আফগানিস্তান এর গুহা কিংবা মধ্যপ্রাচ্যের মাদ্রাসা থেকে নতুন ধর্ম উঠে আসার সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ। তারবদলে এগুলা উঠে আসবে গবেষণাগার থেকে।
আফগানিস্তান এর গুহা কিংবা মধ্যপ্রাচ্যের মাদ্রাসা থেকে নতুন ধর্ম উঠে আসার সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ। তারবদলে এগুলা উঠে আসবে গবেষণাগার থেকে।
ইসলামী কিংবা খ্রিষ্টীয় মৌলবাদ নিয়ে এত প্রচার স্বত্বেও ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে দেখলে সবথেকে আগ্রহ উদ্দীপক স্থান হচ্ছে সিলিকন ভ্যালী। ইসলামিক স্টেট কিংবা বাইবেল বেল্ট না। এই সিলিকন ভ্যালীতেই হাইটেক গুরুগণ আমাদের জন্য নির্মাণ করছেন নতুন ধর্ম যার সাথে ঈশ্বর এর যোগাযোগ অকিঞ্চিৎকর, প্রযুক্তির সাথেই তার সবকিছু। তারা (হাইটেক গুরুগণ) সেই পুরনো সব পুরষ্কার এর প্রতিশ্রুতিই দিচ্ছেন - সুখী জীবন, শান্তি, উন্নতি, এমনকি অমরত্বেরও। তবে পার্থক্য হচ্ছে এর সবকিছুই এই ইহকালেই অর্জন করা যাবে প্রযুক্তির সাহায্যে, পরকালে কোন অলৌকিক সত্ত্বার সাহায্যের জন্য বসে থাকতে হবে না।
এইসব নতুন টেকনো-ধর্মগুলাকে প্রধানত দুই ভাগে ভাগ করা যায়: টেকনো-হিউম্যানিজম আর তথ্য ধর্ম(ডেটা রিলিজিয়ন)। তথ্য ধর্ম বলে যে মানুষ তার যাত্রা সম্পূর্ণ করেছে। এখন তার সময় এসেছে সম্পূর্ণ নতুন কোন সত্তার কাছে তার সেই মশাল তুলে দেবার। আমরা এই তথ্য ধর্মের স্বপ্নিল হাতছানি আর দু:স্বপ্নের বিভীষিকা নিয়ে পরবর্তী চ্যাপ্টারে আলোচনা করবো। এই অধ্যায় আমরা ব্যয় করবো টেকনো হিউম্যানিজম এর একটি রক্ষণশীল ধারা নিয়ে, যেটা এখন পর্যন্ত মানুষকে দেখে সৃষ্টির সেরা জীব হিসাবে আর আঁকড়ে ধরে রাখতে চায় প্রথাগত মানবতাবাদীর(হিউম্যানিষ্ট) এর অনেক মূল্যবোধকে। টেকনো হিউম্যানিজম এই ব্যাপারে একমত পোষণ করে যে, যে হোমো স্যাপিয়েন্সকে আমরা জানি সে তার ঐতিহাসিক পদযাত্রা সম্পূর্ণ করেছে আর ভবিষ্যৎ এর জন্য তার অস্তিত্ব সম্পূর্ণ অপ্রাসঙ্গিক। আর উপসংহার টানে এই বলে যে, ঠিক উপরে বর্ণিত ওই কারণের জন্যই প্রযুক্তি ব্যবহার করতে হবে হোমো দেউস তৈরি করার জন্য। হোমো দেউস হচ্ছে মানুষ এর উন্নত প্রতিরূপ। হোমো দেউসদের মধ্যে মানুষের কিছু প্রয়োজনীয় বৈশিষ্ট্য বজায় থাকবে কিন্তু তারা উপভোগ করতে পারবে তাদের আরও বাড়িত শারীরিক এবং মানসিক ক্ষমতা। এই বাড়তি সক্ষমতা নিয়ে তারা এমনকি সর্বাধুনিক জড়(নন কনশাস)
এলগোরিদম এর সাথে প্রতিযোগিতা করে টিকে থাকতে পারবে। যেহেতু বুদ্ধিমত্তা চৈতন্য থেকে ক্রমাগত বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছে(পূর্ববর্তী অধ্যায় দ্রষ্টব্য) আর জড় বুদ্ধিমত্তার উন্নতি ঘটছে অবিশ্বাস্য গতিতে সুতরাং মানুষকে তার মানসিক ক্ষমতার উন্নয়ন ঘটাতে হবে যদি সে খেলায় টিকে থাকতে চায়।
