ্চা আরও তীব্র হচ্চে।
অচিরেই টেলিভিশনে দেখতে পাবেন আশা করি।
_____________________
আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।
বুনোহাঁস কে অনুরোধ এই রিভিউটার অনুবাদ অনুগ্রহ করে IMDb (অন্য কোন সিনেমা সাইটে এই সিনেমার নাম পেলে সেখানেও) যুক্ত করে দাও। এইটা বেশ পূর্ণাঙ্গ আর একজন দর্শকের ফার্স্টহ্যান্ড ইউনিক রিভিউ হয়েছে। সাথে আরো যুক্ত করতে পারো ইচ্ছামতো।
IMDb-র দর্শক রিভিউ সিনেমার পেজেই আসে, আর সেই রিভিউও কতজনার কাছে কার্যকর বা ভালো মনে হয়েছে তা দেখা যায়। তুমি রিভিউ দিলে আমরা সেটায় দিয়ে আসবো।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
যাই IMDB তে রেটিং মাইরা আসি।
এই সিনেমা সম্পর্কে যত জানছি তত মেজাজ খিচড়াচ্ছে ।
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
bbbs
bbbs মানে কী?
_____________________
আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।
রিভিউ ভালো হয়েছে, হাসতে হাসতে শেষ। আপনার একটি প্রশ্নের উত্তর আমি জানি।
- উনি সরাসরি বাপকে নিজের বিয়ের কথা বলতে পারেননি, তাই ছবির মাধ্যমে ইংগিত দেবার চেষ্টা করছেন।
এই মুভি নিয়ে বেশি তর্জন-গর্জন-বর্জন করতে বলাটাই হবে পাগলকে সাঁকো নাড়ানো কথা স্মরণ করিয়ে দেওয়ার মত। মনে হচ্ছে পরিচালকের পরিচালনা ক্যারিয়ারের এখানেই ইতি ঘটতে যাচ্ছে। ইন্নালিল্লাহ।
আচ্ছা, মুভির চরিত্রের মত উনাকে একটা বিয়ে করিয়ে দেওয়া যায় না? পরিচালকতো হতে পারবে না, তাই বিয়ে করে ঘর-সংসারটা অন্তত করুক। এই ব্লগে আছে নাকি কোন বিশাল দিলওয়ালা মানুষ, যিনি কিনা এই কনফিউসড তরুনীর হাল ধরতে পারেন?
/----------------------------------------------------
ওইখানে আমিও আছি, যেইখানে সূর্য উদয়
প্রিয়দেশ, পাল্টে দেবো, তুমি আর আমি বোধহয়
কমরেড, তৈরি থেকো,গায়ে মাখো আলতা বরণ
আমি তুমি, আমি তুমি, এভাবেই লক্ষ চরণ।।
পরিচালক তো বিবাহিতা। তবে পেকিপ্রেমী বালিকা অনেক আছে দেশে যারা আফ্রিদি, আতিফদের শাদি করতে চায়। পরিচালক হয়ত এমন বালিকাই দেখে এসেছেন বরাবর।
_____________________
আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।
সবাই জোরাজুরি করলে মুতা বিবাহ করতে রাজি আছি।
অনন্ত আত্মা
এই সিনেমা খুব শক্তিশালী শিল্পকীর্তি নয়া হলেও আমি এর নিষিদ্ধকরনের পক্ষে।
ব্যাপারটা শুধু এবারের নয়। ব্যাপার হলো এর গ্রহনযোগ্যতা তৈরি হওয়ার।
সবাই তো আর রুবাইয়াত এর মতো গাধা নন।
