ঠিক আগের মাসে স্কুটি কিনেছিলাম। বেশ বড় অংকের খরচ গেছে তাতে। ইউরোপভ্রমণের সম্ভাবনা ঘুণাক্ষরেও জানা থাকলে এই খরচটা করা হতো না। ভ্রমণের পরিকল্পনার পাশাপাশি খরচের ভাবনাটাও তাই বেশ জেঁকে বসল। সেই সাথে রয়েছে ছুটির দুশ্চিন্তা। অফিসে জনবল কম। চাইলেও ছুটি পাওয়া যায় না প্রায়ই। তার উপর প্রায় কাছাকাছি সময়ে আমার বসও যাচ্ছেন ইউরোপে। পরিস্থিতি দেখে তিনি আমাকে আগে ছুটির দরখাস্ত করতে বললেন। উনার ছুটির গ্যাঁড়াকলে যাতে আমি ফেঁসে না যাই। টাকাপয়সার এন্তেজামে ক্রেডিট কার্ডের বুদ্ধি দিলো আমাদের ব্যাংকার নূপুরের ছন্দ। তার জন্য কিছু দাপ্তরিক কাগজপত্র লাগবে। সরকারি অফিসে দাপ্তরিক কাগজের কথা ভাবলেই জাঁকিয়ে জ্বর ওঠে গায়ে। যা আশংকা করেছিলাম ঠিক তা-ই হলো। লাল ফিতের বাঁধনে আমার বেতনের হিসেব এতই গভীর মায়ায় বাঁধা পড়ল যে এক পর্যায়ে ক্রেডিট কার্ডের আশা ছেড়ে দিয়েই পরিকল্পনায় নামলাম।
ইউরোপ দেখার স্বপ্নটা পুরোনো। তা বলে ইউরোপ এভাবে হুড়মুড়িয়ে ডেকে নেবে সে তো ভাবিনি। কোথায় কোথায় যাওয়া উচিত, কী করা উচিত, খরচ কতটা ভেবে রাখা উচিত, কেমন কাপড়চোপড় নেওয়া উচিত সব অজানা। তথ্যের খোঁজে পোস্ট দিলাম ফেসবুকে। তার প্রতিক্রিয়ায় পরামর্শ আসতে লাগল তুমুল বেগে। এক পর্যায়ে আমার ঝাঁপি উপচে পড়ার উপক্রম। পরামর্শের ঝাঁপি ঘেঁটে তথ্য উদঘাটনের জন্য আরেকজন নিয়োগ করা প্রয়োজন এমন দশা। তথ্যের সাগরে হাবুডুবু খেয়ে যখন শুরুর সূত্রটুকু খুঁজে ফিরছি, সেই মুহূর্তে ত্রাতার ভূমিকায় অবতীর্ণ হলেন তৌহিদ ভাই। তিনি জার্মানি ঘুরে এসেছে এক দফা। এবং পরিকল্পনাবাজিতে সিদ্ধহস্ত। অনলাইনে না, এবার পরিকল্পনা হবে সামসামনি। এক সন্ধ্যায় বসে চা-টা খেতে খেতে ভ্রমণের প্রথম খসড়া দাঁড় করানো হলো গুগল ড্রাইভে। দ্রষ্টব্য স্থানের তালিকা অতি দীর্ঘ এবং অবশ্যই অবাস্তব। ইউরোপের চেনাশোনা প্রায় সব শহরই রয়েছে সেই তালিকায়। তিন সপ্তাহে এতগুলো জায়গায় থাকা সম্ভব নয় সেটা কাউকে বলে দিতে হয় না। কিন্তু ইচ্ছে তো বাঁধন মানে না। তাকে যুক্তি দিয়ে বোঝাবে সাধ্য কার? এত্ত এত্ত প্রয়োজনীয় লিংক, অ্যাপের নাম আর জরুরি টিপস নিয়ে ঘরে ফিরলাম। শেঞ্জেন ভিসায় শেঞ্জেনভুক্ত যেকোনো দেশে আমি একাধিকবার ঢুকতে পারব। এটা মনে করিয়ে দেওয়ায় খুব সুবিধা হলো। দেশ হিসেবে নয়, বরং দূরত্ব হিসেবে পরিকল্পনা সাজানো শুরু হলো।