সত্তর হাজার বছর আগে চৈতন্য বিপ্লব(কগনেটিভ রেভিউলেশন) বদলে দিয়েছিলো স্যাপিয়েন্সদের মনন। এ ধারাবাহিকতায় আফ্রিকার তুচ্ছ বনমানুষ পরিবর্তিত হয়েছে পৃথিবীর শাসন কর্তায়। সেপিয়েন্সদের সেই উন্নমিত মনন হঠাৎই তাকে খোঁজ দিয়েছে সুবিশাল আন্তঃ-মানসিক জগত এর। যা আমাদের সক্ষম করেছিলো ঈশ্বর আর করপৌরেশন নির্মাণে, শহর আর রাজা তৈরিতে। টাকা আর লিখন প্রযুক্তি তৈরিতে। আর এই ধারাবাহিকতায় পরমাণুকে ভাঙ্গতে আর চাঁদে পৌঁছুতে। আর যতদূর আমরা জানি, এই পৃথিবী কাঁপানো বিপ্লব সাধিত হয়েছিলো স্যাপিয়ান্সদের ডিএনএতে সামান্য কিছু পরিবর্তন আর তাদের মস্তিস্কের কিছু নিউরনদের মাঝে নতুন সংযোগের(রিওয়ারিং) কারণে। টেকনো হিউম্যানিজম বলে, যদি তাই হয়ে থাকে তাহলে হয়তো আমাদের জিনে আরও সামান্য কিছু পরিবর্তন আর মস্তিষ্কে নতুন কিছু সংযোগ(রিওয়ারিং) ঘটালে সেটা দ্বিতীয় চৈতন্য বিপ্লব ঘটানোর জন্য যথেষ্ট হবে। প্রথম চৈতন্য বিপ্লব হোমো স্যাপিয়েন্সদের দিয়েছিলো আন্তঃ-মনন এর জগত এর সন্ধান আর বানিয়েছিল পৃথিবীর রাজা, দ্বিতীয় চৈতন্য বিপ্লব হয়তো হোমো দেউস এর দেবে অচিন্তনীয় নতুনসব জগত এর খবর আর তাদের বানাবে গ্যালাক্সির সম্রাটে।
মূল: হোমো দেউস
লেখক : ইউভাল হারারি
মন্তব্য
প্রায় বছর চারেক পরে ফিরে এলেন! শুভেচ্ছা স্বাগতম!!
প্রায় সাড়ে চারশ' পৃষ্ঠার বই অনুবাদে হাত দিয়েছেন। যদি চা খেতে চলে না যান তাহলে আশা করা যাচ্ছে নিয়মিত আপনার দেখা পাওয়া যাবে। আগাম অভিনন্দন।
অনুচ্ছেদগুলো একটু ভচকে গেছে। ফাইনাল পোস্ট করার আগে প্রিভিউটা একটু চেক করে নেবেন।
গোটা লেখা নিয়ে এই পর্যায়ে মন্তব্য করবো না। প্রাযুক্তিক পদগুলো (টেকনিক্যাল জারগন)বঙ্গানুবাদ করার সাথে সাথে ব্রাকেটে ইংলিশ দেবার ব্যাপারটা ভালো হয়েছে। যেখানে যেখানে এটা করতে পারেননি সেই পদগুলো নিয়ে আরেকটু ভাবুন। তাহলে পরের অধ্যায়গুলোতে আস্তে আস্তে পুরোটা বাংলা হয়ে যাবে।
অটঃ এখনো কি বারমুদা ট্রায়াঙ্গেলে আটকে আছেন?
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
পুরো বই না শুধু শেষের দুই অধ্যায় অনুবাদ করার ইচ্ছা আছে। অনুচ্ছেদগুলা যে ভাঙ্গাচোরা সেটা প্রিভিওতে দেখেছিলাম কিন্তু কেন সেটা হচ্ছে তা আর বের করতে পারিনি! আজকে আবার চেষ্টা করার পর ঠিক হয়েছে! অনুবাদের ব্যাপারে আপনার পরামর্শগুলা অবশ্যই মানার চেষ্টা করবো সামনের পর্বগুলাতে।
অট: বারমুডা ট্রায়াঙ্গালের মায়া কাটানো কষ্টকর পাণ্ডবদা
love the life you live. live the life you love.
স্যাপিয়েন্সটা পড়েছি, এই সবে মাত্র দেউসটা পড়া শুরু করেছি। এই বাংলা অনুবাদের সাহচার্য ভালোই লাগবে মনে হচ্ছে।
---------------------------------------------------
মিথ্যা ধুয়ে যাক মুখে, গান হোক বৃষ্টি হোক খুব।
ধন্যবাদ সোহেল ইমাম। হোমো দেউসকে, স্যাপিয়েন্স এর অবশ্যপাঠ্য ২য় খণ্ড বলা যেতে পারে!
love the life you live. live the life you love.
