চড়ুইভাতি

নাশতারান এর ছবি
লিখেছেন নাশতারান (তারিখ: সোম, ০১/০৭/২০১৩ - ১০:১৯অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

আমার পোষ্যভাগ্য ভীষণ খারাপ। গাছ, মাছ, পশু, পাখি কাউকেই পেলেপুষে কাছে রাখতে পারিনি। অনেক শখের শিম গাছ, করলা গাছ, বেলি ফুলের গাছ, পাখির ছানা, গোল্ডফিশ সবাই মারা গেল একে একে। অনেক ভালোবাসা পেয়েও। কখনোবা ভালোবাসার আতিশায্যে। নিজের অযোগ্যতা মাথা পেতে নিয়ে শেষমেষ চেষ্টায় অব্যাহতি দিলাম। এরপর একদিন সচলের পাতায় এলো ফাহিমের পোস্ট। আমাদের ফ্লোরের ছজন ক্ষুদে পড়শির সাথে নিয়মিত কুশলবিনিময় হলেও আমার ব্যক্তিগত বারান্দায় আসা পড়শি চড়ুইদের প্রতি ন্যূনতম সৌজন্য প্রদর্শন করা হয় না। ব্যাপারটা মনে দাগ কাটল তখনই। ফাহিমের পোস্টে কথাও দিয়েছিলাম হক আদায় করে জানানোর। এরপর পদ্মার জল বহুদূর গড়িয়ে গেল। সকাল বিকেল কিচিরমিচির শুনে পড়শির হক আদায়ের তাগাদা অনুভব করতাম। একে ওকে ধরে পাখির খাবারের খোঁজ দিতেও বলতাম। আরো অনেক অসফল পরিকল্পনার মতো সেটাও পরিকল্পনাই রয়ে যাচ্ছিলো।
একদিন গুলশান এলাকায় হাঁটতে হাঁটতে চোখে পড়ল পশু-পাখি-মাছের দোকান। দোকানে ঢুঁ মেরে জানতে চাইলাম পাখির খাবার আছে কি না। দোকানি খুব উৎসাহ নিয়ে নানান রকমের খাবার দেখাতে লাগলেন। যেটা নেওয়ার পরামর্শ দিলেন তার প্যাকেটের গায়ে টিয়া পাখির ছবি। জানতে চাইলাম এ খাবার কি সব পাখি খায় নাকি কেবল টিয়া পাখি। দোকানি জানতে চাইলেন আমি কী পাখি পুষি। জানালাম যে আমি পুষি না। আমার বারান্দায় রোজ কিছু চড়ুই আসে। তাদের জন্য নেবো। শুনে তিনি অবাক হয়ে কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে মাথা নেড়ে নেড়ে বললেন, “এমন মানুষ দেখা যায় না। আপনার মনটা অনেক বড়।”
আমি খানিকটা বিভ্রান্ত, অনেকখানি বিব্রত। দোকানের উপরের তাকে পাখির খাবার আর পানি নেওয়ার পাত্র দেখলাম। সেগুলোও নিতে চাইলাম একটা করে। দোকানি দুটো পানির পাত্র নিতে বললেন। জানতে চাইলেন কটা পাখি আসে। আমি আসলে গুণে দেখিনি কখনো। অনুমানে বললাম চার-পাঁচটা। তিনি এগাল ওগাল হাসি দিয়ে বললেন, “এই সংখ্যা বাড়বে।”
চলে আসার সময় আবার বললেন, “অনেক বড় মন আপনার। আবার আইসেন।”
অনাহূত প্রশংসায় বিব্রত হলেও ভদ্রলোকের আত্মিক স্বচ্ছতায় আপ্লুত হলাম।
খাবার আর পানির পাত্র বারান্দায় ঝোলাতে গিয়ে আবিষ্কার করলাম ওগুলো আসলে খাঁচায় ঝোলানোর উপযোগী করে তৈরি। আমাদের বারান্দার গ্রিল সে তুলনায় বেশ চওড়া। পরদিন সন্ধ্যায় বাসায় ফিরে দেখি আব্বু কীভাবে জানি কায়দা করে বারান্দার গ্রিলের সাথে বেঁধে দিয়েছে ওগুলো। পরদিন সকালে খাবার আর পানি দিয়ে অফিসে গেলাম। বাসায় ফিরে দেখি খাবার, পানি যেমন ছিলো তেমনই আছে। কেউ খায়নি। এভাবে তিন দিন গেল। এর পরেরদিন ঢাকার বাইরে চলে গেলাম। ফিরলাম আরও দুদিন পর। ঘুটঘুটে ভোরে কুয়াশা ভেঙে বাসায় পৌঁছেই ঘুমিয়ে পড়লাম। ঘুম ভাঙলো অফিসের ফোনে। ফোন কানে রেখেই অন্য কান দিয়ে শুনতে পেলাম কিচিরমিচির। আড়চোখে দেখি জনৈক চড়ুই ইতিউতি চেয়ে আমার আতিথেয়তা গ্রহণ করছেন। ফোনে কথা সেরে খুব সাবধানে ছবি তুললাম কিছু।