থাকার ব্যবস্থার জন্য Airbnb'র খোঁজ দিলেন নীলকমলিনী। আর কাউচসার্ফিং নেটওয়ার্কের কথা আমাদের যুবরাজ বলেছিলেন আগেই। তৌহিদ ভাইও কাউচসার্ফিংপন্থী। কাউচসার্ফিং ভ্রমণপিপাসুদের একটা বন্ধুত্বপূর্ণ নেটওয়ার্ক যেখানে সদস্যরা নিখরচায় পরস্পরকে বসবাসের সুবিধা দিয়ে থাকেন। ব্যবস্থা চমৎকার। কিন্তু এক মাসে এত এত আয়োজনে হুলস্থূল দশায় একটা নতুন নেটওয়ার্কে যুক্ত হয়ে থাকার ব্যবস্থা করার ধৈর্য আর শক্তি দুটোতেই টান পড়ল। খরচ আর সহজলভ্যতার হিসেবে ইউথ হোস্টেলই সুবিধাজনক ঠেকল।
আরো দুই বন্ধুর সূত্রে দুই ট্রাভেল এজেন্সির সাথে যোগাযোগ হলো। জয়া আপুর পরিচিত এজেন্সি বললো কই কই যাবো জানাতে (আমি বুঝি খুব জানি কই যাবো!)। সেই হিসেবে খসড়া পরিকল্পনা তৈরি করে দেবেন তারা। দ্বিতীয় এজেন্সি ছোট্ট বন্ধু অর্চির মামার। মামা আমার স্বপ্নের বহর দেখে তার মিউনিখবাসী বড় ভাইয়ের সাথে আলাপ করতে বললেন। সেই মামা আমার পরিকল্পনার ফিরিস্তি শুনে বিনাবাক্যে আমার খসড়া কেটে তিন ভাগের একভাগ করে ফেলার বুদ্ধি (পড়ুন আদেশ) দিলেন। সেই সাথে তার আতিথ্য গ্রহণ করতে বললেন। বিশ্ববিদ্যালয়জীবনের খুব কাছের বন্ধু সামিরা থাকে নয় উলম শহরে। মিউনিখ থেকে এক ঘণ্টার দূরত্বে। স্থির হলো আমি মিউনিখে মামার বাসায় উঠব। সামিরা সেখানে আসবে দেখা করতে। জার্মানবাসী সচলদের সাথে যোগাযোগ করেছিলাম শুরুতেই। গ্রীষ্মের ছুটিতে কজন দেশে আসছেন, কেউ অন্য দেশে যাচ্ছেন, বাকিরা আছেন ভিন্ন ভিন্ন শহরে। এই বহুমাত্রিক উথালপাথাল দশায় ত্রাতার ভূমিকায় অবতীর্ণ হলো ইউরোপফেরত বান্ধবী মল্লিকা। তার সাথে পরিকল্পনা করতে বসে হিমশিম খেতে খেতে যখন তৃতীয় খসড়া দাঁড়িয়েছে, জার্মানির ভাগে পড়ল শুধু বার্লিন আর মিউনিখ। বিভিন্ন অজুহাতে ঝরে পড়েছে গ্রিস, স্পেইন, ক্রোয়েশিয়া, বেলজিয়াম আর সুইজারল্যান্ডও। বার্সেলোনায় যাবো না, গ্রানাডা দেখা হচ্ছে না, এথেন্সও বাদ। ফিরতি টিকেট বার্লিনের। তাই বার্লিন থেকে যাত্রা শুরু করে সেই বার্লিনে এসেই ভ্রমণ শেষ করতে হবে ভ্রমণ। এই বৃত্তাকার যাত্রাপথের ঠিক কেন্দ্রে মহামান্য সুইজারল্যান্ড। সিনিক ট্রেইনে সুইজারল্যান্ড পাড়ি দেওয়ার যৎসামান্য পরিকল্পনাটুকুও জলাঞ্জলি দিতে হলো শিডিউলজনিত সীমাবদ্ধতায়। সর্বশেষ যাত্রাপরিকল্পনা হলো বার্লিন-প্রাগ-ভিয়েনা-মিউনিখ-ভেনিস-রোম-প্যারিস-আমস্টারডাম।