১। বই না পড়েই একটা তাৎক্ষণিক নামকরন বিশ্লেশণ
==================================
হোমো দেউসে এসে হারারি মনে হয় আর ইতিহাসবিদ থাকলেন না, কল্পকাহিনির লেখক হয়ে গেলেন! HOMO DEUS A Brief History of Tomorrow - ভবিষ্যত সম্পর্কে কোনো কথাই কোনোভাবেই "ইতিহাস" হতে পারে না! বইটা পড়িনি, কিন্তু শিরোনামেই হোঁচট খেলাম -- ইতিহাস আর ভবিষ্যতের মধ্যে পার্থক্যটা এতই মৌলিক যে, বইয়ের এমনতর নামকরণের মধ্যে কিছুটা হলেও অসাধুতার গন্ধ এড়াতে পারলাম না। । একটা (ইতিহাস) ঘটিত বাস্তবকে বিশ্লেষণ করে - তথ্য ও বিশ্লেষণে ভুলভাল যাই থাকুক না কেন - অপরটি অস্তিত্ত্বহীণ ভবিষ্যত সম্পর্কে নিছক "ভবিষ্যদ্বাণী" করে বা অন্যভাবে বললে - কল্পণাকে বিশ্লেষণ করে!!! তা সে 'বাণী' বা 'বিশ্লেষণ' যতই পাণ্ডিত্যপূর্ণ ও বিদগ্ধ হোক না কেন, মূল বিষয় তার শেষ পর্যন্ত ঐ কাল্পনিক-ই। তারপর সেই কল্পণার বিশ্লেষণ, কল্পনায় কাটাছেড়া। তাহলে, এই বইয়ের জন্য (এর মধ্যে প্রকৃত ইতিহাসের উপাদানগুলি বাদ দিয়ে) অন্তত হারারিকে কেন "কল্পকাহিনি লেখক" বলা যাবে না? হারারি মস্তবড় পণ্ডিত, মহাজ্ঞানী মানুষ, তাবড়-তাবড় ইতিহাসের বই লিখেছেন, ইতিহাসের নির্যাস নিষ্কষিত করে ভবিষ্যতের সম্ভাব্য চিত্র নির্মান করেছেন যা অন্যদের চেয়ে অনেক বেশি বিশ্বাসযোগ্য হতে পারে?? আমার কৌতুহল হচ্ছে জানতে, পৃথিবীতে কয়জন তাবড়-তাবড় ইতিহাসের পুস্তক রচয়িতা মহাপণ্ডিত ইতিহাসবিদ তাঁদের জীবদ্দশার পরবর্তী কয়েকশ বছর যাবৎ ভবিষ্যতের নির্ভুল ও বিস্তারিত ভবিষ্যদ্বাণী করতে পেরেছেন? যেমন ধরুন, কয়েকশ বাদ্দিন, ঊনবিংশ শতকের শুরু বা মাঝামাঝির দিকের কয়জন মহাপণ্ডিত ইতিহাসবিদ চন্দ্রাভিযান, মহাকাশ অভিযান, ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশন, স্যাটেলাইট, জিপিয়েস, এটম বোমা, ২য় বিশ্বযুদ্ধ, আধুনিক কম্পিউটার প্রযুক্তি, ইন্টারনেট, আর্টিফিশাল ইন্টেলিজেন্স, ভার্চুয়াল রিয়েলিটি, কোয়ান্টাম টেলিপোর্টেশন, ইত্যাদি ইত্যাদি সম্পর্কে - এবং - এইসব জিনিস ও বিষয় মানবসমাজকে কিভাবে প্রভাবিত করবে - সেসব সম্পর্কে নির্ভুল ও বিস্তারিত ভবিষ্যদ্বাণী করতে পেরেছেন? এমনকি আদপেই, বিন্দুমাত্রই, কি কিছু বলতে পেরেছেন যা ধোঁয়াটে নয় এবং ঘটনা-পরবর্তীকালে ঘটনার সাথে মিলিয়ে সন্দেহজনকভাবে সৃজনশীল ইন্টারপ্রিটেশন ছাড়াই নিশ্চিত বোঝা যায়? আমি জানি না, আমার তেমন পড়শোনা নেই, কেউ জানলে জানাবেন? তবে আমরা কিন্তু দেখেছি, প্রায় ঐ একই সময় একজন উকিলমানুষ, একজন কৌতুহলী উৎসাহী পড়ুয়া মানুষ, একজন বিদগ্ধ-উন্নাসিক মহলে অজানা-অচেনা বা নিদেনপক্ষে তুচ্ছতাচ্ছিল্যের-হাসিতামাশার পাত্র বৈজ্ঞানিক-কল্পকাহিনি