নান্দনিকভাবে ইতিহাস বিক্বতি আরো অনেকেই করতে পারবেন।
এই চর্চাকে শুরু থেকেই বন্ধ করতে হবে।
একবার গ্রহনযোগ্যতা চলে আসলে এদের থামানো মুশকিল
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
ঠিক। তবে রুবাইয়াতের কাজ এত দুর্বল যে আমি অত সিরিয়াস হতে চাইনি। হলের দর্শককেও দেখলাম কেউ সিরিয়াসলি নিচ্ছে না এই সিনেমাকে। তাই ওই মুহূর্তে বেশ হার্মলেস মনে হয়েছে একে। তবে ওই যে বললে ভবিষ্যতে কেউ হয়ত বেশ মুন্সিয়ানার সাথেই ইতিহাসের বিকৃতি ঘটাবে। সে হিসেবে মেহেরজান নিয়ে আরেকবার ভাবনার দরকার আছে।
_____________________
আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।
এখান থেকে খানিকটা মূল লেখায় যোগ করে দিলাম।
_____________________
আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।
বলতে ভুলে গিয়েছিলাম
তোমার রিভিউটা খুব ভালো হয়েছে। অতি চমৎকার হয়েছে
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
চমৎকার রিভিউ।
বিয়ে পাগল রুবাইয়াতকে দেখে মনে হচ্ছে মনির হোশেনের একটা হিল্লা হয়ে গেল।
মনিরকে তাহলে বেডরুমের আগে টয়লেট সাজাতে হবে। মুতা মুতা করে কান ঝালাপালা ...
নিজের মেশিনে এক লম্বর খাঁটি মেহেরজান মার্কা তেল ঢাল'রে ময়না।
মনিরের মুতা লৈয়া পরে চিন্তাইস। আগে নিজের মুতার গতি কর!
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
মুতা বিবাহ এক ধরনের জোর করে দেয়া বিয়ে। ছেলে বা মেয়ের ইচ্ছার বিরুদ্ধে তাদের হাত-পা বেঁধে জোর করে বিয়ে দিতে গেলে জোরাজুরির এক পর্যায়ে ভিক্টিম মুতে দেয়।
মুতে নিমজ্জিত অপবিত্র শরীরে বিয়েটা হয় বলে তাকে মুতা বিবাহ বলে।
তো মুতা বিবাহের আগে গতরে (মতান্তরে মেশিনে) এক লম্বর খাঁটি মেহেরজান মার্কা তেল মারার ব্যাপারে ফতোয়া-ই-মেম্বরজান শাস্ত্র কী বলে?
এই মন্তব্যের ঊর্ধ্বদিকের চতুর্থ মন্তব্যকারীর এইরূপ বিবাহের ব্যাপারে আপনি কী ধারণা? জনশ্রুতি আছে, তিনি ইতোমধ্যেই হাগামুতাবিবাহ করিয়া ফেলিয়াছেন। এই ব্যাপারে শাস্ত্রে কী বয়ান এসেছে?
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
চতুর্থ মন্তব্যকারী বিয়ে করবেন শীঘ্রই। তার জন্য বউ, বাচ্চা সবই ঠিকঠাক। কিন্তু আপনের ঘটনা কী? বিয়ে করেছেন প্রায় মাস তিনেক হয়ে গেল। এখনো কেন ঘোষণা দিচ্ছেন না?
ঘোষণা দিবো তো, মেহেরজান অস্কারটা পেয়ে নিক খাড়ান।
কিন্তু চতুর্থ মন্তব্যকারী কীসের অপেক্ষায় আছে? সে ক্যান মুতা বিয়ার ঘোষণা দেয় না?