Google My Places-এ করা মানচিত্র পরিকল্পনা:
২১ দিনের ইউরোপাস নিয়ে রেলভ্রমণের ইচ্ছে ছিলো। এতে সুবিধা হলো নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে একটা পাস দিয়ে সুবিধামতো শেঞ্জেনভুক্ত যেকোনো দেশে যখন ইচ্ছে ঢোকা যায়। অসুবিধা হলো গ্রীষ্মের ছুটিতে টিকেটের দাম মুহূর্তে মুহূর্তে চড়ে নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। এক মাসের নোটিশে ইউরোপভ্রমণ সম্ভবত সচরাচর কেউ করে না। যত আগে টিকেট কেনা যায় খরচ তত কম পড়ে। হোস্টেলে থাকব যেহেতু, আগে থেকে অনলাইন বুকিং দিতে হবে। সেহেতু ইচ্ছেমতো যেকোনো শহরে চলে যাওয়ার স্বাধীনতাও রইলো না। মল্লিকা খুঁজে খুঁজে সুলভতম মূল্যের টিকেট জোটাতে বসে বাস, ট্রেইন, প্লেন সবকিছুর আয়োজন করে ফেললো। সব বুকিং ক্রেডিট কার্ডে করতে হবে। সেটা আমার নেই তখনো। হাত বাড়িয়ে দিলো এক ফেসবুকবন্ধু (নাম প্রকাশ করা যাবে না এই শর্তে)। আমরা তিনজন সময় মিলিয়ে পৃথিবীর দুই প্রান্তে বসি। ঢাকায় বসে পরিকল্পনা হয়। আরেক প্রান্তে বসে বুকিং। চারটা ট্রেইন, একটা বাস আর তিনটা প্লেন। সস্তা ফ্লাইটগুলোতে লাগেজের ওজন আর মাপ নিয়ে খুব কড়াকড়ি। একটাতে ১০ কেজি, আরেকটাতে ৭ কেজি পর্যন্ত বিনাখরচে বহন করা যাবে। মানে ২১ দিনের ভ্রমণে আমার বহনযোগ্য ওজনসীমা আসলে ৭ কেজি। বাজারে কেবিন সাইজের ট্রলিওয়ালা যেই ব্যাগগুলো পাওয়া যায় সেগুলোর নিজের ওজনই কেজি দেড়েক। ৭ কেজির ২০ শতাংশ ব্যাগে বিসর্জন দিতে চাচ্ছিলাম না। নিউমার্কেটের পপুলার ট্রাভেলস থেকে প্রায় ওজনহীন একটা ব্যাকপ্যাক কিনে আনলাম। আমার ওজনসংকটের কথা জেনে তারানা_শব্দ বুদ্ধি দিলো দুটো ব্যাগ নিতে। একটা ব্লগার সম্মেলনের জন্য, আরেকটা ভ্রমণের জন্য। প্রথম ব্যাগটা বার্লিনে কোথাও রাখার সুযোগ থাকলে ৭ কেজির হালকাপুলকা ব্যাগ নিয়ে ইউরোপভ্রমণে বের হতে পারি আমি। আমাদের রাহিন হায়দারের চাচা থাকেন বার্লিনে। তার সাথে আলাপ করে ঠিক হলো আমার বড় ব্যাগের অস্থায়ী ঠিকানা হবে তার বাসা।