অনন্ত

সেই থেকে তিনি রোজই আসছেন। সকাল-দুপুর-বিকেল সব বেলাতেই।

অনন্ত ২

অনন্ত ৩

দিনকয়েক গড়ানোর পর একদিন দেখি- পাখি আসে, কিচিরমিচির করে, এদিক ওদিক বসে, আবার চলে যায়। কিছু খায় না। এভাবে চললো কয়েকবার। সমস্যা কী বুঝতে না পেরে বারান্দায় গেলাম। খাবারের বাটিতে উঁকি দিতেই বোঝা গেল সমস্যা। খাবার ফুরিয়ে গেছে। শস্যের খোসা পড়ে আছে বাটিতে। আরেকটু খাবার ঢেলে চলে এলাম। কিছুক্ষণ পড় আবারো কিচিরমিচির। তিড়িংবিড়িং করে মহা উৎসাহে জলখাবার সারলের মহাশয়। তখনো তিনি একাই। সাথে আর কেউ নেই।
কবে তিনি তার সঙ্গীসাথীদের নিয়ে জলখাবারে যোগ দেবেন সেই অপেক্ষায় রইলাম।
সপ্তাহ গড়াতে না গড়াতে সেই অপেক্ষাও ফুরোলো। তিনি সঙ্গিনী নিয়ে এলেন সঙ্গে করে।

অনন্ত-বর্ষা ১

এবার শুধু চড়ুই নামে আর পোষাচ্ছে না। তখনকার প্রিয় সিনেমা জুটির নামে ছেলেটার নাম দিলাম অনন্ত, মেয়েটা বর্ষা। অনন্তর দাপটে বর্ষা একটু চুপসে থাকে। অনন্ত যতক্ষণ খাওয়াদাওয়া করে বর্ষা তখন কাছে ঘেঁষে না। অনন্ত মহাশয়ের উদরপুর্তি হলে বর্ষা উড়ে এসে জুড়ে বসে। অনন্তর মুশকোপনা দেখে বর্ষার জন্য আরেকটা খাবারের পাত্র বেঁধে দিলাম একটু দূরে।

অনন্ত-বর্ষা ২

দেখতে দেখতে অনন্ত-বর্ষার আরো কিছু সঙ্গিসাথী আমাদের বারান্দার নিয়মিত অতিথি হয়ে গেল। তারা সকাল-দুপুর-বিকেল যখন তখন আসে। খেয়েদেয়ে উড়ে যায়। আবার ক্ষুধা পেলে আসে। আমার সাথে দেখা হয় না। সকালবেলা কিচিরমিচির শব্দে জানালা দিয়ে উঁকি দিয়ে দেখি। এতটুকুই।

গতমাসে এক সন্ধ্যায় লতা (আমাদের গৃহকর্মী) হাতের মুঠোয় করে ছোট্ট একটা চড়ুইছানা নিয়ে এল। এখনো উড়তে শেখেনি। তুমুল বৃষ্টিতে নিজের বাসা থেকে ছিটকে কাকভেজা (নাকি চড়ুইভেজা?) হয়ে পড়ে ছিলো বারান্দায়।