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
এক হল দর্শক যদি মাঝপথে ছবি বর্জন করে বের হয়ে আসে, তাহলে টনক নড়বে। বাঙালি তো হরতাল আর অসহযোগ ছাড়া প্রতিবাদের আর কোনো ভাষা বুঝে না।
বর্জন করে বেরিয়ে আসার মতো তীব্রতা এই ছবিতে নেই। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত দর্শক শুধু খুঁজতে থাকে আসলে কী দেখার আছে এতে।
আরেকটা লক্ষণীয় বিষয় হলো একটা রাজনীতিবিমুখ খুউল প্রজন্ম তৈরি হয়ে গেছে ইতিমধ্যে। সিনেমা দেখতে যায় পপকর্ন খেতে খেতে টাইমপাস করতে। এদের কাছ থেকে কোনোরকম প্রতিবাদ বা প্রতিরোধ আশা করা যায় কি না আমি নিশ্চিত নই। এ ধরনের দর্শক রুবাইয়াতের মতো পরিচালকদের জন্য আরামদায়ক।
_____________________
আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।
লাভ নাই ইশতি। যে ভয়টা আমি পাচ্ছিলাম সেদিকেই হাঁটা দিচ্ছে কাহিনি! ড্যামেজ ইজ অলমোস্ট ডান। আইএমডিবি'র মুভিমিটার দেখাচ্ছে এই সপ্তাহে মেহেরজানের পপুলারিটি ঊর্ধ্বাগামী ১৬৭%।
যতো মানুষ টিকেট কেটে সিনেমা হলে ঢুকবে, ততোই মেহেরজানের পপুলারিটি বাড়বে। লোকজন হল থেকে বের হয়ে মেহেরজানের পিণ্ডি চটকালো নাকি রুবাইয়াতের গোষ্ঠী উদ্ধার করলো, দুর্ভাগ্যবশতঃ সেটা কোথাও কাউন্ট হবে না।
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
যা বলছিলাম, আগে মাইনাস বিশ রেটিং, আর এর সাথে ১ নাম্বার ক্যামেরার জন্য, ১ নাম্বার মিউজিকের জন্য আর সার্বিক প্রচেষ্টার জন্য ১ নাম্বার গ্রেস। তাহলে একুনে দাড়ালো মাইনাস সতেরো।
______________________________________
যুদ্ধ শেষ হয়নি, যুদ্ধ শেষ হয় না
হ দ্য ইয়েস
_____________________
আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।
দুর্দান্ত রিভিউ।
গত কয়েকদিন সব দেখেশুনে পরিচালিকার উদ্দেশ্যে আমার একটাই বক্তব্য - "রুবি মেরে রুবি, জানার ইচ্ছা খুবই, কী ভেবে তুম বানাইসো এই মেহেরজান-কি মুভি (Meher-junky movie)?"
গানের ব্যবহার নিয়ে একটা বিষয় রিভিউয়ে আসবে ভেবেছিলাম। একটা উর্দু গান আছে। "হাম কে ঠ্যাহেরে আজনবি"। সিনেমাটা দেখি নি আমি। তবে উর্দু গানের প্রয়োজনীয়তা বুঝলাম না। এটা কি মেহেরের উপর চিত্রায়িত? সে কেন উর্দু গান গাবে? পুরুষকণ্ঠের গান হলে তা-ও মানা যেত যে পাকিসোনা তার মেহেরজানকে উদ্দেশ্য করে উর্দু গানটা গাচ্ছে।
আরে! মেহেরজান মনে মনে গাইছিলো ওয়াসিমকে বিদায় দেওয়ার সময়। ওয়াসিম তো আর বাংলা বোঝে না। তাই উর্দুতে গেয়ে দিলো আরকি
_____________________
আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
সিনামা জিনিসটা কি? একজন কিছু একটা বানাবে, মানুষ সেটা টাকা দিয়ে দেখে এসে আলোচনা,সমালোচনা করবে। সেই হিসেবে এই সিনামা পুরা ই সফল। অনেক সিনামা বছরে বার হয়, কয়টা মানুষ দেখে এত? মেহেরজান সিনামা, পরিচালক আর চ্যানেল আই প্রচুর লাভ করে ফেলেছে এই সমালোচনার জন্যই। এত কিছুতে সিনামাটার কোনো ক্ষতিই হয়নাই বরং আমাদের মুক্তিযুদ্ধকে বৃকৃত করা সিনামা সংগানুসারে সফল হয়েছে।
মাত্র তো দেখলেন একাত্তর সালে "গণ্ডগোলের" কারণে দুইজন ফুলের মত মানুষের স্বর্গীয় প্রেম পূর্ণতা পাইতে পারল না। আলুচনা, সমালুচনা না করলে দেখবেন পরের বছর আরেকটা সিনেমা বাইর হবে যেখানে দেখান হবে ২৫ মার্চ ১৯৭১ দিবাগত রাতে রক্তলোলুপ বাঙালিরা অতর্কিতে নিরীহ নির্লোভ পাকিস্তানিদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। তারপর নয় মাসে লাখে লাখে পাকি মেরে সাফা করে দিয়েছিল। তারপর আন্তর্জাতিক আদালতে বাঙালিদের পাকিহত্যার বিচারের তোড়জোড় শুরু হবে।