এদিকে নূপুরের ছন্দ ক্রেডিট কার্ডের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। কাগজপত্রের জন্য আমাকে হুড়ো দিচ্ছে নিয়মিত। আমি হুড়ো দিচ্ছি আমার অফিসকে। ক্রেডিট কার্ডের আশা ছেড়ে দিয়েছিলাম বলে নগদ টাকারও এন্তেজাম চলতে লাগল।
ওদিকে জার্মান দূতাবাসের সাথে তথ্য আদানপ্রদান চলছে। প্রোগ্রামের খসড়া হাতে পেলাম। প্রোগ্রামের নাম রাখা হয়েছে "Cyber Policy"। মজার ব্যাপার হলো অংশগ্রহণকারীদের তালিকায় আমাকে সচলায়তনের মডারেটর হিসেবে এবং শরৎ চৌধুরীকে সামহোয়্যার ইন ব্লগের ব্লগার হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়েছে। একদম উলটে ফেলেছে আরকি। তার উপর প্রোগ্রাম পাঠানো হয়েছে মাইক্রোসফট ওয়ার্ড ফরম্যাটে। জার্মান দূতাবাসের পেশাদারিত্বে ঈষৎ ভ্রূকুঞ্চিত আমি জানালাম যে পরিচিতি উলটে ফেলেছেন ওনারা। জবাবে জানলাম এই শেষ বেলায় নাকি ওটা শুধরানোর সুযোগ কম। "চূড়ান্ত পরিকল্পনা" সবখানে পৌঁছে গেছে।
কদিন পর জার্মান দূতাবাসের আরেকটি "চূড়ান্ত পরিকল্পনা" হাতে পেলাম, তুলনামূলকভাবে সংশোধিত অবস্থায়। অংশগ্রহণকারীদের তালিকাও কিছুটা ছোট হয়ে এসেছে কেন জানি।
এর আগে ভিসার সাক্ষাতকারে উনারা আমাকে মিসেস বানিয়ে দিয়েছিলেন। প্লেনের টিকেটেও আমি মিসেস। সেটা অবশ্য নতুন কিছু নয়। নতুন অফিসের যোগদানপত্রেও প্রথম দফা আমার নামের আগে মিসেস জুড়ে দেওয়া হয়েছিলো। আমি "একেলা অবলা নারী", মিসেস না হয়ে কি পারি? ইউরোপযাত্রার আয়োজন শুনে বাঙালি ভাইবোন অনেকের কাছ থেকেই শুনে ফেলেছিলাম, "একলা যাবেন?", "পারবেন?"
প্রশ্ন অবশ্য আরো অনেক ছিলো। আমার চেনামহল খুব বৈচিত্র্যপূর্ণ। তাই প্রশ্নমালাও অবধারিতভাবে বৈচিত্র্যময় ছিলো।
টেলিকমের কামলা আমি। ইউরোপে রোমিংয়ের ব্যাপারে এক সহকর্মীকে জিজ্ঞেস করছিলাম। উনি কাহিনি জানতে চাইলেন। বললাম ইউরোপ যেতে পারি।
- কীসের জন্য যাবেন?
- একটা কনফারেন্স আছে।
- কীসের কনফারেন্স?
- ব্লগিংয়ের।
- আপনি কি ব্লগ লেখেন?
- লিখতাম এক সময়।
- খরচ কে দিবে?
- ওরাই দিবে। (কথা খরচ করতে চাচ্ছিলাম না। তাই ছোট ছোট উত্তর দিচ্ছিলাম। কনফারেন্সের পরে তিন সপ্তাহের ভ্রমণের খরচ যে নিজেকেই বহন করতে হবে সেটা বললে আরো প্রশ্ন করতেন নিশ্চয়ই।)
- তাইলে তো ব্লগিং ভালো। আমাকে বইলেন তো কীভাবে করা লাগে।
- ব্লগিং করবেন?
- জ্বি
- ইউরোপ যাওয়ার জন্য?