তিড়িং

লতা চুলার পাশে শুকিয়ে গা মুছিয়ে দিলো। মুখে তুলে খাওয়ালো। শোকেসের দোতলায় বিছানা করে পাল্লা ফাঁক করে তাকে রেখে দেওয়া হলো রাতে। ভোরে হঠাৎ ঘুম ভেঙে মনে হলো- “পাখি কই?” শোকেসের কাছে ছুটে গেলাম। ভেতরে উঁকি গিয়ে দেখি নাই। খোঁজ খোঁজ খোঁজ। তাকে পাওয়া গেল শোকেসের নিচতলার চিপায়। দোতলা থেকে নিচতলায় নেমে চিপাচাপি দিয়ে ঘুরছিলো সে। যাক, দস্যিপনা করার শক্তিটুকু ফিরে পেয়েছে দেখে আশ্বস্ত হলাম। নাম দিলাম তিড়িং।

সকালে তার বাবা-মা এলো। এতক্ষণে বোঝা গেল সে অনন্ত আর বর্ষার সন্তান। তিড়িংকে ঝুড়িতে বসিয়ে রাখা হয়েছে। বারান্দা থেকে অনন্ত ক্রমাগত চেঁচিয়ে যাচ্ছে। কাছে ঘেঁষছে না। তাদের বাসা কাছেই। কিন্তু তিড়িং তখনো উড়তে পারে না। তাই তাকে ফিরিয়েও দেওয়া যাচ্ছে না। বেলা গড়ালে দুনিয়াদারি ভুলে অনন্ত ছুটে রান্নাঘরের ভেতরে চলে এলো। তিড়িংয়ের খাবার রাখা ছিলো পাশেই। অনন্ত সেখান থেকে খাবার ঠোঁটে তুলে তুলে তিড়িংকে খাইয়ে দিয়ে উড়ে গেল। এভাবে কয়েকবার। দুদিন এভাবে গেল। দিনের বেলা অনন্ত এসে আশেপাশে ঘুরে বেড়ায়। তিড়িংকে খাইয়েদাইয়ে দেয়।
আর সন্ধ্যা হলে তিড়িং শোকেসের মধ্যে হেঁটে বেড়ায়। শোকেস থেকে বাইরে আনলে চিপা খুঁজতে থাকে। বসার ঘরে এনে ছেড়ে দেওয়া হলো একবার। সে তিড়িংবিড়িং করে লাফিয়ে আসবাবের পেছনে চলে যায়। হারমোনিয়ামের পেছন থেকে ধরে এনে ঘরের মাঝখানে বসানো হলো। ক্যামেরা বের করলাম। এবার আর নড়ে না। ঠায় বসে থাকেন ক্যামেরার সামনে।

ভিডিও করছি। কী রে বাপু, একটু নড়াচড়া কর! এই তো বেশ লাফিয়ে বেড়াচ্ছিলি! না। সে ঠায় বসে আছে। মাঝে একবার হাঁ করল।
আম্মু বললো, "খিদা লাগসে মনে হয়"। আমি বললাম, "নাকি হাই তুললো?"
লতা ঠোঁটে আঙুল ধরল খিদা লেগেছে কি না দেখার জন্য। খিদা লাগলে ঠোঁটে ঠোকর দেয়। এবার সে ঠোঁট চেপে বসে থাকল। লতা খাবার এনে মুখে ধরল। কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে তারপর গপাগপ খাওয়া শুরু করল।
তাকে চিপা থেকে ধরে এনে সামনে বসানো হয়েছিলো বলে রাগ করেছিলো মনে হলো। তাই গাল ফুলিয়ে (ঠোঁট চেপে) বসে ছিলেন। হাঁ-টা বকাঝকার দিতে করা কি না কে জানে?

পরদিন অফিস থেকে ফিরে শুনি তিড়িং তার বাবার সাথে উড়ে গেছে।

ফিরে যাওয়ার পর দুদিন রান্নাঘরে এসে ঘুরেফিরে খেয়ে গেছে।

এখন তিড়িং তার বাবা-মা, আত্মীয়-বন্ধুদের সাথে নিয়মিত খেতে আসে আমার বারান্দায়। তবে ওরা আমাদের চেনে না। আমি বলি আমার সাথে চড়ুইদের ওপেন রিলেশনশিপ। খাঁচা নেই, বন্ধন নেই, কোনো দাবিদাওয়া নেই। জীবনের চড়ুইভাতিতে আমরা অচেনা পড়শিমাত্র।

_________________________________________________________________________________
সচলায়তনের জন্মদিনে পোস্ট দেবো পণ করেছিলাম। দীর্ঘদিনের অনভ্যাসে কীবোর্ডে মরচে পড়েছে। তাও বন্ধনহীন ভালোবাসার কথা রাখতে এই দুর্বল প্রচেষ্টা।

শুভ জন্মদিন, প্রিয় সচলায়তন!