ছবিতে একটা দৃশ্য বাদ গেছে
মুক্তিযোদ্ধারা এক লাইনে দাড় করিয়ে বিহারিদের গুলি করছে।
**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!
হি হি হি হি!
--------------------------------------------------------------------------------------------
বললুম, 'আমার মনের সব কপাট খোলা ভোজরাজজী। আমি হাঁচি-টিকটিকি-ভূত-প্রেত-দত্যি-দানো-বেদবেদান্ত-আইনস্টাইন-ফাইনস্টাইন সব মানি!'
আইএমডিবি'র রেটিং ৩.৮-এ নামছে। এই বালটারে দুই এর ঘরে নামানো উচিৎ। এইসব গাঞ্জাখুরি বালছালফ্যান্টাসি মার্কা সিনেমার জন্য দুই রেটিংও অনেক বেশি হয়ে যায়।
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
এখন নেমেছে ২.১-এ।
_____________________
আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।
ফেসবুকে তো বললামই। এখানেও বলছি, দুর্দান্ত হয়েছে রিভিউটা।
এই ছবির জন্য এমন রিভিউই যথেষ্ট।
--------------------------------------------------------------------------------------------
বললুম, 'আমার মনের সব কপাট খোলা ভোজরাজজী। আমি হাঁচি-টিকটিকি-ভূত-প্রেত-দত্যি-দানো-বেদবেদান্ত-আইনস্টাইন-ফাইনস্টাইন সব মানি!'
ছবির জন্য যথেষ্ট, কিন্তু রুবাইয়াত হোসেনের জন্য যথেষ্ট না বোধ হয়। উনি এখনো বলে চলেছেন এ ছবিতে নাকি মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করা হয়নি।
আজকের সমকালে তার সাক্ষাৎকার দেখুন।
_____________________
আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।
আরে, ঠিকই তো বলতেছে রুবাইয়াত। তার মননে, মজ্জায়, বিশ্বাসে, ফ্যান্টাসিতে মুক্তিযুদ্ধের যে ইতিহাস লালিত তার তো কোনো বিকৃতি সে করে নি। তার গবেষণায় সে বীরাঙ্গনাদের সংখ্যা নিয়ে যে জুচ্চুরি করেছে সেই সংখ্যা তো তার কাছে ঠিকই আছে।
ভয় নেই রুবাইয়াত হোসেন, আপনের পেইড মিল্লাতবাম আর য়্যুনিভার্সিটির শিক্ষকরা তাদের ডিউটিতে অবহেলা করছেন না। জোর কদমে কলম লাদিয়ে যাচ্ছেন। আপনেরে অস্কারজয়ী বানায়েই ছাড়বেন তেনারা।
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
চারদিকে তর্ক-বিতর্ক দেখে-শুনে মেজাজ যথেষ্ট খারাপ হয়েছে। ছবিটা দেখার বিন্দুমাত্র ইচ্ছে নেই। তবে রুবাইয়াতের ব্যাকগ্রাউন্ড জানতে আগ্রহী। ফ্যামিলি ব্যাকগ্রাউন্ডটা জানা দরকার। তার বাবা কিংবা দাদা কী ছিলেন? সালাউদ্দিন কাদের চোধুরীর মেয়ের লম্ফঝম্প দেখেছেন তো, বোঝা যায় সে কোন মতাদর্শে বিশ্বাসী। রুবাইয়াতও কি তেমন কিছু ?