- জ্বি
- তাইলে কইরেন না।
- আপনার ব্লগের নাম বইলেন তো। পড়ব।
- নাম বলব না।
- আচ্ছা, না বললে মেইল করে দিয়েন।
- আপনার কৌতূহল বেশি। আমি বিরক্ত হচ্ছি।
- আচ্ছা, আপু। স্যরি।
রোমিংসুবিধা নিতে বেশ বড়সড় খরচের ধাক্কা সামলাতে হবে বুঝে সেখান থেকে হাত গুটিয়ে নিলাম। ইউরোপে সস্তায় যোগাযোগের জন্য লাইকা নামে অপারেটরের সিম কেনার পরামর্শ দিলো বান্ধবী লিন্ডা। ইউরোপে ডেটা সার্ভিসে ভয়ানক খরচ। তাই চলতে ফিরতে ইন্টারনেট পাওয়ার আশা সেখানে নেই। হোস্টেল আর রেস্টুরেন্টের ফ্রি ওয়াইফাইই হবে ভরসা।
এর মাঝে ঈদকে সামনে রেখে আমাদের বন্ধুদের একটা মেলার আয়োজন ছিলো। মেলায় বসে কিছুক্ষণের জন্য তারেক অণুকে পাওয়া গেল। মল্লিকার সাথে বসে বেড়ানোর খসড়া দাঁড়িয়ে গেছে ততদিনে। তারেক অণু "পরীক্ষার আগের রাতের সিলেবাস" দাগিয়ে দিলেন। কোন কোনখানে কী কী দেখতে হবে সেটার তালিকা দাঁড়িয়ে গেল। মেলাতেই ইউরোপ বিষয়ক অণু-আড্ডা হলো সুমাদ্রীদার সাথে।
বেতনের কাগজপত্র হাতে পেতে পেতে ঈদের ছুটি ঘনিয়ে এসেছে। কাগজ পাওয়ামাত্র ক্রেডিট কার্ডের আয়োজনে লেগে পড়ল নূপুরের ছন্দ। নানানজনের মাথা খেয়ে তিরিশ দিনের কর্মোদ্ধার করল তিন দিনে।
টেকাটুকার ব্যবস্থা সারা। দুটো টিকেট দেশে এসে পৌঁছেছে। বাকিগুলো প্রিন্ট করে নেওয়া হলো। হোস্টেল বুকিংয়ের প্রিন্ট-আউট নেওয়া, পুরো আয়োজনের চূড়ান্ত ছক তৈরি করা, প্রিন্ট করা, বাসায় সেটা বুঝিয়ে দেওয়া- সবই হলো একে একে।
চিরন্তন বস্ত্রহীনতায় ভোগা আমি (আদতেই) ঈদের বাজার ঠেলেঠুলে এক বেলায় কিছু পরিধেয়র ব্যবস্থা করলাম। জামাকাপড়, এটাসেটা উপহারসামগ্রী গুছিয়ে ব্যাগে ভরতে গিয়ে দেখি আঁটে না। কিছু উপহার তখনো কুরিয়ারের পথে। আরেকটু বড় একখানা ব্যাগ দরকার। শেষ মুহূর্তে ব্যাগ খোঁজারও উপায় নেই। কথায় কথায় খোঁজ পেলাম খেয়াদির বাসায় একটা ওজনবিহীন স্যুটকেস রয়েছে যা ইতোমধ্যে বহু দেশ ঘুরে ফেলেছে। ওদিকে কিছু বহনীয় উপহার কুরিয়ারে এসে পৌঁছেছে ফ্লাইটের ঠিক আগের দিন। ঘর থেকে বেরুবো না পণ করেও বের হতেই হলো। ভাঙা ঈদের ফাঁকা পথে উড়ে উড়ে মতিঝিল, শাহবাগ, গ্রিনরোড ঘুরে কাজ সারতে সময় লাগল সাকুল্যে দুই ঘণ্টা।
ঘরে ফিরে গাট্টিবোঁচকা বাঁধতে বসে আমার মায়ের চোখে পড়ল রাহিনের দেওয়া বইগুলোতে। গোছগাছের ব্যস্ততায় এমন বিভোর ছিলাম যে বইগুলো তখনো ধরে দেখিনি। আমার মা একটা বই হাতে নিয়ে রীতিমতো আর্তনাদ করে উঠলেন।
- এই বই কোথায় পেলে?