মন্তব্য

কেউ একজন এর ছবি

খুব ভাল লাগল।

নাশতারান এর ছবি

হাসি

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

আয়নামতি এর ছবি

অভিনয়ে তিড়িং অনন্ত-বর্ষাকেও ছাড়িয়ে যাবে দেখছি! ভিডিও দেখে কেউ বলবে, এই ছেলে চিপাচিপায় গিয়ে দস্যপনা করে? বুনো সত্যিই অনেক বড় মনের মানুষ। এভাবে ক'জন যত্নাত্তি করে অচেনা পড়শির(সময়ে তেলটুকু ঘি হয়ে যেন ফেরত পাই হে খাইছে ) কথা দিয়ে রাখতে পারার জন্য উত্তম জাঝা! সচলের জন্য অনেক শুভেচ্ছা।

নাশতারান এর ছবি

তা, ঘি ফেরত দেবো কী করে? চিন্তিত

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

স্যাম এর ছবি

ওহ! দারুন তো --- একটা গান মনে পড়ে গেলঃ

আমি তাজ্জব বনে যাই, দেখি মানুষের ঘর নাই
দ্যাখো মানুষেরই ঘরে বাসা বেঁধে নিলো ছোট্ট এক চড়াই
আমি তাজ্জব বনে যাই, আজো মানুষ পেলো না ঠাঁই
দ্যাখো জিতে নিলো ঠিকই ছোট্ট চড়াই অধিকারের লড়াই

শুভ জন্মদিন, প্রিয় সচলায়তন!

নাশতারান এর ছবি

চড়ুইদের দেখে আমিও তাজ্জব বনে যাই। চড়ুইও তো প্রাণ। তিড়িং যে কদিন আমাদের সাথে ছিলো, কী যে দুঃশ্চিন্তায় ছিলাম। ঠিকঠাকমতো ফিরিয়ে দিতে পারব তো? মরে যাবে না তো? একটা চড়ুইয়ের বাচ্চা নিয়ে এমন উৎকণ্ঠা, মানুষের বাচ্চা হলে না জানি ব্যাপারটা কেমন- সেটা ভেবেই তাজ্জব বনে গেছিলাম।

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

চরম উদাস এর ছবি

হাততালি
অনেকদিন পর একজন ফাঁকিবাজের আড়মোড়া ভাঙল। সচলের জন্মদিনে আরও সব পুরানপাপীরা লেখা দিবে ভাবছিলাম, কিন্তু এখনো তেমন কিছু পাচ্ছিনা মন খারাপ
চড়ুই কথা দারুণ লাগলো।

নাশতারান এর ছবি

অনেকদিন পর কই? গতমাসেই পোস্ট দিলাম তো! লইজ্জা লাগে

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

চড়ুই নিয়ে আমার এই লেখাটার কথা মনে পড়ে গেল। হাসি

খুবই আরামদায়ক লেখা। তরতর করে পড়ে ফেললাম। ভালো লাগল। ছবিগুলোও সুন্দর।

আগে আমার জানালায় কিছু চড়ুই উড়ে আসত। জানালার কাচে ওদের ঝাপটাঝাপটি বা নখের আঁচড়ের শব্দ পেতাম। অলস আমি উঠে গিয়ে ওদের আদর-আপ্যায়ন করিনি কখনও। এ কারণেই রাগ করে ওরা আর আসে না মনে হয়।

বুনোহাঁস হলেও, মনটা আসলেই অনেক বড়। কিপিটাপ। হাসি

নাশতারান এর ছবি

ছবিগুলো কিন্তু সেই কৃষ্ণগহ্বর থেকেই অনেক খুঁজেপেতে বের করা, বুঝলে? চোখ টিপি

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

হো হো হো

প্রৌঢ় ভাবনা এর ছবি

তিড়িংবিড়িংকে যে কার্পেটটার উপর রাখা হয়েছে, সেটা খুবই সুন্দর, ঠিক লেখাটার মতই।এবং আপনার হৃদয়টার মতও বটে।