রচয়িতা জুল ভার্ন কিন্তু ঠিকই শতাধিক বছর পরের চন্দ্রাভিযানসহ অনেক বিষয়েই গায়ে কাঁটা দেয়া প্রায় সঠিক ভবিষ্যদ্বাণী করে গেছেন। একই ঘরাণার আরও কোন কোন লেখকের এমন অনেক কল্পনাও পরে ফলে গেছে মনে হয়। কিন্তু এদের কাউকেই আমরা "ভবিষ্যতের ইতিহাসবিদ" খেতাব দিয়ে সিরিয়াস একাডেমিশিয়ান হিসেবে মাথায় তুলে নাচছি না, তাহলে একই কাজ করে কিন্তু এখনো সাফল্যের মুখ না দেখা ভবিষ্যদ্বক্তা ইয়ুভাল হারারিকে কেন সেরকম সম্মান দিচ্ছি (এই বইয়ের জন্য) বা তাকেও কেন পুর্বোল্লিখিতদের মতোই কল্পকাহিনি লেখক আখ্যায়িত করছি না (এই বইয়ের জন্য)? স্রেফ ভারি-ভারি বিদগ্ধ কথা বলেছেন বলে? কিন্তু অমন বিদগ্ধ ভবিষ্যদ্বাণী ইতিহাসে আর কোন ইতিহাসবিদ বা বিদগ্ধ পণ্ডিত কি করে পরে টোটালি বোল্ড আউট হননি?? জানি না, জানার কৌতুহল থাকলো ইংরেজিতে একটা কথা আছে - proof of the pudding is in the eating। হারারির সব বিদগ্ধ ভবিষ্যদ্বাণীর সত্যতা বা সাফল্যই শেষ পর্যন্ত ভবিষ্যতের গর্ভে নিহিত, তার আগে পর্যন্ত তা বিদগ্ধ কল্পকাহিনিই মাত্র। আর পৃথিবী ও মানুষের সভ্যতা কত অচিন্ত্যপূর্ব পথেই না ঘুরে যেতে পারে - বিংশ শতকই তার জ্বলন্ত উদাহরণ! সহস্র বছরেও, এমনকি মাত্র একশ বছর আগেও কি কেউ ঘুণাক্ষরেও কল্পনা করতে পেরেছিল বিশ শতকের এতসব নাটকীয় ও অপ্রত্যাশিত পরিবর্তন? তাহলে হারারির ভবিষ্যদ্বাণীর গ্যারান্টি কি? তাই আমার মনে হয়, বইটার টাইটেলে "History" শব্দটার ব্যবহার যথার্থ হওয়ার তো প্রশ্নই উঠে না, এমনকি এটাকে নিছক একটা লিটারারি ফ্লারিশ বা সাহিত্যিক উচ্ছাসও মনে হয় না। মনে হয় হারারির এই নামকরনটা তার ইতিহাস বিষয়ে একামেডিশিয়ান পরিচয়, ইতিহাসের বই 'সেপিয়েন্স'-এর তুমুল জনপ্রিয়তা, হকিং-এর 'আ ব্রিফ হিস্টরি অফ টাইম'-এর 'আ ব্রিফ হিস্টরি অফ' বাক্যাংশের গণচেতনায় পজিটিভ মানসিক ট্রিগার-ইফেক্ট, এবং সাধারনভাবে ভবিষ্যদ্বাণী-সাইন্স ফিকশন-ফিউচারোলজি ইত্যাদি থেকে 'ইতিহাস' নামক বিষয়টা সম্পর্কে মানুষের অধিকতর শ্রদ্ধাবোধ - এইসব কিছুকেই এক কোপে ভাঙিয়ে খাওয়ার ও বইটার বিক্রিবাট্টা বাড়ানোর একটা অসাধু প্রয়াস। A brief look at the future বা Predicting the future-ইত্যাদির মতো সৎ, সুন্দর ও স্বাভাবিক বিকল্পের বদলে "হিস্টোরি" কথাটা এখানে তাই দু;খজনকভাবেই নিছকই একটা নিম্নমানের মার্কেটিং-গিমিক বলেই মনে হচ্ছে। একজন বড়মাপের লেখকের কাছ থেকে এটা অপ্রত্যাশিত।