- রাহিনের চাচার বই।
- কবি দাউদ হায়দার রাহিনের চাচা? (আকুল আর্তনাদ চলমান)
তখনো জানি না সামনে আরো অনেক বিস্ময় অপেক্ষমান।
এবার দুরুদুরু বুকে ওড়ার পালা।
ইউরোপ থেকে ফেরার পরে অনেকেই ইউরোপভ্রমণের ব্যবস্থা, খরচাপাতি সম্পর্কে অনেক প্রশ্ন করেছেন। আমার হিসেবের খসড়াটা দেখলে কিছু ধারণা পেতে পারেন। আরো কিছু জানতে nashtaranঅ্যাটgmailডটকমে মেইল করতে পারেন।
মন্তব্য
চমৎকার লাগলো । ভ্রমণ আনন্দময় হোক। পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম
ইসরাত
ধন্যবাদ। ভ্রমণ অত্যন্ত আনন্দময় ছিলো।
_____________________
আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।
তাও ভাল, মিসেস বানাইছে, মিস্তিসা তো বানায় নাই
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
মিস্তিসা তো কত্ত মিস্তি!
_____________________
আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।
----------------------------------------------------------------
বন পাহাড় আর সমুদ্র আমাকে হাতছানি দেয়
নিস্তব্ধ-গভীর রাতে এতোদূর থেকেও শুনি ইছামতীর মায়াডাক
খুঁজে ফিরি জিপসি বেদুইন আর সাঁওতালদের যাযাবর জীবন...
www.facebook.com/abdulgaffar.rony
_____________________
আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।
এই পর্বে এসে একটা ছবি দাঁড়াতে শুরু করলো।
------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
দাঁড়িয়ে হাঁটা ধরলেই হয় এখন।
_____________________
আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
_____________________
আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।
বিয়াপক
...........................
Every Picture Tells a Story
_____________________
আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।
তোমার চোখে বেশ ইউরোপ দেখা হয়েছে। নিজে দেখার শখ ঘোলে মিটিয়ে ফেলেছি। এখন কেন জানি ইউরোপ যেতে আর ইচ্ছা করে না
~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~
আমি ভাবলাম সমস্যা আমার একার
--------------------------------
হে প্রগাঢ় পিতামহী, আজো চমৎকার?
আমিও তোমার মত বুড়ো হব – বুড়ি চাঁদটারে আমি করে দেব বেনোজলে পার
আমরা দুজনে মিলে শূন্য করে চলে যাব জীবনের প্রচুর ভাঁড়ার ।
ভ্রমণে বেরিয়ে পড়ুন। সব সমস্যার জাদুকরি সমাধান।
_____________________
আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।
সব দুধের স্বাদ ঘোলে মেটে না। আমি যতটুকু দেখেছি তার পুরোটা কখনোই দেখানো সম্ভব হবে না। প্রত্যেকের নজর আলাদা। উপলব্ধিও আলাদা। ইউরোপে অবশ্যই যেও।
_____________________
আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।
তোমার সাথে আমার দেখার চোখ উপলব্ধি অনেক খানি মেলে। আমি যেভাবে ঘুরতে চাই, তুমি সেভাবেই ঘুরেছ। নিজে গেলে সঙ্গে বাল বাচ্চ টানতে টানতে গিয়ে ঐভাবে হবে না, শুধু মেজাজের লালবাত্তি জ্বলবে, ভেবে ইচ্ছা করছে না। বুড়া কালে একা একা ঘুরব, সেটা পরে চিন্তা করব । আপাতত তোমার ঘাড়ে চেপে ঘুরি।
~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~
ঘাড় ভাড়া দিবো?
_____________________
আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।
দারুন! মনে হচ্ছে তোমার বয়েসে ফিরে গিয়ে একা একা ঘুরে বেড়াই.
কতইবা বয়স তোমার? একা একা ঘুরে এসো একবার। জীবনে অন্তত একবার নিজের সাথে ভ্রমণে যাওয়া উচিত। প্যারিসে নিউজিল্যান্ডের লেসলির সাথে পরিচয় হয়েছিলো। বয়সে সে আমার মায়ের কাছেপিঠে হবে। আমার বয়সি মেয়ে আছে তার। দিব্যি একা ঘুরে বেড়াচ্ছে নানান দেশে।
_____________________
আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।
সুইজারল্যান্ডে থাকলে আপনার সাথে দেখা হতো নিশ্চিত। অতিথিদের ঘুরিয়ে বেড়াতে আমার খুবই ভালো লাগে। গ্লেসিয়ার এক্সপ্রেস অবশ্য আপনাকে একাই চড়তে হতো। যত দুর্ধর্ষ সুন্দরই হোক না কেন, দ্বিতীয়বার স্পরিবারে চড়তে যাবার আগে সাতবার ভাবতে হতো খরচের চিন্তায়। একদিক দিয়ে ভালৈ হৈছে (শ্রাগ এবং সান্ত্বনার ইমো)
অনেক বড় একটা সিরিজ আসছে, বুঝতে পারছি। দুই পর্বের গ্যাপ দেখে মনে হচ্ছে, বছরখানেক লাগাবেন। চলুক.........