নাশতারান এর ছবি

ধন্যবাদ। কার্পেটটা পারস্য থেকে বয়ে আনা। মায়ের শখের জিনিস। হাসি

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

রণদীপম বসু এর ছবি

তিড়িং-বিড়িং চলুক---

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

সুমিমা ইয়াসমিন এর ছবি

তিড়িং এর জন্য ভালোবাসা।
লেখাটি পড়ে চড়ুই পাখি নিয়ে নিয়ে শৈশবের অনেক স্মৃতি ভিড় করলো মনে! সুন্দর লেখা। হাততালি

নাশতারান এর ছবি

চড়ুই নিয়ে অনেকেরই অনেক স্মৃতি আছে দেখছি। চলো চড়ুই নিয়ে একটা ইবুক করি। দেঁতো হাসি

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

অকুতোভয় বিপ্লবী এর ছবি

ছবিগুলি অদ্ভুত সুন্দর হয়েছে হাসি
চড়ুইয়ের সাথে তোমার যে খাতির, সেই খাতির আমার কুকুরদের সাথে হাসি

------------------------------------
সময় এসেছে চল ধরি মোরা হাল,
শক্ত কৃপাণে তুলি বরাহের ছাল।

নাশতারান এর ছবি

ধন্যবাদ! কিন্তু খাতির তো নাই। আমাকে দেখলেই দৌড় (উড়াল) দেয়। ওদের খাওয়াদাওয়ার "ডিশটাপ" হওয়ার ভয়ে ওরা থাকলে বারান্দায় যাই-ই না।

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

অকুতোভয় বিপ্লবী এর ছবি

চড়ুইয়ের খাতির অমনই, খুব ভীতু হয়, মাঝামাঝি খাতির এদের সাথে সম্ভব না, 'দূর থেকে' ভালবাসাই যথার্থ হাসি

------------------------------------
সময় এসেছে চল ধরি মোরা হাল,
শক্ত কৃপাণে তুলি বরাহের ছাল।

জোহরা ফেরদৌসী এর ছবি

তাও বন্ধনহীন ভালোবাসার কথা রাখতে এই দুর্বল প্রচেষ্টা।

এই তাহলে “দুর্বল” প্রচেষ্টা অ্যাঁ ? দুর্বল প্রচেষ্টা দীর্ঘজীবি হোক দেঁতো হাসি

__________________________________________
জয় হোক মানবতার ।। জয় হোক জাগ্রত জনতার

নাশতারান এর ছবি

হো হো হো

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

সুমাদ্রী এর ছবি

আপনার হৃদয়টা আসলেই বড়। লেখাটা পড়তে পড়তে মনে পড়ল আমাদের আগের বাসার কথা। বারান্দার এক কোনায় মিটারের পেছনে চড়ুইয়ের একটা বাসা ছিল। প্রায়ই উপর থেকে চড়ুইয়ের বাচ্চা পড়ে যেত। আমরা ওদের যত্ন করে বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করতাম। প্রায়ই অবশ্য মারা যেত। মাঝে মাঝে চড়ুই পাখি ঘরের ভেতর ঢুকে যেত, ফুড়ুৎ ফুড়ুৎ করে উড়ত, চলন্ত ফ্যানে লেগে মারা যেত। তখন খুব মন খারাপ হত।

অন্ধকার এসে বিশ্বচরাচর ঢেকে দেওয়ার পরেই
আমি দেখতে পাই একটি দুটি তিনটি তারা জ্বলছে আকাশে।।

নাশতারান এর ছবি

ওই দোকানি ভদ্রলোক সাদা মনের মানুষ বলেই বিস্মিত হয়েছেন। আমি আসলে এমন কিছুই করিনি।

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

বাপ্পীহায়াত এর ছবি

লেখা ভালো লাগল আপু চলুক

আপনার লেখার প্রথম প্যারাটা পড়তে পড়তে উপলব্ধি করলাম কোন ভূল বানান নেই!
সাথে সাথে মনে পরল আরে আপনিই তো সচলের বিখ্যাত বানান আম্মা দেঁতো হাসি

নাশতারান এর ছবি

"ভূল" বানান? চিন্তিত

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

অকুতোভয় বিপ্লবী এর ছবি

দেঁতো হাসি

------------------------------------
সময় এসেছে চল ধরি মোরা হাল,
শক্ত কৃপাণে তুলি বরাহের ছাল।