২। এই বইয়ে আলোচিত ভবিষ্যত-সংক্রান্ত আইডিয়াগুলি কতটুকু হারারির নিজস্ব আর কতটুকু অন্যান্য বিজ্ঞানী, টেকনো-লেখক, সাহিত্যিক আর বৈজ্ঞানিক-কল্পকাহিনির রচয়িতাদের থেকে সংরহ বা কোলেইট করা? আর হ্যাঁ - বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, সমাজবিজ্ঞান, দর্শন, ইতিহাস, অর্থনীতি, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, ধর্ম, প্রত্নতত্ত্ব, নৃতত্ত্ব, মনস্তত্ত্ব, শরীরতত্ত্ব, জিনতত্ত্ব, বিবর্তন, ফিউচারোলজি থেকে শুরু করে বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনি ইত্যাদি ইত্যাদি পর্যন্ত অজস্র বিষয় বা ডিসিপ্লিন থেকে - এবং এইসব বিষয়ের বিশেষজ্ঞদের বইপত্তর থেকে - বিচিত্র যেসব বহুমুখী তত্ত্ব-তথ্য-মালমশল্লা নিজের পছন্দমতো সংগ্রহ করে (যার অনেকগুলিই আবার ঐ বিশেষায়িত ডিসিপ্লিনের বিশেষজ্ঞদের নিজেদের মধ্যেই ডিস্পুটেড বা বিতর্কিত) সেগুলিকে তাদের বিচ্ছিন্ন বিশেষজ্ঞ কনটেক্সট ও বিতর্ক থেকে বের করে এনে সব একসাথে গুলিয়ে বা জোড়াতালি দিয়ে তিনি যে ইউনিফাইড ন্যারেটিভের সরবৎ তৈরি করার চেষ্টা করছেন - তা আসলে সত্যি সত্যি কতটুকু মিশ খাচ্ছে, কতটুকু ঠিকঠাক জোড়া লাগছে তার নিশ্চয়তা কি? তিনি তো ঐ সমস্ত বিষয়ের সবগুলিতেই বিশেষজ্ঞ নন! তার সেপিএন্স নিয়েও এই প্রসঙ্গে বিস্তর বিতর্ক আছে। হোমো ডেউস বইটা সম্পর্কে নিউ ইয়র্ক টাইমসের রিভিউয়ার তাই অ-ত্য-ন্ত পোলাইটলি লিখছেন --
****************************************
ধন্যবাদ মনমাঝি। আপনার মন্তব্যের জবাব লিখতে যেয়ে মাঝপথে উৎসাহ হারিয়ে ফেললাম। আপনার পূর্ণ স্বাধীনতা আছে কারও বই না পড়ার কিংবা না পড়ে তার সমালোচনা করার।
love the life you live. live the life you love.
১। আপনি বোধহয় লক্ষ্য করেননি - ১ম পয়েন্টে আমি আপনার ভাষায় "বই"-টার সমালোচনা করিনি, মূলত এর নামটা বা নামকরনের সমালোচনা করেছি। আর যেটার সমালোচনা করেছি, সেই ৭ শব্দের নামটা পুরোপুরিই পড়েছি বৈকি! আর ২য় পয়েন্টে আসলে আমি সমালোচনা করিনি - নিউ ইয়র্ক টাইমসের একজন রিভিউয়ারের বক্তব্য কোট এবং প্রশ্নাকারে প্যারাফ্রেইজ করেছি মাত্র। এটা আমার বক্তব্য নয় - মুলত ঐ রিভিউয়ারের। আমি কেবল প্রশ্ন করেছি।
২।
হে হে। আপনারও পূর্ণ স্বাধীনতা আছে যে কোন কিছুর "মাঝপথে উৎসাহ হারিয়ে" ফেলার। আপনি মনে হয় আমার মন্তব্যটা বেশি সিরিয়াসলি নিয়ে নিয়েছেন, এর ছদ্মবেশী ইষৎ উষ্কানিমূলক ইয়ার্কির টোন বা উদ্দেশ্যটা ধরতে পারেননি। এই "ছদ্মবেশী উষ্কানিমূলক ইয়ার্কি"-টা একটা নতুন জান্রা! আমার ইয়ার্কিটা আপনাকে নিয়ে নয়, মুল লেখককে নিয়ে। তবে উষ্কানিটা যে আমার মন্তব্য পাঠ করে - তার জন্য। আর আপনি যে "উষ্কিত" হয়েছেন, তা আপনার "মাঝপথে উৎসাহ হারিয়ে" ফেলা দেখেই বোঝা যাচ্ছে। সেজন্যে আপনাকে ধন্যবাদ!
****************************************
নতুন মন্তব্য করুন