বাপ যোগাযোগমন্ত্রী আবুল, আর নানা আটরশির পীর, যাকে "নানাজান" বানিয়ে তার রাজাকার ব্যাকগ্রাউন্ড হোয়াইটওয়াশের চেষ্টা করা হয়েছে।
এতক্ষণে নানাজানকে চিনতে পাল্লাম!
_____________________
আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।
খুব ভাল লাগল রিভিউ । মন খারাপ হয়ে গেল জয়া ভাদুড়ী, হুমায়ুন ফরীদি, আবুল কালাম আজাদের মত অভিনেতা, অভিনেত্রী কাজ করেছেন শুনে । প্রতিবাদ হওয়া উচিত যেভাবেই হোক ।
একটা প্রশ্নঃ সেন্সর বোর্ডের কোন নীতিমালা নেই মুক্তিযুদ্ধের ওপর চলচ্চিত্র নির্মাণ বিষয়ে?
__________________________________________
জয় হোক মানবতার ।। জয় হোক জাগ্রত জনতার
জয়া বচ্চন, ভিক্টর ব্যানার্জী, হুমায়ুন ফরীদি, খায়রুল আলম সবুজ, শর্মিলী আহমেদ, আজাদ আবুল কালাম কী ভেবে এ সিনেমায় অভিনয় করেছেন জানি না। তবে এরা নিজেদের সহজাত অভিনয় দিয়েই চরিত্রগুলোকে রক্ষার চেষ্টা করেছেন যদিও পরিচালনার দুর্বলতার কারণে আখেরে সব ভেস্তে গেছে।
নিচে বলাইদার দেওয়া লিঙ্ক ধরে জানতে পারলাম তথ্য মন্ত্রনালয়ের(সেন্সর বোর্ড তথ্য মন্ত্রনালয়ের একটা সরকারি প্রতিষ্ঠান) ১৯৮৫ সালে নবায়নকৃত সেন্সর কোডের দ্বিতীয় প্যারায় উল্লেখিত চারটা বিধির মধ্যে তিনটি বিধিই II(a, c আর d) লঙ্ঘন করছে মেহেরজান। সেন্সর বোর্ড কী করে এই সিনেমাকে ছাড়পত্র দিলো সেটা একটা বড় প্রশ্ন।
_____________________
আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।
তবু ভালো যে সেন্সর বোর্ড ছবিটা নিষিদ্ধ করেনি। করলে সাধারণ মানুষের মধ্যে এই ধারনা তৈরি হতো যে ছবিটায় কোনো 'লুকানো সত্য' আছে যা অবশ্য গোপনীয়। তাতে আখেরে পরিচালকের লাভ হতো।
এই ছবির তো সেন্সর বোর্ডের ছাড়পত্রই পাওয়ার কথা না।
_____________________
আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।
না, এটা ভালো হয় নাই। বাংলাদেশ তথ্য মন্ত্রণালয়ের সেন্সর কোড অনুসারে এই ছবি বাইরে আসার আগেই আটকে দেয়া উচিত ছিলো। আমাদের ইতিহাসের ধর্ষণ দেখে যারা রসময় গুপ্ত পড়ার আনন্দ অনুভব করে, তাদের অর্গাজমে সমস্যা হলেও এই নোংরামি আমাদেরকে দেখতে হতো না। রুবাইয়াতের পেপারের কপি মুক্তিযোদ্ধা যাদুঘরের ওয়েবসাইটে পাওয়া যায়, সে তার ছাগাবেষণা আবার কোনো এক সেমিনারেও নাকি লাদন করেছে। এখন এই মেহেরজানের কপিও ইতিহাস বিকৃতিতে রেফারেন্স হিসেবে ব্যবহৃত হবে।
II. International Relations:
(a) Contains propaganda in favor of a foreign state having a bearing on any point of dispute between it and Bangladesh or against a friendly foreign state which is likely to impair good relations between it and Bangladesh.