বাপ্পীহায়াত এর ছবি

লইজ্জা লাগে

ছাইপাঁশ  এর ছবি

অনেক দিন পর আপনার লেখা পড়লাম। (সচলে আমি যেদিন প্রথম লেখা দেই সেই লেখায় লাইন প্রতি ২টি বানান ভুল শুদ্ধ করে দিয়ে, হাতে হারিকেনের বদলে একটি ডিকশনারির লিংক ধরিয়ে দিয়ে গিয়েছিলেন। যেটা এখনো আমার বাংলা লেখার নিত্যসঙ্গী। লইজ্জা লাগে )। সে যাই হোক, পোস্টটি খুবই ভালো লেগেছে। শুধু একটা খটকা পোস্টের নাম চড়ুইভাতি কেন? চড়ুইপাখির গল্প বলে? কিন্তু নাম দেখে মনে হচ্ছে কোনো পিকনিকের গল্প।

স্কুলে থাকতে একবার বাসার আম গাছে শক্ত বোর্ড দিয়ে সেখানে শস্যদানা আর পানি রাখার জন্য ছোট দুটি বাটি গুনাতার দিয়ে বেঁধে তিন ডালের মাঝখানে পাখিদের ট্রি হাউজের মত বানিয়ে দিয়েছিলাম। সেখানেও অনেক চড়ুই আসতো। অবশ্য বেশিরভাগ খাবার কাক খেয়ে ফেলত।

এরপর সুইডেনের লিনশপিং থাকার সময় অনেক বাড়িতে দেখেছি এমন মানুষের বানানো পাখির বাসা। নানা রকমের বাসা। নিজের সখের বিষয় গুলো আরেকজনের মধ্যে দেখলে কেমন অদ্ভুত ভালো লাগে!

নাশতারান এর ছবি

জীবনের চড়ুইভাতিতে আমরা অচেনা পড়শিমাত্র।

হাসি

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

নজমুল আলবাব এর ছবি

রোজ সকালে বাড়ির উঠান ভরে যেতো নানা রকম পাখিতে, শালিক-চড়ুই-ঘুঘু-ফিঙে। এর বাইরে সম্ভবত দু-চারটি বকও ছিলো। সকালে গাঢ় ঘুম হয় না বলে, আও... আ... আও... ডাক শুনতাম। সেই ডাক শুনে যারা আসতে তাদের কিচির মিচিরও শোনা যেতো। এর সাথে ছিলো ১'শর উপরে কবুতর। বাকবাকুম ডাকটারে মাঝে মাঝে বিশ্রি মনে হতো এদের চিৎকারে। উঠানে, ছাদে ভাগ করা যায়গায় ছড়িয়ে দেয়া ভাত, ধান নিজের মতো করে খেয়ে যার যার কাজে বেরিয়ে পড়তো পাখিগুলো। এরা এখন আসে না। তাদের জন্য কেউতো আর খাবার দেয় না যে আসবে। কবুতর কমতে কমতে সম্ভবত ৫০/৬০ টায় এসে ঠেকেছে।

একটা সাইকেল সাড়ে ৩ শ কিলো পথ বয়ে নিয়ে, অন্যরকম একটা ছেলেকে যে দিতে পারে, তার মন বড় না হলে কার মন বড় হবে?

নাশতারান এর ছবি

বড় মনের মানুষ অনেক দেখেছি। তাই প্রশংসা নিতে কুণ্ঠিত বোধ করছি। অন্য কোনোদিন বড় মনের গল্প করব নে।

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

তিথীডোর এর ছবি

অনেকদিন পর আরেকটা চমৎকার লেখা। চলুক
ছবিগুলোর জন্য আরো ভাল্লাগলো।

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

নাশতারান এর ছবি

ধন্যবাদ, তিথী। হাসি

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

কল্যাণ এর ছবি

পুরাই ফাঁকিবাজি, বড় বড় ছবি দিয়ে যতই সাইজ বড় করেন ধরে ফেলেছি ঠিক!!