আপনার কথা নীলকমলিনী বলেছিলেন। সুইজারল্যান্ডে ঘোরার পরিকল্পনা করলে আপনার সাথে যোগাযোগ করতাম। খরচের কথা ভেবেই থাকার চিন্তা বাদ দিয়েছিলাম। বড় হলে যাবো নে।
_____________________
আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।
আমিও অপেক্ষায়, সেইসব বিস্ময়ের সুবাস নিতে।
এই সেরেছে! সুবাসিত বিস্ময় কই পাই এখন?
_____________________
আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।
আহা ইউরোপ!
-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------
যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চল রে
আহা!
_____________________
আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।
প্রতিটি পর্ব এই সাইজের করার চেষ্টা কর। পড়তে আরাম লাগে, রেশ থেকে যায়। তোমার খরচের হিসাব আর সেই সাথে দেখা জায়গার পরিমাণ দেখে বোঝা যাচ্ছে খুব এফিসিয়েন্ট ট্রিপ ছিল, সময় আর খরচের হিসাবে।
লেখার শেষ পর্বে একটা কাজ করতে পারো। তোমার দেখা জায়গাগুলোর একটা টপ টেন লিস্ট বানাতে পারো। এইটা পরে যারা যাবে তাদের হয়ত কাজে লাগতে পারে।
দাউদ চাচার সাথে দেখা হয়েছিল?
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
ভীষণ হিসেবি ভ্রমণ ছিলো এটা। যৎসামান্য খরচে দুচোখ ভরে দেখে আসাটাই উদ্দেশ্য ছিলো। যা দেখেছি তার বেশিও দেখা সম্ভব ছিলো। কিন্তু নিজেকে চাপ দিতে চাইনি। রয়েসয়ে মন ভরে ঘুরেছি। বিস্তারিত পরে বলব নে।
পরের পর্বগুলো দেশভিত্তিক করব ভাবছি। কম খরচে একেকটা দেশে দেখার, ঘোরার, খাওয়ার টিপস সেই পোস্টে দিতে চেষ্টা করব।
দাউদ চাচার সাথে দেখা তো হয়েছিলো বটেই। বিস্তারিত পরের পর্বে এবং তারপর সর্বশেষ পর্বে থাকবে। যদি সে পর্যন্ত সিরিজ চলে আরকি।
_____________________
আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।
চলুক।
______________________________________
যুদ্ধ শেষ হয়নি, যুদ্ধ শেষ হয় না
অকা
_____________________
আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।
শরৎ কে ব্যক্তিগত ভাবে কিছুটা চিনি আর আপনাকে ব্লগে।
বাংলাদেশের ব্লগারদের রিপ্রেজেটেটিভ হিসেবে আমার মতে সিলেকশান পারফেক্ট ছিল।
অবাক যাত্রার অভিজ্ঞতা পড়ার অপেক্ষায় থাকলাম।
---------------------------------------------------------
ভাঙে কতক হারায় কতক যা আছে মোর দামী
এমনি করে একে একে সর্বস্বান্ত আমি।
এই সিরিজের পরের পর্বগুলি কই গেল?! আপনি তো পটভূমি, প্রস্তুতি, ইত্যাদি ইত্যাদি বিয়াপক স-ব তেলেসমাতি কাণ্ডকারখানা সেরে আসল জায়গায় এসেই থেমে গেলেন মনে হচ্ছে - আমাদের গাছে তুলে মই নিয়ে পালিয়ে গেলেন!!! ভীষণ অন্যায়!!!
****************************************
নতুন মন্তব্য করুন