(b) Violates the third country principle, that is which adversely affects friendly relations with the other country or countries or wounds the susceptibilities of foreign nations.
(c) Portrays maliciously incidents or sequences which are prejudicial to the prestige or history of any people, race or nation.
(d) Distorts historical facts particularly maligning Bangladesh and its ideals and heroes.
কৃতজ্ঞতা: মুরুব্বি
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
অছ্যুৎ বলাইকে ধন্যবাদ। মেহেরজান যে সেন্সর বোর্ডের নীতি ভঙ্গ করেছে ( II. a ) তা জানতে পারলাম। আমার কাছে সেন্সর বোর্ডের নীতিমালার কোনো কপি নেই, ফলে বিস্তারিত আলোচনা করা সম্ভব নয়। কোনো ওয়েব সাইটের লিংক দিলে কতজ্ঞ থাকব।
খুব কাছের একটা উদাহরন হিসেবে আমি হিন্দী ছবি রং দে বাসন্তীর নাম উল্লেখ করতে চাই। এই ছবিটি ভারতীয় সেন্সর বোর্ড আটকে দিয়েছিল কয়েক মাসের জন্য। ( Wikipedia : The film's release faced stiff resistance from the Indian Defence Ministry and the Animal Welfare Board due to parts of the film that depicted the use of MiG-21 fighter aircraft and a banned Indian horse race respectively.) পরে ছবির প্রযোজক এই সাময়িক বন্ধের বিষয়টিকে প্রচারনার কাজে লাগান। ছবির নিজ গুনে তো বটেই, দর্শক-সাধারনের বাড়তি কৌতুহলে বক্স অফিস ফেটে পড়ে। ২৫ কোটি রুপি বাজেটের ছবিটি ব্যবসা করে ১৩৬ কোটি রুপি।
মেহেরজানকে সেন্সর বোর্ডের আটক, পরবর্তীতে বিপরীত ফল বয়ে নিয়ে আসত বলে আমার ধারনা।
আপনি এ-ও নিশ্চিত থাকতে পারেন, এই সিনেমা আওয়ামী মন্ত্রীর মেয়ে না বানিয়ে কোনো সাধারণ মানুষ বানালে সেন্সর তার কাঁচি চালাতে দ্বিধা করতো না। মন্ত্রীর মেয়ে + "গবেষক" পরিচয় আর টাকার থলি, বাস, আর কী লাগে?
শুধুমাত্র II.a ভঙ্গ করেনি, II.b আর II.c-ও ভঙ্গ করেছে মেহেরজান।
_____________________
আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।
'...maligning Bangladesh and its ideals and heroes.'
II.(d) কেও বাদ দেয়ার কোন কারন নেই।
আমি ভুল বলেছি। a, c, d হবে।
_____________________
আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।
দারুন রিভিউ ।
একদম ফাঁস পরিয়ে দিয়েছেন ।
সবুজ পাহাড়ের রাজা
আমার চারপাশ ডট কম
হা হা হ... যা লেখছেন।
পইড়া হাসতে হাসতে অবস্থা খারাপ। চরম হইছে ভাই, চরম হইছে। এখন তো আমার কাছে এইটারে কমেডি সিনেমা মনে হইতেছে।
চরম হইছে ভাই, চরম হইছে।
----------------------------------------------
Sad Poems
নতুন মন্তব্য করুন