অফটপিকঃ প্রোফাইলের ছবি বদল করেছেন যে বড় শয়তানী হাসি

_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩

নাশতারান এর ছবি

হ। কত কষ্টে গড়িয়ে গড়িয়ে লিখলাম! মন খারাপ
দাঁড়ান, প্রোফাইলের ছবি আবার বদলাবো। শয়তানী হাসি

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

তারেক অণু এর ছবি

দারুণ লেখা ! পাখি ক্লাবের জন্য দিতে পারেন কিন্তু, অনেকেই ফলো করতে পারবে

ফাহিম হাসান এর ছবি
ফাহিম হাসান এর ছবি

দারুণ কাজ করেছেন। প্রশংসা করে আর বিব্রত করলাম না - কিন্তু এইরকম পোস্ট একটা ফিল গুড ঝাপ্টা দেয়।

ভিডিওর রেজ্যুলিউশান দারুণ, বেশ শার্প দেখালো।

নাশতারান এর ছবি

শুনে ভালো লাগল, ফাহিম। তোমাকে অনেক ধন্যবাদ বুদ্ধি বাতলে দেওয়ার জন্য।

আমার দৌড় পয়েন্ট অ্যান্ড শ্যুট পর্যন্তই। ছবি, ভিডিও সবই Canon PowerShot A2200-এ তোলা। এটায় 720 HD-রেজ্যুলিউশন মুভি ক্লিপ তোলা যায়।

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

নাশতারান এর ছবি

পাখি ক্লাব কী?

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

তুলিরেখা এর ছবি

এই লেখাটা গতকাল পড়েছি। পড়ে দিনটাই ভালো হয়ে গেল। খুব ভালো লাগলো লেখাটা। হাসি

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

নাশতারান এর ছবি

হাসি

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

চমৎকার লেখা। পড়লেই মমতাটা টের পাওয়া যায়। আমি মানুষ হিসেবে একেবারে কাঠখোট্টা নাগরিক যান্ত্রিক মানুষ। প্রকৃতি, পশু-পাখি খুব একটা টানে না। মনে হয় ভেতরে তেমন মায়া মমতাও নেই। তারপরেও মানুষের এরকম মায়া দেখলে ভাল লাগে, বেশ ভাল লাগে! কে জানে আমার নাগরিক মানুষের ভেতরেও হয়ত মায়াটায়া সহ কিছু একটা আছে, এরকম লেখা পড়লে সেটা মাঝে মধ্যে টের পাই।

ছবিগুলো কিন্তু চমৎকার হাসি

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

নাশতারান এর ছবি

ধন্যবাদ! হাসি
আমিও যান্ত্রিক নাগরিক মানুষ। আমার মধ্যে মায়ামমতা কম বলেই ধারণা ছিলো।

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

আমার যদি একটা বড় বারান্দা থাকতো মন খারাপ

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

নাশতারান এর ছবি

আমার বারান্দাটা কিন্তু বেশ ছোট।

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

লাবণ্যপ্রভা  এর ছবি

আমি সারাদিন বাসায় থাকি না আর বারান্দায় কিছু গাছপালা(একটা নারকেল গাছের মাথা এখন আমার বারান্দা ঘেসে আছে) আছে বলেই হয়তো শালিক-দোয়েল-বুলবুলি-চড়ই পাখির আড্ডার জায়গা হয়েছে এটা, ভোর হতে না হতেই কান পাতা দায় হয়ে যায়। এর মধ্যে দোয়েল হল সবচেয়ে টাংকিবাজ পাখি চোখ টিপি , সে যে কি সুন্দর শিস বাজায়!!! খুব ভাল লাগে, মনেহয় আপন কেউ কাছেই আছে হাসি

লিখটা অনেক ভাল লাগল হাসি
সচলায়তনকে জন্মদিনে পাখির পালকের শুভেচ্ছা হাসি

আশালতা এর ছবি

কী মিষ্টি একটা লেখা।

----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি

নাশতারান এর ছবি

লইজ্জা লাগে

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

নীড় সন্ধানী এর ছবি

ফটু সেশানে তিড়িং তো দুর্দান্ত দেখালো। আপনি এতক্ষণ ভিডিও করলেন, আর সে সুবোধ বালকের মতো বসে থাকলো স্থির প্রায়। মন ভালো করে দেয়া লেখা চলুক

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

নাশতারান এর ছবি

পাখির মন বোঝা দায়!

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

কৌস্তুভ এর ছবি

ইয়ে মানে, আমরা গেলেও কি দুইটা খানা-দানা মিলবে?

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।